খুব বেশী কিছু বলার দরকার নেই। সহজ সমীকরণ। মুসলমানদের ইবাদতখানা মসজিদ। মসজিদ আল্লাহ পাক-এর ঘর। মসজিদে বসে চুপ থাকাও ইবাদত। মসজিদে জামায়াতে নামায আদায় করলে সাতাশ থেকে পাঁচশ’ গুণ বেশী ফযীলত পাওয়া যায়।
কোন কোন মসজিদে এক, দুই, পাঁচ হাজার মুছল্লীরও সমাবেশ হয়। এত মুছল্লী জামায়াতে নামায আদায় করলে, কেউ যিকির-আযকার করলে, কেউ দুরূদ শরীফ পড়লে, কেউ কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করলে কি মোহনীয় দৃশ্যের অবতারণা হয়! কত রহমত, বরকত বর্ষিত হয়! কত বড় নেকীর কাজ হয়!
তবে এর সাথে শুধুমাত্র একটা কিন্তু রয়েছে। যত মুছল্লী নামায আদায় করুক, যত আবেদ যতই ইবাদত-বন্দিগী করুক সব নামায আদায়ই নাজায়িয হবে, সব ইবাদতই কবুলহীন হবে যদি ঐ মসজিদটি হালাল টাকায় না হয়। অথবা হালালভাবে না হয়। জায়গাটি বৈধ না হয়।
সারাদেশে এমন অনেক বড় মসজিদ রয়েছে যা কোন চিহ্নিত বড় স্মাগলার, সন্ত্রাসী করে দিয়েছে। দেশের ২৩ সন্ত্রাসীর একজন টোকাই সাগরও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে তার ডাকাতির টাকায় এক বিশাল মসজিদ তৈরী করেছে। এছাড়া সরকারী খাছ জায়গা দখল করে ধর্মব্যবসায়ীদের মসজিদ করার কাহিনীও ঢের রয়েছে।
প্রশাসনের ডিসি, এডিসি রেভেনিও, এসি ল্যান্ড, ওসি তথা রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সম্পর্কে ওয়াকিফহাল রয়েছেন।
মুছল্লীদের সবার ইবাদতই ইসলামের দৃষ্টিতে নাজায়িয হবে যদি মসজিদ তৈরীর একজন অংশগ্রহণকারীর টাকাও হারাম হয়। ইসলাম এমনই পবিত্র জিনিষ।
কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “খারাপ থেকে খারাপিরই জন্ম হয়।”
(২)
মহান আল্লাহ পাক-এর একটি হুকুম অমান্য করার কারণে ছয় লক্ষ বছর ইবাদত করার পর ফেরেশ্তাদের সর্দার আজাজিল মালউন তথা অভিশপ্ত ইবলিসে পরিণত হয়। লা’নতপ্রাপ্ত হয়ে ছয় লক্ষ বছরের ইবাদতের বিনিময় চাইতে গিয়েও সে বিকৃত রুচীর পরিচয় দেয়। সে চায় ক্বিয়ামত পর্যন্ত হায়াত। প্রতিটি মানুষের রক্ত বিন্দুতে ওয়াস্ওয়াসা দেয়ার কুয়ত। নবী-রসূল, আউলিয়ায়ে কিরামের বিপরীতে সে গ্রহণ করে নর্তকী, বাদকী, নায়িকা, গায়িকাদের।
আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয় বান্দার জন্য আযানের কথা বললে ইবলসিও তার বিপরীত কিছু দাবী করে। অত:পর সে গান-বাজনাকে, বেপর্দা, বেহায়াকে গ্রহণ করে।
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “গানবাদ্য শয়তানের অস্ত্র। এ অস্ত্রের সাহায্যে শয়তান মানুষের মনে নিফাক, কপটতা, তৈরী করে।”
এতদ্বপ্রেক্ষিতে বলা যায়, ইবলিসের দৃষ্টিতে নায়িকা, গায়িকারা হলো শয়তানের নায়িব তথা ওলী। যারা আজকে তথাকথিত সংস্কৃতি কর্মী, সেলিব্রেটি তথা ‘তারকা’ নামে অভিহিত। এই তারকাদের অন্যতম মাধ্যম হলো টিভি চ্যানেলগুলো। এনটিভি এ ধরনের একটি চ্যানেল। গত ৩রা জুলাই-২০০৫ ঈসায়ী এরা বর্ষপূর্তি পালন করে। পত্রিকায় পত্রস্থ হয়:
বর্ষপূর্তি আজ
স্টাফ রিপোর্টার: ‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’ ে াগান নিয়ে যাত্রা শুরু করে বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এনটিভি শুরু করেছে নানা অনুষ্ঠানমালা। গত শুক্র ও শনিবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজন করা হয় প্রীতি সমাবেশের। দেশের চলচ্চিত্র, টিভি মিডিয়ার সব খ্যাতিমান তারকা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে প্রীতি সমাবেশ পরিণত হয় আনন্দমেলায়। (দৈনিক আমার দেশ, ৩ জুন-২০০৫, ১ পৃষ্ঠা)
এনটিভির দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি :
প্রীতি সমাবেশ পরিণত হয় আনন্দমেলায়
স্টাফ রিপোর্টার: দীপ ছিল, শিখা ছিল, সঙ্গে ছিল চন্দ্র-তারকা। গতকাল আষাঢ়ের বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এনটিভির দ্বিতীয় বর্ষপূর্তী এবং তৃতীয় বর্ষে পদাপর্ণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বসেছিল তারকাদের মেলা, প্রীতি সমাবেশ। দেশের চলচ্চিত্র, টিভি মিডিয়ার সব খ্যাতিমান তারকার উপস্থিতিতে প্রীতি সমাবেশ পরিণত হয় আনন্দমেলায়। শহরের আধুনিক গ্রামখ্যাত হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত প্রীতি সমাবেশের শুরুতেই দর্শকের তুমুল করতালির মধ্য দিয়ে মঞ্চে আসেন এনটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী এমপি। স্বাগত ভাষণে তিনি বলেন, দেশীয় সংস্কৃতির লালন ও বিকাশের সর্বোচ্চ মাধ্যম হিসেবে এনটিভি সর্বদা মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করে যাবে। এরপর চ্যানেলটির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ জানালেন তার অনুভূতি। বৃষ্টিস্নাত মনোরম সন্ধ্যায় আলো ঝলমল হয়ে উঠেছে তারকাদের আগমনে।
এ দু’জনের অল্পকথনের পর শুরু হয় সাংস্কৃতির অনুষ্ঠান। এ পর্ব শুরু করেন নন্দিত শিল্পী রফিকুল আলম। নৃত্যশিল্পী নাদিয়া বলেন, এনটিভিতে আরো নাচ চাই। চিত্রনায়ক আলমগীর এসেছিলেন ছাইরঙা পাঞ্জাবি পড়ে। সঙ্গে ছিলেন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা। উপস্থিত ছিলেন চ্যানেল আই পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি, সাহিত্যিক নাসরিন জাহান, নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, শিল্পী ডলি সায়ন্তনী, অভিনেতা মাসুদ আলী খান, রামেন্দ্র মজুমদার, শিল্পী মাহমুদুজ্জামান বাবু, উপস্থাপুক আব্দুন্ নূর তুষারসহ বিভিন্ন মিডিয়ার শিল্লী-কলাকুশলীরা। ঈশিতাকে ঘিরে বসেছিলো কিশোরী তারকাদের আড্ডা। (দৈনিক আমার দেশ, ২ জুলাই-২০০৫ ঈসায়ী, ১৬ পৃষ্ঠা)
এনটিভির এত সব খবরের পাশাপাশি আরেকটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ্য। ৩রা জুলাই-২০০৫ ঈসায়ী দৈনিক সমকালে পত্রস্থ হয়:
আজ এনটিভির দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি
তিনদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন
… আজকের অনুষ্ঠানমালা শুরু হচ্ছে সকাল থেকে। ৬টা ১০ মিনিটে প্রচার হবে এনটিভির ইসলামী অনুষ্ঠানের সংকলন নিয়ে “বর্ষপরিক্রমায় ইসলামী অনুষ্ঠান।”
অর্থাৎ কথিত টিভি চ্যানেলগুলোতে পালাগান, টক’শো, টেলিফিল্ম, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা, জাদু, নৃত্যানুষ্ঠান, নাটক ইত্যাদির পাশাপাশি হবে তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠান।
এ লেখার প্রথমে সমীকরণের কথা বলা হয়েছে। বীজগণিতের অ আ হচ্ছে সমীকরণ। যেমন, যদি ক= ২ হয়; খ= ২ হয় তাহলে ক=খ।
তদ্রুপ প্রথমেই বলতে হয়, চিত্রনায়ক আলমগীর থেকে গায়িকা রুনা লায়লাসহ যাবতীয় তারকারা যদি এনটিভির পারফর্মার হয়
পাশাপাশি তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠানের মাওলানারাও যদি এনটিভির তথা টিভি চ্যানেলগুলোর পারফর্মার হন
তাহলে বলতে হয়, নায়ক আলমগীর, গায়িকা রুনা লায়লাসহ নাট্যকার রামেন্দ্র মজুমদার, যাবতীয় তারকা
=
টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রোগ্রামকারী মুফতী, মাওলানা, মুফাস্সিরে কুরআন গং।
এ কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই যে, টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রোগ্রামকারী ঐ সব নামধারী মুফতী মাওলানারা একান্তভাবেই চিত্র নায়ক আলমগীর, গায়িকা রুনা লায়লা, নায়িকা মৌসুমী যাদের নাম দৈনিক পত্রিকায় এসেছে তাদের একান্তই সহযোগী বা সহকর্মী।
অর্থাৎ তারা নিশ্চিতভাবেই ঐসব নায়িকা, গায়িকা, দাইয়্যূস তথা শয়তানের ওলী বা নায়িবের দলভুক্ত সম্প্রদায়। যারা মূলত: শয়তানের আযানদাতা হিসেবে কাজ করে বেপর্দা, বেহায়ার বিস্তার ঘটায়।
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “যে যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে তার হাশর-নশর তার সাথেই হবে।”
অতএব, টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রামকারী নায়িকা, গায়িকা তারকাদের সাথেই যে ঐসব নামধারী মুফতী, মাওলানাদের হাশর-নশর হবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
(৩)
পাশাপাশি “টিভি সিনেমা জায়িয করার প্রেক্ষিতে তাদেরকে যে ঈমানদারও বলা যায়না”- এ বক্তব্যও সন্দেহ, সংশয়ের ঊর্ধ্বে। এমনকি তাদের শীর্ষ নেতা তথাকথিত শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক ছাহেবও তার “আল কুরআনের দৃষ্টিতে মহিলাদের পর্দা” শীর্ষক বইয়ে সে বক্তব্য দিয়েছে।
তার ভাষায়: “…..
পর্দা প্রথা উচ্ছেদ করার প্রধান হাতিয়ার
ইসলামের শত্রুরা ইসলামের পর্দা প্রথাকে উচ্ছেদ করার জন্য সর্ব প্রধান হাতিয়ার হিসেবে যা ব্যবহার করেছেন তা হচ্ছে এই যে, তারা আমাদের ঘরে ঘরে টিভি, ভিসিআর, সিনেমা ইত্যাদি গুনাহ্ ও পাপকর্মে উত্তেজিতকারী যন্ত্র সমূহকে খুব সহজে পৌঁছায়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ পর্দা প্রথা ধ্বংস করে অশ্লীলতা বৃদ্ধির জন্য এসব যন্ত্রকে সামাজিক আগ্রাসন হিসেবে ইসলামের শত্রুরা ব্যবহার করেছে, কারণ কোন জাতিকে সমূলে বিনাশ করতে কিংবা জাতির নৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিতে এবং জাতির অস্তিত্ব মুছে ফেলতে বিরুদ্ধবাদী শক্তি দু’ভাবে আগ্রাসন চালায়, সামরিক আগ্রাসন ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। টিভি, সিনেমা, ভিসিআরে এমন ধরনের নাচ গান নাটক ছায়াছবি প্রদর্শিত হয় যা মানুষের ইন্দ্রিয়বৃত্তি, পাশবিক লোভ লালসাকে উত্তিজিত করে তোলে। মানুষের সভ্যতা ও নৈতিকতার দেয়াল ভাঙ্গার জন্য এ জাতীয় অনুষ্ঠানের প্রভাব কত যে মারাত্মক সচেতন শিক্ষিত অভিভাবকগণ তা হাড়ে হাড়ে অনুভব করছেন। টিভি, সিনেমা, ভিসিআরের অধিকাংশ অনুষ্ঠানমালা প্রেম ঘটিত, সুপ্ত লালসা প্রভাবিত বিজ্ঞাপন, দেশী বিদেশী মারদাঙ্গা ছায়াছবি যে গুলোতে সরাসরি চুরি, ডাকাতি, হাইজ্যাক, অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা, লুণ্ঠন, অবৈধ প্রেম প্রভৃতির বাস্তব অনুশীলন দেয়া হয়। এসব ছবি শিশু, কিশোর, যুবক, যুবতীদের উপর কি রকম প্রভাব ফেলছে তা বর্তমানে আমাদের সমাজ চিত্র দেখলেই অনুমান করা যায়। আজ সারা দেশে খুন খারাবী, নারী নির্যাতন, নারী অপহরণ ঘটছে অহরহ। এসব কি টিভি, সিনেমা, ভিসিআর প্রদর্শিত ছায়াছবির কুপ্রভাব ও বাস্তব প্রতিফলন নয়।
হুযূরে আকরাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমি বাদ্যযন্ত্র ধ্বংস করার জন্য প্রেরিত হয়েছি।” অন্যত্র ইরশাদ করেন, “গানবাদ্য শয়তানের মন্ত্র। এ মন্ত্রের সাহায্যে শয়তান মানুষের মনে নিফাক তথা কপটতা, বিশ্বাসঘাতকতা সৃষ্টি করে।” হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফ আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে।”
টেলিভিশন সিনেমার দ্বীনি ক্ষতি এই, আল্লাহ রব্বুল আলামীন কুরআন শরীফে ইরশাদ করেন, “হে নবী (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি মু’মিন পুরুষদেরকে বলে দিন, যেন তারা তাদের চক্ষুদ্বয়কে বেগানা রমণীদের দেখা হতে অবনত রাখে এবং নিজেদের ইজ্জতকে হেফাযতে রাখে। এভাবে মুমিনা মহিলাদেরকেও বলে দিন যে, তারা যেন তাদের চক্ষুদ্বয়কে বেগানা পুরুষদের দেখা হতে অবনত রাখে এবং নিজের ইজ্জতকে হেফাজত রাখে।”
বর্তমানে সমাজের সিনেমা ও টিভির পর্দাতে ছবিগুলো দেখার মাধ্যমে নারীর দৃষ্টি পড়ছে পুরুষের উপর। তদ্রুপ পুরুষের লোলুপ দৃষ্টি পড়ছে নারীদের উপর। অথচ কুরআন শরীফে বেগানা পুরুষ ও মহিলাদের পরস্পর দৃষ্টি দেয়া থেকে নিষেধ করা হয়েছে।
অন্য আয়াত শরীফে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, “তোমরা ব্যাভিচারের নিকটবর্তী হইও না। কারণ এটা অশালীন কাজ, খারাপ পথ।” বর্তমান উলঙ্গ অশালীন ছবিগুলো টিভি ও সিনেমার পর্দায় দেখানোর ফলে তরুণ সমাজ থেকে শুরু করে সর্বস্তরের লোক ব্যাভিচার ও অশালীনতার প্রতি উদগ্রীব হচ্ছে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “যারা দুনিয়ায় গান-বাজনা শুনবে ক্বিয়ামতের দিন তাদের কানে গলিত উত্তপ্ত সিসা ঢেলে দেয়া হবে।” উল্লিখিত হাদীছ শরীফ দ্বারা খুব সহজে বুঝে আসছে যে, গানবাদ্য মারাত্মক গুনাহের কাজ। টিভির অশালীন অনুষ্ঠান হারাম জেনে দর্শন করা ফাসিকী কাজ। আর হালাল মনে করে দর্শন করা কুফরী কাজ; তাতে ঈমান চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ….”
অর্থাৎ যেসব মুফতী, মাওলানা, মুফাস্সিরে কুরআন, খতীব টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রাম করে তারা ইসলামের শিক্ষা দেয়া দূরের কথা বরং তারা নিজেরাই তাদের শীর্ষ নেতার ফতওয়া অনুযায়ী ঈমান হারা ফাসিক গোমরাহ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে।
মূলত: এটা কঠিন কোন কথা নয়। সহজ কথা। ইসলামের কথা। কুরআন-সুন্নাহ্র কথা। লক্ষাধিক মুছল্লীর নামাযও যদি হারাম টাকা দিয়ে মসজিদ বানাবার কারণে ফউত হয় অর্থাৎ নামায না হয় তাহলে হারাম আর নাজায়িযের কারখানা টিভি চ্যানেলগুলোতে তথাকথিত ইসলামী প্রোগ্রামগুলো জায়িয হতে পারে কিভাবে? তথাকথিত টিভি চ্যানেলগুলো হলো দাইয়্যূসের জলসা ঘর। সেখানে পবিত্র ইসলামের আলোচনা করা যায় কিভাবে?
প্রসঙ্গত: ইমামে আ’যম, হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ফতওয়া হলো, যে স্থানে গান-বাজনা হয় সে স্থানের মাটি তুলে না ফেলা পর্যন্ত সেখানে নামায হবে না।”
যদি তাই হয়, তাহলে তথাকথিত মাওলানারা কি করে শয়তানের বাক্সে ঢুকে ইসলামের কথা বলতে পারে? দাইয়্যূসদের জলসা ঘরে থাকতে পারে?
কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক বলেন, “নিশ্চয়ই কাফির-মুশরিকরা নাপাক।”
মূলত: টিভি চ্যানেলগুলো জায়িয করার অর্থ হচ্ছে, ছবি, বেপর্দা, বেহায়া, গান, নৃত্য, ব্যাভিচার ইত্যাদি সব হারামকে একই সাথে হালাল করা। আর একটি হারামকেও যে হালাল বলে সেই কাফির হয়ে যায়।
অতএব, এতসব হারামকে হালালকারী টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রামকারী তথাকথিত মাওলানা, মুফতী, মুফাস্সিরে কুরআন, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামি চিন্তাবিদ এদের ঈমান থাকে কি করে?
মূলত: এরা বহু পূর্বেই তাদের ঈমান হারিয়েছে। তারা এখন কুফরীতে নিমজ্জিত হয়েছে। তারা সম্পূর্ণ নাপাক হয়েছে। তাই কঠিন হারাম ও চরম নাপাক স্থান- শয়তানের বাক্স তথা দাইয়্যূসদের জলসা ঘরে তথা রং মহলে যেতে তাদের অন্তর আদৌ আটকায় না।
উদাহরণত: এই রংমহল সম্পর্কে ‘এনটিভির প্রীতি সম্মেলন পুরস্কার পেল দশ কোম্পানি ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা’ শীর্ষক খবরে স্টাফ রিপোর্টারের বরাতে প্রথমেই লেখা হয়: পুরো মঞ্চ আর বিশাল পর্দা জুড়ে তখন রংয়ের নাচন। যেন জলতরঙ্গে ঝিলমিল ঝিলমিল ঢেউ তুলে সে যায়। কে যায়? এনটিভি।” স্টাফ রিপোর্টারের বরাতেও এই হচ্ছে এনটিভি তথা টিভি চ্যানেলের বর্ণনা।
প্রসঙ্গত: যদি এর পরের প্রশ্ন করা হয়, এনটিভিতে কোন্ ধরনের মাওলানা যায়? ইসলামের দৃষ্টিতে তখন জবাব দাঁড়ায় ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ‘ছূ’। কুরআন শরীফে যাদেরকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ পাক বলেছেন, “নিশ্চয়ই মানুষ ও জ্বীনের মধ্যে যারা নিকৃষ্ট তাদেরকেই আমি যুগে যুগে নবী-রসূল তথা আউলিয়ায়ে কিরামের শত্রু বানিয়েছি।” অর্থাৎ শয়তান প্রকৃতির নিকৃষ্ট জ্বীন-ইনসানেরাই নবী-রসূল ও আউলিয়ায়ে কিরামগণের সাথে শত্রুতা করে থাকে।
ঠিক তাই দেখা যায় যে, হারাম আর নাপাকির সন্তান ঐসব উলামায়ে ‘ছূ’রা জলসা ঘর তথা রং মহলে যখন যায় তখন শয়তান তাদের চোখ ঝলসিয়ে দেয়। দুনিয়ার রং লাগিয়ে দেয়। দ্বীন ইসলামের আসল কথা ভুলিয়ে দেয়। নাপাক-কুফরী কথা বের করায়।
শয়তানের বাক্সে ঢুকে পড়ায় শয়তান তাদের কণ্ঠে শয়তানী শক্তি যোগায়। মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর দেয়াল লেখনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা বুলি কপচায়। আর ঐ জলসা ঘর থেকে বেরিয়ে আল বাইয়্যিনাত-এর প্রকাশ্য বাহাছের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের ভয়ে লেজ গুটিয়ে পালায়।
মহান আল্লাহ পাক তাঁর কালাম পাকে ইরশাদ করেন, “সত্য সমাগত, মিথ্যা দূরীভূত।”
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, বাসাবো, ঢাকা।
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫