হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৩৮) তাসলীমের মাক্বাম ও তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম

সংখ্যা: ২৭৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

তাসলীম-এর মাক্বাম হাছিল করা ব্যতীত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার

উপর ইস্তিক্বামত থাকা সম্ভব নয় (২)

একদিন এক ইহুদী ও মুনাফিক বিশর এর মাঝে একটি বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। সে দ্বন্দ বা বিরোধ কোনভাবে নিরসন হচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত একজন ফায়সালাকারীর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বিশর চাইলো কা’ব ইবনে আশরাফ ইহুদী নেতার স্মরণাপন্ন হবে। আর ইহুদী চাইলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে বিচারের ভার ন্যাস্ত করবে।

সেক্ষেত্রে ইহুদী তিরস্কার করে বললো- তুমি কেমন মুসলমান? তোমাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্রতম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রেখে ইহুদী নেতার স্মরণাপন্ন হতে চাও।

উল্লেখ্য যে, বিশর ছিলো মুনাফিক। সে মুসলমানের ছূরত বা আকৃতি ধারণ করেছিল। সে জানতো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইনসাফের সাথে বিচার করবেন। ফলে বিচারের রায় ইহুদীর পক্ষে চলে যাবে। আর সেই ইহুদী জানতো কা’ব ইবনে আশরাফ পক্ষপাতমূলক বিচার করে। টাকা খেয়ে বিচারের রায় বিশরের দিকে ন্যাস্ত করবে। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইনসাফের সাথে বিচার করেন। কাজেই উনার কাছেই সঠিক বিচার পাবে।

মুনাফিক বিশর একপ্রকার চাপের মুখে বিচারের সম্মুখীন হলো। বাধ্য হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে বিচার প্রার্থনা করলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিচার করলেন। বিচারের রায় চলে গেল ইহুদীর পক্ষে।

দু’জনই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট থেকে চলে আসলো। পথিমধ্যে মুনাফিক বিশর বললো, এ বিচার আমার মনপুতঃ হয়নি। নাউযুবিল্লাহ্! নাউযুবিল্লাহ্!! নাউযুবিল্লাহ্!!!

ইহুদী আর্শ্চাযান্বিত হলো। বললো, তুমি এটা কি বললে? তোমাদের যিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্রতম রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফয়সালা মুবারক তোমার মতপুতঃ হলোনা? তুমি উনার ফয়সালা মুবারক মানতে পারছো না? তাহলে তুমি কার ফায়সালা মানবে? মুনাফিক বিশর বললো, হযরত ফারূকে অ’যম আলাইহিস সালাম উনার। হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি যে ফায়সালা মুবারক করবেন সেটাই হবে চূড়ান্ত। ইহুদী তার কথায় সম্মত হলো। পরে দুজনই আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট চলে গেল।

ইহুদী, মুনাফিক বিশরের দূরভিসন্ধি বুঝতে পেরেছিল। তাই সে সেখানে পৌঁছে আগেই কথা শুরু করলো। সে বললো, আমাদের মাঝে একটি বিষয় নিয়ে ইখতিলাফ দেখা দিয়েছিল। আমরা বিষয়টি ফায়সালার জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্মরণাপন্ন হয়েছিলাম। তিনি সে বিষয়ে সুন্দর ও সঠিক ফায়সালা মুবারকই দিয়েছেন। কিন্তু মুনাফিক বিশরের তা মনপুতঃ হয়নি। সে সেটা মানতে পারেনি। তাই সে আপনার খিদমত মুবারকে হাজির হয়েছে। আপনি বিষয়টি নিষ্পত্তি করুন। খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বিশরের দিকে তাকিয়ে বললেন, বিষয়টি কি সঠিক? বিশর ইতিবাচক জাওয়াব দিলো। বললো, সঠিক। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমরা বস। আমি আসছি। সঠিক ফয়সালা করা হবে ইনশাআল্লাহ্!

আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনার হুজরা শরীফে তাশরীফ নিলেন। অত্যন্ত ধারালো একখানা তরবারী হাত মুবারক নিলেন। অতপরঃ তাদের কাছে উপস্থিত হলেন। এক কোপে মুনাফিক বিশরের মাথা তার দেহ থেকে আলাদা করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর ইরশাদ মুবারক করলেন, যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিচার-ফায়সালা মানে না তাদের একমাত্র শাস্তি হলো, শিরচ্ছেদ তথা মৃত্যুদণ্ড।

বিশরের আত্মীয়-স্বজনরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে হাজির হলো। বললো, ইয়া রাসুল্লাল্লাহ্! ইয়া হাবীবাল্লাহ!! ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি একজন মুসলমানকে শহীদ করেছেন। নাউযুবিল্লাহ্!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে ডাকলেন। ইরশাদ মুবারক করলেন, হে ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম! আপনি কি কোন মুসলমানকে শহীদ করেছেন? (অসমাপ্ত)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৪)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৫)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৬)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল ল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৭)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৮)