যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهٗ اُمَّهَاتُهُمْ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিনদের নিকট তাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয় এবং উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ৬)
আলোচ্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে اَوْلـى শব্দ মুবারকখানা ব্যবহার করা হয়েছে। আরاَوْلـى শব্দ মুবারক উনার একখানা অর্থ মুবারক হচ্ছেন ‘পিতা’। অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ الله تَعَالـى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّـمَا اَنَا لَكُمْ بِـمَنْزِلَةِ الْوَالِدِ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের পিতার ক্বায়িম মাক্বাম তথা মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ শরীফ)
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই আলোচ্য সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে-
وَاَزْوَاجُهٗ اُمَّهَاتُهُمْ
অর্থ: “আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা ‘আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাত’ তথা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ!
কাজেই এ কথা আর বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা যেহেতু সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম, তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মু’মিন বলতে একমাত্র যিনি খ¦ালিক মালিক্ব রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই উদ্দেশ্য। সুবহানাল্লাহ! উনারা সকলেই মু’মিন। উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! কোন হযরত নবী আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক দেয়া হয়নি, কোনো হযরত রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি; যতক্ষণ পর্যন্ত উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক না এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনার পরেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক ও সম্মানিত রিসালাত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই প্রসঙ্গে স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَإِذْ أَخَذَ الله مِيثَاقَ النَّبِيّينَ لَمَا آتَيْتُكُمْ مِنْ كِتَابٍ وَحِكْمَةٍ ثُمَّ جَاءَكُمْ رَسُوْلٌ مُصَدّقٌ لِمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهُ قَالَ أَأَقْرَرْتُمْ وَأَخَذْتُمْ عَلَى ذَلِكُمْ إِصْرِي قَالُوا أَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَأَنَا مَعَكُمْ مِنَ الشَّاهِدِيْنَ. فَمَنْ تَوَلَّى بَعْدَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ.
অর্থ: “আর যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে অঙ্গীকার মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে সম্মানিত কিতাব মুবারক ও হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট একজন মহাসম্মানিত রসূল তথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন এবং তিনি আপনাদের ও আপনাদের কাছে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন এবং এই মর্মে আমার ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, আমরা স্বীকার করে নিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যে এই ওয়াদা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ ওয়াদা মুবারক উনার খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব তথা চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির।” (সম্মানিত সূরা আলে ইমরান শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৮১-৮২)
কাজেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িানাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর এই কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে বিবাহ করা সকলের জন্য হারাম ঘোষণা করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُوْلَ اللهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللهِ عَظِيمًا.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া এবং উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনার মহাসম্মানিতা আযওয়াজুম মুত্বহ্হারাত (হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনাদেরকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য কস্মিনকালেও জায়িয নেই। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট এটা অনেক বড় অপরাধ।” (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ৫৩)
কাজেই উপরোক্ত দলীল-আদিল্লাহ মুবারক দ্বারা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িানাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
আর সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اِنَّ الْـجَنَّةَ تَـحْتَ اَقْدَامِ اُمَّهَاتِكُمْ
অর্থ: “নিশ্চয়ই সম্মানিত জান্নাত মুবারক তোমাদের সম্মানিতা মাতা উনাদের পায়ের নীচে।” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববারনী শরীফ)
অপর বর্ণনায় এসেছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رِضِىَ الله تَعَالـى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِـىُّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْـجَنَّةَ تَـحْتَ اَقْدَامِ الْاُمَّهَاتِ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সম্মানিত জান্নাত মুবারক সম্মানিতা মাতা উনাদের পায়ের নিচে।” সুবহানাল্লাহ! (জামি‘উছ ছগীর ১/৫৬৩, আল কুনা ওয়াল আসমা’ ৩/১০৯১, মুসনাদে শিহাব ১/১০২, আল জামি’ লিখত্বীব বাগদাদী ৪/৪৬১, আল ফাওয়াইদ লিআবী শায়েখ ইস্পাহানী ১/২৬, আত তারগীব ওয়াত তারহীব ১/২৮১, মূজিবাতুল জান্নাহ ১/১১০, ফায়যুল ক্বদীর ৩/৪৭৭, আদ দুররুল মুনতাছিরাহ লিস সুয়ূত্বী ১/৯, আল ফাতহুল কাবীর লিস সুয়ূত্বী ২/৬২, জামি‘উল আহাদীছ ১২/৮০, দায়লামী শরীফ ২/১১৬, কাশফুল খফা ১/৩৩৫, কানযুল ‘উম্মাল ১৬/৪৬১, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/১১৬০৭, ইহইয়াউ ‘উলূমিদ্দীন, মিরক্বাত শরীফ ইত্যাদি)
অর্থাৎ সন্তানদের সম্মানিত জান্নাত মুবারক সম্মানিতা মাতা উনাদের পায়ের নিচে। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই আমরা দেখতে পাই যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে একই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একই সাথে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করবেন। সেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একমাত্র মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা ব্যতীত আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার অনেক নিচে থাকবে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত জান্নাত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই অন্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
مَنْ قَبَّلَ رِجْلَ اُمّهٖ فَكَاَنَّـمَا قَبَّلَ عَتَبَةَ الْـجَنَّةِ
অর্থ: “যে ব্যক্তি তার সম্মানিতা মাতা উনার পায়ে বুছা খেলো, সে যেন সম্মানিত জান্নাত উনার চৌকাঠে বুছা খেলো।” সুবহানাল্লাহ! (র্দুরুল মুখতার ৬/৩৬৭, আল মাবসূত্ব ১২/৩৬৪, তাবঈনুল হাক্বাইক্ব ১৬/৩৭১, রদ্দু মুহতার ২৬/৩৯২)
এই সম্মানিত হাদীছ শরীফ থেকেও সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাতের সম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! একমাত্র সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতীত সমস্ত কায়িনাতবাসীর সম্মানিত জান্নাত মুবারক হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত ক্বদম মুবারক উনাদের নিচে। সুবহানাল্লাহ! কাজেই যিনি যতো বেশি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন, উনাদের মুহব্বত-মা’রিফাত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবেন, তিনি ততো বেশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি, মুহব্বত-মা’রিফাত, কুরবত ও তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
আর এই কারণেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
اَنَّ نَبِـىَّ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ الله مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (প্রায়) ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ ও উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই বেনিয়াজ। কাজেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুযোগ নেই। অর্থাৎ উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের কারণেই সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
আর সেই মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারকই হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! এক কথায়, উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানিত ক্বদম মুবারক উনাদের নিচেই সকলের সম্মানিত জান্নাত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যিনি যত বেশি উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মুহব্বত-মা’রিফাত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবেন, তিনি ততো বেশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মুহব্বত-মা’রিফাত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবেন। সুবহানাল্লাহ! আর এর ব্যতিক্রম হলে হালাকী তথা ধ্বংস অনিবার্য। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
কাজেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন হচ্ছে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানা, আলোচনা করা, উনাদের তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া এবং উনাদের প্রতি সর্বোচ্চ হুসনে যন পোষণ করা।
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানার্থে উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক জানার, বুঝার উপলব্ধি করার, ব্যাপক প্রচার-প্রসার করার তাওফীক্ব দান করুন এবং উনাদের হাক্বীক্বী নিসবত মুবারক ও কুরবত দান করুন। আমীন!
-আল্লামা মুহম্মদ ইবনে মারইয়াম