আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন যখন তাঁর হয় লক্ষ বছর যাবত ইবাদত বন্দেগীকারী, মুয়াল্লিমুল মালাইকাহ, মালউন ইবলীস কে প্রথম নবী, রসূল ও মানব হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সেজদা করতে বললেন, তখন সে সেজদা করলো না; বরং সে অহঙ্কার করলো। :
এই প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে বলেন, “আমি সমস্ত ফেরেশতাদেরকে হযরত আদম আলাইহিস্ সালামকে সেজদা করতে বললাম, সবাই সেজদা করলেন, ইবলীস সেজদা কারীদের অন্তর্ভুক্ত হলোনা। তিনি (আল্লাহ পাক) বললেন, আমি যখন তোমাকে (ইবলীসকে) সেজদা করতে বললাম তখন কে তোমাকে সেজদা করা থেকে বিরত রাখলো? সে বললো, আমি তাঁর থেকে উত্তম। আমাকে আগুন থেকে তৈরী করেছেন, আর তাঁকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি (আল্লাহ পাক) বললেন, তুমি এখান থেকে নিচে নেমে যাও।” (সূরা আ’রাফ/১১-১৩)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি (আল্লাহ পাক) বললেন, তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও, নিশ্চয়ই তুমি বিতাড়িত। আর নিঃসন্দেহে তোমার প্রতি
আমার লা’নত অনন্ত কালের জন্য।’ (সূরাঃ হুদ/৭৬-৭৮) তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ রয়েছে, ইবলীস যখন আল্লাহ পাক- এর সাথে
তর্ক-বির্তক করলো, যুক্তি দেখালো, সে আগুনের তৈরী আর হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম মাটির তৈরী, আগুন সব সময় উপরে থাকে, আর মাটি সব সময় নিচে থাকে। তাহলে সে কি ভাবে হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সেজদা করতে পারে? তখন আল্লাহ পাক তার প্রতি গোস্বা • করলেন, তাকে বিতাড়িত করে দিলেন, তার প্রতি লা’নত বর্ষণ করবেন।
ফেরেশতা আলাইহিমুস্ সালামগণ সেজদা হতে উঠে দেখলেন, ইবলীসের চেহারা বিকট হয়ে গেছে, চোখ কপালে উঠে গেছে, আকৃতি-বিকৃতী হয়ে গেছে।
(নাউযুবিল্লাহ)
বনী ইসরাঈলের দরবেশ বালআম বিন বাউরা তিনশত বৎসর সাধনা করে অনেক বুজুগী হাছিল করেছিল। সে উপরের দিকে তাকালে আরশে আযীম দেখতে পেতো এবং নিচের দিকে তাকালে তাহতাছ হারা দেখতে পেতো। প্রতিদিন দশ হাজার আলিম-উলামা তা’লীম-তালকীন নেয়ার জন্য তার দরবারে হাজির হতো। এতো কিছুর পরও, আল্লাহ পাক-এর জলীলুল হৃদর রসূল হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম এবং আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত ইউশা বিন্ নূন আলাইহিস সালম-এর সাথে বেয়াদবী ও তাঁদের বিরুদ্ধে বদ দোয়া করার কারণে তার আকৃতি বিকৃতি হয়ে যায়, মালউন হয়ে সে মারা যায়। তার সম্পর্কে আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে বলেন, “তার মেছাল হচ্ছে কুকুরের ন্যায়।” (সূরা আ’রাফ/১৭৬)
হযরত মূসা আলাইহিস্ সালাম-এর উপর নাযিলকৃত আসমানী কিতাব “তাওরাত শরীফ” এর অপব্যাখ্যা ও অবমাননা করার কারণে বণী ইসরাঈলের নামধারী বিরাট মাওলানা আবুল হারেছা মানুষ থেকে আকৃতি-বিকৃতি হয়ে বড় সাপ হয়ে যায়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, এই নাজুক অবস্থাতেই তার মৃত্যু হয়। (নাউজুবিল্লাহ)
উল্লেখ্য যে, অতীতে আকৃতি-বিকৃতি হয়েছে, বর্তমানেও যারা ইবলীস, বালআম বিন বাউরা ও আবুল হারেছা মাওলানার কায়িম-মক্কাম তথাকথিত পীর-দরবেশ, মাওলানা-মুফতীদেরও আকৃতি বিকৃতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে ও হবে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সম্মানার্থে জীবিত অবস্থায় না হলেও মৃত্যুর পর অবশ্যই তাদের আকৃতি বিকৃতি হচ্ছে এবং হবে।
ইবলীস্, বালতাম বিন বাউরা ও আবুল হারেছা মাওলানার আকৃতি-বিকৃতি হয়েছিল যথাক্রমে আল্লাহ পাক-এর আদেশ অমান্য করার কারণে, প্রথম নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম-এর সাথে বেয়াদবী করার কারণে, জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ও হযরত ইউশা বিন্ নূন
আলাইহিস সালাম-এর সাথে বেয়াদবী ও তাঁদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করার
কারণে এবং ” তাওরাত শরীফ” এর অবমাননা ও অপব্যাখ্যা করার কারণে। বর্তমানে নবী-রাসূল নেই সত্য কথা; কিন্তু ওলী-মুর্শিদ তথা মুজাদ্দিদে যামানগণ রয়েছেন। খাছ করে যাঁরা মুজাদ্দিদে যামান হন, তাঁদের মার্যাদা; এক কথায়- তাঁরা শুধু নবী রসূল নন তাছাড়া বাকী সমস্ত মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী। (সুবহানাল্লাহ)
একটি উচুল রয়েছে যে, ফেৎনা-ফাসাদ যতো বেশি হয় মুজাদ্দিদে যামানগণ ও তত বেশি মর্যাদা-মর্তবা সম্পন্ন হন। বর্তমান সময়টা হুবহু জাহিলিয়াতের ন্যায় ঘন পতীর অন্ধকারে নিমজ্জিত। সঙ্গত কারণে বর্তমান পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, আল-মুজাদ্দিদুল আ’যম, জামিউল আউলিয়া, হাবীবুল্লাহ, মুহইস সুন্নাহ্, আওলাদে রসূল হযরত ইমাম রাজারবাগ শরীফের মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মর্যাদা-মর্তবা সহজেই অনুমেয়। তিনি নবী-রসূল নন, তবে তা ব্যতিত তিনি উম্মত হিসেবে অন্যান্য সমস্ত মর্যাদার অধিকারী। (সুবহানাল্লাহ)
যে সমস্ত উলামায় “ডু”রা তাঁর সাথে বেয়াদবী করেছে, করছে বা করবে এবং তাঁর বিরোধিতা করেছে, করছে বা করবে, তারা বাহ্যিক দৃষ্টিকোণ হতে ইবলীস, বালআম বিন বাউরা ও আবুল হারেছা মাওলানা-এর মতো যতই ইবাদত-বন্দেগী করুক না কেন, তা’লীম-তরবীয়ত, দরস্-তাদরীস প্রদান করুক না কেন, তাদেরও আকৃতি-বিকৃতি হয়েছে, হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে তাতে কোন শক-শোবাহ(সন্দেহ) নেই। কেননা আল্লাহ পাক হাসছে কুদসীতে বলেন, “যে ব্যক্তি আমার ওলীর বিরোধিতা করে, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি। (নাউযুবিল্লাহ)
আর আল্লাহ্ পাক যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, তার অবস্থা কত করুণ হতে পারে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি তার যামানার ইমাম কে চিনলনা, সে যেন জাহিলিয়াতের (কুফরী অবস্থার) মধ্যে মারা গেল। (দায়লামী শরীফ)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে যে, যামানার ইমাম অর্থাৎ মুজাদিদে যামান কে না চিনার কারণে যদি জাহিলিয়াতের মধ্যে মৃত্যু হয়; তাহলে যে ব্যক্তি আল মুজাদ্দিদুল আ’যম, মামদুহ, মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর বিরোধিতা করবে, তাঁর সাথে বেয়াদবী করবে, তার আকৃতি-বিকৃতি ঘটবে এটাই স্বাভাবিক।
জ্ঞাতব্য যে, আমাদের মাথার তাজ, নয়নের মণি হাল যামানার মুজাদ্দিদ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মুবারক শানে, তাঁর সম্মানিত পীর ও মুর্শিদ মুজাদ্দিদে যামান হযরত আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াযীহুল্লাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, “শাহ্ ছাহেবের সাথে যে বা যারা বেয়াদবী করবে, সে বা তারা বেঈমান হয়ে মারা যাবে।”(নাউযুবিল্লাহ)
মূলতঃ উপরোল্লিখিত হাদীছ শরীফ ও মুবারক ভবিষ্যতবাণীর বাস্তবতা আমরা এখন ইবলীস, বাল আম বিন বাউরা ও আবুল হারেছা মাওলানার উত্তরাধিকারী উলামায়ে “ছু” দের মাঝে অবলোকন করছি মাত্র।
ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আমীর মৌলবাদী দাবীদার, চর্মনাইয়র তথাকথিত পীর ফজলুল করীম ও আল্লাহ পাক-এর সেই কঠিন পরিণতি থেকে রেহাই পায়নি। তার ও তার অন্ধভক্তদের শত কোশেশের পরও আল্লাহ পাক তার হাক্বীকৃত ফাঁস করে দিলেন। মৃত্যুর তিনদিন পূর্বে তার চেহারা বিকৃত হয়ে অন্যরূপ ধারণ করে। ২৬শে নভেম্বর “দৈনিক, যুগান্তরে” তার মৃত্যুর কয়েক দিন পূর্বের এই বিকৃত ছবিটি পাবলিস্ট করে। মৃত্যুর পর হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া অপর কাউকে বিকৃত লাশটি দেখতে দেয়া হয়নি, যদিও সে তার খাছ ভক্ত হউক না কেন।
বলাবাহুল্য, মৃত্যুর কয়েক দিন পূর্বেই যদি আকৃতি বিকৃত হয়, তাহলে মৃত্যুর পর কিরূপ আকৃতি হবে তা ভাববার বিষয়। প্রকৃতপক্ষে এই সুস্পষ্ট সত্যকে ধামাচাপা দেয়ার জন্যই মৃত্যুর পর বিকৃত। লাশ কাউকে দেখানো হয় নি। যদি সে ওলী আল্লাহ-ই হয়ে থাকে তাহলে তার আকৃতি-বিকৃতি হবে কেন? বরং মৃত্যুর পর ওলী আল্লাহগণের প্রকৃত রূপ আরো ব্যাপক আকারে সুস্পষ্ট ভাবে জাহির হয়ে যায়। ইতিহাস এই সত্য প্রকাশে কোন দ্বিধাবোধ করেনা। তৃতীয় হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ হযরত যুননুন মিসরী
রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং সপ্তম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ হযরত খাজা
ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ইন্তেকালের পর কপাল মুবারকে সোনালী হরফে লেখা উঠেছিল-
هذا حَبِيْبُ اللَّهِ مَاتَ فِي حُبِّ اللَّهِ
“ইনি আল্লাহ পাক-এর হাবীব, আল্লাহ পাক-এর মুহব্বতেই তিনি
ইন্তেকাল করেছেন।” কিন্তু মৃত্যুর পর চর্মনাইর তথাকথিত পীরের লাশ জন সম্মুখে না দেখানোটা কি এটাই প্রমাণ করে না যে, প্রকৃত পক্ষে তার লাশ কঠিনভাবে বিকৃতি হয়েছিল? তাই আল্লাহ পাক বলেন, “তিনি হক্ক না হজ্বের মাঝে পার্থক্য সৃষ্টি করে থাকেন।”
অন্যদিকে ফুরফুরা শরীফের ত্যাজ্য নাতি তথাকথিত নামধারী পীর আবুল আনছার-এর মৃত্যুর পর মুখ ও শরীর থেকে দূর্গন্ধ বের হয়েছিল। নির্ভরযোগ্য সূত্র ও সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে এই কথা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট সত্য যে, মৃত্যুর পর আবুল আনসারের ফর্সা চেহরা বিশেষ করে কপালটা অত্যন্ত কালো হয়ে যায়। নাক, চোখ ও বুক ফুলে যায়, পেটটা ফেঁপে যায় এবং ঘাড় বাম দিকে কাঁত হয়ে যায়, শত চেষ্টার পর জানাযার সময় ও দাফনের সময় ঘাড় ডান দিকে কাত করা সম্ভব হয়নি। মোট কথা সব কিছু মিলিয়ে তার
চেহারা বিকট রূপ ধারণ করেছিল। সাধারণভাবে ডীপ ফ্রিজে -এক বছর গোশ্ত থাকলেও গোশতের কোন ক্ষতি হয় না, দুর্গন্ধতো আসার প্রশ্নই উঠে না। একেতো শীতকাল মানুষের মৃতদেহ স্বাভাবিক ভাবেই ভালো থাকার কথা, কিন্তু মুজাদ্দিদে আ’যমের সাথে বেয়াদবী ও তাঁর বিরোধিতা করার কারণে আল্লাহ্ পাক-এর লা’নত পতিত হওয়ায় মাত্র দুই দিন ডীপ ফ্রিজে রাখার পরেও বিকৃতি লাশ ফুলে-পচে এরূপ অসহ্যনীয় দূর্গন্ধময় হয়ে যায় যে, মানুষের পক্ষে তার নিকট যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছিলো। (নাউযুবিল্লাহ)
এখন বর্তমানে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে ‘ছু’ যথা শায়খুল হদছ, মাহিউদ্দীন, কমিনী, বাংলার ইহুদী, বায়তুল মুকাররমের জাতীয় খবীছ তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ীদের এখনও সময় রয়েছে তারা আল মুজাদ্দিদুল আ’যম, জামিউল আউলিয়া, সুলত্বানুন নাছীর, মুহইস সুন্নাহ, আওলাদে রসূল হযরত ইমাম রাজারবাগ শরীফের মুর্শিদ কিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মুবারক হাতে হাত রেখে তওবা করে, তাঁর সাথে বেআদবী ও তাঁর বিরোধিতা না করে, অন্যথায় তাদেরও আকৃতি-বিকৃতি হয়ে যাবে, এতে কোন সন্দেহ নেই।
আয় আল্লাহ পাক! আমাদেরকে যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ মামদুহ মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ছোহবত ও ইতায়াতের মাধ্যমে আপনার ও আপনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি- রেযামন্দী লাভ করার তাওফীকু দান করুন। (আমীন)
-আল আমিন, কল্যাণপুর, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২