হাইকোর্টের রায়ের পরও অবজ্ঞা করে চলছে ভারতীয় টিভি চ্যানেলে এদেশীয় পন্যের বিজ্ঞাপন। শুধু পণ্যের বিজ্ঞাপন বন্ধ করলেই চলবেনা; এদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তথা মননের সাথে সংঘাতপূর্ণ গোটা ভারতীয় টিভি চ্যানেলকেই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে

সংখ্যা: ২৬৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

বহুদিন ধরেই বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠান দেখানো হচ্ছে। ভারতীয় টিভি সিরিয়াল আমাদের দেশের সংস্কৃতি ও সামাজিক আচরণবিধির সাথে সংঘাতপূর্ণ বলে দীর্ঘদিন ধরে সব মহল থেকে বলা হচ্ছে। এরপরও বাংলাদেশে চ্যানেলগুলোর প্রদর্শনী বন্ধ হচ্ছে না। দেশের বিভিন্ন মহলের ও বেসরকারি টিভি মালিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের প্রদর্শন নিয়ন্ত্রণের জন্য তথ্য, বাণিজ্য টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে নির্দেশ দেয়। অদৃশ্য কারণে এ নির্দেশ এখনো কার্যকর হচ্ছে না।

পাশাপাশি, বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য দেশে ডাউনলিংককৃত বিদেশি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে দেশীয় বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তথ্য মন্ত্রণালয়। ‘কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন-২০০৬’ অনুযায়ী তথ্য মন্ত্রণালয় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বলে গত ১লা জানুয়ারী ২০১৭ এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে। বিজ্ঞাপন প্রচারের নিষেধাজ্ঞা না মানলে ‘কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন-২০০৬’ এর ধারা ১৯ এর ১৩ উপ-ধারার আলোকে সংশ্লিষ্ট বিদেশি টিভি চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউশনের অনাপত্তি ও অনুমতি এবং  ২০০৬ সালের ‘ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা’ আইনে বিষয়টি নিষিদ্ধ করা আছে। এই আইনের ক্ষমতাবলে লাইসেন্স বাতিলসহ আইনানুযায়ী অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে।

এরপর ২০১০ সালে বিধিমালা তৈরি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এতেও বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য বিদেশি চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হলো ‘কাজীর গরু কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’! ২০০৬ সালে প্রণীত ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক কার্যক্রম পরিচালনা আইনের ১৯ ধারার ১৩ উপধারায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য বিদেশি কোনো টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না’। কিন্তু এখনো বিদেশি টিভি চ্যানেলে অহরহ বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। সর্বশেষ বাংলাদেশি দর্শকদের জন্য বিদেশি চ্যানেলে সব ধরনের বিজ্ঞাপন বন্ধের নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ৮ই অক্টোবর রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশও মানা হচ্ছেনা।

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, ভারতীয় টিভি-চ্যানেলে এদেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপনই শুধু আমলে নেয়ার বিষয় নয় বরং গোটা ভারতীয় চ্যানেলের বিরূদ্ধেই বিশেষভাবে আমলে নেয়া একান্ত জরুরী।

কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের নারীসমাজের বেশিরভাগই ভারতীয় অপসংস্কৃতি তথা ভারীয় টিভি সিরিয়ালের নেশায় বুঁদ হয়ে রয়েছে। সন্ধ্যায় ঘরে দরোজায় পা দিতেই  কানে ভেসে আসে হিন্দুদের উলু ধ্বনি। পুজো অথবা কোনো শ্রাদ্ধের উলু ধ্বনি। আবার সকালে অফিস বা অন্য কর্মে যাবার সময়ও বেশ একই অবস্থা। সকালে ঘুম থেকে উঠা পর এবং রাতে শোবার ঘরে যাওয়া পর্যন্ত নারীরা এখন ভারতীয় সিরিয়ালের নানা কার্যক্রম অনুসরণ করতে শুরু করছে। আর ভারতীয় সিরিয়ালের কুপ্রভাবে দেশের মধ্যে নানা সামাজিক বিশৃঙ্খলা ও অপরাধ বেড়েই যাচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটা ঘরেই (যে কোনো সামাজিক অবস্থান হোক না কেন) বাড়ছে ভারতীয় সিরিয়াল দেখার আসক্তি। নারীরা যেমন এসব অপসংস্কৃতির প্রতি আসক্ত, তেমনি জড়িয়ে পড়ছে শিশুরাও। স্টার জলসা, স্টার প্লাস, জি বাংলা, জি টিভি, সনি- এসব চ্যানেল যেন এখন বাংলাদেশের নারীদের কাছে নিত্যদিনের কাজের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রান্না কিংবা খাওয়া হোক বা না হোক, এসব চ্যানেলে অনুষ্ঠিত নাটক তাদের যেন দেখতেই হবে। এই নাটকগুলোর প্রভাব এমন পড়ে যে, উল্লেখিত ঘটনাগুলোর দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়।

এই সিরিয়ালগুলো অপরাধের পুরো মদদ দিচ্ছে। প্রতিটি সিরিয়ালেরই বিষয়বস্তু পরকীয়া, স্বামী-স্ত্রী একে অন্যের প্রতি সন্দেহ, অবিশ্বাস, নারী-পুরুষের অবাধ সম্পর্ক, তুচ্ছ কারণে খুন, নির্যাতন, পরচর্চা ইত্যাদি। আর এসব দেখে আমাদের দেশের নারী ও পুরুষরাও অনুকরণ করছে। একটা সংসার কিভাবে নষ্ট করা যায় তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব উপায়ই এই সব সিরিয়ালে দেয়া আছে। আর বাংলাদেশের নারী-পুরুষ সেগুলো গোগ্রাসে গিলছে।

অভিজ্ঞমহল মনে করেন, ভারতীয় সিরিয়ালের আগ্রাসন সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এতই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, কোনো প্রতিষেধকই এখন আর কাজ করছে না।

অভিজাত শ্রেণী থেকে শুরু করে একেবারেই পতিত শ্রেণী, উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত পরিবার, বয়স্ক থেকে শিশু পর্যন্ত সবাই এই মহাব্যাধিতে নিমজ্জিত। দেশের শিশুরা এখন মায়ের ভাষা বাংলা শিখার আগেই হিন্দিতে কথা বলা রপ্ত করে ফেলছে। এখনকার নারীদের আড্ডা কিংবা বৈঠকের অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে অমুক চ্যানেলে অমুক সিরিয়ালের আলাপন।

ভারতীয় সিরিয়ালের মূল উদ্দেশ্য হলো- হিন্দুত্ববাদী চেতনাকে মুসলমানদের মন ও মস্তিষ্কে গ্রথিত করা। ভারতীয় হিন্দি ও বাংলা সিরিয়ালগুলো শুরু হয় কথিত ‘মঙ্গলপ্রদীপ’ জ্বালানোসহ ব্যাকগ্রাউন্ডে হিন্দু শ্লোক বা ধর্মসঙ্গীত দিয়ে। আবহসঙ্গীতে থাকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, মন্দিরের ঘণ্টা, ঢোল-বাদ্য, পূজার সঙ্গীত ইত্যাদি। ওইসব সিরিয়াল দেখে বাংলাদেশের তরুণী-মহিলারা যেভাবে মাতাল হচ্ছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। সেইসাথে আরো বলতে হয়, ভারতীয় সিরিয়াল আমদানির সুযোগ দিয়ে সরকারই এদেশে অবাধ ভারতীয় সংস্কৃতির লালন ও প্রসার করছে। যা সংবিধানের ২৩নং অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট খেলাপ। সংবিধানের ২৩নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার রক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।’

বলাবাহুল্য, এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান পবিত্র ও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আবর্তন করেই এদেশের শ্বাসত ঐতিহ্যৃ গড়ে উঠেছে। ঘোমটা তথা পর্দা এদেশের আবহমানকালের বৈশিষ্ট্য। পাশাপাশি উল্লেখ্য, যে মহান ব্যক্তিত্ব বা অজুদ মুবারকগন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রচারকারী উনারা সবাই ভাষাহীনভাবে পবিত্র থেকে মহাপবিত্রতম। যারা নায়েবে রসূল উনারা পবিত্র থেকে পবিত্রতম। অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাস পুরোটাই মহাপবিত্র। এমনকি সাধারণ মুছল্লীও এই পবিত্রতার বাইরে নয়। অপবিত্রতার বিন্দুমাত্র ঠাঁই নেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে। বরং আছে সুক্ষ থেকে সুক্ষতর হিসাব। এজন্য ব্যভিচারকেও অনেক দুর থেকে বিবেচনা করা হয়েছে এবং অনেক ভাগও করা হয়েছে। যেমন চোখের ব্যভিচার, কানের ব্যভিচার। নাউযুবিল্লাহ!

অথচ পবিত্র ইসলাম উনার দৃষ্টিতে; হিন্দুধর্মের কাহিনীগুলো পুরোটাই বিভিন্ন রকমের অশ্লীল আর অশালীন ব্যভিচারে ভরপুর। যে কারনে হিন্দুধর্মের প্রভাব পুষ্ট হয়ে ভারতীয় টিভি সিরিয়াল বর্তমান বেহায়াপনায় চলছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে “হায়া বা লজ্জা ঈমানের অঙ্গ”। কাজেই যাদের ঈমান নেই তাদের লজ্জাও থাকবেনা এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মুসলমানের ঈমান আছে, লজ্জাও আছে। কাজেই ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দেশে, রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দেশে ভারতের টিভি চ্যানেল চলতে পারেনা। এটাই সত্য। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ উনাদের বিরোধী কোন আইন পাশ হবেনা- এই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সরকারের উচিত- অবিলম্বে বিষয়টি বাস্তবায়ন করা।

-আল্লামা মুহম্মদ তা’রীফুর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১০৩

মুবারক হো- হাদিউল উমাম, বাবুল ইলম, কুতুবুল আলম, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ ছানী হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক বিলাদত শরীফ

হিন্দুরা অন্তর থেকে মুসলমানদেরকে ঘৃণা করে ও অস্পৃশ্য মনে করে। আবুল মনসুর আহমদ, বঙ্গবন্ধুর আত্মকথা, মীর মোশাররফসহ অনেক সাহিত্যিকের লেখনীতেই এর প্রমাণ রয়েছে। বিশেষত রবীন্দ্র বঙ্কিম শরৎসহ হিন্দু সাহিত্যিকদের রচনায় এর প্রমাণ বিস্তর। কিন্তু বর্তমানে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা ও হিন্দু তোষণকারী প্রশাসন পারলে হিন্দুদের মাথায় তুলে রাখে। হিন্দুরা যে মুসলমানদের শত্রু জ্ঞান করে- সে কথা অস্বীকার করে। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মুশরিক-হিন্দুদের বড় শত্রু বলা হয়েছে। অতএব, ওদের থেকে সাবধান।

ভারতকে কানেকটিভিটির নামে ট্রানজিট দেয়ার বৈধতা বর্তমান সরকারের নেই। ভারতকে কোনোমতেই ট্রানজিট দেয়া যাবে না। দিলে ৯৭ ভাগ ঈমানদার জনগোষ্ঠী বরদাশত করবে না।

আন্তর্জাতিক পানি ব্যবহারের বিধিবিধান লঙ্ঘন করে ভারত নির্মাণ করছে টিপাইমুখ বাঁধ। বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের জোর প্রতিবাদ দরকার।