সর্বনাশা কুইক রেন্টালের মেয়াদ আবারো বাড়ালো। গত ৬ বছরে ক্ষতি প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। কুইক রেন্টাল চলমান থাকলে আগামী ৫ বছরে ক্ষতি হবে আরো দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি। দেশ কি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের বাবার? নাকি জনগণের!

সংখ্যা: ২৫৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

২০১৩ সালের পর দ্রুত ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (কুইক রেন্টাল) থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি ছিল সরকারের। কিন্তু বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদনে না আসায় কুইক রেন্টালের মেয়াদ বাড়ানো হয় ৫ বছর। তবে ২০১৮ সালের পর কুইক রেন্টাল আর থাকবে না, এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত হয় সে সময়। কিন্তু চরম দুঃসংবাদ হচ্ছে- সোমবার বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকে বলা হয়েছে, কুইক রেন্টাল ২০১৮ সালে শেষ হচ্ছে না। আবারো বাড়বে এর মেয়াদ। সে সাথে বাড়তে পারে সংখ্যাও।

উল্লেখ্য, পিডিবি’র তথ্যমতে বর্তমানে সারা দেশে উৎপাদনে রয়েছে ৩২টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর মধ্যে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১৮। যদিও ২০১৫ সালে দেশে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল ১৭টি। তার আগে ২০১৪ সালে এ সংখ্যা ছিল আরো কম, ১৫টি। এর আগের তিন বছর ২০১৩, ২০১২ ও ২০১১ সালে কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল ৭টি করে।

জানা গেছে, ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পেছনে সরকার বছরে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা গচ্চা দিচ্ছে। অর্থাৎ ২০১১ সালে কুইক রেন্টাল শুরুর পর ২০১৬ পর্যন্ত ৬ বছর গচ্চা দিয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা। আর এই অবস্থা চলমান থাকলে আগামী ৫ বছরে এই কুইক রেন্টালে আরো ক্ষতি হবে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, রেন্টাল ও কুইক রেন্টালকে সহায়তা করতে গিয়ে সরকার বিপুল অঙ্কের টাকা ঋণ করেছে, যার একটি বড় অংশ ব্যয় করা হয়েছে কেবল ভর্তুকি বাবদ। পাশাপাশি রেন্টাল খাতে অপচয় ও দুর্নীতিরও জোরালো অভিযোগ আছে। আর এতে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হচ্ছে, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে কাজে আসেনি। মূলত, সমস্যা সমাধানের জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ ধরনের কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল লুটপাটের জন্য। বিশেষ কিছু লোককে সুবিধা দেয়ার জন্য।

এছাড়া এই কুইক রেন্টালে লুটপাটকারীরা রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে কথিত ‘কালো আইন’ ইনডেমনিটি বিল পাসের কারণে। নেই কোনো জবাবহিহিতা, নেই কোনো দায়বদ্ধতা। দিনের পর দিন এই কুইক রেন্টাল পরিণত হচ্ছে দুর্নীতির কারখানায়।

বলাবাহুল্য, সরকারের নির্বাচনী ইশতিহারে কোনো কুইক রেন্টাল-এর কথা উল্লেখ ছিলো না। ইশতিহারে ছিলো, সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুৎ দেয়ার কথা। কিন্তু সরকারি মহল সাশ্রয়ী দামে বিদ্যুৎ না দিয়ে উল্টো কুইক রেন্টালের মতো লুটপাটের আয়োজন করেছে। বছরের পর বছর এই কুইক রেন্টালের শুধু ‘আশার আলো’ দেখিয়েই চলেছে। কিন্তু বাস্তবে সেই আশা পূরণ হচ্ছে না। উপরন্তু কিছু অসৎ ব্যক্তিরা এই লুটপাটের কারখানা থেকে তাদের ফায়দা লুটে চলেছে। জনগণের পকেট খালি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু জনগণ এর কোনো সুফল ভোগ করতে পারছে না।

প্রসঙ্গত, এই কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ খাতসহ দেশের অর্থনীতিতে শুধু ধ্বংস ও লোকসানই ডেকে নিয়ে আসছে। এর দ্বারা দেশের বিদ্যুৎ খাতে কোনো উন্নতি বা সাফল্য আসছে না। এক্ষেত্রে সরকারের উচিত- এই সর্বনাশা কুইক রেন্টাল বিলুপ্ত করে দেশের দুর্দশাগ্রস্ত ও বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে সচল করা। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ১৫-২৫ বছরের পুরনো অদক্ষ বিভিন্ন কেন্দ্র রিপেয়ারিং, সিম্পল সাইকেল থেকে কম্বাইন্ড সাইকেলে রূপান্তর ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। কম্বাইন্ড সাইকেলে রূপান্তরের অর্থ হলো, একটি ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রকে একই পরিমাণ জ্বালানি দিয়ে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন। রাষ্ট্রীয় খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ খুবই কম। বর্তমানে কম্বাইন্ড সাইকেলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ পড়ে ১ টাকা ৩০ পয়সা। ওপেন সাইকেলে ১ টাকা ৪০ পয়সা এবং কাপ্তাই পানিবিদ্যুতে খরচ পড়ে মাত্র ২৫ পয়সা। পিডিবি’র গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে খরচ পড়ে ২ টাকা।

তাই যে টাকা বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে, তার এক শতাংশ টাকা দিয়ে বর্তমানে বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সংস্কার করা হলে সমপরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। এত ঘন ঘন বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না। বিদ্যুৎ উৎপাদন রেন্টাল-কুইক রেন্টালের হাতে ছেড়ে দেয়ায় বিদ্যুৎ মূল্যের নিরাপত্তা ক্রমশঃ হুমকির সম্মুখীন। নির্ধারিত সময়ে যদি সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে চলে আসতো তাহলে পিডিবি’কে এই লোকসান গুনতে হতো না। মূলত, রেন্টাল-কুইক রেন্টালগুলো জিইয়ে রাখতে এবং লাখ লাখ কোটি টাকা লোপাট করতে সরকারি কেন্দ্রগুলো নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে আনা হচ্ছে না। অবস্থাদৃষ্টে যে কেউ সঙ্গতকারণেই ধারণা করতে পারে, বিদ্যুৎ বিভাগে চরম দুর্নীতি গাফিলতি ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় স্বার্থান্বেষী মহলের চরম লুটপাট চলছে। এতে বিপত্তি ঘটায় খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে। এটা চলতে পারে না। চলতে দেয়া যায় না।

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “তোমরা প্রত্যেকেই রক্ষক, তোমরা তোমাদের রক্ষিত বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।”

সুতরাং পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী সরকার জনগণের রক্ষক। জনগণ সরকারের কাছে সর্বোচ্চ সেবা, সুযোগ-সুবিধা আশা করে। শোষণ, নিপীড়ন থেকে পরিত্রাণ আশা করে। এখন যদি সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়ায়, তাহলে জনগণ আরো শোষণ, নিপীড়ন, ভোগান্তির শিকার হবে। ফলে সরকারকে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে।

-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান, ঢাকা

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬৯

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১৮ -আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-৩৭ -আল্লামা আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-২৭ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

দুর্নীতি দমনে এককালের মহাদাম্ভিক দৈত্য দুদকের দুর্দান্ত দুর্নীতি এটাই প্রমাণ করে যে অন্য কোন নীতি বা ব্যুরো নয়-আত্মিক পরিশুদ্ধতা তথা ইলমে মারিফাতের অনুশীলন অর্জনেই সবধরনের দুর্নীতি প্রবণতা রোধ সম্ভব।