আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত সংবাদ

সংখ্যা: ১৮৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল বাইয়্যিনাত প্রতিবেদন: মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছীফত, প্রশংসা বর্ণনা করা। সুতরাং সকল সৃষ্টি একসাথে অনন্তকাল ধরেও যদি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ছানা-ছীফত, প্রশংসা বর্ণনা করতে থাকে তবুও তার সামান্য থেকে সামান্যতম ছানা-ছীফতও তারা করতে পারবেনা।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলী, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামে আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ—এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বিশেষ আলোচনা মজলিশে একথা বলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী মীলাদ শরীফ প্রসঙ্গে বলেন, মীলাদ শরীফ পাঠকারীদের জন্যে আল্লাহ পাক রহমতের সমস্ত দরজা খুলে দেন। নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁদের জন্যে সুপারিশ ওয়াজিব করেন। সমস্ত ফেরেস্তাগণ এবং সমগ্র সৃষ্টি তাঁদের জন্যে মাগফিরাত কামনা করেন। পক্ষান্তরে যারা বিদ্বেষবশতঃ এর বিরোধিতা করে তাদের জন্যে আল্লাহ্ পাক , আল্লাহ পাক-এর হাবীব এবং সমস্ত ফেরেশতা ও মাখলুকাতের অনন্তকালের লা’নত।
মীরাজুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মীরাজ শরীফ প্রসঙ্গে উলামায়ে ‘ছূ’ দেওবন্দী, তাবলীগী খারেজীরা বলে থাকে, “মীরাজ শরীফে যাওয়ার আগে উনার সীনা মুবারক চাক করে ভিতরের নাপাকী বের করে ঈমানের নূর প্রবেশ করানো হয়েছে।” (্নাউযুবিল্লাহ) এ আক্বীদা পোষণ করা কাট্টা কুফরী।
মূলতঃ উনি নিজেইতো ঈমান। উনার রিছালত মেনে উনার প্রতি হুসনে যন রাখলেই কেউ ঈমানদার হতে পারবে। কাজেই ‘ঈমানের ভিতর আবার ঈমানের নূর প্রবেশ করাতে হবে’ এ আক্বীদা কী করে সহীহ হতে পারে?
খাজায়ে খাজেগাঁ, সুলতানুল হিন্দ, খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি—এর ঈসালে সওয়াব মাহফিলে তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ফায়েজ-বরকত, নিয়ামত হাছীল করতে হলে অবশ্যই প্রত্যেককে যুগের যিনি ইমাম, তথা লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ্ উনার নিকট বাইয়াত হয়ে, ছোহবত অর্জন করে, ফায়েজ-বরকত লাভ করতে হবে। উলীল আমরের অনুসরণ ব্যতীত কারো পক্ষেই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পর্যন্ত পৌছা সম্ভব নয়।
সময় আগ—পিছ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সময় আগ-পিছ করার দ্বারা লোড শেডিং বন্ধ করা মূল উদ্দেশ্য নয় বরং এটা দেশদ্রোহী বিদেশী অপশক্তির চাপানো সরকার পতনের সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র মাত্র। বিদ্যুতের লোড শেডিং কমাতে হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোন বিকল্প নেই।
মুজাদ্দিদে আ’যম মুদ্দা জিল্লুহুল আলী অতি সম্প্রতি শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির জনৈক নাস্তিক কবীর চৌধুরীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ ইসলাম বিরোধী শিক্ষানীতি প্রণয়নের প্রস্তাব প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান সরকার মূলতঃ ভিতর-বাইরের শত্রু দ্বারা আক্রান্ত। এরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলে বিরোধী শক্তি কর্তৃক আন্দোলন চাঙ্গা করে পতনের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে; অন্যথায় কী করে ৯৫% মুসলমানের এই দেশে স্কুলের পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ইসলামী শিক্ষা বাদ দেয়ার প্রস্তাব করার মত ধৃষ্টতা দেখাতে পারে? সরকার চতুর্মুখী ষড়যন্ত্রের শিকার এ সত্য তত্ত্বটি সরকারকে গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ফ্রান্সে মুসলিম মহিলাদের বোরকা নিয়ে হামানরূপী ফ্রান্সের সারকোজি যে ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য প্রদান ও কর্মসূচী গ্রহণ করেছে তার জন্য তাকে বিশ্বের ২৫০ কোটি মুসলমানের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে ভুল স্বীকার করতে হবে। মুসলিম বিশ্বের উচিত এ বিষয়ে কঠোর প্রতিবাদ করা। কেননা, এটা প্রকাশ্যে ইসলাম ধর্মের অবমাননা—মুসলমানদের উচিত হবেনা এ বিষয়ে নিরব থাকা।
চীনের উইঘুরে চলছে নির্মম মুসলিম গণহত্যা। পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হচ্ছে মুসলমানদের। এর দ্বারা চীন মূলতঃ নিজেকে পশ্চিমা নীতির ধারক- বাহক রূপেই সাব্যস্ত করছে। এ বিষয়ে কথিত বিশ্ব মানবাধিকার সংগঠন, কথিত বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা এবং (ইহুদী) জাতি সংঘের নিষ্ক্রিয়তাই প্রমাণ করে আসলে এদের উস্কানিতেই বিশ্বব্যাপী মুসলিম নিধনের অংশ হিসেবে চীনের এই গণহত্যা চালানো হচ্ছে।
রাশিয়ার ঘোষণা, “এটা চীনের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার” বলে এড়িয়ে যাওয়াই প্রমাণ করে, এরা কেউই মুসলমানের শুভাকাঙ্খী নয়। সকল কুফরী শক্তিই ইসলামের বিরুদ্ধে একজোট। এদের সবারই লক্ষ্য মুসলিম নিধন। আশ্চর্যের বিষয় হলো, চীনে হাজার হাজার মুসলিমকে হত্যা করা হলেও এ বিষয়ে কোন মুসলিম দেশ বিবৃতি পর্যন্তও দেয়নি। এখনই মুসলমানদের বোধোদয় হওয়া উচিত।
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, ইহুদী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ওমাবা মূলতঃ ব্যর্থ, পুতুল সরকার। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে আমেরিকার নগ্ন বিমান হামলা ওবামাকে বিশ্ব সন্ত্রাসী ক্লিনটন আর বুশের উত্তরসূরীই প্রমাণ করে।

ইরানে ইসরাঈলের বিমান হামলার হুমকীর বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্য দূতের বক্তব্য এটা ইসরায়েলের নিজস্ব ব্যাপার এ বিষয়ে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারিনা। মূলতঃ পশ্চিমাদের  মুসলিম বিরোধী চেতনা এবং ইহুদী তোষণ নীতিই প্রমাণ করে। মুসলমানদের উচিত এসব ঘটনা ও বিবৃতি থেকে নছীহত হাছীল করে শত্রু ও বন্ধুকে চিনে নেয়া। অন্যথায় পদে পদে মার খেতে হবে।

মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, বিশ্বে মুসলমানদের নির্যাতিত হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ হলো মুসলমানদের ঈমানী দুর্বলতা-এর পেছনে দায়ী হলো হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে মুসলমানদের অজ্ঞতা। কবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিলাদত শরীফ- বিছাল শরীফ আসে মুসলমানরা তার কোন খবরই রাখেনা অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কথিত পপ সম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যু খবর জানতে মুসলমানরা এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে, ইন্টারনেটের  সেরা অনলাইন সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও ইয়াহু পর্যন্ত হ্যাং হয়ে যায়। এটা মুসলমানদের জন্য নিতান্তই লজ্জার বিষয়!

মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা  মুদ্দাজিল্লুহুল আলী বাংলাদেশের সমসাময়িক প্রসঙ্গে বলেন, বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের বিশেষ করে কাঁচামালের অস্বাভাবিক উর্ধ্বগতি, ডে লাইট সেভিংসের নামে সময়কে এক ঘণ্টা এগিয়ে এনে এক ঘণ্টা আগেই সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য করে  দেশে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি করা খুবই উদ্বেগজনক। পিলখানা ট্রাজেডির তদন্তের দীর্ঘ সূত্রিতা, এর বিচার এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ার স্থবিরতা সরকারের স্বচ্ছতার ব্যাপারে জনগণকে সন্দিহান করে তুলেছে। সরকারের উচিত এসব বিষয়ে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা।

তিনি আরো বলেন, সরকারে বিতর্কিত উপদেষ্টা নিয়োগ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে

মুসলিম যোগ্য প্রবীন নেতাদের বাদ দিয়ে নবীন, ভিন্নধর্মী এবং  নারীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো; সেইসাথে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার, জামাতী, খারেজী ও জঙ্গী মদদপুষ্টদের চাকরী বহাল রাখা সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে পারে।

এ বিষয়ে সরকারের সময়োচিত দূরদর্শী পদক্ষেপ গ্রহণ একান্তই জরুরী। এ বিষয়টি বুঝতে সরকার যতই দেরী করবে ততই তা ক্ষতির কারণ হবে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, সরকারের কোনরূপ ইসলাম বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ না করার জন্যও তিনি সরকারকে সতর্ক করেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ রজব, বৃহস্পতিবার, কেন্দ্রীয় ছাত্র আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত-এর উদ্যোগে রাজারবাগ দরবার শরীফ-এ খাজায়ে খাজেগাঁ, গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি -এর ঈছালে ছওয়াব উপলক্ষে ওয়াজ শরীফ, মীলাদ শরীফ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ