ছবর উনার মাক্বাম উনার ফযীলত-সম্মান
صَبْـرٌ (ছবর) অর্থ: ধৈর্য্যধারণ করা। বিপদ-আপদ, দুঃখ-কষ্ট ধীরভাবে সহ্য করাকে ছবর বলে। অর্থাৎ দুঃখ-কষ্টে বিচলিত এবং আনন্দে ও সুখে আত্মহারা না হয়ে সম্মানিত মা’রিফাত-মুহব্বত হাছিলের পথে ইস্তিক্বামত বা অবিচল থাকাকে ছবর বলে। মনে রাখতে হবে, ছবর বা ধৈর্য্য ব্যতীত হাক্বীক্বী বা প্রকৃত তওবা নছীব হতে পারে না। এমনকি ছবর ব্যতীত কোন কর্তব্য কাজই যথাযথভাবে সম্পন্ন করা যায় না। আর কোন পাপ কার্যই পরিত্যাগ করা সম্ভব হয় না। সঙ্গত কারণে ছবরের মাক্বাম হাছিল করা অতীব জরুরী।
ছবর বা ধৈর্য্যধারণ করার ফযীলত বর্ণনা করলে, এটাই যথেষ্ট হবে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে সত্তরেরও অধিক স্থানে ছবরের আলোচনা করেছেন। মানুষের জন্য যত উন্নত মর্যাদা ও মাক্বাম নিহীত আছে, তা সকলই একমাত্র ছবরের উপর নির্ভর করে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَجَعَلْنَا مِنْـهُمْ أَئِمَّةً يَّـهْدُوْنَ بِأَمْرِنَا لَمَّا صَبَـرُوْا ۖ وَكَانُـوْا بِآيَاتِنَا يُـوْقِنُـوْنَ
অর্থ: যখন তারা ছবর করেছে তখন আমি তাদেরকে ইমাম বা পথ প্রদর্শকরূপে কবুল করেছি। আর উনারা আমার আদেশে লোকদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করে থাকেন। উনারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আস সাজদা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ছবরের মধ্যে অসীম ও অগণিত কল্যাণ নিহীত রেখেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّمَا يُـوَفَّى الصَّابِرُوْنَ أَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ
অর্থ: নিশ্চয়ই ধৈর্য্যধারণকারীগণকে তাদের ছবরের পুরস্কার বিনা হিসেবে দান করা হবে। অর্থাৎ উনাদেরকে নিয়ামত দেয়ার ক্ষেত্রে হিসাব করা হবে না। সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা জুমার শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাবির বা ধৈর্য্যশীলগণকে এ ওয়াদাও দিয়েছেন যে, তিনি সর্বাবস্থায় উনাদের সাহায্যকারীরূপে সাথেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ اللهَ مَعَ الصَّابِرِيْنَ
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাবির বা ধৈর্য্যশীলগণের সাথেই আছেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৩)
আর “শান্তি, রহমত এবং হিদায়েত” এই তিনটি মহান নিয়ামত স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনিই কেবল ছাবির বা ধৈর্য্যশীলগণকে একই সাথে দান করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أُولٰئِكَ عَلَيْهِمْ صَلَوَاتٌ مِّنْ رَّبِّهِمْ وَرَحْمَةٌ ۖ وَأُولٰئِكَ هُمُ الْمُهْتَدُوْنَ
অর্থ: ছবরকারীগণই সেই সমস্ত সৌভাগ্যবান ব্যক্তিগণের অন্তর্ভুক্ত যাদের উপর উনাদের মহান রব তায়ালা উনার তরফ থেকে ছলাত (শান্তিধারা) রহমত (অনুগ্রহ-দয়া) বর্ষিত হয়। আর উনারা সৎপথ প্রাপ্ত। সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৭)
খালিক্ব মালিক মহান রব তায়ালা তিনি ছাবির বা ধৈর্য্যশীলগণকে সর্বদায় মুহব্বত করেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللهُ يُحِبُّ الصَّابِرِيْنَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাবির বা ধৈর্য্যশীলগণকে মুহব্বত করেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪৬)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাবির বা ধৈর্য্যশীলগণকে সুসংবাদ দিয়েছেন। ইরশাদ মুবারক করেন-
يَاۤ أَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اصْبِرُوْا وَصَابِرُوْا وَرَابِطُوْا وَاتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ.
অর্থ: হে ঈমানদারগণ! ধৈর্য্যধারণ করো। ধৈর্য্যশীল হও। আর নেক কাজে লেগে থাক। মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো অবশ্যই তোমরা কামিয়াব হবে। সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২০০)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১০৭)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১০৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১১০)
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১১১)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১১২)