হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২১৯) হুসনুল খুল্ক্ব বা সচ্চরিত্রবান মুরীদই শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার  সর্বাধিক নৈকট্যশীল ও সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত।

সংখ্যা: ২৬০তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম

তাওয়াক্কুল তথা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভরসা করার ফযীলত (২)

রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, একদিন আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাওয়ারির পিছনে বসা ছিলাম। তখন তিনি আমাকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন- হে প্রিয় বৎস! মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ নিষেধসমূহ যথাযথভাবে মেনে  চলবেন, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনিই আপনাকে হিফাযত (সংরক্ষণ) করবেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হক্ব আদায় করবেন তাহলে আপনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে সবসময় সামনে পাবেন। যখন কোনকিছুর প্রয়োজন দেখা দেবে, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটেই চাইবেন। যখন কারো সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার কাছেই সাহায্য চাইবেন।

জেনে রাখুন! যদি পৃথিবীর সমস্ত মাখলূক্বাত একত্রিত হয়ে আপনার কোনো উপকার করতে চায়, তবুও মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারিত পরিমাণ ব্যতীত আপনার কোনো উপকার করতে পারবে না। পক্ষান্তরে যদি সকল মাখলূক্বাত সম্মিলিতভাবে আপনার কোন ক্ষতিসাধন করতে চায়, তাহলেও মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারিত পরিমাণ ব্যতীত আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! (আহমদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ)

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা মুবারক ও নির্ধারণ ব্যতীত কোনো কিছুই হবে না। কাজেই সবক্ষেত্রে উনার উপরই তাওয়াক্কুল বা ভরসা রাখা উচিত।

عن حضرت عمر بن الخطاب عليه السلام قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول لو انكم تتوكلون على الله حق توكله لرزقكم كما يرزق الطير تغدوا خماصا وتروح بطانا.

অর্থ: “হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি যে, তোমরা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার উপর যথাযথভাবে তাওয়াক্কুল করতে পারো, তাহলে তিনি তোমাদেরকে অনুরূপ রিযিক দান করবেন, যেরূপ পাখিকে তিনি রিযিক দিয়ে থাকেন। পাখিরা ভোরে খালি পেটে বাসা থেকে বের হয় এবং দিনের শেষে ভরা পেটে বাসায় ফিরে আসে। অর্থাৎ কুদরতী রিযিক খেয়ে থাকে।” (তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ)

মহান আল্লাহ পাক উনার জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে যখন কাফিররা চড়কে বেঁধে আগুনে নিক্ষেপ করতেছিল তখন তিনি বলেছিলেন-

حسبى الله ونعم الوكيل

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনিই আমার সাহায্যের জন্য যথেষ্ট। আর তিনিই আমার উত্তম উকীল বা কার্যনির্বাহক।”

চড়ক থেকে নিক্ষিপ্ত হয়ে হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন শূন্যে ভাসমান ছিলেন, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে উনাকে বললেন, আপনি কি আমার কোনো সাহায্যের (খিদমত) প্রয়োজনবোধ করেন? জাওয়াবে তিনি বললেন, “আপনার খিদমতের কোনো প্রয়োজন নেই।” এ কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার প্রশংসা করে ইরশাদ মুবারক করেন-

وابراهيم الذى وفى

অর্থ: “আর হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার ওয়াদা বা অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন।” (পবিত্র সূরা নজম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৬)

ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল ল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৭)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৫৮)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৬৭)

মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৬৮)