‘হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই’-এ রকম শ্লোগান কেউ কেউ দিতে বেশ আগ্রহী। এমনকি হক্ব সিলসিলার ত্যাজ্য এক নাতি ছাহেবও এ ধারার বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
কেউ কেউ আবার হিন্দুদের চেতনাবাহী শব্দকে পরিহার করতে ঘোর আপত্তি তুলেন। তারা ভাষাকে নির্বিচারে গ্রহণে আগ্রহী।
অথচ শব্দও যে চেতনার প্রতীক, একথা তারা মূল্যায়ণে ব্যর্থ হন।
‘গোশতকে’ অনেক মুসলমানই মাংস বলে থাকে। কিন্তু আসলে মাংস শব্দটি হিন্দুদের চেতনাবাহী। এটি সন্ধি বিচ্ছেদে মা+অংশ এবং ব্যাসবাক্য হিসেবে মায়ের অংশ হয়। উল্লেখ্য, হিন্দুরা গরুকে মা বলে থাকে।
যদিও কোন কোন মহল এ ব্যাখ্যা মানতে রাজী নন। কারণ, কৌশলবাদী হিন্দুরা এ চেতনাবোধ ইদানিং প্রকাশ করেছেন না। কিন্তু তারপরেও ঘটনাক্রমে প্রকৃত সত্যটি প্রকাশিত হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে রয়টার্স পরিবেশিত এ খবরে বলা হয়।,
সর্বরোগের মহৌষধ গোবর
কাগজ ডেস্ক: ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদ কর্মী ও অনুসারীদের জন্য এখন লোভনীয় কিছু পণ্য এসেছে বাজারে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী নেতাদের লাইফ সাইজ ছবি দিয়ে ঘর আলোকিত করার পাশাপাশি লোশন পোশন ও পিল কিনে জটিল সব রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন তারা। তবে সব ওষুধই তাদের পবিত্র প্রাণী গরুর গোবর ও চনা থেকে তৈরি। এক কথায়, গোবর ও চনাজাত ওষুধ সর্বরোগের মোক্ষম দাওয়াই হিসেবে বাজার দখল করেছে। গোপণ্যে ভর্তি নয়াদিল্লির এক নতুন গোরত্ব স্টলে পাওয়া যাচ্ছে এসব।
এটি মূলত: ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) স্যুভেনির শপ সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ির ছবিওয়ালা কাঠখোট্ট রাজনৈতিক পুস্তিকা, ব্যাজ, পতাকা এবং কমলা ও সবুজ রঙ্গের প্লাস্টিকের দেয়ালঘড়ি দেদার বিক্রি হচ্ছে সেখানে। নয়াদিল্লিতে বিজেপির সদর দপ্তরে রয়েছে এই স্যুভেনির শপ। দোকানটি চালাচ্ছেন মনোজ কুমার। সঙ্গে রয়েছে ভাই সঞ্জীব। মনোজ কুমার বলেন আপনারা বিশ্বাসই করবেন না এ সব জিনিস কতো দ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
এখানে কোষ্ঠকাঠিন্যের ওষুধ রীতিমত হটকেক। তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ‘বহু ব্যবহার্য বটিকা।’ বহুমূত্র থেকে মেয়েলি রোগ পর্যন্ত একগাদা রোগ নিরাময় করে থাকে এই আশ্চর্য বটিকা। ক্যান্সার থেকে শুরু করে হিস্টিরিয়ার জন্যও এখানে রয়েছে আরেক জাদুকরি মহৌষধ সঞ্জীবনী আরক।’ সব ওষুধই হচ্ছে গোজাত দ্রব্য।
এর মধ্যে কাউ ডাং বা গোবরের তৈরি টুথপেস্ট, কাপড় ধোয়ার গুঁড়া সাবান, ত্বক উজ্জ্বল করার ক্রিম খুব চলছে। টাকা সমস্যার জন্য লেপন করা হচ্ছে গোবরের লোশন, এমনকি মেদ কমাতেও ওই গোবর ও চনা। বিজেপি মুখপাত্র সিদ্ধার্থ সিং বলে, গ্রামীণ শিশ্লের প্রচারের লক্ষ্যে এই স্টলটি করা হয়েছে। সিদ্ধার্থ দীর্ঘদিন ধরে গরুর পবিত্রতা নিয়ে প্রচার চালিয়ে আসছে। রয়টার্স। (ভোরের কাগজ, ৩ মার্চ/২০০৫)
এখানে উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশে অনেক মুসলমানও হিন্দুদের তৈরি ঘি-ছানা সন্দেশ তথা মিষ্টি দইকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তারা মনে করে থাকেন যে, হিন্দুরা সেগুলো তৈরিতে দক্ষ। তারা হিন্দুদের তৈরি মিষ্টি দই ঘি খাওয়াকে দোষের কিছু মনে করেন না।
অথচ জাতি হিন্দুরা কিন্তু সেরূপটি করেননি। শরৎ সাহিত্যে যেমন, বাজারের খাদ্যে মুসলমানের ছোয়া রয়েছে বলে যাত্রাপত্রে বাহনের মধ্যে জাতি হিন্দুর দিনভর না খেয়ে থাকার বর্ণনা রয়েছে; সে মানসিকতা, সে চেতনা এখনও তাদের মধ্যে বহাল তবিয়তে বিরাজ করছে।
এটা বাস্তব সত্য যে, জাতি হিন্দুরা গোবর, চেনা ও গঙ্গার পানির মিশ্রণকে মুসলমানদের গোলাপপানির মত মনে করে থাকে। বিশেষতঃ এর কয়েক ফোটা তারা তাদের তৈরিকৃত ঘি-মিষ্টিতে মেশাবেই।
আর এভাবেই খাদ্যদ্রব্যে গোবর মেশানোর চেনার ও প্রবণতা থেকে তারা যে আদৌ পিছিয়ে আসেনি রয়টার্স পরিবেশিত উপরোক্ত রিপোর্টটি তারই জ্বলন্ত উদাহরণ। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে তারা গরুর পবিত্রতা প্রচার করে আসে। টুথপেস্ট থেকে আরম্ভ করে টাকা সমস্যার জন্য গোবরের লোশন থেকে এমনকি মেদ কমাতেও গোবর-চনা ব্যবহৃত হচ্ছে।
অথচ এগুলো মুসলমানদের জন্য সম্পূর্ণ হারাম খাদ্য। যার এক ফোটা কোন খাদ্যে থাকলে তার পুরোটাই হারাম হবে কিন্তু তারপরেও গাফিল থাকবে মুসলমান?
অথচ পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। আর কুরআন শরীফ-এ কাফিরদের নাপাক ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং নাপাক কাফিরদের হাতে তৈরি খাদ্যে গোবর চনা মিশ্রিত থাকবে এটাই তো তাদের স্বাভাবিক। কিন্তু তাদের তৈরি খাদ্যগ্রহণ করা তো মুসলমানদের জন্য স্বাভাবিক হতে পারে না।
উল্লেখ্য, হিন্দু জাতীয়তাবাদীরা ঠিকই তাদের চেতনাবোধে উজ্জীবিত ও সক্রিয়। কিন্তু মুসলমান তাদের ঈমানী-জযবা, আমলী তাক্বওয়া থেকে সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয়। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে যে জাতির সাথে মিল রাখবে তার হাশর-নশর তার সাথেই হবে।”
-মুহম্মদ মাহমুদ আলম, ঢাকা।
বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১