আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
তাওয়াক্কুল তথা মহান আল্লাহ পাক
উনার প্রতি ভরসা করার ফযীলত
মনের একটি অতি উন্নত অবস্থার নাম তাওয়াক্কুল। যে সকল উন্নত হালত বা অবস্থার অধিকারী হলে সালিক বা মুরীদ মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কুরবত, নৈকট্য, সন্তুষ্টি, রেযামন্দি লাভের সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। সাথে সাথে স্বীয় শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সাথে গভীর নিসবত-সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় তাওয়াক্কুল সে সকল হালত বা অবস্থার মধ্যে একটি উচ্চতম হালত বা অবস্থা। ইহার মর্যাদা-মর্তবা অপরিসীম।
التوكل (তাওয়াক্কুল) অর্থ: ভরস করা। বান্দার পক্ষ হতে নিজ কাজের দায়িত্ব মহান আল্লাহ পাক উনার উপর সোপর্দ করা। সকল কাজে মহান আল্লাহ পাক উনাকে কার্যনির্বাহী মনে করাকে তাওয়াক্কুল বলা হয়। বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
انى لاعلم اية لو اخذ الناس بها لكفتهم وَمَن يَتَّقِ اللَّـهَ يَجْعَل لَّه مَخْرَجًا. وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ
অর্থ: “পবিত্র কুরআন শরীফ উনার এমন একখানা আয়াত শরীফ আমি জানি, যদি লোকেরা সেই আয়াত শরীফ উনার উপর আমল করতো তাহলে তাদের জন্য ইহাই যথেষ্ট হতো।” আর সেই আয়াত শরীফখানা হচ্ছে-
وَمَن يَتَّقِ اللّـهَ يَجْعَل لَّه مَخْرَجًا. وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ. وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّـهِ فَهُوَ حَسْبُه
অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে তিনি তার জন্য কল্যাণের সকল রাস্তা খুলে দেন। আর এমন স্থান হতে তাকে রিযিক দান করেন যা সে কল্পনাও করতে পারে না।” যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি তাওয়াক্কুল করেন, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হন।” (আহমাদ শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, দারেমী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَعَلَى اللَّـهِ فَتَوَكَّلُوا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার উপর তাওয়াক্কুল করা মু’মিনগণের জন্য ফরয-ওয়াজিব। (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ اللَّـهَ يُحِبُّ الْمُتَوَكِّلِينَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার উপর তাওয়াক্কুলকারীগণকে মুহব্বত করেন।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইহাও ইরশাদ মুবারক করেন যে-
اَلَيْسَ اللّـهُ بِكَافٍ عَبْدَه
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি কি উনার বান্দার জন্য যথেষ্ট নন?” (পবিত্র সূরা যুমার শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)
অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার বান্দাগণের জন্য যথেষ্ট।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার উপর তাওয়াক্কুল করেন তিনি তার সকল কাজ নিজ দায়িত্বে সুসম্পন্ন করে দেন এবং সব বিষয়ে তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হন। আর এমন স্থান হতে তাকে রিযিক সরবরাহ করেন যা কোন সময় তার কল্পনায়ও আসেনি।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি দুনিয়া বা দুনিয়াবী কোন বিষয় বস্তুর প্রতি মনোনিবেশ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে দুনিয়ার সাথে ছেড়ে দেন। (কিমিয়ায়ে সায়াদাত-৪/৩৪৫)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৭)
-ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার- মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৮)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩০)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩১)