রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৭৩

সংখ্যা: ২০০তম সংখ্যা | বিভাগ:

মূলত যুগে যুগে মিথ্যাবাদী আর মুনাফিকরাই হক্বের বিরোধিতা করেছে, হক্বের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। তাই মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ মুনাফিকদেরকে ‘কাযযাব’ বা মিথ্যাবাদী বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন- পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ পাক সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, নিশ্চয়ই মুনাফিকরাই মিথ্যাবাদী।” (সূরা মুনাফিকুন-১)

উক্ত আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, যারা মুনাফিক তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী। আবার যারা মিথ্যাবাদী তারাই মুনাফিক। কেননা হাদীছ শরীফ-এ মুনাফিকের যে আলামত বা লক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে তন্মধ্যে একটি হলো মিথ্যা কথা বলা।

মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-উনার যারা বিরোধিতাকারী তারা উক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এরই পূর্ণ মিছদাক। অর্থাৎ তারা একই সাথে মুনাফিক ও কাট্টা মিথ্যাবাদী, তাই তারা মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্যে স্মরনিকা-বার্ষিকী, পত্র-পত্রিকা ও বক্তৃতার মাধ্যমে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়।

ধারাবাহিক

১। প্রসঙ্গ “হক্কানী পীর বা আলিম”

মিথ্যাবাদী, তথাকথিত মুফতী, স্বঘোষিত মুশরিক শামছুল হক তার কলঙ্কিত রেসালা.. “বেশরা…দের গোমর ফাঁক”-এর ৮৩ পৃষ্ঠায় লিখেছে “…. হক্কানী পীর নয়। আর ৮৪ পৃষ্ঠায় লিখেছে…..আলিম নয়।”

“খ-নমূলক জবাব”

পূর্ব প্রকাশিতের পর

দ্বিতীয়ত আলিম ওই ব্যক্তি যার অন্তরে তাক্বওয়া বা খোদাভীতি রয়েছে। অর্থাৎ যিনি আল্লাহ পাক উনার ভয়ে হারাম, নাজায়িয কাজ থেকে বিরত থাকেন। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন-

انما يخشى الله من عباده العلماء

অর্থ: “নিশ্চয় আল্লাহ পাক উনার বান্দাদের মধ্য হতে শুধুমাত্র আলিমগণই আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন।” (সূরা ফাতির : আয়াত শরীফ-২৮)

এ আয়াত শরীফ-এর তাফসীর জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল হাম্বলী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম, ইমামুল আইম্মাহ, ইমামুছ্ ছিদ্দীক্বীন, শায়খুল মুহাদ্দিছীন, হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে। তিনি এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বলেন, “যাঁর ভিতর যত বেশি খোদাভীতি রয়েছে তিনি  ততো বড় আলিম।” উক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে খোলাছায়” উল্লেখ আছে যে-

العلماء سے اصطلاحی عالم یعنی کتابیں پرہ لینے والے مراد نہیں بلکہ کبریائے ذات وعظمت صفات کو نور ایمان شمع عرفان سے دیکہنے والے اسلئے کہ اصحاب رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم وارباب ولایت وقبول سبکے سب علماء کتابی نہ تہی گو اونکا علم نافع اعلی درجے کاتہا.

অর্থ: উক্ত আয়াত শরীফ-এ العلماء শব্দ দ্বারা কিতাবসমূহ পাঠকারী তথা দাওরা বা টাইটেল পাসকারীদেরকে বুঝানো হয়নি। বরং কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত “আলিম” তাঁরাই, যাঁরা মহান আল্লাহ পাক-উনার মহিমাময় জাত ও অসীম গৌরবময় ছিফাতসমূহকে ঈমান ও মা’রিফতের নূরের আলোকে অবলোকন করেছেন। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার প্রিয়তম ছাহাবী আজমাঈন রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ ও (পরবর্তী) বিলায়েতপ্রাপ্ত ও মকবুল ওলীআল্লাহগণ কিতাবী তথা দাওরা বা টাইটেল পাস আলিম ছিলেন না। তথাপিও উনারা সর্বোচ্চ স্তরের উপকারী ইলমের অধিকারী ছিলেন। অর্থাৎ উনারাই কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত প্রকৃত আলিম ছিলেন।

উল্লিখিত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত আলিম, ইমামুল মুফাস্সিরীন, হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রসিদ্ধ “তাফসীরে ইবনে কাছীরে” উল্লেখ করেন-

عن ابن مسعود رضى الله تعالى انه قال ليس العلم عن كثرة الحديث ولكن العلم عن كثرة الخشية وقال احمد بن صالح المصرى عن ابن وهاب عن مالك قال ان العلم ليس لكثرة الرواية وانما العلم نور يجعله الله تعالى فى القلب.

অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, যে ব্যক্তি অধিক হাদীছ শরীফ জানে সে ব্যক্তি আলিম নয়। বরং যাঁর মধ্যে আল্লাহভীতি অধিক সে ব্যক্তিই আলিম। আর হযরত আহমদ বিন ছালেহ মিছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অধিক রিওয়ায়েত শিক্ষা করলেই আলিম হওয়া যায়না। মূলত ইলম হচ্ছে নূর বা জ্যোতি স্বরূপ। আল্লাহ পাক তা মানুষের অন্ত:করণে দান করেন।”

উক্ত “তাফসীরে ইবনে কাছীরে” উল্লিখিত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় আরো উল্লেখ আছে যে, “হযরত ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আলিমগণ তিনভাগে বিভক্ত। (১) আলিম বিল্লাহ অর্থাৎ যারা শুধু আল্লাহ পাককেই জানেন। কিন্তু উনার হুকুম-আহকাম সম্পর্কে অজ্ঞ। (২) আলিম বিআমরিল্লাহ। অর্থাৎ যারা শুধু হুকুম-আহকাম সম্পর্কে জানেন। কিন্তু আল্লাহ পাক সম্পর্কে অজ্ঞ বা আল্লাহভীতি নেই। (৩) আলিম বিল্লাহ ওয়া বিআমরিল্লাহ। অর্থাৎ যাঁরা আল্লাহ পাক ও উনার শরীয়তের হুকুম-আহকাম ও ফারায়িজ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত এবং আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন। (উনারাই হাক্বীক্বী বা প্রকৃত আলিম।)”

তৃতীয়ত: ঐ ব্যক্তিই হাক্বীক্বী আলিম যিনি অর্জিত ইলম অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমল করেন অর্থাৎ সুন্নতের পূর্ণ অনুসরণ করেন। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

عن سفيان ان عمر رضى الله تعالى عنه قال لكعب رضى الله تعالى عنه من ارباب العلم؟ قال الذين يعملون بما يعلمون قال فما اخرج العلم من قلوب العلماء؟ قال الطمع.

অর্থ: “(আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত কা’ব ইবনুল আহবার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন) আলিম বা ইলমের অধিকারী কে? তিনি উত্তরে বললেন, যাঁরা ইলম অনুযায়ী আমল করেন। হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পুনরায় জিজ্ঞেসা করলেন, কোন জিনিস আলিমদের অন্তর থেকে ইলমকে বের করে দেয়? তিনি উত্তরে বললেন, লোভ অর্থাৎ দুনিয়ার সম্পদ, সম্মান ইত্যাদি হাছিলের আকাঙ্খা।” (দারিমী, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ)

বিশিষ্ট তাবিয়ী, আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো- আলিম কে? তিনি জবাবে বলেন-

انما الفقيه الزاهد فى الدنيا والراغب الى الاخرة والبصير بذنبه والمداوم على عبادة ربه والوارع الكف عن اعرض المسلمين والعفيف عن اموالهم والناصح لجماعتهم.

অর্থ: “ফক্বীহ বা আলিম হলেন ওই ব্যক্তি, যিনি দুনিয়া হতে বিরাগ, পরকালের প্রতি ঝুঁকে আছেন, গুনাহের প্রতি সতর্ক, সর্বদা মহান আল্লাহ পাক-উনার ইবাদতে মশগুল, পরহিযগার বা সুন্নতের পাবন্দ, মুসলমানের মান-সম্মান নষ্ট করেন না, তাদের সম্পদের প্রতি লোভ করেন না এবং উনার অধীনস্থদেরকে নছীহত করেন।”

উপরোক্ত দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, হক্কানী আলিম বা সত্যিকার নায়িবে নবী তিনিই (১) যিনি দ্বীন ইসলামের প্রতিটি বিষয়েই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করেন, (২) ইলমে ফিক্বাহ অর্জন করার সাথে সাথে একজন হক্কানী মুর্শিদ-উনার নিকট বাইয়াত হয়ে ইলমে তাছাউফ চর্চা করত অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে আল্লাহভীতি বা তাক্বওয়া অর্জন করেছেন (৩) অর্জিত ইলম অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমল করেন (৪) সুন্নতের পূর্ণ পায়রবী করেন (৫) হারাম নাজায়িয ও শরীয়ত বিরোধী কাজে লিপ্ত হননা। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর দৃষ্টিতে তাঁরাই হক্কানী আলিম বা নায়িবে নবী।

অতএব, “হক্কানী পীর বা আলিমের” উপরোক্ত সংজ্ঞা বা পরিচিতি দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুরর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্কানী মুর্শিদ ও আলিম। কারণ তিনি ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফের পরিপূর্ণ অধিকারী, পরিপূর্ণরূপে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী, পরিপূর্ণরূপে শরীয়ত তথা সুন্নতের অনুসরণকারী।

কাজেই তথাকথিত মুফতী, স্বঘোষিত মুশরিক শামছুল হক্বের উপরোক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যা, প্রতারণামূলক ও জিহালতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হলো।

-মুফতী মুহম্মদ ইবনে ইসহাক, বাসাবো, ঢাকা।

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২২ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ সম্পর্কিত ‘দৈনিক যুগান্তর’ পত্রিকার মন্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিস্ময় প্রকাশ গোয়েন্দা শীর্ষ কর্মকর্তারাও অবহিত নয় খোদ যুগান্তর সম্পাদকের দুঃখ প্রকাশ

‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’কে নিয়ে – মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামে দৈনিক জনকণ্ঠের মিথ্যাচার ‘উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত’ নিষিদ্ধ হচ্ছে- এ কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শুধু অস্বীকারই করলেন না, বললেন: ‘সম্পূর্ণ বাজে কথা।’ প্রসঙ্গতঃ সোহেল তাজ বিবৃত কালো তালিকা অসম্পূর্ণ ও আংশিক ভুল। এর সংশোধন আশু দরকার

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সমীপে- সোহেল তাজ বিবৃত ১২টি জঙ্গি সংগঠন তালিকা যথার্থ নয় এর মধ্যে যেমন অনেক জঙ্গি সংগঠনের নাম আসেনি তেমনি জঙ্গিবাদ বিরোধী সংগঠনের (উলামা আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত) নামও জামাত-জোট ভূতের কারণে এসেছে। সঙ্গতঃ কারণেই বে-হেড সোহেল তাজের বেফাঁস মন্তব্য থেকে বেরিয়ে এসে বর্তমানের যোগ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রকৃত জঙ্গি সংখ্যা যেমন নির্ধারণ করতে হবে, প্রকৃত জঙ্গিদের যেমন চিহ্নিত করতে হবে পাশাপাশি জঙ্গিবাদী, মৌলবাদী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একান্ত নিবেদিত ‘আল বাইয়্যিনাত’কে মূল্যায়ন করতে হবে।