সাইয়্যিদুন নাস, খাইরু খালক্বিল্লাহ, আশবাহু বিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তা’রীফ মুবারক

সংখ্যা: ২৪৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

সাইয়্যিদুন নাস, খাইরু খালক্বিল্লাহ, আশবাহু বিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তা’রীফ মুবারক


انا اعطيناك الكوثر

অর্থ: (হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমি আপনাকে সম্মানিত ‘কওছার’ হাদিয়া মুবারক করেছি। (পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১)

এখন কাওছার শব্দের ব্যাখ্যায় মুফাসসিরীনগণ বিভিন্ন মত পোষণ করেছেন। বলা হয়, এ শব্দের বহুমুখী অসংখ্য অর্থ রয়েছে। যেমন- হাউজে কাওছার। এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حضرت انَسٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ بَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ بَيْنَ أَظْهُرِنَا إِذْ اغْفَى اِغْفَاءَةً ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ مُتَبَسّمًا فَقُلْنَا مَا أَضْحَكَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اُنْزِلَتْ عَلَىَّ آنِفًا سُورَةٌ. فَقَرَأَ بِسْمِ الله الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ (انَّا اعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ فَصَلّ لِرَبّكَ وَانْحَرْ إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الأَبْتَرُ). ثُمَّ قَالَ “اتَدْرُونَ مَا الْكَوْثَرُ”. فَقُلْنَا الله وَرَسُولُهُ اعْلَمُ. قَالَ فَإنَّهُ نَهْرٌ وَعَدَنِيهِ رَبّى عَزَّ وَجَلَّ عَلَيْهِ خَيْر كَثِير هُوَ حَوْض تَرِدُ عَلَيْهِ امَّتِى يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাস হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ছোহবতে আমরা উপস্থিত ছিলাম। এমতাবস্থায় অহী মুবারক নাযিল হওয়ার আলামত মুবারক প্রকাশ পেল। অতঃপর তিনি মাথা মুবারক উত্তোলন করে তাবাসসুমী শান মুবারক প্রকাশ করলেন। আমরা আরয করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কোন মুবারক বিষয়ে আপনি তাবাসসুমী শান মুবারক প্রকাশ করলেন। তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এক্ষুনি একখানা পবিত্র সূরা শরীফ নাযিল হয়েছেন। অতঃপর তিনি পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ উনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা কি জানেন কাওছার কি জিনিস? আমরা বললাম, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই সবচেয়ে ভালো জানেন, তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘কাওছার’ একখানা নহর। তা খ¦ইরে কাছীর বা সমস্ত ভালাই হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ওয়াদা মুবারক দিয়েছেন। সেখানে ক্বিয়ামতের দিন আমার উম্মতগণ একত্রিত হবেন। সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)

রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন,

هو الخير الكثير فى الدنيا والآخرة .

অর্থ: কাওছার শব্দ মুবারক দ্বারা দুনিয়া ও আখেরাত উভয়কালের সমস্ত প্রকার ভালাইকে বুঝানো হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে কাছীর)

মূলকথা হচ্ছে, কাওছার এমন একখানা মহান বিষয় যা দুনিয়া-আখিরাত উভয়কালেই মাখলূক্বাত মাঝে সর্বোত্তম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ ফায়াদাদানকারী।

পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ নাযিল হওয়ার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত আবনা আলাইহিমুস সালাম উনারা পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করায় আস ইবনে ওয়ায়িলসহ কতিপয় কাফির নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকের খিলাফ কথাবার্তা বলতে থাকে। তখন মহান আল্লাহ পাক এ পবিত্র সূরা শরীফ নাযিল করেন। অর্থাৎ হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে কেন্দ্র করে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ নাযিল করেছেন। উনারা স্বয়ং কাওছার, দুনিয়া ও আখিরাতে উনারা যাবতীয় কল্যাণের মালিক। সঙ্গতকারণেই উনাদের মুবারক শানে জানা এবং হুসনে যন পোষণ করা সকলের জন্যই অত্যাবশ্যকীয়।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আবনা বা ছেলে সন্তান আলাইহিমুস সালাম উনারা চারজন। দুনিয়ার যমীনে তাশরীফ মুবারক গ্রহণের তারতীব অনুযায়ী নিম্নে উনাদের সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম তিনি প্রথম। অপরদিকে হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম তিনি প্রথম। এখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক আগে প্রকাশ করেছেন নাকি সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম তিনি আগে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এ বিষয়ে কতিপয় ঐতিহাসিক ইখতিলাফ করেছেন। তবে সর্বাধিক মশহুর ও তারযীহপ্রাপ্ত মতে –

عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال كان اكبر ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم حضرت القاسم عليه السلام

অর্থ: হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম তিনি সবার বড় অর্থাৎ তিনিই সর্বপ্রথম পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সময়কাল নিয়ে বাজারে প্রচলিত কিতাবাদীসমূহে কোন আলোচনাই পাওয়া যায় না। তবে উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক উনার গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় বিষয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ  জেনে উম্মাহর নিকট সুস্পষ্ট করেছেন যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আযম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলতানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম। তিনি ইরশাদ মুবারক  করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন সাড়ে সাতাশ বছর তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস  সালাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি দুনিয়ার যমীনে প্রায় ২২ মাস অবস্থান মুবারক করে পবিত্র রজবুল হারাম শরীফ উনার ২ তারিখ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে ইজমায়ে আজিমাত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন চল্লিশ বছর তখন আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশ করা হয়। আর উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক যখন তিপ্পান্ন বছর তখন তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ হতে পবিত্র মদীনা শরীফে হিজরত মুবারক করেন। সে অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশের তের বছর পূর্বের রবীউল আউওয়াল শরীফ মাসে উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক ২৭ বছর হয়। এবং সেই বছরের পবিত্র রমাদ্বান শরীফে উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক সাড়ে সাতাশ বছর পূর্ণ হয়।

অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশের প্রায় সাড়ে ১২ বছর পুর্বে এবং হিজরতের প্রায় সাড়ে ২৫ বছর পূর্বে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার শুরুর দিকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।

হযরত উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সকলেই একমত যে, হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সকলেই এবং ইবনু রসূল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যান্য সকলেই উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র রেহেম শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি যখন পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক প্রায় সাড়ে ৪২ বছর।

কিতাবে উল্লেখ করা হয়, হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই হুলিয়া মুবারকসহ সার্বিক দিক থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম তথা নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয়, ইবনু রসূল আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র নাম মুবারক অনুসারে নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কুনিয়াত মুবারক হযরত আবুল কাসিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রসিদ্ধি লাভ করে। অসংখ্য হাদীছ শরীফে এই কুনিয়াত মুবারক উনার ব্যবহারও দেখা যায়। যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قَالَ ابُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم سَمَّوْا بِاسْمِى وَلاَ تكتنوا بِكُنْيَتِى.

অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল কাসিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা আমার নাম মুবারকে নাম রাখো। তবে আমার কুনিয়াত মুবারকে নাম রেখো না। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)

সাইয়্যিদুনা ইবনু রসূল আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার দুনিয়াতে অবস্থান মুবারকের মেয়াদকাল নিয়ে ঐতিহাসিকগণ বিভিন্ন মত দিয়েছেন। যেমন কিতাবে উল্লেখ করা হয়-

قال حضرت قتادة رحمة الله عليه عاش حتى مشى

অর্থ: হযরত ক্বতাদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আউওয়াল আলাইহিস সালাম চলাচল করতে পারেন এত সময় পর্যন্ত তিনি দুনিয়াতে অবস্থান মুবারক করেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

অন্যত্র উল্লেখ করা হয়-

توفى وهو ابن سنتين

অর্থ: সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি দুই বছর বয়স মুবারকে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। (সীরাতে নববী)

মূলত, গণনার ক্ষেত্রে আরবীগণ অপুর্ণাঙ্গ বছরকে পূর্ণ বছররূপে গণনা করতেন। এই জন্য ২২ মাসকে ২৪ মাস বা দুই বছর হিসেবে গণনা করা হয়েছে। সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি অন্যান্য সাধারণ শিশুদের ন্যায় নন। তিনি সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম অধিকহারে বেড়ে উঠেন। যার কারণে ২২ মাস বয়স মুবারকেই তিনি চলাফেরা মুবারক করতে পারতেন। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র রওযা শরীফ পবিত্র মক্কা শরীফ উনার জান্নাতুল মুয়াল্লা শরীফে স্থাপিত হয়েছে। একসময়ে তা চিহ্নিত ছিল। বর্তমান সউদী ইহুদী ওহাবী সরকার সেই চিহ্ন মুবারক মুছে দিয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়্যিব আলাইহিস সালাম

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ধারাবাহিকতায় সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়্যিব আলাইহিস সালাম তিনি দ্বিতীয়। তবে হযরত আওলাদু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সমষ্টিগত ধারাবাহিকতায় তিনি তৃতীয়। সর্বপ্রথম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়্যিব আলাইহিস সালাম।

সাইয়্যিদুনা ইবনু রসূল আছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানেও কিতাবাদীসমূহে উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা নেই। তবে উনার মুবারক শানেও সুস্পষ্ট আলোচনা মুবারক করেছেন যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আযম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলতানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম। তিনি সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে জেনে ইরশাদ মুবারক করেন যে, ইবনু রসূলিল্লাহ আছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনিও যখন পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক প্রায় একত্রিশ বছর। তিনিও দুনিয়াতে খুব অল্প সময় অবস্থান মুবারক করেন। মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ৮ তারিখ তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।

অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক নুবুবুওয়াত প্রকাশের প্রায় নয় বছর পূর্বে এবং হিজরতের প্রায় বাইশ বছর পূর্বে পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার শুরুতেই হযরত ইবনু রসূল আছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। দুনিয়াতে মাত্র কয়েকদিন অবস্থান করত পবিত্র বিছালী শান মুবারক  প্রকাশ করেন।

সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ধারাবাহিকতায় সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বহির আলাইহিস সালাম তিনি তৃতীয়। তবে হযরত আওলাদু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সমষ্টিগত ধারাবাহিকতায় তিনি চতুর্থতম। সর্বপ্রথম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়্যিব আলাইহিস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বহির আলাইহিস সালাম।

সাইয়্যিদুনা ইবনু রসূল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানেও কিতাবাদীসমূহে উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা নেই। তবে উনার মুবারক শানেও সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে জেনে সুস্পষ্ট আলোচনা মুবারক করেছেন যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আযম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলতানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইবনু রসূলিল্লাহ আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি যখন পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারক প্রায় বত্রিশ বছর। তিনিও দুনিয়াতে খুব অল্প সময় অবস্থান মুবারক করেন। মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ১২ তারিখ তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।

অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক নুবুবুওয়াত প্রকাশের প্রায় আট বছর পূর্বে এবং হিজরতের প্রায় একুশ বছর পূর্বে পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার শুরুতেই হযরত ইবনু রসূল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। দুনিয়াতে অল্প কয়েকদিন অবস্থান করত পবিত্র বিছালী শান মুবারক  প্রকাশ করেন।

সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ধারাবাহিকতায় সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম তিনি চতুর্থতম। তবে হযরত আওলাদু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সমষ্টিগত ধারাবাহিকতায় তিনি অষ্টম। সর্বপ্রথম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন সাইয়্যিদুনা হযরত কাসিম আলাইহিস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়্যিব আলাইহিস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বহির আলাইহিস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুকাইয়া আলাইহাস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলসুম আলাইহাস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম।

কিতাবে উল্লেখ করা হয়-

حضرت ابراهيم عليه السلام فمن مارية القبطية عليها السلام وكان ميلاده فى ذى الحجة سنة ثمان،

অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন হযরত মারিয়া কিবতিয়া আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র রেহেম শরীফে ইবনু রসূল আর রাবি’ হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ৮ম হিজরী সনে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া)

সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক উনার বিষয়টি আরো সুসস্পষ্ট করেছেন ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আযম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলতানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি ৮ম হিজরী সনের ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমুয়াতি তথা জুমুয়াবার রাতে দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! দুনিয়াবী জিন্দেগী মুবারক অনুযায়ী তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলো ৬১ বছর।” সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করার সময়কাল সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়-

عن حضرت انس رضى الله تعالى عنه قال‏:‏ توفى إبراهيم عليه السلام ابن النَّبيّ صلَّى الله عليه وسلَّم وهو ابن ستة عشر شهراً

অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে ষোল মাস অবস্থান মুবারক করেন। (যাদুল মায়া’দ)

ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি ১০ম হিজরী সনের সাইয়্যিদুশ শুহূর মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ১০ তারিখ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার) পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে কেবল সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার রওযা শরীফ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার পবিত্র জান্নাতুল বাক্বী শরীফে স্থাপিত হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, উঁচু শ্রেণীর হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা অনেক বিষয় সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে জিজ্ঞাসা করে বর্ণনা করেন। যা শরীয়তে হুজ্জত হিসেবে স্বীকৃত, গ্রহণযোগ্য এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তা মশহুর হিসেবে গৃহীত। যেমন, হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি, গাউছুল আ’যম হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি, সুলতানুল হিন্দ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনারা উনাদের কিতাব সমূহে অনেক হাদীছ শরীফ কোন সনদ ব্যতিতই বর্ণনা করেন। যা অন্য কোন সনদেও পাওয়া যায়না। ফলশ্রুতিতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে সরাসরি বর্ণনা করার বিষয়টিই সুস্পষ্ট হয়।

কাজেই, হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ, পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ এবং উনাদের সংশ্লিষ্ট তারিখ নিয়ে সন্দেহ সংশয়ের কোন অবকাশ নেই।

একথা দিবালোকের ন্যায় সুসস্পষ্ট যে, হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা দুনিয়াতে অল্প সময় অবস্থান মুবারক করত পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। এতে মহান আল্লাহ পাক এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের লক্ষ-কোটি হিকমত মুবারক নিহিত রয়েছে। তবে একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ اَبِىْ خَالِدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ سَـمِـعْتُ ابْنَ اَبِىْ اَوْفـٰى رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ يَقُوْلُ لَوْ كَانَ بَعْدَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِىٌّ مَا مَاتَ ابْنُهٗ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ.

অর্থ: “হযরত ইবনে আবূ খালিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছি, যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর নবী বা রসূল হওয়ার ব্যবস্থা থাকতো, তাহলে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করতেন না।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ)

উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ কি শুধু সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু রসূল আর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক শানে প্রযোয্য। মূলত, উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোয্য। নবী ও রসূল হওয়ার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, উনারা সকল কিছুর মালিক। অর্থাৎ, উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন, এ ছাড়া সমস্ত মাক্বামাত ও ফযীলতের উনারা মালিক। সুবহানাল্লাহ!

হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা দুনিয়াতে অল্প সময় অবস্থান মুবারক করত পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার কারণে  বর্তমান সময়ে এক শ্রেণীর গোমরাহ মালঊনরা বলে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নসব মুবারক জারী নেই। তিনি নির্বংশ। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!

প্রকৃতপক্ষে এমন বক্তব্য দেওয়া কাফিরদের স্বভাব। যা এই লিখনীর শুরুতেই আলোচনা করা হয়েছে। এমন বক্তব্য প্রদানকারীদের ব্যাপারেই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

ان شانئك هو الابتر

অর্থ: হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার নসব মুবারক নিয়ে বেয়াদবীপূর্ণ বক্তব্য প্রদানকারীগণই নির্বংশ এবং নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এবং গেছে। (পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)

খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এমন অনেক খুছুছিয়ত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন, যা অন্য কাউকে দেওয়া হয়নি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নসব মুবারক হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মাধ্যমে জারী না হয়ে তা বিনতু রসূল আর রাবিয়া’, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে জারী হয়েছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

عن حضرت جابر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لكل بنى ام عصبة ينتمون اليهم الا ابنتى فاطمة عليها السلام فانا وليهما وعصبتهما.

অর্থ : হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক সন্তান পিতার দিকে সম্পৃক্ত। তবে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতিত। আমি উনার আওলাদগণ উনাদের অভিভাবক এবং পিতৃ পুরুষ। (আল মুসতাদরাক)

মূলকথা হচ্ছে, হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সমস্ত নিয়ামত ও ফযীলতের মালিক। উনারা স্বয়ং পবিত্র কাওছার শরীফ। উনাদের অজুদ মুবারক যাবতীয় কল্যানের চাবি কাঠি। তাই, সর্বক্ষেত্রে উনাদের মুবারক শানে সর্বোচ্চ হুসনে যন পোষণ করতে হবে। আর উনাদের মুবারক শানে হুসনে যন পোষণ করতে হলে যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আযম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলতানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ছোহবতের কোন বিকল্প নেই। কারণ কায়িনাত মাঝে তিনিই একমাত্র ব্যক্তিত্ব, যিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে সরাসরি জেনে নিয়ে হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পবিত্র সাওয়ানেহে উমরী মুবারক উম্মাহকে জানিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুজাদ্দিদে আযম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলতানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক শানে সর্বোচ্চ হুসনে যন জেনে তা আমলে বাস্তবায়ন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।


-আল্লামা ইমাদুদ্দীন আহমদ

আলআছদাকু, আলআত্বহারু, আলআত্বইয়াবু, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক শেষে সংক্ষেপে (সাঃ, দঃ) দুরূদ শরীফ লিখা প্রসঙ্গে

আওওয়ালু শাফিয়িন, আওওয়ালু মুশাফ্ফায়িন, আওওয়ালু মাঁইইয়ুর্হারিক হালক্বাল জান্নাতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘বিশ্বনেতা’, ‘মহামানব’, ‘মহাপুরুষ’, ইত্যাদি শব্দ দ্বারা সম্বোধন করা প্রসঙ্গে

ইমামুল মুরসালীনা, ইমামুন্ নাবিইয়ীনা, ইমামুল উম্মাতি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা আম্মা সাইয়্যিদাতুন্ নিসায়ি আলাল আলামীন হযরত আমিনা আলাইহাস্্ সালাম রচিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ না’ত শরীফ প্রমাণ করে যে, তিনি ইলমে গইব-এর অধিকারিণী ছিলেন

আলবাশীরু, আলবালীগু, আলবাদরুল মুনীরু, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত ও পবিত্রতা

জালীলুল ক্বদরি, জামীলুয যিকরি, জাওয়ামিউল কালিমি, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উর্ধ্বতন পূর্বপুরুষ উনারা ছিলেন পবিত্র থেকে পবিত্রতম