পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সুমহান সম্মানার্থে মাহফিল করা, সাধ্যমত খরচ করা ফরযে আইন এবং সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম ইবাদত

সংখ্যা: ২৪৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সুমহান সম্মানার্থে মাহফিল করা, সাধ্যমত খরচ করা ফরযে আইন এবং সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম ইবাদত


খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক করেন,

يَا ايُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءتْكُم مَّوْعِظَة مّن رَّبّكُمْ وَشِفَاء لّمَا فِى الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَة لّلْمُؤْمِنِينَ .قُلْ بِفَضْلِ اللّهِ وَبِرَحْمَتِه فَبِذلِكَ فَلْيَفْرَحُواْ هُوَ خَيْر مّمَّا يَجْمَعُونَ

অর্থ : “হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এসেছেন মহান নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সকল ব্যাধিসমূহ দূরকারী, কুল-কায়িনাতের মহান হিদায়েত দানকারী ও ঈমানদারদের জন্য (খাছভাবে এবং আমভাবে সমস্ত কায়িনাতের জন্য) মহান রহমত (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)।

হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া, ইহসান ও রহমত (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে) উনার জন্য ঈদ উদযাপন তথা খুশি প্রকাশ করো। তোমরা যতো কিছুই করোনা কেনো  উনার মুবারক শানে এ খুশী প্রকাশ করাটাই হচ্ছে সমগ্র কায়িনাতের জন্য সবচেয়ে বড় ও সর্বোত্তম নিয়ামত।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)

ঊছুলে ফিক্বাহর সমস্ত কিতাবে উল্লেখ আছে যে, الامر للوجوب অর্থাৎ আদেশসূচক বাক্য দ্বারা সাধারণত ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়ে থাকে। কাজেই উপরোক্ত আয়াত শরীফসহ অন্যান্য আয়াত শরীফ দ্বারা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ করা তথা খুশি প্রকাশ করা বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য ফরয। মূলত; এ কারণেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সারাজীবনই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শানে আজিমুশ্বান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت ابى بن كعب رضى الله تعالى عنه قال قلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم انى اكثر الصلوة عليك فكم اجعل لك من صلوتى فقال ماشئت قلت الربع قال ما شئت فان زدت فهو خيرلك قلت النصف قال ما شئت فان زدت فهو خيرلك قلت فالثلثين قال ما شئت فان زدت فهو خيرلك قلت اجعل لك صلوتى كلها قال اذا تكفى همك ويكفرلك ذنبك.

অর্থ : “হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, একদা আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার প্রতি বেশি বেশি ছলাত শরীফ পাঠ তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে চাই। আমি কি পরিমাণ সময় আপনার প্রতি ছলাত শরীফ পাঠ তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য  নির্দিষ্ট  করবো?  তিনি বললেন,  যতটুকু  আপনি  ইচ্ছা  করেন।  আমি  বললাম,  তাহলে পুরো দিনের এক চতুর্থাংশ সময় অর্থাৎ ৬ ঘণ্টা? তিনি বললেন, যতটুকু আপনি ইচ্ছা করেন। তবে আরো বেশি করলে তা হবে আপনার জন্য কল্যাণকর। আমি বললাম,  তাহলে  কি  অর্ধেক  সময়  অর্থাৎ ১২ ঘণ্টা নির্ধারণ  করে  নিব?  তিনি বললেন, তা আপনার ইচ্ছা। তবে যদি এটা অপেক্ষা অধিক সময় নির্ধারণ করেন, তা হবে আপনার জন্য অধিক কল্যাণকর। আমি বললাম, তাহলে কি দুই-তৃতীয়াংশ সময় অর্থাৎ ১৬ ঘণ্টা নির্ধারণ করবো? তিনি বললেন,  তা  আপনার  ইচ্ছা।  তবে  আরো  অধিক  করলে  তা আপনার জন্য অধিক কল্যাণকর হবে। আমি বললাম, তাহলে কি আমার জীবনের সম্পূর্ণ সময়টাই আপনার প্রতি ছলাত শরীফ পাঠের জন্য তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য নির্ধারণ  করবো? তিনি বললেন,  যদি তা করতে পারেন, তাহলে আপনার  যাবতীয় আকাঙ্খা পূরণ হবে এবং আপনার গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, আল বাইয়্যিনাত শরীফ ২২১:৯১)

‘ছহীহ বুখারী শরীফ’-উনার দ্বিতীয় খণ্ডের ৭৬৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

قَالَ حَضَرَتْ عُرْوَةُ رَضِىَ الله تَعَالى عَنْهُ وَ حضرت ثُوَيْبَةُ عَلَيْهَا السَلاَمُ مَوْلاَة لاَبِى لَهَب كَانَ اَبُو لَهَب اَعْتَقَهَا فَاَرْضَعَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا مَاتَ اَبُو لَهَب اُرِيَهُ بَعْضُ اَهْلِه بِشَرّ حِيبَةٍ قَالَ لَه مَاذَا لَقِيتَ قَالَ اَبُو لَهَبٍ لَمْ اَلْقَ بَعْدَكُمْ غَيْرَ اَنّى سُقِيتُ فِى هَذِه بِعَتَاقَتِى حَضَرَتْ ثُوَيْبَةَ عَلَيْهَا السَلاَمُ.

অর্থ : “হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আবু লাহাবের বাঁদী এবং আবু লাহাব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এ খুশি হয়ে উনার খিদমত করার জন্য উনাকে আযাদ করে দিয়েছিলো। এরপর আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তিনি দুধ মুবারক পান করান। অতঃপর আবু লাহাব যখন মারা গেলো (কিছুদিন পর) তার পরিবারের একজন অর্থাৎ তার ভাই হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি স্বপ্নে দেখলেন যে, আবূ লাহাব সে ভীষণ কষ্টের মধ্যে নিপতিত আছে। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার সাথে কিরূপ ব্যবহার করা হয়েছে।’ আবু লাহাব উত্তরে বললো, ‘যখন থেকে আপনাদের কাছ থেকে দূরে রয়েছি তখন থেকেই ভীষণ কষ্টে আছি। তবে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে তথা খুশিতে আত্মহারা হয়ে বাঁদী হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম উনাকে দু’আঙুলের ইশারায় আযাদ করার কারণে সেই দু’আঙ্গুল হতে সুমিষ্ট ঠা-া ও সুশীতল পানি পান করতে পারছি।”

‘শরহুয্ যারকানী’ কিতাবের ১ম খণ্ডের ২৬১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

قال حصرت ابن الـجزرى رحمة الله عليه فاذا كان هذا الكافر الذى نزل القران بذمه جوزى فى النار بفرحه ليلة مولد النبى صلى الله عليه وسلم به فما حال الـمسلم الـموحد من امته عليه السلام يسر بـمولده ويبذل ما تصل اليه قدرته فى مـحبته صلى الله عليه وسلم لعمرى انـما يكون جزاؤه من الله الكريـم ان يدخل بفضله العميم جنات النعيم.

অর্থ : “হযরত ইবনুল জাযরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “আবু লাহাবের মতো কাট্টা কাফির যার নিন্দায় কুরআন শরীফ-এ আয়াত শরীফ ও সূরা পর্যন্ত নাযিল হয়েছে, তাকে যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ গ্রহণের রাত্রিতে আনন্দিত হয়ে খুশি প্রকাশ করার কারণে জাহান্নামেও তার পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে তবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের কোনো মুসলমান যদি ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে তার সাধ্যানুযায়ী টাকা-পয়সা ইত্যাদি খরচ করে তাহলে তাদের অবস্থা কিরূপ হবে? নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা উনার ফযল ও করমে অবশ্যই অবশ্যই তাকে নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।”  সুবহানাল্লাহ!  (মা-ছাবাতা বিস সুন্নাহ ১ম খ-, ৮৩ পৃষ্ঠা)

উল্লেখ্য যে, আবু লাহাব ৫৭০ ঈসায়ী সনে বিলাদত শরীফ উনার সংবাদ শ্রবণ করে খুশি প্রকাশ করেছিল। পরবর্তী সারাজীবন সে কুফরী করেছে। বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশকে তার জীবনের সমস্ত কুফরী শিরিকীও মিটাতে পারেনি। বরং আবু লাহাব জাহান্নামের মধ্যেও বিশেষ ব্যবস্থায় নিয়ামত পাচ্ছে। তাহলে বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করার ফায়দা যে কত তা ফিকির ও চিন্তার বিষয়।

এ প্রসঙ্গে “আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম ফী মাওলিদি সাইয়্যিদি উলদি আদম” উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

قَالَ حَضْرَةْ اَبُوْ بَكْرِنِ الصّدّيْقُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلٰى قِرَائَةِ  مَوْلِدِ النَّبِىّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ رَفِيْقِىْ  فِىْ الْـجَنَّةِ.

অর্থ : হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খুশি প্রকাশ করে এক দিরহাম ব্যয় করবে, সে জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!

وَقَالَ حَضْرَةْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَنْ عَظَّمَ مَوْلِدَ النَّبِىّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ اَحْيَا الْاِسْلَامَ.

অর্থ : “হযরত ফারুকে আযম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে বিশেষ মর্যাদা দিলো অর্থাৎ এ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করলো, সে মূলত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকেই পুনরুজ্জীবিত করলো।” সুবহানাল্লাহ!

وَقَالَ حَضْرَةْ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَـمًا عَلٰى قِرَائَةِ مَوْلِدِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَاَنّـَمَا شَهِدَ غَزْوَةَ بَدْرٍ وَّحُنَيْنٍ.

অর্থ : “হযরত যুন নুরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খুশি হয়ে এক দিরহাম খরচ করলো, সে যেনো বদর ও হুনাইন যুদ্ধে শরীক থাকলো।” সুবহানাল্লাহ!

وَقَالَ حَضْرَةْ عَلِىّ كَرَّمَ الله وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ مَنْ عَظَّمَ مَوْلِدَ النَّبِىّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ سَبَبًا لّقِرَائَتِه لايَـخْرُجُ مِنَ الدُّنْيَا اِلَّا بِالْاِيْـمَانِ وَيَدْخُلُ الْـجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ.

অর্থ : “হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে বিশেষ মর্যাদা প্রদান করলো অর্থাৎ সে উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করলো, সে ব্যক্তি অবশ্যই ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” সুবহানাল্লাহ!

উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত হলো যে, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন তথা পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করার জন্য যেরূপ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন।

উনাদের মুবারক নির্দেশ পালনার্থে এবং কুল কায়িনাতের জ্বিন ইনসান সকলের মাঝে রহম করম বিলাতে যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আ’যম, গাউছুল আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যম, জব্বারিউল আউওয়াল, কবিউল আউওয়াল, সুলতানুন নাছীর, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ অনন্তকালের জন্য সুমহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ জরী করেছেন এবং পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার স্মরণে অসংখ্য কিতাবাদী ও অসংখ্য বরকতময় দ্রব্য সামগ্রী প্রকাশ করেছেন এবং করছেন।

আরো উল্লেখ্য, হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাও পাঠ করেছেন ও পাঠ করতে বলেছেন তেমনি অনুসরণীয় ইমাম, মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও করেছেন এবং পাঠ করার জন্য উম্মাহকে উৎসাহ প্রদান করেছেন।

উল্লেখ্য, যিান খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

تَعَاوَنُواْ عَلَى الْبِرّ وَالتَّقْوى وَلاَ تَعَاوَنُوْا عَلَى الاثْمِ وَالْعُدْوَانِ

অর্থ : “তোমরা নেকী ও পরহেযগারীতে পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য সহযোগীতা করো। সাবধান! তোমরা পাপাচার ও পবিত্র শরীয়ত গর্হিত কাজে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগীতা করবে না।” (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২)

কাজেই, মহা পবিত্র সুমহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে আয়োজিত মাহফিলে সাহায্য সহযোগীতা করা জ্বিন ইনসান কুল কায়িনাতের সকলের জন্যই ফরয হয়ে যায়। কারণ মহা পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ সুমহান শানে উদযাপন করার চেয়ে বড় কোন নেক কাজ আর হতে পারে না। অথচ আজকাল মুসলমান নামধারী অনেকে মুসলমান উনাদের চিরশত্রু হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান তথা বিধর্মীদের পুজা, হারাম খেলাধুলাসহ অনেক নাজায়িয, হারাম ও কুফরী কাজে বহু টাকা-পয়সা খরচ করে থাকে,সাহায্য সহযোগীতা করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! অথচ এসব ক্ষেত্রে টাকা-পয়সা খরচ করা, সাহায্য সহযোগীতা করা হারাম, কুফরী ও কাট্টা কবীরাহ গুনাহ। কাজেই পুজা, খেলাধুলাসহ সর্বপ্রকার হারাম কাজে টাকা-পয়সা খরচ না করে সকলের ঈমানী দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে যার যার সাধ্য সামর্থ্য অনুযায়ী পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ  উনার সুমহান সম্মানার্থে আয়োজিত মজলিশ-মাহফিল উনার মধ্যে খরচ করা যা ইহকালে বিপদ-আপদ থেকে বাঁচার এবং পরকালে সম্মানিত জান্নাত লাভের অন্যতম মহান উসীলা মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

বলার অপেক্ষা রাখেনা, বিশ্বের ইতিহাসে একমাত্র বর্তমানে নজীরবিহীনভাবে সর্বশ্রেষ্ঠ পবিত্রতম রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার মধ্যেই অনন্তকালের তরে আয়োজিত হচ্ছে প্রতিদিন পবিত্রতম সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে সুমহান মাহফিল ও প্রত্যহ বরকতপূর্ণ তাবাররুক উনার ব্যবস্থা এবং উনার সম্মানার্থে বিভিন্ন তাজদীদী কর্মসূচী পালন । সুবহানাল্লাহ!


আল্লামা মুহম্মদ ফযলুল হক

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সর্বপ্রথম ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেন

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, সাইয়্যিদুল ফারীক্বাইন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই নিজের বিলাদত শরীফ পালন করে খুশি প্রকাশ করেন

হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের খিলাফতকালে নাবিইয়ুর রহমাহ, নাজিইয়ুল্লাহ, নূরুম মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করেছেন এবং এ উপলক্ষে ব্যয় করার ফযীলতও বর্ণনা করেছেন

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করেছেন

বান্দা-বান্দী ও উম্মতের জন্য সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদুল ঈদিল আ’যম, সাইয়্যিদুল ঈদিল আকবার ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয হওয়ার প্রমাণ