ইলমে আকলিয়ার দৈন্য এবং বিলায়েতের অনুপস্থিতির কারণে প্রকৃত আলিমে দ্বীন তৈরি হচ্ছে না।

সংখ্যা: ১০৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

(প্রথম পর্ব)

আল্লাহ্ পাক “সূরা ফাতির”-এর ২৮ নম্বর আয়াতে কারীমাতে উল্লেখ করেন,

انما يخشى الله من عباده العلماء.

অর্থাৎ “আল্লাহ্ পাক-এর বান্দাদের মধ্যে একমাত্র আলিমগণই আল্লাহ্ পাককে ভয় করেন।” অর্থাৎ যার মধ্যে আল্লাহ্ পাক-এর ভয় নেই, তাক্বওয়া, পরহিযগারী নেই সে আলিম নয়। যাঁর মধ্যে হাক্বীক্বী ইল্ম আছে, ফিক্বাহ এবং সমঝ আছে, তিনি আল্লাহ্ পাক-এর নৈকট্য লাভ করে আল্লাহ্ পাক-এর ওলী বা বন্ধু হতে পারেন।”   যেমন হাদীস শরীফে বলা হয়েছে,

ان لم يكن الفقهاء اولياء الله فما لله ولى.

“যদি ফক্বীহ্গণ আল্লাহ্ পাক-এর ওলী না হন, তবে তো আল্লাহ্ পাক-এর ওলী কেউই হবেননা।” অর্থাৎ ইল্ম, আমল এবং ইখলাস সম্পন্ন ব্যক্তি নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক-এর ওলী।  উপরোক্ত আলোচনায় যে বিষয়টি বুঝা গেল তা হলো, আলিমের যেমন ইল্ম-আক্বল, সমঝ, ফিক্বাহ থাকতে হবে ঠিক তেমনিভাবে খোদাভীতি, তাক্বওয়া, পরহিযগারী, মুরুওয়াতও থাকতে হবে।

একজন আলিমের ইসলামী ইল্মের সাথে সাথে বিলায়েতের অধিকারীও হতে হবে। বিষয়টিকে আরো পরিষ্কার করবার জন্য আমরা এ দু’টো দিক নিয়ে আলাদাভাবে সংক্ষেপে আলোচনা করবো।      প্রথমতঃ প্রত্যেক মুসলমান নর ও নারীকে যে ইল্ম অর্জন করতে হয় তাকে বলা হয় “উলুমে ইসলামিয়া।” علوم الاسلامية (ইসলামিক জ্ঞান)। এর কিছু অংশ অর্জন করা ফরয। যেমন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

طلب العلم فريضة على كل مسلم.

“প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ইল্ম অর্জন করা ফরয।” এর অন্যান্য আরো কিছু শাখা-প্রশাখা শিক্ষা করা সুন্নত। যেমন আল্লাহ্ পাক দোয়া করতে বলেন,

رب زدنى علما.

          “হে আমার রব, আমার ইল্ম বৃদ্ধি করে দিন।”  এবং এর মধ্যে আরো বেশী থেকে বেশী শিক্ষা করা মুবাহের অন্তর্ভুক্ত।        কিছু বিদ্যা আছে যা ইসলামের নামে প্রচলিত কিন্তু তা সম্পূর্ণই হারাম। যেমন- জ্যোতিষ শাস্ত্র (علم التنجيم)  গানবাদ্য (علم موسيقى) ইত্যাদি। “ইসলামি জ্ঞান” প্রধানত দু’ভাগে বিভক্ত-   (ক) উলুমে নক্বলিয়া ( العلوم النقلية) (খ) উলুমে আক্বলিয়া (العلم الظاهر)  (ক) প্রথমটি অর্থাৎ উলুমে নক্বলিয়াকে অন্যভাষায় “ধর্মীয় জ্ঞানও” বলা হয়ে থাকে। এই জ্ঞানের উৎস হলো “আদিল্লায়ে শরীয়্যা।” অর্থাৎ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজ্মা এবং ক্বিয়াস। এই দ্বীন সম্পর্কীয় বিদ্যাকে আবার প্রধান দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে, প্রথমতঃ যাহিরী (العلم الظاهر) বা জ্ঞানের বাহ্যিক শাখাসমূহ।      দ্বিতীয়তঃ বাতিনী (العلم الباطن) জ্ঞান বা আভ্যন্তরীন বিষয়সমূহ।       যেমন হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

العلم علمان علم فى القلب قذاك العلم النافع علم على اللسان فذالك حجة الله عز وجل عى ابن ادم.

          “ইল্ম দু’প্রকার একটি হচ্ছে অন্তর সম্পর্কীয় বিদ্যা, যা উপকারী অপরটি হচ্ছে জবান সম্পর্কীয় বিদ্যা যেটা আল্লাহ্ পাক-এর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য দলীল।”    অর্থাৎ জবানী ইল্ম হচ্ছে ফিক্বাহ সম্পর্কীয় জ্ঞান বা শরীয়ত যেটা বাহ্যিক বা যাহিরী ইল্ম এবং অন্তর সম্পর্কীয় জ্ঞান হলো তাছাউফ-এর জ্ঞান (علم النصوف) বা মা’রিফাত (হৃম্ল॥ল্পণ্ড) যেটা সূফীদের জ্ঞান হিসাবে মশহুর বা প্রসিদ্ধ। শরীয়ত, মুর্শিদের কাছ থেকে এবং ফিক্বাহর কিতাবাদি পাঠে অর্জিত হয় আর মা’রিফাতের ইল্ম মুর্শিদের অন্তর থেকে প্রবাহিত হয়ে মুরীদের অন্তরে প্রবেশ করে।   এই ইল্মে নক্বলিয়াকে প্রধান আটটি শাখায় ভাগ করা হয়েছে। (১) ইল্মে তাফসীর (معرفت) বা কুরআনুল করিমের ব্যাখ্যা সম্পর্কীয় জ্ঞানঃ এই শাখায় বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিকে মুফাস্সীর বলা হয়। তিনি হচ্ছেন প্রগাঢ় জ্ঞানের অধিকারী এমন একজন আলিম, যিনি কুরআন শরীফের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এবং আয়াতে কারিমার নিগূঢ় তত্ত্বসমূহ অনুধাবন করতে সক্ষম।

(২) ইল্মে উসূলে হাদীস

 علم التفسير))ঃ

 জ্ঞানের এই শাখায় বিভিন্ন দিক থেকে হাদীস শরীফের শ্রেণী বিভাগ সমূহ আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ মা’রফু, মাওকুফ, মাকতু-মুত্তাসিল, মুনকাতে- ছহীহ্, হাসান, যঈফ (রাবীর যোফ বা দুর্বলতার কারণে যঈফ বলা হয়, অন্যথায় (নাউযুবিল্লাহ) রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কোন কথাই যঈফ নয়)। মওযু-খবরে ওয়াহেদ, মুতাওয়াতির খবর” ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।         (৩) ইলমে হাদীস ( علم اصول الحديث)ঃ জ্ঞানের এই শাখা  সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম, পূঙ্খানুপূঙ্খভাবে আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্বওল বা উক্তি সমূহ (হাদীস) ফে’ল বা আচার-আচরণ অর্থাৎ কাজের ধারাসমূহ (সুন্নাহ) এবং অভ্যন্তরীন অবস্থাসমূহ (হাল) উনার তাকরার, অনুমোদন বা সম্মতি সমূহ যথাযথভাবে আলোচনা করেছে। এই শাখায় বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিকে মুহাদ্দিস বলে।   (৪) ইল্মে উসূলে কালাম علم اصول الكلام))ঃ   কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ থেকে ইল্ম আল কালাম আহরণের নিয়ম প্রনালী এই বিদ্যার আলোচ্য বিষয়। (৫) ইল্মে কালাম (علم الكلام)ঃ জ্ঞানের এই শাখার  আওতায় কালিমা তাওহিদ এবং কালিমা শাহাদাৎ এবং ঈমানের ছয়টি মৌলিক, মুখ্য এবং অপরিহার্য বিষয় যার উপর ঈমান এবং আক্বীদা (বিশ্বাস) নির্ভরশীল সেগুলোকে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম-পূঙ্খানুপূঙ্খরূপে বিচার, বিশ্লেষণ এবং অধ্যায়ন করা হয়। কালাম শাস্ত্রের আলিমগণ ইল্ম আল উসূল আল কালাম এবং ইল্ম আল কালাম একসাথে রচনা করেছেন বিধায় সাধারণ মানুষ জ্ঞানের এই আলাদা দু’টো শাখাকে একই শাখায় গণ্য করে থাকে। এই শাখার বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গকে মুতাক্কালীমিন বলা হয়।  (৬) ইল্মে উসূলে ফিক্বাহ ( علم اصول الفقه)ঃ   কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ থেকে ফিক্বাহের ইল্ম আহরণের নিয়ম প্রণালীর যথাযথ বিচার- বিশ্লেষণ জ্ঞানের এই শাখায় অর্জিত হয়।    (৭) ইল্মে ফিক্বাহ ( علم الفقه)ঃ ইল্মের এই শাখা আফ্আলুল মুকাল্লিফিন (افعال المكلفين) সম্পর্কে  আলোচনা করে। অর্থাৎ একজন বালিগ এবং জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তি দেহ সংক্রান্ত বিষয়ে কিরূপ আচরণ করবে এই বিদ্যা সে বিষয়ে আলোচনা করে। আফআলুল মুকাল্লিফিন আট ভাগে বিভক্ত। ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব, মুবাহ, হারাম, মাকরূহ, এবং মুফসিদ এই আটটি ভাগকে সংক্ষেপে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যে সমস্ত কাজের আদেশ করা হয়েছে, যে সমস্ত কাজ নিষেধ করা হয়েছে এবং যে সমস্ত কাজের অনুমোদন রয়েছে (মুবাহ) এই বিষয়ের আলিমগণকে ফুক্বাহা বলা হয়। (৮) ইল্মে তাসাউফ علم التصوف)  )ঃ এই শাখাকে  অন্যভাবে ইল্ম আল-আখলাক (নৈতিক চরিত্র সম্পর্কীত জ্ঞান) ও বলা হয়। এটি শুধুমাত্র অন্তঃকরণের আমল সমূহেরই ব্যাখ্যা প্রদান করে না উপরন্ত ঈমানকে আত্মিক উপলব্ধির মাধ্যমে কামিল বা পরিপূর্ণ করে। ফলতঃ একজন কামিল মু’মিন ও মুসলমান হয়ে একজন ব্যক্তি ইল্মে ফিক্বাহের শিক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আল্লাহ্ পাক-এর মা’রিফাত অর্জন করে হাক্বীক্বত পর্যন্ত উপনীত হয়। আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আলিমগণ তরীক্বা বা তাসাউফ এর শিক্ষা আহ্লে বাইতের বারজন ইমাম এবং তাসাউফের অপরাপর মহান ইমামগণ যেমন, হযরত র্সারী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ইন্তিকালঃ ২৫১ হিঃ বাগদাদ) হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ইন্তিকালঃ ২৯৮ হিঃ বাগদাদ) প্রমুখ-এর কাছ থেকে অর্জন করেছেন। এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা আউলিয়া-ই-কিরাম, কারামত বা তাসাউফে বিশ্বাসী নয়। এটা প্রমাণ করে যে আহ্লে বাইতের ইমামগণের সাথে তাদের কোন নিছবত বা সম্পর্ক নেই। যদি থাকতো তবে তারাও তাসাউফের ইমামগণের কাছ থেকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইল্মে বাতিনের হিস্স্যা লাভ করতো এবং তাদের মধ্যেও আউলিয়া-ই-কিরাম এবং তাসাউফের আলিম থাকতো। তারাও কারামতের অধিকারী হতো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও একথা সত্য যে তাদের মধ্যে কারামতের অধিকারী বুযূর্গ থাকাতো দূরের কথা, এরকম কেউ যে থাকতে পারে এই বিশ্বাসটুকুও তাদের নেই। এটা অবধারিত সত্য যে, আহ্লে বাইতের ইমামগণই আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ইমাম। আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতই আহ্লে বাইতগণের মুহব্বত করে এবং ইমামগণের অনুসরণ করে।

আলিম হতে হলে অবশ্যই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইল্মের ওয়ারিস বা উত্তরাধিকারী হতে হবে। অর্থাৎ ইল্মে শরীয়ত এবং ইল্মে মা’রিফাত বা তাসাউফ উভয়টিই শিক্ষা করতে হবে। হযরত আব্দুল গণী নাবুলুসি রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর “আল হাদিকাতুন্ নিদায়া” কিতাবের ২৩৩ এবং ৬৪৯ পৃষ্ঠাতে হাদীস শরীফের মাধ্যমে কুরআন শরীফের আধ্যাত্মিক নিয়ম-নীতি এবং বাতিনী দিকসমূহ তুলে ধরেছেন এবং এর অস্বীকারকারীদের চরম জাহিল, জঘণ্য বলে উল্লেখ করেছেন। “আল হাদীকা”  কিতাবে ২৩৩ পৃষ্ঠায় এবং “রদ্দুল মুহতার” কিতাবের মুকাদ্দামায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য এই ৮ শাখার মধ্যে জরুরত আন্দাজ কালাম, ফিক্বাহ এবং তাসাউফ শিক্ষা করা ফরযে আইন এবং না শেখা কবীরা গুণাহ্। ইসলামি জ্ঞানের দ্বিতীয় শাখা উলুমে আক্বলিয়া( علم بخاصه تجربى) বা গবেষণা ও পরীক্ষামূলক   জ্ঞান-বিজ্ঞান। উলুমুল আক্বলিয়ার যে শাখা জীব জগৎ ও সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তাহলো উলুমুল তীব্বিয়া যে শাখা জড় জগৎ নিয়ে আলোচনা করে তাকে উলুমল হিকমিয়া, যে শাখা আকাশ ও নক্ষত্র নিয়ে আলোচনা করে তাকে উলুমুল ফালাকিয়া,  আর যে শাখা পৃথিবী নিয়ে আলোচনা করে তাকে উলুমুল তাবিইয়া বলে। বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানের উপশাখাগুলো হলো গণিত, যুক্তিবিদ্যা এবং পরীক্ষালব্ধ জ্ঞান। এই জ্ঞানসমূহ পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের ক্ষমতা প্রয়োগ, মস্তিস্কের অনুধাবন ক্ষমতা ও পর্যবেক্ষণ, গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং হিসাব-নিকাশের মাধ্যমে অর্জিত হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই ক্ষেত্র আমাদেরকে ইলমুন নক্বলিয়া বুঝতে-বুঝাতে, পালন করতে ও প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করে। এই জন্যই বলা হয় “যে দুনিয়া ভাল বুঝে, সে দ্বীনও ভাল বুঝে।” এ প্রসঙ্গে হযরত জুনায়েদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং ইহুদী আলিমের ঘটনা প্রনিধানযোগ্য। মুসলমানদের জন্য এসকল জ্ঞান শিক্ষা করা ফরযে ক্বিফায়া। অন্যদিকে ধর্মীয় জ্ঞান জরুরত আন্দাজ শিক্ষা করা ফরযে আইন এবং এতে বিশেষজ্ঞ হওয়া ফরযে ক্বিফায়া। এই জ্ঞানসমূহ জানা একজন আলিমও যদি কোন শহরে না থাকে তবে এর সকল অধিবাসী কবীরা গুণাহ্ েগুনাহ্গার হবে।  সময়ের আবর্তনে ইল্মে নাক্বলিয়ার মধ্যে কোন পরিবর্তন আসেনা। যেমন ইল্মে কালাম বা আক্বীদাগত বিষয়ে নিজস্ব যুক্তিবুদ্ধি, বিচার, বিবেচনায় কোন সিদ্ধান্ত নিলে কাফির হতে হবে বরং কোন চু-চেরা কিল ও কাল ব্যতীত কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদাকে মেনে নিতে হবে। অর্থাৎ উসূলের ক্ষেত্রে কোন বাক্য ব্যয় করা যাবেনা। আর ফুরু অর্থাৎ ফিক্বাহের ক্ষেত্রে ইসলাম কর্তৃক প্রদর্শিত কিছু ব্যতিক্রম এবং রুখসতের ক্ষেত্রে, শর্ত সাপেক্ষে কিছু ছাড় রয়েছে অথবা মাজুর বা অপারগ হিসাবে কিছু বিষয় অনুমোদিত রয়েছে।  আল্লাহ্ পাক কালামুল্লাহ শরীফে বলেন,

يريد الله بكم اليسر ولايريد بكم العسر.

          “আল্লাহ্ পাক! তোমাদের জন্য সহজ চান, কঠিন চান না।” (সূরা বাক্বারা/১৮৫)   আরো বলেন,

لا يكلف الله نفسا الا وسعها.

          “আল্লাহ্ পাক কারো সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপান না।” আর, আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমাদেরকে সহজ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, কঠোরতা করার জন্য নয়।”

মূলকথা ধর্মীয় বিষয়ে নিজের মতামত অনুসারে বা দৃষ্টিভঙ্গির কারণে কোন ইফরাত-তাফরিত, বাড়ানো-কমানো, পরিবর্তন-পরিবর্ধন কখনই জায়িয নয়। বরং যেটা যেভাবে আছে বিনা বাক্য ব্যয়ে তা মেনে নিতে হবে। এর ব্যতিক্রম একজনকে ইসলামের গন্ডি থেকে বের করে দেয়।

ইল্মুল আকলিয়ার ক্ষেত্রে পরিবর্তন-পরিবর্ধন, উন্নতকরণ, উৎকর্ষ সাধন প্রভৃতি জায়িয রয়েছে। বরং এর উন্নয়ন কল্পে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা, এমনকি প্রয়োজন বোধে অমুসলিমদের থেকে শিক্ষা করার তাগীদ রয়েছে। যেমন, “ইহ্ইয়াউল উলুম” কিতাবে হাদীস শরীফটি উল্লেখ করা হয়েছে,

    الطلبوا العلم ولو كان بالصين.

“জ্ঞান অর্জন কর যদিও তা চীন দেশে হয়।”   এবং এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, “যদি পৃথিবীর দূরতম প্রান্তেও ইল্ম থাকে এবং যদি তা কাফিরদের অধিকারেও থাকে তবুও জ্ঞান অর্জন কর। একথা বলোনা যে আমার এই ইল্মের দরকার নেই যেহেতু এটা কাফিরদের উদ্ভাবিত।” সেসময় থেকেই ‘রেশম পাথ’ নামে একটি বানিজ্যপথ চীন থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এমনকি ব্যবসায়ী, পরিব্রাজক, জ্ঞানী-গুণী জনেরা তখনও চীনের কেন্টন থেকে আফ্রিকার সেনেগাল পর্যন্ত চলাচল করত। মুসলমানরা চীনা যুদ্ধবন্দীদের কাছ থেকে অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি কাগজ তৈরীর কৌশল আয়ত্ত করে। ৭৯৩ ঈসায়ী সনে বাগদাদে একটি কাগজের কারখানা স্থাপিত হয়। ৯০০ সালের মধ্যে মিসরে এবং ৯৪০ সালের মধ্যে স্পেনে কাগজ তৈরী হয়। তখন থেকে মুসলিম বিশ্বে হস্তলিখিত বইয়ের প্রসার ঘটে ও গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়।

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

الحكمة ضالة المؤمن من اين وجدها اخذها.

“হিকমত মুসলমানদের হারানো সম্পত্তি। যেখান থেকে পাও আহরণ কর।”        হযরত ইমাম গায্যালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর “আল মুনকিযু মিনাদ দালাল” কিতাবে উল্লেখ করেছেন, “বৈজ্ঞানিক এবং দার্শনিকগণ তাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান মূলতঃ নবী-রসূলদের জ্ঞান থেকেই আহরণ করেছে।” পৃথিবীর প্রথম মানব জলিলুল কদর রসূল হযরত আদম আলাইহিস্ সালামকে আল্লাহ্ পাক সমস্ত ইল্ম দান করেছিলেন।           যেমন আল্লাহ্ পাক বলেন,

وعلم ادم الاسماء كلها.

“আল্লাহ্ পাক হযরত আদম আলাইহিস্ সালামকে সমস্ত নাম সমূহ শিক্ষা দিলেন।” (সূরা বাক্বারা/৩১)  দুনিয়াতে তিনি তাঁর উম্মতকে নামায, ওজু-গোসল, রোযা, এবং রক্ত, শুকর ইত্যাদি না খাওয়া সহ বিভিন্ন প্রকার হস্তশিল্প, কৃষি, চিকিৎসা বিজ্ঞান, ঔষধের উপাদান, গণিত, জ্যামিতি সহ বিভিন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞানের শিক্ষা দিয়েছিলেন। তারা স্বর্ণমুদ্রার প্রচলন, খনি পরিচালন এবং যন্ত্রপাতি ও হাতিয়ার তৈরীসহ বিভিন্ন কাজের আঞ্জাম দিয়েছিলেন।   আগেকার দিনে ইমাম-মুজতাহিদগণের ইল্মে মা’কুলাতে কোন রকম দুর্বলতা ছিলনা, এমনকি মাদ্রাসা, মসজিদগুলোতে সমকালীন বিজ্ঞান শিক্ষা দেয়া হতো। আলিম ওলামাগণকে সময়োপযোগী জ্ঞান-বিজ্ঞানে ব্যাপক জ্ঞানসম্পন্ন করা হতো এবং এসকল মহান আলিমদের মোকাবিলায় ইসলামের শত্রুদের টু’শব্দটি করার যোগ্যাতা ছিলনা। উদাহরণ স্বরূপ হযরত ইমাম গায্যালী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নাম উল্লেখ করা যায়। তাঁর কিতাবগুলোই ধর্মীয় জ্ঞানে তাঁর অচিন্ত্যনীয় গভীরতা এবং ইজতিহাদের প্রশ্নাতীত যোগ্যতার প্রমাণস্বরূপ। যে ব্যক্তি তাঁর কিতাব পড়বে ও বুঝতে পারবে তার পক্ষেই তাঁর মর্যাদা-মর্তবা বুঝা সম্ভব।

অন্যথায় অপূর্ণ ব্যক্তিরা তাদের নিজেদের দুর্বলতা ঢাকবার জন্য তাঁর উপর অপবাদ দেয়ার প্রয়াস পাবে। মূলতঃ একজন সত্যিকার আলিমের পক্ষেই আরেকজন আলিমকে চেনা সম্ভব। ইমাম গায্যালী রহমতুল্লাহি আলাইহি যে শুধুমাত্র ইল্মে মা’কুলায় মুজতাহিদ ছিলেন তা নয় বরং তাঁর যামানার জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় তিনি ছিলেন বিশেষজ্ঞ। তিনি দু’বছরের মধ্যে (তৎকালীন দ্বিতীয় ভাষা) গ্রীক ভাষায় বুৎপত্তি লাভ করেন। গ্রীক ও রোমান দর্শন ও বিজ্ঞানের উপর ব্যাপক গবেষণা করেন এবং তাঁর কিতাবে গ্রীক ও রোমান বিজ্ঞান ও দর্শনের ত্রুটি, বিচ্যূতি, অসারতা এবং ভ্রান্তধারণা খন্ডন করে ইসলামের শত্রুদের স্তদ্ধ করে দেন। তিনি পৃথিবীর ঘূর্ণন, পদার্থের গঠন, চন্দ্র ও সুর্যগ্রহণের হিসাব নিকাশ এবং  প্রযুক্তিবিদ্যাগত ও সামাজিক নানা বিষয়াদি নিয়ে কিতাব রচনা করেন।

স্মরণীয় আরেকজন মহান আলিম হলেন হযরত ইমামে রব্বানী শায়খ আহমদ ফারুকী সিরহিন্দ মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।  নির্ভরযোগ্য সকল উলামা-ই-কিরামগণের ঐক্যমত যে, দ্বীনি ইল্মে তাঁর গভীরতা, ইজতিহাদের সুউঁচ্চ মর্যাদা-মর্তবা এবং বিশেষ করে ইল্মে তাছাউফে তাঁর কামালত অনেকেরই চিন্তার অনেক উর্ধ্বে। তাঁর মকতুবাত শরীফ সম্বন্ধে বলা হয় যতক্ষণ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি মকতুবাত শরীফ পাঠ করবে, সে নবী না হলেও ততক্ষণ পর্যন্ত তার নাম নুবুওওয়াত তবকায় থাকবে। তিনি ও তাঁর সমকালীন সমস্ত বিজ্ঞান সংক্রান্ত জ্ঞানে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তাঁর মকতুবাত শরীফের ১ম খন্ডের ২৬৬ নং মকতুবে উল্লেখ করেন, “আমার ছেলে খাজা মুহম্মদ মাসুম রহমতুল্লাহি আলাইহি শরহে মাওয়াকিফ কিতাবটি পড়ে শেষ করেছে এবং গ্রীক দর্শনিকদের ভুল-ভ্রান্তিগুলো খুব ভালভাবেই বুঝেছে। এছাড়াও এ কিতাব থেকে অনেক বিষয় শিখেছে।” শরহে মাওয়াকিফ মূলতঃ ইল্মে মা’কুলা বা বিজ্ঞান বিষয়ক কিতাব এবং কিছুকাল আগেও মাদ্রাসার উঁচু ক্লাসে এটা পড়ানো হতো।    মাওয়াকিফ কিতাবটি রচনা করেন কাজী ওয়াদুদ রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং সাইয়্যিদ শরীফ আ’লী যুরযানী রহমতুল্লাহি-এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ শরহে মাওয়াকিফ কিতাবটি রচনা করেন। আরবী ভাষায় রচিত প্রায় হাজার পৃষ্ঠার এ কিতাবে তৎকালীন জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল বিষয়ই বর্ণিত রয়েছে। কিতাবটি ছয় খন্ডে বিভক্ত এবং প্রতিটি খন্ডে অনেক পরিচ্ছেদ রয়েছে। চতূর্থ খন্ডের প্রথম পরিচ্ছেদের তৃতীয় অধ্যায়ের ২য় প্যারাতে প্রমাণ করা হয়েছে যে ‘পৃথিবী গোলাকার’ এবং ৬ষ্ঠ প্যারাতে প্রমাণ করা হয়েছে যে ‘পৃথিবী পশ্চিমদিক থেকে পূর্বদিকে ঘুরে।’ এই কিতাবে পরমানু, পদার্থের বিভিন্ন অবস্থা, শক্তিসমূহ এবং বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে অত্যন্ত মূল্যবান তথ্য দান করা হয়েছে। বর্তমানে যারা নামধারী মাওলানা তাদের পূর্ববর্তী ইমাম মুজতাহিদদের মত ইল্ম থাকাতো দূরের কথা, তাদের মধ্যে যারা খুব ভালভাবে আরবীও জানে হযরত ইমাম গায্যালী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ন্যায় উলামা-ই-কিরাম-এর কিতাব পড়ে বুঝার ক্ষমতা তাদের আছে কিনা সন্দেহ।     ইউরোপীয়ানরা তাদের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান অথবা এর ভিত্তি সমূহ, ইসলামি কিতাবাদি থেকে লাভ করে। যখন ইউরোপীয়ানদের ধারণা ছিল পৃথিবীটা একটা ট্রে-র মত সমতল এবং দেয়াল দিয়ে ঘেরা, তখন মুসলমানরা জানতো যে পৃথিবী গোলকের ন্যায় এবং ঘূর্ণায়মান, এ ঘটনা শরহে মাওয়াকিফ এবং মারিফাতনামায় বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। নূরুদ্দীন বাতরুযি রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি ৫৮১ হিজরী মুতাবিক- ১১৮৫ ইন্তিকাল করেন তিনি আন্দালুসের ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি তাঁর আল-হায়াত কিতাবে বর্তমানকালের জ্যোর্তিবিজ্ঞান (Astronomy) র তথ্য সমূহ সন্নিবেশিত করেন। যখন গ্যালিলিও, কপার্নিকাস, নিউটন, ইসলামি বইপত্র থেকে জেনে পৃথিবী ঘূর্ণায়মান এই তথ্য প্রকাশ করল, তখন তাদেরকে তাদের বক্তব্যের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত করা হল। গ্যালিলিওকে পাদ্রীরা বন্দী করে মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত দান করেছিল। ইসলামের শত্রুরা চক্রান্ত করে মাদ্রাসাগুলো থেকে বিজ্ঞানের বিষয়গুলো তুলে দেয়ার আগ পর্যন্ত আলোকিত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব তৈরী হচ্ছিল এবং মুসলমানদের জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে নিয়ে বিশ্বকে নেতৃত্ব দান করছিল। যখন থেকে বিজ্ঞান প্রযুক্তির শিক্ষা বন্ধ করা হলো, আইন করে নিষিদ্ধ করা হলো তখন থেকেই মুসলমানরা পিছাতে লাগলো, আবিস্কার, উদ্ভাবন প্রায় বন্ধ হয়ে গেলো এবং পাশ্চাত্য, প্রাচ্যের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করল। সে রকম একটি কালো আইন হলো তানজিমাত কানুন (Reorganlzation law) ফ্রি-ম্যাসন রশিদ পাশা সুলতান আব্দুল মজিদের রাজত্বকালে ব্রিটিশ অ্যাম্বেসিডারের সহায়তায় ১২৫৫ হিজরী ২৬শে শা’বান (১৮৩৯) ঘোষণা করে আটোমান সাম্রাজ্যের মাদ্রাসাগুলোতে সমকালীন বিজ্ঞান শিক্ষা নিষিদ্ধ করে শুধু মাত্র ব-ক্বদর কিছু নেছাবের কিতাব সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করে। আলিমনামধারী অজ্ঞ লোক তৈরীর প্রক্রিয়ায় একে প্রথম পদক্ষেপ বলে বিবেচনা করা হয়। সে ধারাবাহিকতায় আমাদের দেশেও এক শ্রেণীর আলিম নামধারী জাহিল তৈরী হয়েছে। তারা দুনিয়া না বোঝার কারণে দ্বীনও বোঝেনা। টি. ভি এবং ভি. সি. আর প্রভৃতি যে ছবির অন্তর্ভুক্ত; সে বুঝ এখনো তাদের হয়নি। এখনো তারা এগুলোকে আয়নার মত মনে করে। ইনজেকশন, স্যালাইনে যে রোযা ভঙ্গ হয় একথা বারবার বোঝানোর পরেও তা বুঝতে এরা ব্যর্থ হয়। আর ‘টেষ্ট টিউব বেবীর’ মাসয়ালাতেও আক্বল হীনতার কারণে ভুল করে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখা এবং ইতিহাসের জ্ঞান না থাকায় সমকালীন সমস্যার সমাধান দিতে তারা নিতান্তই অপারগ। ইসলামের শত্রুদের হাজারো মিথ্যাচার আর অপবাদের জবাব দেয়ার ক্ষমতা আদৌ এদের নেই। বর্তমান সমাজের মানুষের মানসিকতা, চিন্তা-চেতনা সম্পর্কে বোধের অভাবে তারা হিদায়েতের কাজ করতে অক্ষম বরং ফিৎনা ফাসাদেরই সৃষ্টি করছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতি তাদের বৈরী মনোভাব এবং অপরিণত উক্তি মানুষকে ইসলাম এবং হক্কানী আলিমে দ্বীন সম্পর্কে ভুল ধারণা দেয়। মূলতঃ ‘তারা দ্বীনও বোঝেনা, দুনিয়াও বোঝেনা।’ তাই তাদের ক্ষতিকর ভুমিকার জন্য দ্বীনের খিদমতের বদলে তারা দ্বীনকে ধ্বংস করছে। অথচ তা তারা বোঝেনা। বর্তমান আলিম সমাজ যদি আগেকার উলামা-ই-কিরামগণের মত যোগ্যতার অধিকারী হতো তবে ইসলাম সম্পর্কে ‘টু’ শব্দটি করার সাহস কারো হতোনা। বর্তমানে যাঁরা হক্ব উলামা-ই-কিরাম আছেন তাঁরা এ সকল অপূর্ণ এবং সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়া আলিম নামের কলংকদের কারণে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং সাধারণ মানুষ দ্বীন থেকে হচ্ছে মাহ্রূম।           আমাদের এতক্ষণের আলোচনায় বুঝা গেল যে, আলিমে দ্বীন তৈরী হওয়ার জন্য ইল্মে মা’কুলা বা গবেষণা ও পরীক্ষা মূলক জ্ঞান-বিজ্ঞান অত্যাবশ্যক।

 -সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুনিস মুর্শেদ, মিরপুর, ঢাকা।

খতমে নুবওওয়াত প্রচার কেন্দ্র খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারীরা কাফির ইসলামী শরীয়তের হুকুম মুতাবিক যারা মুসলমান থেকে খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হয় (যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই ইত্যাদি) (তাদের তওবার জন্য নির্ধারিত সময় ৩দিন। এরপর তওবা না করলে তাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড)

রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নাম মুবারকের পূর্বে র্ববহৃত লক্বব বা উপাধি এবং তার তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ

একই অঙ্গে বহু রূপে সজ্জিত স,আ, ত, ম আলাউদ্দিনের বিকৃত রুচি সম্পন্ন লিখার প্রতিবাদে

মানব ক্লোনিং- পরিণতি ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা

“ওসামা বিন লাদেন বর্তমান সময়ের এক চরম মুনাফিক” বিশ্বখ্যাত এই মিথ্যাবাদী কাজ করেছে সম্পূর্ণ সিআইএ –এর চর রূপে-৬