দেশের কওমী মাদরাসাগুলোর সাথে জঙ্গীবাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে”- এমন কথা এখন আর রাখঢাকের মধ্যে নেই। এর পিছনে কারণ হলো কওমীওয়ালারা শুরু থেকেই তালেবান ঘেঁষা ছিলো। যে তালেবানরা পৃথিবীর সত্তর ভাগ পপি চাষ করত, আফিম বা হেরোইন উৎপাদন ও বিক্রি করতো সে তালেবানরা ছিলো তাদের আদর্শ। মূলত: তালেবানরা ছিলো সি.আই.এ’র মদদপুষ্ট ও সি.আই.এ’র গৃহপালিত পোষ্য লাদেন দ্বারা নির্দেশিত। এদেশের কওমী মাদরাসাগুলোতে লাদেনের মাধ্যমে অর্থ, অস্ত্র ও জঙ্গীবাদের প্রবেশ করেছিলো অনেক আগেই। স্বয়ং লাদেনের এ দেশে আগমনের কথা জানা যায়। এ ধারারই উত্তরণ বাংলা শয়তান ও আব্দুশ শয়তান। বোমাবাজি ও জঙ্গীবাদের বিস্ফোরণের ছদ্মাবরণে তারা দেশকে আমেরিকার হাতে তুলে দেবার পায়তারা করেছিলো। কিন্তু মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর জঙ্গীবাদ বিরোধী লেখার ধারাবাহিকতায় এদেশে জঙ্গীবাদ বিরোধী জনমত প্রবল হয়।
সে প্রেক্ষিতে কৃত্তমীওয়ালারাও চুপসে যায়। কিন্তু তাদের মনে মগজে চেতনা রয়ে যায় ঠিকই। যদিও বর্তমানে জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে তাদের আপাত অবস্থান। কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ড জঙ্গীবাদের পক্ষে প্রমাণ দেয়। এমনকি আজকের জোট সরকারের এমপি মুতে আমিনী দৃশ্যতঃ যদিও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে বলেছেন কিন্তু তার বিগত দিনের বক্তব্য এবং তার সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে জঙ্গীবাদের পক্ষেই দলীল দেয় ।
১৫ই মার্চ-১৯৯৯ এ প্রকাশিত সাপ্তাহিক চলতিপত্রে ৯ নং পৃষ্ঠায় মুফ আমিনী তথা কমিনীর কু-বচন পত্রস্থ হয়: “সরকার তালেবানদের সমর্থন না করলে ক্ষমতার থাকতে পারবে না। আমরা ওসামাপন্থী, আমরা তালেবানপন্থী। ২০০০ সালের মধ্যেই ক্ষমতা দখল করবো।” ফজলুল হক আমিনী, মহাসচিব- ইসলামী ঐক্যজোট।
এদিকে মুফতে আমিনী ২০০০ সালের মধ্যেই ক্ষমতা দখল করতে পারেননি। তবে ক্ষমতার ভাগ তিনি পেয়েছিলেন। জোট সরকারের পদ লেহনকারী হয়েছিলেন। আর সেজন্য তার তালেবানপন্থী, ওসমাপন্থী মনোভাবটুকু পুরোই আত্মগোপন করতে হয়েছিলো। মদের ব্যবসায়ী তালেবানদের মত আদর্শ বিসর্জনের উদাহরণ তার মধ্যে পুরোটাই প্রতিয়মান হয়েছিলো। তবে মোদ্দাকথা হচ্ছে কৃষ্ণমীওয়ালারা বারিজীপন্থী হওয়ায় তারা কিন্তু অঙ্গাঅঙ্গিভাবেই তালেবানপন্থী । কওমী নেতা হাফিজ্জী পুত্র আহমদুল্লাহ আশরাফের সাম্প্রতিক বক্তব্যে সে সত্য আবারো প্রতিভাত হলো। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, হরকাতুল জিহাদ কোন জঙ্গী সংগঠন নয়। প্রকাশ্যে রাজনীতি আসছে। ইরকাতুল জিহাদ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, হরকাতুল জিহাদ ইসলামী বিধিবিধান পালনে খুবই সচেতন এবং দেশপ্রেমিক। (ইনকিলাব, ২৫ জুন ২০০৬)
উল্লেখ্য, হরকাতুল জিহাদের জঙ্গীপনা সর্বজনবিদিত। আজকের জেএমবি যে হরকাতুল জিহাদেরই আরেক বহিঃপ্রকাশ তাও বলার অপেক্ষা রাখে না । কিন্তু কথা হলো, এভাবে হরকাতুল জিহাদকে সুযোগ দিলে তারা যখন আবার জেএমবির মত জঙ্গীপনা শুরু করবে তখন কি হাফেজ্জী আর আশরাফ তার দায়িত্বভার নিবে। অথবা যখন জেএমবির মত হরকার্ডের জঙ্গীপনা জনসম্মুখে উদ্ঘাটিত ও প্রচারিত হবে এবং প্রশাসন ও মিডিয়া, হরকাতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে তখনও হরকাতের পক্ষে আহমাদুল্লাহ আশরাফের এ বক্তব্য মনে থাকবে।
বলাবাহুল্য, অবস্থার প্রেক্ষিতে তালেবান মুফতী কমিনী যেমন তালেবান বিরোধি হয়ে উঠেছিলেন তিনিও যে সে একই পথে চলবেন তা না বললেও চলে। তবে আম জনতার জন্য লাভ হলো এতটুকুও যে, কওমী ওয়াপারা যে আসলেই খারিজী, তালেবান ও ওসামাপন্থী তথা জঙ্গীবাদি সে কথাই আবারো বিবেচনা করা, পুন সতর্ক ও সাবধান হওয়া
-মুহম্মদ মাহবুব উদ্দীন বদরী, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২