পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০

সংখ্যা: ২৪৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩০


[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-চলমান), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করার পর-

 

৩২তম ফতওয়া হিসেবে

“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”-

পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।

সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয


পূর্ব প্রকাশিতের পর

পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম

পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমাউল উম্মাহ ও ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দলীল-আদিল্লাহ মোতাবেক সম্মানিত ইসলামী শরীয়াত উনার যাবতীয় হুকুম-আহকাম মেনে চলার জন্য কারো অনুসরণ করাকে ‘আত-তাকলীদুশ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ বলে। উনাকে ‘তাকলীদুল ইসলাম’, ‘তাকলীদুদ্ দীন’ ও ‘তাকলীদুদ্ দালায়িলিল আরবায়াহ’ অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার চারখানা দলীল উনাদের অনুসরণও বলা হয়ে থাকে।

নিম্নে পবিত্র তাফসীর শরীফ উনাদের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে ‘আত-তাক্বলীদুশ্ শারয়ী তথা শরীয়াত সমর্থিত অনুসরণ’ উনার সমর্থনে পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উল্লেখ করে উনাদের ছহীহ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ ও আহকাম বা বিধি-বিধান আলোচনা করা হলো।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৩৭

وَمَا اَرْسَلْنَا قَبْلَكَ اِلَّا رِجَالًا نُوْحِىْ اِلَيْهِمْ فَاسْاَلُوْا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ. (سورة الانبياء شريفة ۷ الاية الشريفة(

অর্থ: আপনার পূর্বেও আমি পবিত্র ওহী মুবারকসহ মানবকেই তাঁদের প্রতি রসূল রূপে পাঠিয়েছিলাম। অতএব, তোমরা যদি না জান তাহলে আহলে যিক্র (ইমাম, মুজতাহিদ, ওলীআল্লাহ, ফক্বীহ, মুফতী) উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও। (পবিত্র সূরাতুল্ আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

وقيل: اهل الذكر: اهل القران. ذكر من قال ذلك:

عن جابر الجعفى رضى الله عنه قال: لما نزلت (فَاسْاَلُوْا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لا تَعْلَمُوْنَ) قال: على عليه السلام نحن اهل الذّكر.

قال ابن زيد رحمة الله عليه فى قوله (فَاسْاَلُوْا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَاتَعْلَمُوْنَ) قال: اهل القران، والذكر: القران. وقرأ (اِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَاِنَّا لَه لَحَافِظُونَ(

অর্থ: কোন কোন হযরত মুফাসসিরীন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: আহলুয যিক্র হচ্ছেন আহলুল কুরআন উনারা। যাঁরা এ মত পোষণ করেন উনারা উল্লেখ করেন যে- হযরত ইমাম জারীর ত্ববারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত জাবির জু’ফী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেছেন: যখন ‘অতএব, তোমরা যদি না জান তাহলে আহলে যিক্র উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও’ আয়াত শরীফ নাযিল হয়, তখন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমরাই তো আহলুয যিক্র। সুবহানাল্লাহ।

হযরত ইবনু যায়েদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ক্বওল শরীফ ‘অতএব, তোমরা যদি না জান তাহলে আহলে যিক্র উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও’ উনার তাফসীরে বলেছেন, আহলুয যিক্র হচ্ছেন আহলুল কুরআন উনারা। আয্ যিক্র দ্বারা এখানে আল্ কুরআন মাজীদ উদ্দেশ্য। দলীল স্বরূপ তিনি পাঠ করেন, মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: ‘নিশ্চয়ই আমি যিক্র তথা কুরআন মাজীদ উনাকে নাযিল করেছি, আর আমিই উনার হিফাযতকারী’। (জামিউল বয়ান ফী তা’বীলিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুত ত্ববারী পবিত্র সূরাতুল্ আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন জারীর বিন ইয়াযীদ বিন কাছীল বিন গালিব আমালী আবূ জা’ফর ত্ববারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩১০ হিজরী)

وقال ابن زيد رحمة الله عليه: اراد بالذكر القران اى فاسالوا المؤمنين العالمين من اهل القران، قال جابر الجعفى رضى الله عنه: لما نزلت هذه الاية قال على كرم الله وجهه عليه السلام نحن اهل الذكر.

অর্থ: হযরত ইবনু যায়েদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: এখানে যিক্র দ্বারা কুরআন মাজীদ উনাকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। অর্থাৎ পবিত্র কুরআন মাজীদ অনুসরণকারী মু’মিন আলিম ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করুন। হযরত জাবির জু’ফী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেছেন: যখন অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হয়, তখন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমরাই তো আহলুয যিক্র। সুবহানাল্লাহ। (আল-জামিউ লিআহকামিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল কুরতুবী পবিত্র সূরাতুল্ আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭ লেখক: হযরত আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন আবূ বকর বিন ফারাহ আনছারী খাযরাযী শামসুদ্দীন কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৭১ হিজরী, মায়ালিমুত তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল বাগবী, তাফসীরুল কুরআনিল আযীম লিত ত্ববারানী, মাফাতীহুল গইব অর্থাৎ আত-তাফসীরুল কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী, লুবাবুত তা’বীল ফী মায়ানিত তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল খাযিন)

واهلُ الذكر العلماءُ من اكابر هذه الامة والذين امنوا بنبينا محمد صلى الله عليه وسلم ويقال هم اهل الفهم من الله اصحاب الالهام الذين فى محل الاعلام من الحقِّ سبحانه او من يُحْسِنُ الافهامَ عن الحق. ويقال العالم يرجع الى الله فى المعاملات والعبادات.

অর্থ: আহলুয যিক্র হচ্ছেন এই উম্মতের নেতৃস্থানীয় উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম এবং আমাদের নবী নুরুম মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান পোষণকারী ব্যক্তিত্বগণ। আরো বলা হয় যে, আহলুয যিক্র হচ্ছেন মহান আল্লাহ তায়ালা উনার তরফ থেকে সঠিক বুঝ প্রাপ্ত ইলহাম ধারী ব্যক্তিত্বগণ যাঁরা মহান আল্লাহ সুবহানাহূ তায়ালা উনার পক্ষ থেকে ইল্ম প্রাপ্ত অথবা যাঁরা মহান হক্ব তায়ালা উনার থেকে উত্তম সমঝ উনার অধিকারী। (লাত্বায়িফুল ইশারাত অর্থাৎ তাফসীরুল কুশাইরী পবিত্র সূরাতুল্ আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭ লেখক: হযরত আব্দুল করীম বিন হাওয়াযিন বিন আব্দুল মালিক কুশাইরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৪৬৫ হিজরী)

فاما تعلق كثير من الفقهاء رحمة الله عليهم بهذه الاية فى ان للعامى ان يرجع الى فتيا العلماء رحمة الله عليهم وفى ان للمجتهد ان يأخذ بقول مجتهد اٰخر.

অর্থ: অত্র আয়াত শরীফ দ্বারা হযরত ফুক্বাহা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উদ্দেশ্য হওয়াই অধিক সম্বন্ধযুক্ত। নিশ্চয়ই সর্বসাধারণের জন্য হযরত উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ফাতাওয়ার দিকে প্রত্যাবর্তন করা উচিৎ। আর এখানে এটাও ইঙ্গিত রয়েছে যে, একজন মুজতাহিদ অপর মুজতাহিদ উনার সঠিক মতকে গ্রহণ করবে। (মাফাতীহুল গইব অর্থাৎ আত-তাফসীরুল কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুল্ আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭ লেখক: আল-ইমামুল আলিমুল আল্লামা, আল-হিবরুল আহরুল ফাহ্হামাহ ফখরুদ্দীন মুহাম্মাদ বিন উমর তামীমী রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী)

অত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে এটাই প্রমাণিত হলো যে, আহলুয যিক্র হচ্ছেন- হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, ইলহাম-ইলক্বা প্রাপ্ত হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম, হযরত আউলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম, হযরত উলামা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম ও হযরত ফুক্বাহা কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। উনাদেরকেই অনুসরন-অনুকরণ করতে হবে। এটাই সম্মানিত শরীয়াত উনার চুড়ান্ত ফায়সালা।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৩৮

اَلَّذِىْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوٰى عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْمٰنُ فَاسْاَلْ بِه خَبِيْرًا.

অর্থ: যিনি আসমান জমিন ও এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তা ছয় দিনেই অর্থাৎ ছয় ধাপে তৈরি করেছেন। অতপর তিনি আরশের দিকে ইস্তাওয়া হয়েছেন, তিনিই রহমান। উনার সম্পর্কে যিনি অবগত, উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন। (পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৫৯)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

{فَاسْاَلْ بِه خَبِيْرًا} اى استعلم عنه من هو خبير به عالم به فاتبعه واقتد به، وقد عُلِم انه لا احد اعلم بالله ولا اخبر به من عبده ورسوله محمد صلوات الله وسلامه على سيد ولد ادم على الاطلاق فى الدنيا والاخرة الذى لا ينطق عن الهوى ان هو الا وحي يوحى، فما قاله فهو حق، وما اخبر به فهو صدق.

অর্থ: (উনার সম্পর্কে যিনি অবগত, উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন) যিনি উনার সম্পর্কে অবগত উনার কাছ থেকে জানুন, উনাকে ইত্তিবা’ করুন এবং উনারই আনুগত্য করুন। এটা জানা যায় যে, মহান আল্লাহ তায়ালা উনি ছাড়া অন্য কেউ অধিক জ্ঞানী নেই এবং উনার হাবীব নূরুম মুজাস্সাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ব্যতীত উনার বান্দাদের মধ্যে দুনিয়া ও আখিরাতে অন্য কেউ অধিক অবগত নেই। যিনি নিজের থেকে কোন কথাই বলেন না, যা বলেন তা পবিত্র ওহী মুবারক উনার মাধ্যমেই বলেন। তাই মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি যা বলেন তা সত্যই বলেন এবং উনার থেকে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা সংবাদ দেন তাও সত্য। সুবহানাল্লাহ। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম অর্থাৎ তাফসীরে ইবনে কাছীর পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৫৯ লেখক: আবুল ফিদা ইসমাঈল বিন উমর বিন কাছীর কুরাশী দামেশকী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৭০০ হিজরী ওয়াফাত: ৭৭৪ হিজরী)

{فَاسْاَلْ بِه خَبِيراً} يعنى فاسأل عنه عالماً.

অর্থ: (উনার সম্পর্কে যিনি অবগত, উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন) অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সম্পর্কে যিনি আলিম বা জ্ঞানী উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস সামারকান্দী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৫৯ লেখক: আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭৩ হিজরী, তাফসীরে ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা)

فاسأل عنه خبيرا اى عالما به، اى بصفاته واسمائه.

অর্থ: উনার সম্পর্কে যিনি অবগত উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন। অর্থাৎ উনার ছিফাত বা গুণাবলী ও নাম মুবারক সম্পর্কে যিনি অবগত উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন। (আল-জামিউ লিআহকামিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল কুরতুবী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৫৯ লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন আবূ বকর বিন ফারাহ আনছারী খযরাযী শামসুদ্দীন কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৭১ হিজরী, তাফসীরুল জালালাঈন)

{فَاسْاَلْ بِه خَبِيرًا} يعنى بذلك نفسه الكريمة فهو الذى يعلم اوصافه وعظمته وجلاله.

অর্থ: (উনার সম্পর্কে যিনি অবগত, উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন) অর্থাৎ যিনি উনার গুণাবলী, মহত্ত্ব ও বড়ত্ব সম্পর্কে অবগত উনাকেই জিজ্ঞাসা করুন। (তাইসীরুল কারীমির রহমাতন ফী তাফসীরি কালামিল মান্নান অর্থাৎ তাফসীরুস সা’দী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৫৯ লেখক: আব্দুর রহমান বিন নাছির বিন আব্দুল্লাহ সা’দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১৩৭৬ হিজরী)

فاسأل عنه رجلًا عارفًا يخبرك برحمته او فاسأل رجلًا خبيرًا به وبرحمته.

অর্থ: এমন ব্যক্তিত্ব উনার কাছে উনার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন যিনি আরিফ বিল্লাহ তথা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার পরিচয় প্রাপ্ত বান্দা। যিনি তোমাকে উনার রহমত সম্পর্কে সংবাদ দিবেন অথবা এমন অবগত ব্যক্তিত্ব উনার কাছে জিজ্ঞাসা করুন যিনি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার রহমত সম্পর্কে অবগত। (মাদারিকুত তানযীল ওয়া হাক্বায়িকুত তা’বীল অর্থাৎ তাফসীরুন নাসাফী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৫৯ লেখক: আবুল বারাকাত আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন মাহমূদ নাসাফী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭১০ হিজরী, আত-তাসহীল লিউলূমিত তানযীল অর্থাৎ তাফসীরে ইবনু জুযী)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে এটাই প্রমাণিত হলো যে, আলিম ব্যক্তি ও আরিফ বিল্লাহ তথা ওলীআল্লাহ ব্যক্তিত্ব উনাদের কাছ থেকে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সম্পর্কে সঠিক ইল্ম অবগত হতে হবে। আর ইহাই তো মাযহাব উনার উদ্দেশ্য।

পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর- ৩৯

وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا.

অর্থ: যাঁরা বলেন, হে আমাদের রব তায়ালা! আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য চোখের শীতলতা দান করুন এবং আমাদেরকে মুত্তাক্বী উনাদের ইমাম তৈরী করুন। (পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪)

অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ

তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ

{وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِيْنَ اِمَامًا} يعنى اجعلنا ائمة فى الخير يقتدى بنا المؤمنون.

অর্থ: (আমাদেরকে মুত্তাক্বী উনাদের ইমাম তৈরী করুন) অর্থাৎ আমাদেরকে উত্তম ইমাম বানান যাতে মু’মিন-মুসলমান উনারা আমাদের ইক্তিদা করেন। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস সামারকান্দী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪ লেখক: আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭৩ হিজরী)

{وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِيْنَ اِمَامًا} الامام المؤتم به انسانا كان يقتدى بقوله وفعله او كتابا او غير ذلك محقا كان او مبطلا كما فى المفردات اى اجعلنا بحيث يقتدى بنا اهل التقوى فى اقامة مراسم الدين بافاضة العلم والتوفيق للعمل.

অর্থ: (আমাদেরকে মুত্তাক্বী উনাদের ইমাম তৈরী করুন) ইমাম হচ্ছেন মানুষের মধ্যে অগ্রগামী, উনাকে কথায় কাজে অনুসরন করা হয়। অথবা কিতাব অথবা অনুরূপ অন্য কিছুও ইমাম, তা হক্বই হোক অথবা বাত্বিলই হোক। যেমনটি ‘আল-মুফরাদাত’ কিতাবে উল্লেখ আছে, অর্থাৎ আমাদেরকে এমন ইমাম বানান যাতে দীন ইসলাম উনার নিয়ম-নীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাক্বওয়াদার উনারা ইলমের পূর্ণতা ও আমলের ক্ষেত্রে তাওফীক্ব লাভের উদ্দেশ্যে আমাদেরকে অনুসরন করেন। (রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল হাক্কী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪ লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছতফা ইস্তাম্বূলী হানাফী খালওয়াতী বারূসাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)

قال القفال رحمة الله عليه وجماعة من المفسرين رحمة الله عليهم هذه الاية دليل على ان طلب الرياسة فى الدين واجب.

অর্থ: হযরত ক্বিফাল রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও একদল মুফাসসিরীন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: দ্বীনী ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব তলব করা ওয়াজিব হওয়ার ব্যাপারে অত্র আয়াত শরীফ একখানা দলীল। (রূহুল বয়ান ফী তাফসীরিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল হাক্কী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪ লেখক: হযরত ইসমাঈল হাক্কী বিন মুছতফা ইস্তাম্বূলী হানাফী খালওয়াতী বারূসাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১১২৭ হিজরী)

وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِيْنَ اِمَامًا اى اجعلنا بحيث يقتدون بنا فى اقامة مراسم الدين بافاضة العلم والتوفيق للعمل.

অর্থ: আমাদেরকে মুত্তাক্বী উনাদের ইমাম তৈরী করুন অর্থাৎ আমাদেরকে এমন ইমাম বানান যাতে দীন ইসলাম উনার নিয়ম-নীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাক্বওয়াদার উনারা ইলমের পূর্ণতা ও আমলের ক্ষেত্রে তাওফীক্ব লাভের উদ্দেশ্যে আমাদেরকে অনুসরন করেন। (রূহুল মায়ানী ফী তাফসীরিল কুরআনিল আযীম ওয়াস সাবয়িল মাছানী অর্থাৎ তাফসীরুল আলূসী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪ লেখক: হযরত শিহাবুদ্দীন আবুছ ছানা সাইয়্যিদ মাহমূদ বিন আব্দুল্লাহ আলূসী বাগদাদী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১২৭০ হিজরী, ইরশাদুল আক্বলিস সালীম ইলা মাযাইয়াল কিতাবিল কারীম অর্থাৎ তাফসীরু আবিস সাঊদ)

قال النخعى رحمة الله عليه: طلب للرياسة بل مجرد كونهم قدوة فى الدين وعلماء عاملين، وقيل: فى الاية ما يدل على ان الرياسة فى الدين مما ينبغى ان يطلب.

অর্থ: হযরত ইমাম ইবরাহীম নখয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: কর্তৃত্ব তলব, বরং তা হচ্ছে দ্বীনী ক্ষেত্রে অনুসরনীয় ব্যক্তিত্ব এবং ইখলাছের সাথে আমলদার উলামা কিরাম উনাদেরই একক হক্ব। কারো মতে, অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ প্রমাণ করে যে, নিশ্চয়ই দ্বীনী ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব তলব করা উচিত। (রূহুল মায়ানী ফী তাফসীরিল কুরআনিল আযীম ওয়াস সাবয়িল মাছানী অর্থাৎ তাফসীরুল আলূসী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪ লেখক: হযরত শিহাবুদ্দীন আবুছ ছানা সাইয়্যিদ মাহমূদ বিন আব্দুল্লাহ আলূসী বাগদাদী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১২৭০ হিজরী)

قال بعضهم فى الاية ما يدل على ان الرياسة فى الدين يجب ان تطلب ويرغب فيها قال الخليل عليه الصلاة والسلام وَاجْعَلْ لِّىْ لِسَانَ صِدْقٍ فِى الْاٰخِرِيْنَ وقيل نزلت هذه الاٰيات فى العشرة المبشرين بالجنة.

অর্থ: কতক হযরত মুফাসসিরীন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা দলীল নেয়া হয়েছে যে, দ্বীনী ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব তলব করা ওয়াজিব। তা এজন্য যে, যাতে তা তলব করা হয় এবং এর প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনি বলেন, ‘আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী করুন।’ পবিত্র সূরাতুশ শুয়ারা শরীফ-৮৫। কোন কোন মুফাসসিরীন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: অত্র আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে দুনিয়ায় থাকতেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ছ্হাাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের ব্যাপারে। (মাফাতীহুল গইব অর্থাৎ আত-তাফসীরুল কবীর অর্থাৎ তাফসীরুর রাযী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪ লেখক: আল-ইমামুল আলিমুল আল্লামা, আল-হিবরুল আহরুল ফাহ্হামাহ ফখরুদ্দীন মুহাম্মাদ বিন উমর তামীমী রাযী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬০৬ হিজরী, মাদারিকুত তানযীল ওয়া হাক্বায়িকুত তা’বীল অর্থাৎ তাফসীরুন নাসাফী)

{وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِيْنَ اِمَامًا} الامام مَنْ يُقْتَدى به ولا يَبْتَدِع.

অর্থ: (আমাদেরকে মুত্তাক্বী উনাদের ইমাম তৈরী করুন) যাঁকে অনুসরন করা হয় উনিই ইমাম, তিনি বিদয়াতী হবেন না। (লাত্বয়িফুল ইশারাত অর্থাৎ তাফসীরুল কুশাইরী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪ লেখক: আব্দুল করীম বিন হাওয়াযিন বিন আব্দুল মালিক কুশাইরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৪৬৫ হিজরী)

وقال ابراهيم النخعى رحمة الله عليه: لم يطلبوا الرياسة بل بان يكونوا قدوة فى الدين. وقال ابن عباس رضى الله عنهما: اجعلنا ائمة هدى، كما قال تعالى: “وَجَعَلْنَا مِنْهُمْ اَئِمَّةً يَّهْدُوْنَ بِاَمْرِنَا” وقال مكحول رحمة الله عليه: اجعلنا ائمة فى التقوى يقتدى بنا المتقون. وقيل: هذا من المقلوب مجازه: واجعل المتقين لنا اماما، وقال مجاهد رحمة الله عليه. والقول الاول اظهر واليه يرجع قول ابن عباس رضى الله عنهما ومكحول رحمة الله عليه، ويكون فيه دليل على ان طلب الرياسة فى الدين ندب.

অর্থ: হযরত ইবরাহীম নখয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: কর্তৃত্ব তলব করবে না। বরং আপনারা দ্বীনী ক্ষেত্রে অনুসরনীয়-অনুকরনীয় হবেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা তিনি বলেন: আমাদেরকে হিদায়াতের ইমাম তথা হাদী বানান। যেমনটি মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: ‘আমি তাদের মধ্য থেকে ইমাম মনোনীত করেছিলাম।’ পবিত্র সূরাতুস্ সাজদাহ শরীফ-২৪। হযরত ইমাম মাকহূল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: আমাদেরকে তাক্বওয়া উনার ইমাম বানান, যাতে মুত্তাক্বীন বা পরহেযগার উনারা অনুসরন করেন। কেউ বলেন: অত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ এখানে মাজাযী অর্থে উল্টিয়ে বিপরীত হবে, তা হচ্ছে: আমাদের জন্য মুত্তাক্বীন ইমাম বানান। হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: প্রথম মতটি অধিকতর স্পষ্ট, আর এ মতের দিকেই প্রত্যাবর্তন করেছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ও হযরত মাকহূল রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মত। যাতে এটাই প্রমাণ হয়েছে যে, দ্বীনী ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব তলব করা নুদুব অর্থাৎ সুন্নাত বা মুস্তাহাব। (আল-জামিউ লিআহকামিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুল কুরতুবী পবিত্র সূরাতুল ফুরক্বান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং ৭৪ লেখক: আবূ আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন আবূ বকর বিন ফারাহ আনছারী খাযরাযী শামসুদ্দীন কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৭১ হিজরী, আল-মুহাররারুল ওয়াজীয অর্থাৎ তাফসীরু ইবনে আত্বিয়্যাহ)

অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে যা প্রমাণিত হয় তা হচ্ছে এই যে, দ্বীনী ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব তলব করা নুদুব অর্থাৎ সুন্নাত বা মুস্তাহাব। আর ইমাম হওয়ার দুয়া করাও সুন্নাত এবং মুত্তাক্বী ইমাম লাভ করার দুয়া করাও সুন্নাত। আর ইমাম বলা হয় উনাকেই যাকে মানুষেরা অনুসরণ করে থাকে। এ অনুসরণ হক্ব উনার ক্ষেত্রে হোক অথবা বাতিলের ক্ষেত্রেই হোক। মুত্তাক্বী ইমাম হবেন হক্বপন্থী ইমাম, আর বেঈমান ও বদকার নেতা হবে বাতিলপন্থীদের ইমাম। কিন্তু হক্বপন্থী ইমাম উনার জন্য শর্ত হলো- উনার আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ উনার আক্বীদাহ ভিত্তিক আক্বীদাহ শুদ্ধ থাকবে, সুন্নাত মুওয়াফিক ইখলাছের সাথে আমলে ছালিহ থাকবে এবং তিনি ইলমুশ শরীয়াহ ও ইলমুল মা’রিফাত উভয় ইলমে পারদর্শী হবেন।

অসমাপ্ত


পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৫

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৬

জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২

কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-২৭