৬৪ শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশ ব্রুনাইয়ে ১লা মে থেকে শরীয়াহ আইন চালু। পৃথিবীর সব মুসলিম দেশগুলোকেই ব্রুনাইয়ের অনুসরণ করা ফরয। শরীয়াহ আইন চালু না করলে মুসলিম দেশ মুসলমান থাকতে পারে না।

সংখ্যা: ২৩৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

সব প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।

ব্রুনাই নামক দেশের সম্পূর্ণ নাম হলো: ঘবমধৎধ ইৎঁহবর উধৎঁংংধষধস। এ নামের অর্থ হলো- সতর্ক এবং শান্তি। ব্রুনাইয়ের আয়তন ৫ হাজার ৭৬৫ বর্গকিলোমিটার। তবে এ দেশের রাজপ্রাসাদ, বিশ্ববিখ্যাত নদীগ্রাম, বিশেষ কারুকার্যময় এবং স্থাপত্যশৈলীর মসজিদ, সারা বিশ্বকে অবাক করেছে। ২০১৩ সালে দেশটি আবার আসিয়ানের চেয়ারম্যান দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এবং এ অর্জন বিশ্বভূবনে আরো বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। বলা যায়, প্রায় সমগ্র বিশ্বই ছোট্ট অথচ বিশেষ এই দেশটিকে জানতে অনেক আগ্রহী।

২০১৩ সালের জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী এদেশের মোট জনসংখ্যা ৪ লাখ ১৫ হাজার ৭১৭ জন। মাথাপিছু আয় ৩৯ হাজার ৩৫৫ মার্কিন ডলার। জনগণ বিনামূল্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পায়। ব্যক্তিগত আয়করও পরিশোধ করতে হয় না। ব্রুনাইয়ের উত্তরে দক্ষিণ চীন সাগর অবস্থিত। বাকি সব দিকে মালয়েশিয়া।

ব্রুনাইয়ের আয়ের প্রধান উৎস অপরিশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লা। দেশটির জাতীয় আয়ের ৯০ শতাংশই আসে এ খাত থেকে। এছাড়াও রয়েছে উন্নত কৃষি, ব্যাংকিং ও পর্যটন খাত। মুদ্রার নাম ব্রুনাই ডলার। রাষ্ট্রধর্ম পবিত্র দ্বীন ইসলাম।

বর্তমান সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ। গিনেস বুকের হিসাবে ১৯৯৩ সালে তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনী ছিলেন। ১৯৬৭ সালের ৪ অক্টোবর থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ রাজবংশ ব্রুনাই শাসন করছে। এখানে ২০ সদস্যবিশিষ্ট একটি আইন কাউন্সিল আছে। এর সদস্যরা আইন প্রণয়নে পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন। রাজতান্ত্রিক ব্রুনাইয়ের সুলতান একাধারে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান।

মোট জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশ মুসলিম, ১৩ শতাংশ বৌদ্ধ, ১০ শতাংশ খ্রিস্টান। বাকিরা কনফুসিয়ান, তাওবাদ ও অন্যান্য ধর্মের অনুসারী। এতদ্বসত্ত্বেও দেশে পরিপূর্ণ সম্মানিত ইসলামী আইন চালু করেছে ব্রুনাই সরকার। গত  ১ মে ২০১৪ ঈসায়ী, বৃহস্পতিবার থেকে সে দেশে সম্মানিত ইসলামী আইন বাস্তবায়িত হয়েছে।

দেশে সম্মানিত ইসলামী বা শরিয়াহ আইন চালু হওয়ার পর সেখানে কেউ চুরি করলে তার হাত কেটে দেয়া হবে। ব্যভিচারের দায়ে অভিযুক্তদের পাথর ছুঁড়ে জীবন্ত হত্যা করা হবে, যদি বিবাহিত হয়। আর অবিবাহিত হলে বেত্রাঘাত করা হবে। এদিকে ব্রুনাই সরকারের শরিয়াহ আইন বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসলামবিদ্বেষী জাতিসংঘ তথা ইহুদীসংঘ। ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বোলকিয়াহ গত ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ঈসায়ী, বুধবার শরীয়াহ আইন প্রবর্তনের ঘোষণা দেয়ার সময় বলেন, (‘২০১৪ সালের) পহেলা মে থেকে দেশে শরিয়া আইন চালু করা হচ্ছে। আজ এ ঘোষণা দিতে পেরে আমি মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’

প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, শুধু ছোট্ট মুসলিম দেশ ব্রুনাই-ই নয়, বরং ওআইসিভুক্ত ৫৭টি মুসলিম দেশ ছাড়াও অন্যসব মুসলিম দেশেই মুসলমান হিসেবে পরিপূর্ণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়াহ আইন চালু করা অত্যাবশ্যকীয় ও অনিবার্য। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, যারা মহান আল্লাহ পাক তিনি যা হুকুম করেছেন সে অনুযায়ী হুকুম করে না তারা যালিম, ফাসিক ও কাফির।” এই পবিত্র আয়াত শরীফ অনুযায়ী প্রতিভাত হয় যে- কোনো মুসলিম দেশই পরিপূর্ণ ইসলামী শরীয়াহ আইনভিত্তিক হওয়া ছাড়া চলতে পারে না। চললে তারা মুসলমান থাকতে পারে না। তারা যালিম, ফাসিক ও কাফিরে পরিণত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!

বলাবাহুল্য, ব্রুনাইয়ের ইসলামীকরণ আমাদের একটা কথা বিবেচনায় এনে দেয়। তাহলো ব্রুনাইয়ে রাজতন্ত্র আছে বলেই তাতে এতো সহজে ইসলামীকরণ হলো। পক্ষান্তরে তুরস্ক, মিশর বহুদিন যাবৎ চেষ্টা করার পরও সেসব দেশে ইসলামীকরণ প্রক্রিয়া বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। এমনকি যারা ইসলামীকরণ করতে চান তাদেরকে পাইকারীহারে ফাঁসিও দেয়া হচ্ছে। অতি সম্প্রতি মিশরে ৫৩০ জনকে ফাঁসির হুকুম দেয়া তারই প্রমাণ। এতে আরো একবার প্রতিভাত হয় যে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সবচেয়ে বড় শত্রু হলো গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের অধীনে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কখনোই ইসলামীকরণ সম্ভব নয়। কিন্তু তারপরেও জামাতে মওদুদীসহ সব ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল এ দোহাই সর্বত্র দিয়ে আসছে। আমাদের দেশেও দিয়েছে এবং দিচ্ছে। যা সম্পূর্ণই মিথ্যা প্রচারণা ও নিরেট প্রতারণা।

পাশাপাশি পর্যবেক্ষণের বিষয় হলো- ব্রুনাইয়ের সুলতান শুধু নামে ইসলামী শরীয়াহ চালু করেন, নাকি কার্যত সত্যিই ইসলামী শরীয়াহ অনুসরণ করেন। উল্লেখ্য, ব্রুনাইয়ের সুলতানের সম্পদ প্রতি সেকেন্ডে ৯০ ইউরো করে বাড়ে। এর মানে ৫৪০০ ইউরো পার মিনিট, ৩২৪০০০ ইউরো পার ঘণ্টা, ৭৭৭৬০০০ ইউরো পার দিন। এর মানে এ সপ্তাহে ৫৪৪৩২০০০ ইউরো (৫৪ মিলিয়ন ৪৩২০০০ হাজার) সূত্র- ইন্টারনেট।

এখন দেখার বিষয়, ব্রুনাইয়ের সুলতান উনার যাকাত যথাযথ দেন কিনা? আরো উল্লেখ্য, সাধারণভাবে ব্রুনাই ধনী দেশ হিসেবে পরিচিত হলেও দরিদ্র জনসাধারণের সংখ্যাও অনেক।

ব্রুনাইয়ে সব বাহারী অট্টালিকার পাশেই দেখা যায় হতদরিদ্র সেই সব মানুষদেরকে, যাদের থাকার জন্য সামান্য কুটিরগুলি দেখতে বিবর্ণ আর মলিন। অনেক নাগরিকের বাড়ি কেনার সামর্থ্য নেই। তার জন্যে তারা নদীগ্রাম বানিয়ে নদীতে বসবাস করে। এমন দৃশ্য খোদ ব্রুনাইয়ের রাজধানী বন্দর সেরি বেগাওয়ানের ব্রুনাই নদীতেই দেখা যায়।

বর্তমানে এই নদীগ্রামে ৩০ হাজারেরও বেশি লোক বাস করে। গৃহহীন একদল মানুষ থাকার আশ্রয় খুঁজতে বেছে নিচ্ছে একটি নদীকে; যেখানে নদীর উপরেই ঘর তৈরি করে বসবাস করছে তারা। কালক্রমে সেই নদীগ্রামটির প্রতি সরকারের বিশেষ নজর পড়তে থাকে। সরকার নদীগ্রামে থাকা লোকজনের জীবনযাপনের মান উন্নয়ন করার জন্য বিশেষ করে নদী স্কুল, ক্লিনিক, ডাক অফিস, দোকান, দমকল বিভাগ নির্মাণ করেছে। কিন্তু এখন এসব দরিদ্র জনসাধারণকে খিলাফতের পরিপূর্ণ সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। রাজতন্ত্রের খোলস ও জৌলুস থেকে রাজাকে বেরিয়ে আসতে হবে। রাজাকে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ অধীন হতে হবে। শুধুমাত্র বিচারব্যবস্থা নয়, সর্বক্ষেত্রেই পরিপূর্ণ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রয়োগ করতে হবে। তবেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মাহাত্ম্য বর্তমান বিশ্বে আরেকবার প্রতিফলিত হবে। এবং তাতে বাকি মুসলিম দেশগুলোও শরীয়াহ ব্যবস্থা প্রণয়নে অনুপ্রাণিত হবে।

মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র ঈমান ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাদের অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে।

আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েজ, তাওয়াজ্জুহ।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

-আল্লামা মুহম্মদ মাহবূবুল্লাহ

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৬১

ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদ প্রচারের নেপথ্যে-১০

চাঁদ দেখা ও নতুন চন্দ্রতারিখ নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা-২৯

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৯ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস ওহাবী ফিরক্বাসহ সবগুলো বাতিল ফিরক্বা ইহুদী-নাছারাদের আবিষ্কার! তাদের এক নম্বর দালাল

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,       ব্যক্তি ইফা’র ডিজিকে রক্ষার জন্য নয়-       বরং ‘মীলাদ ক্বিয়াম ও মাজার শরীফ ভক্ত হওয়ার জন্য যে সব জামাতে মওদুদী এবং কওমী ফিরক্বারা’ ইফা’র ডিজি’র বিরোধিতা করছে       ‘তারা শুধু মীলাদ ক্বিয়াম বা মাজার শরীফ বিরোধী নয়       মূলতঃ তারা স্বয়ং আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরোধী।       তারা মওদুদী এবং দেওবন্দী মুরুব্বীদের পূজারী।       মূলতঃ তারা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী।’       কাজেই ‘কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাশ হবে না’- এ প্রতিশ্রুতির আলোকে গোটা দেশের মীলাদ ক্বিয়াম ও মাজার শরীফ বিরোধী       সব জামাতে মওদুদী ও কওমীওয়ালাদের ‘কুরআন-সুন্নাহ’ তথা       ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’-এর অবমাননার বিচারের আওতাভুক্ত করুন।       দেখা যাবে এরাই যুগপৎভাবে যুদ্ধাপরাধের বিচারেরও আসামী।       মীলাদ ও মাজার শরীফ-এর বিরোধিতার গযবে পড়েই তারা যুদ্ধাপরাধের মত অপরাধ করেছে।