পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৩

সংখ্যা: ২৪২তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৩


[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-চলমান), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করার পর-

৩২তম ফতওয়া হিসেবে

 “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-

পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয

পূর্ব প্রকাশিতের পর

পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম

পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দলীল-আদিল্লাহ মোতাবেক সম্মানিত ইসলামী শরীয়াত উনার যাবতীয় হুকুম-আহকাম মেনে চলার জন্য কারো অনুসরণ করাকে ‘আত-তাকলীদুশ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ বলে। উনাকে ‘তাকলীদুল ইসলাম’, ‘তাকলীদুদ্ দীন’ ও ‘তাকলীদুদ্ দালায়িলিল আরবায়াহ’ অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার চারখানা দলীল উনাদের অনুসরণও বলা হয়ে থাকে।

নি¤েœ পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উল্লেখ করে উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম বা বিধি-বিধান আলোচনা করা হলো।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ১৭

وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّه مَا تَوَلّى وَنُصْلِه جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا (سورة النساء شريف ۱۱۵ الاية)

অর্থ: যে ব্যক্তি তার কাছে হিদায়াত (সত্যপথ) প্রকাশিত হওয়ার পর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচরণ (খিলাফ) করে এবং ঈমানদারগণের পথ ব্যতীত অন্য পথের ইত্তিবা (অনুসরণ-পায়রবী) করে, আমি তাকে সে পথে নিয়ে যাব, যে পথ সে পছন্দ করে এবং তাকে জাহান্নামে পৌঁছাবো। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। (পবিত্র সূরাতুন নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৫)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

(৪৬১)

{وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدى} اى: ومن سلك غير طريق الشريعة التي جاء بها الرسول صلى الله عليه وسلم، فصار في شق والشرع في شق، وذلك عن عَمْد منه بعد ما ظهر له الحق وتبين له واتضح له. وقوله: {وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ} هذا ملازم للصفة الاولى، ولكن قد تكون المخالفة لنص الشارع، وقد تكون لما اجمعت عليه الامة المحمدية، فيما علم اتفاقهم عليه تحقيقًا، فانه قد ضُمِنت لهم العصمة في اجتماعهم من الخطأ، تشريفًا لهم وتعظيما لنبيهم صلى الله عليه وسلم. وقد وردت في ذلك احاديث صحيحة كثيرة، قد ذكرنا منها طرفًا صالحًا في كتاب “احاديث الاصول”، ومن العلماء من ادعى تواتر معناها، والذي عول عليه الشافعي رحمه الله في الاحتجاج على كون الاجماع حجة تَحْرُم مخالفته هذه الآية الكريمة، بعد التروي والفكر الطويل. وهو من احسن الاستنباطات واقواها. ولهذا توعد تعالى على ذلك بقوله: {نُوَلِّه مَا تَوَلّى وَنُصْلِه جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا} اى: اذا سلك هذه الطريق جازيناه على ذلك، بان نحسنها في صدره ونزينها له استدراجًا له. (تفسير القرآن العظيم لابن كثير سورة النساء شريف ۱۱۵ الاية الكريمة المؤلف: علامة حضرت أبو الفداء إسماعيل بن عمر بن كثير القرشي الدمشقي الشافعي رحمة الله عليه الولادة سنة ۷۰۰ هجري الوفاة سنة ۷۷۴ هجري)

অর্থ: (যে ব্যক্তি তার কাছে হিদায়াত প্রকাশিত হওয়ার পর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচরণ করে) অর্থাৎ যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা কিছু নিয়ে এসেছেন সেই পবিত্র শরীয়াত উনার বিপরীত চলে, তাই পবিত্র শরীয়াত হয় এক দিকে এবং তার পথ হয় অন্যদিকে, অথচ সত্য তার নিকট প্রকাশিত হয়েছে এবং সে দলীল প্রমাণাদি দেখেছে। তথাপি সে নূরুম্ মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচরণ করতঃ মুসলমানদের সরল ও পরিষ্কার পথ হতে সরে পড়ে, সুতরাং আমিও তাকে ঐ বক্র ও খারাপ পথেই ফিরিয়ে দেব।

(এবং ঈমানদারগণের পথ ব্যতীত অন্য পথের ইত্তিবা করে,) মুসলমানদের পথ ছেড়ে দিয়ে অন্য পথ অনুসন্ধান করাই হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে নূরুম মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করা। কিন্তু কখনো হয় তো তা পবিত্র শরীয়াত উনার স্পষ্ট দলীলের বিপরীত হয়, আবার কখনো কখনো উম্মতে হাবীবী উনারা যে বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছেন তার বিপরীত হয়। আর উম্মাতে হাবীবী কোনো বিষয়ে সর্বসম্মত কোনো রায় প্রকাশ করেছেন ইহা নিশ্চিতরূপে প্রমাণিত হলে উহার বিরোধিতা করা গুমরাহী বৈ কিছু নয়। কারণ এ উম্মাত ও উনাদের নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানের কারণে ইহা অবধারিত হয়েছে যে, উনারা সর্বসম্মতভাবে কখনো কোনো বিষয়ে ভ্রান্ত বিশ্বাস পোষণ বা ভ্রান্ত রায় প্রদান করবেন না। উপরোক্ত মর্মে বহু ছহীহ হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে। ‘কিতাবু আহাদিছিল উছূল’ নামক গ্রন্থে আমি এতদ্সম্পর্কিত পর্যাপ্ত সংখ্যক হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেছি। কোন কোন হাদীছ শরীফ বিশারদ উনারা উল্লেখ করেছেন, এ উম্মাতের ইজমা’ তথা সর্বসম্মত রায় নির্ভূল ও অভ্রান্ত হওয়া যে অনিবার্য ও অবধারিত- এ মর্মে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সংখ্যা বিপুল, তাই উহা মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌঁছেছে। হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি আলোচ্য আয়াত শরীফ দ্বারা এ উম্মাতের ইজমা’কে অনিবার্যরূপে অভ্রান্ত হওয়া প্রমাণ করেন। তিনি বলেন, পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইজমাউল উম্মাহ উনার বিরোধিতা করাকে নিষেধ করা হয়েছে। অতএব, ইহা নির্ভূল হওয়া অনিবার্য। হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার উক্ত যুক্তি অত্যন্ত শক্তিশালী।

এজন্য মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি উনার কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ওয়াদা করেছেন যে, (আমি তাকে সে পথে নিয়ে যাব, যে পথ সে পছন্দ করে এবং তাকে জাহান্নামে পৌঁছাবো। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান।) অর্থাৎ যারা মু’মিনদের পথ হতে সরে পড়ে যে দিকেই যেতে চায়, আমি তাকে সে পথেই যাওয়ার জন্য ছেড়ে দেই। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম লিইবনি কাছীর পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: আল্লামা হযরত আবুল ফিদা ইসমাঈল বিন উমর বিন কাছীর কুরাশী দামিশ্কী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৭০০ ওয়াফাত: ৭৭৪ হিজরী)

(৪৬২)

وهو دليل على ان الاجماع حجة لا تجوز مخالفتها كما لا تجوز مخالفة الكتاب والسنة. (مدارك التنزيل وحقائق التأويل اى تفسير النسفي سورة النساء شريف ۱۱۵ الاية الكريمة المؤلف: أبو البركات عبد الله بن أحمد بن محمود النسفي المتوفى ۷۱۰ هجري)

অর্থ: অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ প্রমাণ করে যে, নিশ্চয়ই ‘ইজমাউল উম্মাহ’ সম্মানিত শরীয়াত উনার দলীল। পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের খিলাফ করা যেমনি জায়িয নেই, তেমনি ইজমাউল উম্মাহ উনার খিলাফ করাও জায়িয নেই। (আত্ তাফসীরুল মাযহারী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: ক্বাযী মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ উছমানী হানাফী মাতুরীদী মাযহারী মুজাদ্দিদী নক্বশাবন্দী পানিপথী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১২২৫ হিজরী)

(৪৬৩)

والحاصل ان هذه الاية هى التي تدل على ان الاجماع كالكتاب والسنة. (تفسيرات احمدية في بيان الايات الشرعية مع تفريعات المسائل الفقهية سورة النساء شريف ۱۱۵ الاية الكريمة الصفحة ۲۰۹ المؤلف: سيد الفقهاء والمحدثين رأس الحكماء والمتكلمين امام المعقول والمنقول سيد العلماء الفحول حضرت المولانا الشيخ احمد المدعو بملاجيون جونفوري الحنفي الماتريدي رحمة الله عليه الوفاة سنة ۱۱۳۰ هجري)

অর্থ: মূলকথা হলো- উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা বুঝা যায় যে, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মতোই অকাট্য দলীল। (তাফসীরাতুন আহমাদিয়াহ ফী বায়ানিল্ আয়াতিশ্ শারয়িয়্যাহ মায়া তাফরীয়াতিল্ মাসায়িলিল্ ফিক্বহিয়্যাহ পবিত্র সূরাতুন নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৫, পৃষ্ঠা ২০৯, লেখক: সাইয়্যিদুল ফুক্বাহা ওয়াল মুহাদ্দিছীন রা’সুল হুকামা ওয়াল মুতাকাল্লিমীন ইমামুল মা’কূল ওয়াল মানকূল সাইয়্যিদুল উলামায়িল্ ফাহূল হযরত মাওলানা শায়েখ আহমাদ মাদঊ বিমুল্লাজিঊন জৌনফূরী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১৩০ হিজরী)

(৪৬৪)

والاية تدل على حرمة مخالفة الاجماع. (انوار التنزيل واسرار التأويل اى تفسير البيضاوي سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة الصفحة المؤلف: عبد الله بن عمر بن محمد البيضاوي تاريخ الوفاة ۶۸۵ هجري)

অর্থ: অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ প্রমাণ করে যে, ইজমাউল উম্মাহ উনার খিলাফ করা হারাম। (আনওয়ারুত্ তানযীল ওয়া আসরারুত্ তা’বীল অর্থাৎ তাফসীরুল বাইদ্বাবী পবিত্র সূরাতুন নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৫, পৃষ্ঠা ২০৯, লেখক: হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর বিন মুহাম্মাদ বাইদ্বাবী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৮৫ হিজরী)

(৪৬৫)

دليل على صحة القول بالاجماع. (الجامع لأحكام القرآن للقرطبي سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة المؤلف : حضرت ابو عبد الله محمد بن أحمد بن أبي بكر بن فرح الأنصاري الخزرجي شمس الدين القرطبي رحمة الله عليه المتوفى سنة ۶۷۱ هجري(

অর্থ: অত্র আয়াত শরীফ দ্বারা প্রমাণীত হয় যে, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ দ্বারা সঠিক ফায়সালা সাব্যস্ত হয়। (আল্ জামিউ লিআহকামিল কুরআন লিল্ কুরতুবী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: হযরত আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন আবূ বকর বিন ফারাহ আনছারী খাযরাযী শামসুদ্দীন কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৭১ হিজরী)

(৪৬৬)

هذه الاية دليل على حرمة مخالفة الاجماع. (التفسير المظهري سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة التأليف: القاضي محمد ثناء الله العثماني الحنفي الماتريدي المظهري المجددي النقشبندي الفانيفتي رحمة الله عليه المتوفى سنة ۱۲۲۵ هجري

অর্থ: অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ প্রমাণ করে যে, ইজমাউল উম্মাহ উনার খিলাফ করা হারাম। (আত্ তাফসীরুল মাযহারী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: ক্বাযী মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ উছমানী হানাফী মাতুরীদী মাযহারী মুজাদ্দিদী নক্বশাবন্দী পানিপথী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১২২৫ হিজরী)

(৪৬৭)

ان مخالفَ الاجماع عن الدين خارج. (لطائف الاشارات اى تفسير القشيري سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة المؤلف: عبد الكريم بن هوازن بن عبد الملك القشيري رحمة الله عليه المتوفى ۴۶۵ هجري

অর্থ: নিশ্চয়ই পবিত্র দীন ইসলাম উনার অকাট্য দলীল পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ উনার খিলাফকারী ব্যক্তি দীন ইসলাম উনার গন্ডির বাইরে। (লাত্বায়িফুল ইশারাত অর্থাৎ তাফসীরুল কুশাইরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: হযরত আব্দুল করীম বিন হাওয়াযিন বিন আব্দুল মালিক কুশাইরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৪৬৫ হিজরী)

(৪৬৮)

استدل الاصوليون بها على صحة اجماع المسلمين وانه لا يجوز مخالفته لان من خالفه اتبع غير سبيل المؤمنين. (التسهيل لعلوم التنزيل اى تفسير ابن جزي سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة المؤلف: محمد بن احمد بن محمد بن جزي الكلبي الغرناطي المالكي رحمة الله عليه الولادة ۶۹۳ هجري الوفاة ۷۴۱ هجري

অর্থ: উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা উছূলবিদ উনারা প্রমাণ করেছেন যে, মুসলমানদের ইজমা’ তথা কোন বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করা ছহীহ বা গ্রহনযোগ্য। কেননা, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ উনার খিলাফ করা জায়িয নেই। যেহেতু, যে ব্যক্তি পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ উনার খিলাফ করলো, সে মূলতঃ মু’মিনদের পথের বিপরীত পথের (তথা শয়তানকে) অনুসরণ করলো। (আত্ তাসহীল লিউলূমিত তানযীল অর্থাৎ তাফসীরে ইবনুল জুযী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন জুযী কালবী গারনাতী মালিকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৬৯৩ হিজরী ওয়াফাত: ৭৪১ হিজরী)

(৪৬৯)

وفيها دلالةٌ على حجية الاجماعِ وحُرمةِ مخالفتِه. (ارشاد العقل السليم الى مزايا الكتاب الكريم اى تفسير ابو السعود سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة المؤلف: ابو السعود العمادي محمد بن محمد بن مصطفى رحمة الله عليه المتوفى ۹۸۲ هجري

অর্থ: উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ পবিত্র শরীয়াত উনার হুজ্জাত বা অকাট্য দলীল এবং পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ উনার খিলাফ করা হারাম। (ইরশাদুল্ আক্বলিস্ সালীম ইলা মাযাইয়াল্ কিতাবিল কারীম অর্থাৎ তাফসীরে আবুস সাঊদ পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: হযরত আবুস সাঊদ আম্মাদী মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ বিন মুস্তফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৯৮২ হিজরী)

(৪৭০)

قوله تعالى: {وَمَن يُشَاقِقِ الرسول} يعني يخالفه فى التوحيد {مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الهدى} اى من بعد ما تبين لهم التوحيد {وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ المؤمنين} اى يتبع ديناً غير دين المؤمنين، ويقال: يتبع طريقاً او مذهباً غير طريق المؤمنين. وفى الاية دليل ان الاجماع حجة، لان من خالف الاجماع فقد خالف سبيل المؤمنين. (بحر العلوم اى تفسير السمرقندي سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة المؤلف: ابو الليث نصر بن محمد بن احمد بن إبراهيم السمرقندي الحنفي رحمة الله عليه المتوفى ۳۷۳ هجري

অর্থ: (যে ব্যক্তি হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচরণ করে) অর্থাৎ তাওহীদ উনার খিলাফ করে (তার কাছে হিদায়াত প্রকাশিত হওয়ার পর) অর্থাৎ তাদের কাছে তাওহীদ স্পষ্ট হওয়ার পর (এবং ঈমানদারগণের পথ ব্যতীত অন্য পথের ইত্তিবা করে) অর্থাৎ মু’মিন উনাদের পথের বিপরীত পথের অনুসরণ করে। বলা হয় যে, মু’মিন উনাদের পথ অর্থাৎ মাযহাব ব্যতীত অন্য পথ অনুসরণ করে। অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা দলীল নেয়া হয় যে, নিশ্চয়ই ইজমাউল উম্মাহ তথা উম্মাতের ঐক্যমত পবিত্র শরীয়াত উনার অকাট্য দলীল। কেননা, যে ব্যক্তি পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ উনার খিলাফ করলো, সে মূলতঃ মু’মিন উনাদের পথের খিলাফ করলো। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস্ সামারকান্দী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: হযরত আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭৩ হিজরী)

(৪৭১)

قال ابو جعفر رحمة الله عليه: يعني جل ثناؤه بقوله: “ومن يشاقق الرسول” ومن يباين الرسولَ محمدًا صلى الله عليه وسلم معاديًا له فيفارقه على العداوة له “من بعد ما تبين له الهدى” يعني من بعد ما تبين له انه رسول الله صلى الله عليه وسلم وان ما جاء به من عند الله يهدى الى الحق والى طريق مستقيم “ويتبع غير سبيل المؤمنين” يقول: ويتبع طريقًا غير طريق اهل التصديق، ويسلك منهاجًا غير منهاجهم، وذلك هو الكفر بالله لان الكفر بالله ورسوله غير سبيل المؤمنين وغير منهاجهم. (جامع البيان في تأويل القران اى تفسير الطبري سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة المؤلف: محمد بن جرير بن يزيد بن كثير بن غالب الاملي ابو جعفر الطبري رحمة الله عليه المتوفى ۳۱۰ هجري

অর্থ: মুফাসসির আল্লামা আবূ জা’ফর ত্ববারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: এখানে “যে ব্যক্তি হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচরণ করে” অর্থাৎ যে ব্যক্তি নূরুম্ মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করতঃ উনার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। “তার কাছে হিদায়াত প্রকাশিত হওয়ার পর” অর্থাৎ নূরুম্ মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে তিনি যা কিছু নিয়ে এসেছেন, তা সত্য ও সরল পথের দিশা দেয়, ইহা তার নিকট প্রকাশ হওয়ার পর।

“এবং ঈমানদারগণের পথ ব্যতীত অন্য পথের ইত্তিবা করে” অর্থাৎ বিশ্বাসী উনাদের পথ ও পদ্ধতি ব্যতীত অন্য পথ অনুসরণ করে, ইহা কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সাথে কুফরী করার শামিল। কারণ, মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে কুফরী করাই মূলতঃ মু’মিন উনাদের বিপরীত পথ ও পদ্ধতি। (জামিউল বয়ান ফী তা’বীলিল্ কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুত্ ত্ববারী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন জারীর বিন ইয়াযীদ বিন কাছীর বিন গালিব আমালী আবূ জা’ফর ত্ববারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩১০ হিজরী)

(৪৭২)

{وَمَن يُشَاقِقِ} يخالف {الرسول} في التوحيد والحكم وهو طعمة {مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَه الهدى} التوحيد والحكم وهو طعمة {وَيَتَّبِعْ} يتخذ {غَيْرَ سَبِيلِ} دين {المؤمنين} يختر على دين المؤمنين دين اهل مكة الشرك {نُوَلّه مَا تولى} نتركه الى ما اختار فى الدنيا {وَنُصْلِه جَهَنَّمَ} فى الاخرة {وَسَاءَتْ مَصِيراً} صار اليه. (تنوير المقباس من تفسير ابن عباس رضى الله عنهما المتوفى: ۶۸ هجري سورة النساء ۱۱۵ الاية الكريمة جمعه: محمد بن يعقوب الفيروز آبادى رحمة الله عليه المتوفى: ۸۱۷ هجري

অর্থ: (যে ব্যক্তি বিরুদ্ধাচরণ করে) খিলাফ করে (নূরুম্ মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার) তাওহীদ ও ফায়সালার ব্যাপারে যেমন তু’মাহ (তার কাছে হিদায়াত প্রকাশিত হওয়ার পর) তাওহীদ ও ফায়সালার বিষয় প্রকাশ হওয়ার পর যেমন তু’মাহ (সে অনুসরণ করে) গ্রহণ করে (মু’মিন উনাদের বিপরীত পথ) অর্থাৎ মু’মিন উনাদের পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা থেকে মুশরিকদের র্শিককে প্রাধান্য দেয়।

(আমি তাকে সে পথে নিয়ে যাব, যে পথ সে পছন্দ করে) তাকে তার ইখতিয়ার বা ইচ্ছা স্বাধীনতার উপর ছেড়ে দিব

(এবং তাকে জাহান্নামে পৌঁছাবো,) আখিরাতের দিন (আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান) সেখানেই সে অবস্থান করবে।

(তানবীরুল মাকবাস মিন তাফসীরি ইবনি আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু পবিত্র ওয়াফাত মুবারক ৬৮ হিজরী পবিত্র সূরাতুন্ নিসা শরীফ ১১৫ নং আয়াত শরীফ সংকলক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ইয়া’কূব ফিরোজাবাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮১৭ হিজরী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র ইজমাউল্ উম্মাহ যে পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মতোই দীন ইসলাম উনার অকাট্য দলীল তা প্রমাণ করা হয়েছে। পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ উনাকে অস্বীকার করা কুফরী। আর উনার খিলাফ করা হারাম। তাই তা মান্য করা ফরযে আইন।

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৮

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৯

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান বা শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০