পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নাটক-সিনেমা করা ও দেখা হারাম- ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তা মানে না। কিন্তু নাটক-সিনেমার ভয়াবহ কুফল রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারছে না।

সংখ্যা: ২৪৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নাটক-সিনেমা করা ও দেখা হারাম- ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তা মানে না। কিন্তু নাটক-সিনেমার ভয়াবহ কুফল রাষ্ট্র অস্বীকার করতে পারছে না।

ডিস এন্টেনার প্রসার অজোপাড়াগাঁয়েও।

হিন্দি সিরিয়ালের কুপ্রভাবে দেশ জাতি বিপর্যস্ত।

‘রাজার গায়ে তো পোশাক নেই’- এই সত্য উচ্চারণের মতো ‘নাটক-সিনেমাও পোশাকহীনার সংস্কৃতির প্রাদুর্ভাব ঘটাচ্ছে’- সে তথ্য ঘোষণা দেয়ার মতো রাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারকদের মাঝে কাউকেও কি খুঁজে পাওয়া যাবে না?

‘সিনেমা-নাটক তথা বেপর্দা-বেশরা সংস্কৃতি হারাম ও কবীরা গুনাহর কাজ’-

এ কথা বলতে রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার দেশের সরকার আর কতো দেরি করবে?


বর্তমান সময়ে মানুষদের চেতনা তথা ধ্যান-খেয়াল পার্থিবমুখী হওয়ায় তাদের জীবন ধারণে টিভি যেন অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ হয়ে উঠেছে। নাঊযুবিল্লাহ! এখনকার মানুষরা বৈষিক বিষয় নিয়ে সদা ব্যস্ত। এত ব্যস্ত যে, নিজের শিশু সন্তানদেরও সময় দিতে পারছে না তারা। অথচ অভিভাবকরা শিশুদের যথেষ্ট সময় না দিলে তারা একাকীত্ব বোধ করে। আর সেই একাকীত্ব বোধ দূর করতে ও দূর করাতে টিভিকে বেছে নেয়। আবার বাবা-মা উভয়ে যদি কর্মজীবী হয়, তখন স্বভাবতই শিশু গৃহপরিচারিকার কাছে বড় হয় এবং গৃহপরিচারিকারা শিশুকে ভুলিয়ে রাখার জন্য টিভি দেখতে উৎসাহিত করে। ছোট শিশুরা সহজেই বিজ্ঞাপন ও কার্টুনের প্রতি আকৃষ্ট হয়। প্রায় সময় দেখা যায়- টিভির রিমোটটি তাদের হাতেই থাকে এবং টিভির উপর তাদের একারই রাজত্ব চলে। কিন্তু তারা যে শুধু কার্টুন চ্যানেলেই সীমাবদ্ধ থাকছে তা কিন্তু নয়, বরং সুযোগ পেলেই তারা কখনো মায়েদের সাথে অথবা একা বিভিন্ন হিন্দি গানের চ্যানেল, বাংলা (কলকাতা) ও হিন্দি সিরিয়াল দেখে। এ কথা সর্বজনবিদিত যে, বেশির ভাগ শিশু এখন বই পড়া, হাঁটা-চলা ইত্যাদির সুযোগ কম পায় এবং টিভি দেখায় বেশি সময় ব্যয় করে। অথচ এমনিতেই শিশুদের স্বাভাবিক বুদ্ধিবৃত্তিক ও দৈহিক-মানসিক উন্নয়নে টিভি একটি প্রধান অন্তরায়। সেক্ষেত্রে ভারতের দুরভিসন্ধিমূলক ও চরম দুঃশ্চরিত্রমূলক সিরিয়ালগুলো দেখে শিশুরা ছোট থেকে হিন্দুঘেঁষা, ধর্মহীন, নাস্তিক ও ইসলামবিদ্বেষী হয়ে যাচ্ছে। (নাউযুবিল্লাহ!)

ছোটা ভীম (হিন্দি ও ইংলিশ)- সম্পূর্ণ হিন্দু সেটিংয়ে উপস্থাপিত একটি এনিমেশন, যার হিরো হচ্ছে ‘ভীম’ নামের একটি ছোট্ট ছেলে। এর প্রারম্ভিক সঙ্গীতে বলা হয়, “না হারা হ্যায়, না হারে গা, দুনিয়া মে বাচ্চ কা এক হি হিরো, ছোটা ভীম”। কাহিনীতে দেখানো হয়- যেকোনো রকমের বিপদ-আপদে সে এসে সাহায্য করে এবং সকলকে বিপদমুক্ত করে। অনেক সময় বিপদমুক্ত হবার পর লোকজন তাকে নিয়ে শ্লোগানও দেয়- ÔAl mighty VimÕ! (নাউযুবিল্লাহ!)

এখানে উল্লেখ করা দরকার, ভীম মহাভারতের একটি চরিত্র। পঞ্চপা-ব ভাইদের মধ্যে ভীম দ্বিতীয়। বিশাল দেহ ও প্রবল শক্তির জন্য তাদের কাছে ভীম বিখ্যাত। এখানে সেক্যুলারিজমের মন্ত্র খুব কৌশলে বাচ্চাদের মনে ঢুকিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা আছে। যেমন- ক্রিসমাসের আগের একটা এপিসোড আছে ‘ভীম আর সান্তাক্লজ’। সেখানে সব বাচ্চারাই মনে মনে ঠিক করে রাখে ক্রিসমাসের সময় সান্তাক্লজ-এর কাছে কি উপহার চাইবে! কারণ সান্তা মানুষের মনের আশা পূরণ করতে পারে।

‘ইসলামিক’ টাচেরও অপকৌশল আছে, ‘ছোটা ভীম এবং অ্যারাবিয়ান নাইট’। ‘ইসলামিক কালচারের’ এপিসোডের ভিলেন অ্যারাবিয়ান ড্রেস পরা দাড়িওয়ালা মুসলিম, যে হিন্দু রাজকুমারীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চায় এবং অবশেষে ভীমের হাতে নাজেহাল হয়ে পালায়।

লিটেল কৃষ্ণা এবং বাল কৃষ্ণা (হিন্দি ও ইংলিশ)- হিন্দুধর্মের আরাধ্য দেবতা কৃষ্ণকে নিয়ে তৈরি এই এনিমেশন দুটি শিশুদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এটা জি-সিনেমায় দেখানো হয়। হিন্দু ধর্মগ্রন্থ ভগবৎ গীতাতে কৃষ্ণের বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। কৃষ্ণকে দেখানো হয়েছে, একটি ছোট ছেলে, যার গায়ের রং ঘন নীল, খালি গায়ে সাধারণত হলুদ রঙ্গের ধুতি পরা এবং মাথার মুকুটে একটি ময়ূরপুচ্ছ শোভা পায়। এখানে তাকে কখনো সম্বোধন করা হয়, “লর্ড কৃষ্ণা” আবার কখনো ÒKrisna, Lord of the universeÓ| (নাউযুবিল্লাহ!)

গড গণেশা (হিন্দি ও ইংলিশ)- পৌরাণিক হিন্দুধর্মের জনপ্রিয়তম ও সর্বাধিক পূজিত দেবতাদের একজন হচ্ছে গণেশ। হিন্দুদের সব সম্প্রদায়ের মধ্যেই তার পূজা প্রচলিত। জৈন, বৌদ্ধধর্ম এমনকি ভারতের বাইরেও গণেশ আরাধনার ব্যাপক প্রচলন আছে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে বাংলা নববর্ষের দিন গণেশ পূজা প্রচলিত। এছাড়াও দুর্গাপূজার সময় পরিবারের সঙ্গে গণেশও পূজিত হয়। শিশুদের জন্য তৈরি এই এনিমেশনটি গণেশকেই নিয়ে।

রাম এবং রামায়ণ (হিন্দি ও ইংলিশ)- বাল্মীকি রচিত রামায়ণ হিন্দুশাস্ত্রের কল্পকাহিনীর একটি গ্রন্থ, যার আক্ষরিক অর্থ ‘রামের যাত্রা’। হিন্দু অবতার রামের জীবন-কাহিনীসহ প্রাচীন ভারতের ধর্মচেতনা এই এনিমেশন দুটিতে দেখানো হয়।

জয় হনুমান (হিন্দি ও ইংলিশ)- সিরিজ আকারে দেখানো হয় স্টার গোল্ডে। হনুমান কৃষ্ণের পূজা করে, আবার রামের স্ত্রী সীতাকে রাবনের কাছ থেকে উদ্ধার করতে সাহায্য করে। এখানে হিন্দুদের দেবতা হনুমানের আজগুবি কা-কারখানা দেখানো হয়। সেই সাথে হিন্দু পুরাণের বিভিন্ন চরিত্রের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে শিশুদেরকে।

মহাভারত (হিন্দি ও ইংলিশ)- ব্যাসদেব রচিত মহাভারত হিন্দুশাস্ত্রের একটি অন্যতম কাব্য (অপরটি রামায়ণ)। নানারকম চমক লাগানো কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধসহ হিন্দু পুরাণ-এর ঘটনা সিরিজ আকারে স্টার জলসাতে দেখানো হয়। যা ইদানীং বাংলাদেশের শিশুদের খুবই আকৃষ্ট করছে এবং এই বিষয়ে তারা মোটামুটি এক্সপার্ট। সিরিয়াল ছাড়াও মহাভারতের কার্টুন এবং এনিমেটেড মুভি বের হয়েছে।

ঠাকুরমার ঝুলি (বাংলা)-DawsenTv -তে এটি প্রচারিত হয়। গোটা ঠাকুরমার ঝুলিতে উল্লেখ করার মতো কোনো মুসলমান চরিত্র নেই। তাই স্বাভাবিকভাবেই মুসলিমদের উদযাপিত কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানের কোনো উল্লেখই এখানে নেই। যা আছে তার ভেতর উল্লেখযোগ্য হলো- দরিদ্র ব্রাহ্মণের সততার গল্প, কিছু পুত্র সন্তানকামী রাজার গল্প, সাধু-সন্ন্যাসীর পাঁচন খেয়ে ছোটরানীর গর্ভবতী হবার গল্প, সৎমা ও সতীনের কূটনামীর গল্প। হিন্দু সমাজে প্রচলিত যত রকমের কুসংস্কার ও কাল্পনিক বিশ্বাস রয়েছে, ঠাকুরমার ঝুলিতে তার প্রত্যেকটি দিনের পর দিন বেশ পজিটিভভাবে শিশুদের সামনে দেখিয়ে যাচ্ছে।

অর্ধনগ্ন ও অশ্লীল বিজ্ঞাপনে ভরপুর ভারতের টিভি চ্যানেলগুলো গোঁড়া হিন্দুপ্রধান দেশের হওয়ায় এর মূল বিষয়বস্তু হলো হিন্দুদের ধর্মীয় কালচার। সঙ্গে যোগ হয়েছে আধুনিক যুগের অসুস্থ সেক্যুলার ধ্যান-ধারণা। অপরদিকে কাগজে-কলমে হলেও বাংলাদেশ একটি মুসলিমপ্রধান দেশ। হিন্দি সিরিয়াল যাই প্রচার করুক না কেন, তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো হিন্দুত্ববাদী চেতনাকে হিন্দু তো বটেই, মুসলমানদের মন ও মস্তিষ্কে গ্রোথিত করা। হিন্দি ও বাংলা সিরিয়ালগুলো শুরু হয় মঙ্গল প্রদীপ জ্বালানোসহ ব্যাকগ্রাউন্ডে হিন্দু শ্লোক বা ধর্মসঙ্গীত দিয়ে। আবহসঙ্গীতে থাকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, মন্দিরের ঘণ্টা, ঢোলবাদ্য, পূজার সঙ্গীত ইত্যাদি। আনুমানিক ২০-২৫ মিনিটের একটি কাহিনীবিহীন সিরিয়ালে অন্ততপক্ষে ১৫ মিনিট বিভিন্ন ধরনের পূজা-অর্চনার ‘আকর্ষণীয়’ কর্মকা-সহ হরেক রকম মূর্তির চেহারার সামনে ক্যামেরা ধরে থাকে।

শিশুদের উপর পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে, শিশুরা টিভিতে যা দেখে তাই সত্য বলে মনে করে। আর সেই দেখা ও শেখা যদি হয় অভিভাবকের অবর্তমানে তাহলে তো সোনায় সোহাগা। হিন্দু ধর্মগ্রন্থের বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে তৈরি শিশুতোষ কার্টুন, এনিমেশন এবং সিরিয়াল। সেগুলো থেকে একটি মুসলিম পরিবারের শিশু কী শিখতে পারে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শিশুকাল থেকেই মুসলিম শিশুদের হিন্দুত্ববাদে দীক্ষিত করা হচ্ছে। (নাউযুবিল্লাহ!)


-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৭

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৬

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৫

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৫ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘সংবিধানের প্রস্তাবনা’, ‘মৌলিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ ‘জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা’ এবং ‘জাতীয় সংস্কৃতি’ শীর্ষক অনুচ্ছেদের সাথে- থার্টি ফার্স্ট নাইট তথা ভ্যালেন্টাইন ডে পালন সরাসরি সাংঘর্ষিক ও সংঘাতপূর্ণ’। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।সংবিধানের বহু গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্পর্শকাতর অনুচ্ছেদের প্রেক্ষিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের এদেশে কোনভাবেই থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ভ্যালেন্টাইন ডে পালিত হতে পারে না।পারেনা গরিবের রক্ত চোষক ব্র্যাকের ফজলে আবেদও ‘নাইট’ খেতাব গ্রহণ করতে। পারেনা তার  নামের সাথে ‘স্যার’ যুক্ত হতে। পাশাপাশি মোঘল সংস্কৃতির দান পহেলা বৈশাখ পালনও প্রশ্নবিদ্ধ।