কিছুক্ষণ পরে আমার আহাল ঘরে ফিরে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, অসুস্থ ছেলেটির অবস্থা কেমন? আমি উত্তর করলাম, তার অবস্থা অন্যান্য রাতের তুলনায় আজ রাতে অনেকটা ভালই আছে। অতঃপর আমি উনার সামনে খাদ্য এনে উপস্থিত করলাম। আহালের আহার শেষ হলে আমি নিজেকে অন্যান্য রাত অপেক্ষা অধিক সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদে সুসজ্জিত করে আহালের সামনে উপস্থিত হলাম। তিনিও আমার একান্ত ছোহবতে ইতমিনান হাছিল করলেন। অতঃপর আমি বলতে লাগলাম-আমার জনৈক প্রতিবেশীকে আমি একটি জিনিষ ধার দিয়েছিলাম। আমি যখন তা ফেরত চাইলাম, তখন সেই প্রতিবেশী লোকটি শোকে-দুঃখে বড়ই আহাজারী করতে লাগলো। আহাল বললেন, এটা বড়ই আশ্চর্যের কথা। মনে হয় লোকটি নিতান্তই আহমক। যার জিনিস তাকে ফেরত দিতে কষ্ট লাগবে কেন? স্বাচ্ছন্দে ফেরত দেয়া উচিত। তখন আমি বললাম, আপনার ঐ ছোট শিশুটিকে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আপনার নিকট আমানত ও ধারস্বরূপ অর্পণ করেছিলেন। এখন তিনি সেই ধার ফেরত নিয়েছেন। এটা শুনে আমার আহাল বললেন-
إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই আমরা সকলে মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যই; আর অবশ্যই আমরা সকলে উনার নিকটেই ফিরে যাবো। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৬)
পরদিন সকালে আমার আহাল তিনি নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে উপস্থিত হয়ে পূর্ববর্তী রাতের সমস্ত ঘটনা বিস্তারিত বর্ণনা করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখন ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের গতকালের রাতকে আরো কল্যাণময় করুন। গত রাত তোমাদের পক্ষে বড়ই কল্যাণময় ছিল। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত মি’রাজ রজনীতে বেহেশতে তাশরীফ মুবারক নিলে সেখানে আমি হযরত আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া হযরত উম্মে সালিক রুমাইয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনাকে দেখতে পেয়েছিলাম। (কিমিয়ায়ে সাআদাত-৪/৫২)
যারা ছবর উনার মাক্বাম হাছিল করেন মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে ইমাম অর্থাৎ পরবর্তীগণের জন্য অনুসরণীয় বানিয়ে দেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَجَعَلْنَا مِنْـهُمْ أَئِمَّةً يَّـهْدُوْنَ بِأَمْرِنَا لَمَّا صَبَـرُوْا ۖ وَكَانُـوْا بِاٰيَاتِنَا يُـوْقِنُـوْنَ
অর্থ: যখন তারা (ইহার উপর) ছবর বা ধৈর্য্যধারণ করলো তখন আমি তাদের মধ্যে কতিপয় দ্বীনি ইমাম মনোনিত করলাম যারা আমার নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী হিদায়েত দান করতেন। আর উনারাই ছিলেন আমার নিদর্শনসমূহের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী বা ইয়াক্বীনদার। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা সাজদা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার পীর ছাহেব ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৭৬)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার পীর ছাহেব ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৮২)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার পীর ছাহেব ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৮৩)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার পীর ছাহেব ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৮৪)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার পীর ছাহেব ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (৮৫) –