বর্তমান তত্ত্ববধায়ক সরকারের নির্বাচন কমিশন কি খুব বেশি বেশি খুশি হইয়াছে? জন্মের হিসেবে তাহারা এখনও ছয় মাসের শিশু বটে। সুতরাং শিশুসুলভ ভিত্তিহীন আনন্দের উচ্ছলতা বা চপলতা তাহাদের জন্য স্বাভাবিক।
বলাবাহুল্য, সংস্কার, সংস্কার, করিয়া উচ্চতর চিৎকার করিলেও বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিন্তু ইতিহাসের কায়েমী স্বার্থবাদীদের লালনের ধারাবাহিক পথেই চলিতেছেন।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা এই যে, ইতিহাস হইতে কেহই শিক্ষা নেয় না। ইতিহাসের একটা অদ্ভূত ঐতিহ্য যে, সব স্বার্থবাদী শাসকই তাহাদের খেয়াল চরিতার্থ করিবার জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের ব্যবহার করিয়াছে। পাশাপাশি ধর্মব্যবসায়ীরা সব সময়ই দলে দলে, হাজারে হাজারে, লাখে লাখে সামান্য দুনিয়াবী স্বার্থের জন্য দ্বীন বিক্রি করিয়াছে। ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়া নাজায়িযকে জায়িয করিবার ধর্মব্যবসা করিয়াছে।
সংস্কার ও দুর্নীতিবাজদের ধরিবার ক্ষেত্রে বর্তমানে যেইসব দল ও নেতাদের প্রতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদক্ষেপ লইতেছে তাহারাও ঐসব ধর্মব্যবসায়ীদের সমর্থন ও সাহায্য সবসময়ই খুব সহজেই লাভ করিয়াছে।জাতীয়তাবাদী উলামা দল, আর আওয়ামী উলামা লীগ নয়, জামাতে ইসলামী হইতে নেযামী ইসলামী, খণ্ডিত, ত্রিখণ্ডিত ইসলামী ঐক্যজোট সবাই এই লাইনেই সব সময় মশগুল থাকিয়াছে। তাহাতে অনেকে বার বার বেশও পাল্টাইয়াছে। সারাজীবন আওয়ামী লীগকে- চরম ইসলাম বিদ্বেষী দল আখ্যা দিয়া, আওয়ামী লীগ কারাগারে ওজুর পানি দেয় নাই, তাহাদের আমলে লোকে টুপি, পাগড়ী পড়িতে পারে নাই, আওয়ামী লীগ ইসলাম বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের প্রবক্ত।
গত ত্রিশ বছরেরও বেশী সময় ধরিয়া এইসব কথা বলিবার চিহিত ব্যক্তি হইবার পরও ক্ষমতার হিসাব-নিকাশে আওয়ামী লীগকে’ অগ্রগামী বিবেচনা করিয়া সেই আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতা গড়িয়াছিল শাইখুল হদছ, মুফতে শহীদুল, হাবীবুশ শয়তান প্রিন্সিপাল।
অথচ তাহার কিছুদিন পূর্বেই উহারা বলিয়াছিল, খালেদা জিয়া আল্লাহ পাক-এর রহমত। তাহার প্রতিটি কথা ও কাজ সত্য। তাহার ওসীলায় দেশ ভালভাবে আগাইয়া যাইতেছে।
পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন বিদয়াত ফতওয়া দিবার পরও তাহাদের ম্যাডামের জন্মদিন পালনে মুফতে আমিনী ওরফে কমিনী লালবাগ মাদ্্রাসায় গরو জবাই করিয়া ভুড়িভোজের ব্যবস্থা করিয়া ম্যাডামের নেক নজর পাইতে চেষ্টা করিয়াছিল। পরে নমিনেশনের প্রশ্নে আবার তাহারই বিরোধিতা করিয়াছিল।
মূলতঃ ম্বার্থের প্রশ্নে তাহারা বহু পূর্ব হইতেই নিজেরা নিজেদের বিক্রি করিয়াছে। নিজেরা নিজেদের বিরোধিতা করিয়াছে।
নিজের লিখা কিতাব, সাক্ষাতকার, বহু জায়গায়, তাহারা ছবি তোলার বিরুদ্ধে, নারী নেৃতত্বের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বলিয়াছে। কিন্তু তাতে রানীতির হালুয়া-রুটি, প্রচার-প্রতিপত্তির সুবিধা পাওয়া যঅয় না বলিয়া নিজেদের বিবৃত আদর্শ, বক্তব্য, বিবৃতি ও আমলকে নিজেরাই তালাক দিয়াছে। শুধু দল আর নেতা-নেত্রী ও নীতি বদল তো নস্যি। স্বার্থের জন্য ইহারা নিজের বাপ এমনকি খোদ খোদাতায়ালাকেও অস্বীকার করিতে পারে। হাদীছ শরীফে ইহাদের শুধু নিকৃষ্ট ধর্মব্যবসায়ীই না বরং সৃষ্টিরও নিৃকষ্ট বলা হইয়াছে।
উল্লেখ্য, মানুষের বংশবিস্তারের হার সংখ্যায় এক। কিন্তু ইতর শ্রেণীর প্রাণীদের প্রজননের হার এক সাথে অনেক। ঠিক তদ্রুপ কায়দায় এই ধরনের ধর্মব্যবসায়ীদের বিস্তার ঘটিতেছে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক-এর বান্দাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যকই আল্লাহ পাক-এর শুকরিয়া আদায় করে।” হাদীছ শরীফে ইরশাদ হইয়াছে, ইসলাম অল্প সংখ্যক লোকের দ্বারা শুরু হইয়াছে। অল্প সংখ্যক লোকের দ্বারা শেষ হইবে এবং অল্প সংখ্যক লোকের জন্যই কামিয়াবী।
সুতরাং বেজন্মা ধর্মব্যবসায়ীদের হার যে বিস্তর হইবে তাহা বলাই বাহুল্য। নিকট ইতিহাস হইতে অতীত ইতিহাস, সব যুগে একই কাহিনী। সুতরাং নির্বাচন কমিশন যে, “মসজিদের ইমাম-খতীদের নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়নে সম্পৃক্তকরণ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ-১০০১ ইমাম খতীব”-এ শিরোনামযুক্ত সংবাদ পরিবেশন করিতে পারিবেন তাহাই বলাইবাহুল্য।
উল্লেখ্য, তথাকথিত ১০০১ ইমাম খতীবের মাঝে সেই চিরচেনা উলামায়ে ‘ছূ’র দলই রহিয়াছে। গত ৮ই জুলাই সংবাদ সংস্থা এনএনবির পরিবেশিত উক্ত সংবাদের নাম আসিয়াছে চিহ্নিত উলামায়ে ‘ছূ’ নেতা মুফতে মাওলানা আব্দুর রহমান, নূর হুসাইন, আল কাশেমী, শাহ জালাল শরীফ, এমদাদুল হক, মুফতে ফায়জুল্লাহ, মুফতে শফিকুল্লাহ, শাইখুল হদছ, ছালেহ তথা কুখ্যাত মুফতে যয়নুল আবেদীন গং।
এদিকে নির্বাচন কমিশনও ধর্মব্যবসায়ীদের মত ধর্মকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহার করা শুরু করিয়াছেন। তাহারা বলিয়াছেন, ধর্মীয় দৃষ্টিতে ভুয়া ভোটার শরীয়ত বিরোধী। ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা সেই ভূয়া ভোটার রোধ করিতে পারে। ইহাছাড়া ভোটার তালিকা একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তাই এইকাজে ছবি তুলিতে বাধা নাই।
নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের পাশাপাশি উলামায়ে ‘ছূ’দের মসজিদে ছবি তোলার পক্ষে প্রচারণা চালানোর সংকল্প ব্যক্ত করার প্রেক্ষিতে মূলতঃ ছবি তোলা বিষয়ক প্রকৃত সত্যটিই উদ্ভাসিত ও প্রমাণিত হয়।
এইক্ষেত্রে বলিতে হয় যে, ছবি তোলা যদি শরীয়তে নিষেধ না হইত, তাহা হইলে নির্বাচন কমিশনের, ছবি তোলার পক্ষে এত উদ্যোগ গ্রহণ করিবার কি দরকার ছিলো? ধর্মব্যবসায়ী, ভাড়াটিয়া মাওলানাদের যোগাড় করিবার কি দরকার ছিলো?
পাশপাশি বলিতে হয় যে, ছবি তোলা যদি জায়িযই হইতো তাহা হইলে আবহমানকাল ধরিয়া মুসলমানের মানসে তাহাই বদ্ধমূল থাকিতো। তাহা হইলে তথাকথিত মসজিদ মিশন আর বাংলাদেশ ইমাম ফেডারেশনের পক্ষ হইতে ছবি তোলার পক্ষে তাহারা মসজিদে মসজিদে ছবি তোলার প্রচারণা চালাইবে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়ারই বা কি প্রয়োজন ছিলো?
তাহার পিছনে প্রতিভাত হয় যে, কুরআন-সুন্নাহর আলোকে জন্মগতভাবেই মুসলমান জানেন যে, ছবি তোলা নাজায়িয। বিশেস করিয়া যামানার তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাতে ছবি তোলা হারাম হওয়ার পক্ষে ৩৫৩টি দলীল পেশ করায় এই অনুভূতি সাধারণের মাঝে আরো জোরদার হইয়াছে। এক্ষণে সেইটাকেই বিপদের কারণ মনে করিয়া ধর্মব্যবসায়ী মানুষের মনে ধারণকৃত সে ইসলামী অনুভূতি বিলুপ্ত করণে উদগ্রীব হইয়াছে। এক্ষেত্রে তারা নির্বাচন কমিশনের নিমক খাইয়া এই কাট্টা হারামকাজকে হালাল করিতে উঠিয়া পড়িয়া লাগিয়াছে। আল্লাহ পাক ইহাদের প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, তোমরা অল্পমূল্যের বিনিময়ে আমার আয়াত শরীফকে বিক্রি করো না।”
যেই কথা এই লিখার শুরুতে হইয়াছিলো। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারও তাদের কথিত দুর্নীতিবাজ সরকারের মতই চিহ্নিত ধর্মব্যবসায়ীদের সাথে আঁতাত করিয়া চলিতেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাচন কমিশন যাহাদেরকে দিয়া ছবি তুলিবার পক্ষে মসজিদে প্রচারণার প্রতিশ্রুতি বাহির করিয়াছেন তাহারা মাদ্্রাসার নামে জমি দখলকারী টাকা হুন্ডি পাচারকারী, বিদেশ হইতে টাকা আত্মসাৎকারী মোল্লা উমর, লাদেন, তালেবান সহযোগী, জঙ্গিদের মদদকারী, ত্রাণের টিন আত্মসাৎকারী ৭১’ এ খুন, ধর্ষণ লুন্ঠনকারী উলামায়ে ‘ছূ’ যাহারা বিএনপি, আওয়ামী লীগ-এর কাছে নিজেদের বারবার বিক্রির পর ফের নতুন লেবাছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে নিজেদের বিক্রি করিয়া নতুন হালুয়া-রুটির অন্বেষণ করিতেছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার অভিজ্ঞতায় নতুন হইলেও দেশবাসী জানেন ইহারা সেই চিরন্তন চিরচেনা ইসলামের লেবাসধারী, নিকৃষ্ট ধর্মব্যবসায়ী। নীতিহীন আত্মবিক্রিকারী। স্বার্থের জন্য ইসলাম বিক্রিকারী। কাজেই ইহাদের কথায় ইসলাম প্রিয় মুসলমান কখনও শরীয়তের হুকুম পাল্টাইতে প্রলুব্ধ হইবে না।
এইদিকে নির্বাচন কমিশন নতুন চমক দেখাইয়াছেন। তাদের কথিত দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক সরকারগুলো ধর্মব্যবসায়ীদের ব্যবহার করিতেন। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিজেই ধর্মব্যবসা শুরু করিয়াছেন। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিতেছেন। তাহারা বলিয়াছেন, “ধর্মীয় দৃষ্টিতে ভুয়া ভোটার শরীয়ত বিরোধী। ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা সেই ভুয়া ভোটার রোধ করিতে পারে। ইহাছাড়া ভোটার তালিকা একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তাই এই কাজে ছবি তুলিতে কোন বাধা নাই।
লক্ষ্যণীয়, নির্বাচন কমিশন শরীয়ত শব্দ ব্যবহার করিয়া ধর্মব্যবসায়ীদের মত নিপুণ কৌশলে বেশরীয়তী কাজের পক্ষে ওকালতি করিয়াছেন। শরীয়ত শব্দ উচ্চারণ যেহেতু তিনি করিয়াছেন সেহেতু শরীয়তই যে ছবি তোলার বিপক্ষে শত শত হাদীছ শরীফ উদ্ধৃত করিয়াছে এবং হাদীছ শরীফ পাল্টানোর অপচেষ্টা যে করিবে সে যে কাদিয়ানীদের মত কাফির হইবে- এই বিষয়টি তিনি বেমালুম চাপিয়ে গিয়েছেন।
পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজকে তিনি রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের উপর প্রাধান্য দিতেছেন। ভাবখানা এই যে, তাহার বিবৃত রাষ্ট্র প্রয়োজনের ব্যাখ্যায় সব হারাম হালাল হইয়া যাইবে। (নাউজুবিল্লাহ)
আবার বাহিরে তারা পাকা ধর্মব্যবসায়ীদের মত ঠিকই ঠাট বজায় রাখিয়াে চলিতেছেন। ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন ছাহেব বলিয়াছেন, দেশের বেশির ভাগ লোক মুসলমান। তাই ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করিতেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে আদৌ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতির দিকে খেয়াল করিতেছেনা ও মর্যাদা দিতেছেনা তাহা বলাবাহুল্য। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মুসলমানদের তথা সংখ্যাগরিষ্ঠদের প্রতি না হইলেও সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি যে ঢের বেশী নজর দিয়াছেন, মূল্যায়ন করিতেছেন তাহা দ্বিধাহীনচিত্তে বলা যায় বটে।
গত ১৯/০৭/০৭ তারিখে দৈনিক প্রথম আলোতে ছাপা হয়; শ্রীলঙ্কা দিয়াছে বুদ্ধের পদচিহ্ন-
চট্টগ্রামে আড়ম্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে গৌতম বুদ্ধের চুল হস্তান্তর।
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম। ধর্মীয় ভাবগম্ভীর ও আবেগঘন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের নন্দনখানন বৌদ্ধবিহার মঠে গৌতম বুদ্ধের চুল শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী ও ধর্মীয় নেতাদের হাতে তুলিয়া দেয়া হয়। চুল হস্তান্তরের বিপরীতে শ্রীলঙ্কা সরকার বাংলাদেশকে সে দেশে থাকা গৌতম বুদ্ধের পদচিহ্ন উপহার দেয়।
দৈনিক ডেসটিনিতে বলা হয়, ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা এএসএম মতিউর রহমান বলেন, আজ এক ঐতিহাসিক দিনে জানাতে চাই বৌদ্ধ মন্দিরকে জাতীয় মন্দিরে পরিণত করার যে দাবী আপনারা জানাইয়াছেন সে দাবীর সঙ্গে আমি একাত্মতা প্রকাশ করিতেছি।
উপরোক্ত সংবাদ সাপেক্ষে বলিতে হয় যে, বুদ্ধের চুলের প্রতি বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে সম্মান প্রদর্শন করিয়াছে, বৌদ্ধদের দর্মীয় অনুভূতির প্রতি যেভাবে মর্যাদা দেখাইয়াছে তাহাদের দাবীর প্রতি যেইভাবে সমর্থন ব্যক্ত করিয়াছে সেই তুলনায় মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি তাহারা বিন্দুমাত্র মমত্বােধ দেখায়নি। অথচ শ্রীলঙ্কাকে বুদ্ধের চুল দিয়া নিজেরা নতজানু হইয়া নম নম করে বুদ্ধের কদমচিহ্ন নিয়া বুকে জড়াইয়া ধরিয়া উম শান্তি বলিয়া হর্ষ প্রকাশ করিয়া জাতীয় মন্দির প্রতিষ্ঠা করিবার বিশেষ ঘোষণা দিয়াছে।
আর ইহা শুধু বৌদ্ধের ক্ষেত্রে? মাত্র কিছুদিন পূর্বে হিন্দুদের রথযাত্রায় ব্যাপক সরকরী আনুকূল্য দেয়া হইলো!
এই প্রসঙ্গে গত ১৭/০৭/০৭ তারিখে দৈনিক যুগান্তরে ছাপা হয়,
রথযাত্রা শুরু
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও যথাযথ ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সোমবার রথযাত্রা শুরু হয়ে। বিকালে স্বামীবাগ আশ্রম থেকে একটি রথ টেনে ঢাকেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। ভক্তরা মিছিল করে এই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেন। শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তুলে রাজপথ। রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। রাস্তার দু’পাশে মোতায়েন করা হয় অসংখ্য পুলিশ। এছাড়া রথযাত্রার সামনে ও পিছনে থাকে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অত্যন্ত শাস্তিপূর্ণভাবে রথটি মন্দিরে পৌঁছায়। (যুগান্তর ১৭-০৭-০৭)
উল্লেখ্য, শুধু রথযাত্রাই নয় হিন্দদের যাবতীয় পূজা-অর্চনা, লঙ্গলবন্দ স্নান হইতে দূর্গা পূজা পর্যন্ত যেইভাবে সরকারী টাকা তাহাদের গানবাদ্য, ঢাক বাজাইতে দেওয়া হয় তাহা খোদ ভারতেও দেওয়া হয়না।
ভারতে এমনিতেই মুসলমান অচ্ছ্যুৎ বলিয়া গণ্য। তাঁর পাশাপাশি এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তথা নির্বাচন কমিশন যেন মুসলমানের দেশ বাংলাদেশেও মুসলমানকে অচ্ছ্যুৎ গণ্য করিতেছেন। অস্পৃশ্য বলিয়া বিবেচনা করিতেছেন। যবন বলিয়া মনে করিতেছেন। নচেৎ বুদ্ধের চুল হইতে আরম্ভ করিয়া পদচিহ্নের প্রতি তাহারা যেইভাবে সম্মান প্রদর্শন করিয়াছেন তাহার বিপরীতে সরকারে দোজাহা, নূরে মুজাস্্সাম সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিবৃত সরাসরি হাদীছ শরীফের প্রতি তাহারা আদৌ কোন সম্মান প্রদর্শন করেন নাই। তাঁহার বিবৃত ছবি তুলিবার অপচেষ্টা করিয়া নিজেদের আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চাইতে বেশী জ্ঞানী প্রতিপন্ন করিয়া কাদিয়ানীদের তবকায় ঠাঁই নিয়াছেন। (নাউজুবিল্লাহ)
তাফসীরে বর্ণিত আছে, ফিরআউন তওবা করিয়া ভাল হইতে চাহিলেও তাহার সহযোগী হামান তাহাকে নিবৃত করিয়াছে। তদ্রুপ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ধর্মের কথা বলিলেও ধর্মীয় অনুভূতির প্রসঙ্গ টানিলেও ধর্ম ব্যবসায়ীরা তাহাদেরকে নিবৃত্ত করিতেছে। অতীতের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাধে চিরন্তন ধর্মব্যবসায়ীদের ভূত ছওয়ার হইয়াছে। তাহাদের আছরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এমন আবোল-তাবোল বকিতেছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার আদৌ বুঝিতে পারিতেছেনা যে, হিন্দু-বৌদ্ধদের ক্ষেত্রে তাহারা যেরূপ সর্বত্মক ব্যবস্থা করিয়া যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্য রক্ষার সংবাদ শিরোনাম করিতেছেন, মুসলমানদের ক্ষেত্রে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফের বিপরীত আমল করিতে বলিবার সাথে সাথে মুসলমানদেরধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ক্ষুণœ করিবার, ধুলিস্যাৎ করিবার মত অবস্থা তৈরী করিতেছেন। সেক্ষেত্রে ধর্মব্যবসায়ীরা তাহাদেরকে ধর্মপ্রাণদের প্রকৃত মনোভাব বুঝিতে না দিলেও ধর্মপ্রাণ মুসরমান ঠিকইই হিন্দু বৌদ্ধদের ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা আর ইসলামের ভাবগাম্ভীর্য ক্ষুন্ন তথা অবমাননায় গভীর ক্ষুদ্ধ হইতেছেন রীতিমত ফুঁসিয়া উঠিতেছেন। কিন্তু ধর্মব্যবসায়ীরা তাদের চিরন্তন খাছলত অনুযায়ী তাহা চুপাইয়া রাখিয়াছে।
অতীতের ধর্মব্যবসায়ীদের ইতিহাস ঘাটিলে এবং আক্বল খাটাইলেই নির্বাচন কমিশন তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাহা সম্যক বুঝিতে পারিবে। নচেৎ তাহাদের অবস্থা হইবে ঐ আয়াত শরীফের মতো, “তাহাদের চোখ আছে কিন্তু তাহারা দেখে না, কান আছে শোনেনা, অন্তর আছে তাহারা অনুভব করে না। তাহাদের অন্তর মহরাঙ্কিত হইয়া গিয়াছে।”
বলাবাহুল্য, এইসব মহরাঙ্কিত দিলওয়ালারা অচিরেই জনরোষের অনলে জ্বলিবে। জ্বলিবে জাহান্নামের অনলেও। (নাউজুবিল্লাহ)
-মুহম্মদ আলম মুধা, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২