আল বাইয়্যিনাত প্রতিবেদন: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা কুল-কায়িনাতের সবার জন্যই ফরয। এ উপলক্ষে কেউ সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী খরচ করলে ওহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ দান করার চেয়েও বেশি ফযীলত সে লাভ করবে।
প্রতি মুহূর্তে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত বর্ণনা করা, সুমহান শান-মান আলোচনা করা, অনুক্ষণ উনার যিকির করা, উনাকে স্মরণে রাখা, উনাকে অনুসরণ-অনুকরণ করা প্রতিটি বান্দা ও উম্মতের মূল দায়িত্ব ও কর্তব্য তথা ফরয।
ইমামে আ’যম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সুলত্বানুন নাছীর, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বিশেষ আলোচনা মজলিসে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি বান্দা ও উম্মতের তথা কুল-কায়িনাতের কাফির-মুশরিকসহ সকল মুসলমানের মূলত একটাই কাজ হওয়া উচিত, সেটা হলো চব্বিশ ঘণ্টা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত, শান-মান ও ফাযায়িল-ফযীলত আলোচনা করা। সম্ভব হলে দৈনিক পাঁচবারই প্রত্যেক নামাযের পরে উনার সুমহান শানে মীলাদ শরীফ পাঠ করা উচিত। এটা না পারলে কমপক্ষে সকাল-বিকাল বা দিনে-রাতে দু’বার হলেও উনার সুমহান শানে মীলাদ শরীফ পাঠ করা দরকার। এর দ্বারা বান্দা ও উম্মত, আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ খায়ের, বরকত, রহমত, সাকীনা লাভ করতে পারবে। রিযিকের সচ্ছলতা আসবে, সর্বপ্রকার বিপদ-আপদ, বালা-মুছীবত, আযাব-গযব থেকে আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে হিফাযত করবেন। সরকারসহ সবার ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- অফিস-আদালত থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বত্র নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শানে মীলাদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে যেকোনো ভালো কাজ শুরু ও শেষ করার সরকারি আদেশ জারি করা।
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি আরো বলেন, প্রত্যেক দেশের সরকারসহ কুল-কায়িনাতের সবার উচিত সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ-এর দিন তথা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর, সাইয়্যিদে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে সকল প্রতিষ্ঠান মাসব্যাপী ছুটি ঘোষণা করা। উনার সুমহান শানে রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি পর্যায়ে অত্যন্ত জাঁকজমক ও শান শওকতের সাথে মাসব্যাপী আলোচনা সভা, মীলাদ শরীফ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা। সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে যাতায়াত ব্যবস্থা ফ্রীকরণ সহ বিশেষ তাবারুকের ব্যবস্থা করা। মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা। কর্মচারীদের জন্য দু’ঈদের দ্বিগুণ অতিরিক্ত সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ ভাতা বা বোনাস প্রদান করা যাতে প্রত্যেকে মাসব্যাপী সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ স্বাচ্ছন্দে পালন করতে পারে।
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি আরো বলেন, সরকারের উচিত এ বিষয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা এবং এ খাতে বছরব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও তা পালন ও বাস্তবায়নে সর্বাধিক বাজেট বরাদ্দ দেয়া। সরকারী উদ্যোগে সর্ববৃহৎ গবেষণাগার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সর্ববৃহৎ জীবনী মুবারক তথা সর্বাধিক বিশুদ্ধ তথ্য সম্বলিত বিশ্বকোষ প্রকাশ করা। ধর্মীয় বা মুসলমানের কল্যাণে বিশ্বব্যাপী অবদানের জন্য উনার নাম মুবারক-এ সর্বাধিক মূল্যমানের পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা করা। যাতে মুসলমানগণ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে অবদান রাখতে উৎসাহিত ও উজ্জীবিত হতে পারে। পাশাপাশি যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শানের খিলাফ কথা বলবে বা শানের খিলাফ কোনো কাজ করবে বা আচরণ প্রকাশ করবে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান করা এবং তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
উল্লেখ্য, রাজারবাগ দরবার শরীফ-এ পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররম উপলক্ষে ৫ই মুহররম আজিমুশ্বান ওয়াজ শরীফ, মীলাদ শরীফ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ মাহফিলে মুজাদ্দিদে আ’যম, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে তাশরীফ নেন এবং মহামূল্যবান নছীহত মুবারক পেশ করেন। যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা দুনিয়ায় সম্প্রচারিত হয়। এ মাহফিলে তিনি আশূরার তাৎপর্য ও করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করেন। আশূরা উপলক্ষে আক্বীদা বিশুদ্ধকরণের উপর জোর তাকীদ প্রদান করেন। আশূরায় কারবালার হৃদয় বিদারক শাহাদাতের ঘটনা থেকে উম্মতকে নাহক্বের সাথে আপোস না করার এবং হক্বের উপর দৃঢ় ও অবিচল তথা ইস্তিক্বামত থাকার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, পবিত্র আশূরা শরীফ-এর চেতনা গণমানসে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত-এর উদ্যোগে দেশব্যাপী মীলাদ শরীফ, ওয়াজ মাহফিল, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
আরো উল্লেখ্য, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর, সাইয়্যিদে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে রাজারবাগ দরবার শরীফ-এ ৪৫ দিন ব্যাপী এক আজিমুশ্বান মাহফিলের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উক্ত মাহফিলে প্রথম ১৯ দিন প্রতিযোগিতা মাহফিল, দ্বিতীয় ২৩ দিন ওয়াজ মাহফিল ও মীলাদ শরীফ মাহফিল এবং তৃতীয় পর্যায়ে ৩ দিন সামা শরীফ মাহফিল-এর কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এ সকল সুমহান মাহফিলে সমগ্র বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ
আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ
আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ