সুন্নতবিরোধী ও বিদয়াত প্রচলনকারীদের বক্তব্য খণ্ড (৮)
ইতোপূর্বে প্রমাণিত হয়েছে যে, ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর গংএর কোন কথা গ্রহনযোগ্য নয়। কেননা তারা ওলীআল্লাহ বিদ্বেষী। তারা অনুসরণীয় ইমাম মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের সমালোচনাকারী। উনাদের ছিদ্রান্বেষণকারী, সম্মানিত দ্বীনের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টিকারী, দাজ্জালে কাযযাব। তাদের সমালোচনা থেকে উপমহাদেশের পবিত্র হাদীছ শরীফ প্রসার-প্রচারকারী আশিকে রসূল, ইমামুল মুহাদ্দিছীন হযরত শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনিও বাদ পড়েননি। উনার বক্তব্যও বানোয়াট, আজগুবী বলে বিবেচিত। নাউযুবিল্লাহ!
কেননা তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব মাদারিযুন নুবুওওয়াতে উল্লেখ করেছেন, রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, যে ব্যক্তি দস্তরখানে পতিত বস্তু তুলে খায়, তার সন্তান-সন্ততি সুশ্রী ও সুন্দর হয়ে জন্মগ্রহণ করে। আর তার অভাব অনটন দূর করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, সব বর্ণনা সবার কাছে পৌঁছে না। তাই কেউ যদি কোন বর্ণনা দেন তার বর্ণনাটি মূল্যায়ন করা উচিত। তাহলে সম্মানিত ইলিম প্রচার ও প্রসারের পথ সুগম হয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلْكَلِمَةُ الْـحِكْمَةُ ضَالَّةُ الْـمُؤْمِنِ فَحَيْثُ وَجَدَهَا فَهُوَ اَحَقُّ بِـهَا
অর্থ: “ইলিম মু’মিনের হারানো সম্পদ। কাজেই, যার নিকটেই তা পাবে সেই তার অধিকারী হবে।” (তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাযাহ শরীফ)
কিন্তু ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর গংএর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা নিজেদেরকে মহাজ্ঞানী মনে করে। আসলে তারা মহামূর্খ। তারা ইমাম মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে দ্বিধাবোধ করে না। নাউযুবিল্লাহ! অতএব, তাদের সংশ্রব থেকে উম্মাহকে বিরত থাকতে হবে। তবেই তাদের ঈমান আমল হিফাযত হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি মহান মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার উসীলায় সবাইকে সে তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।
কাঠের পেয়ালা বা পাত্রে পানাহার করা
সম্মানিত সুন্নত মুবারক
কাঠে পেয়ালা বা পাত্রে পানাহার করা খাছ সুন্নত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কাঠের পেয়ালা বা পাত্রে পানাহার করেছেন। উলামায়ে ‘সূ’দের স্বেচ্ছাচারিতা ও সুন্নত বিমুখতার কারণে কালের প্রবাহে এই পবিত্র সুন্নত মুবারকটিও বিলুপ্ত হয়ে যায়। জন্ম নেয় বিদয়াতের। তাতে মুসলিম উম্মাহ যেমন পবিত্র সুন্নত পালনের ফযীলত থেকে বঞ্চিত হয়। তেমনি স্বাস্থ্যহানীরও সম্মুখীন হয় মারাত্মকভাবে।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সেই বিলুপ্ত সুন্নত মুবারক যিন্দা বা পূর্ণ প্রচলন করেন। মুসলিম উম্মাহকে সুন্নত পালনের রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের পথ সুগম করেন। সাথে সাথে স্বাস্থ্যহানীর ক্ষতিকারক দিক থেকে মুক্তির পথ জারী করেছেন। তিনি নিজেই কাঠের তৈরী, পেয়ালা, বাটি, প্লেটসহ অন্যান্য তৈজসপত্র ব্যবহার করেন এবং মুরিদ, মু’তাকিদ, আশিকীনদেরকে তা ব্যবহারের জন্য তারগীব বা উৎসাহিত করেন। এমনকি সারা পৃথিবীতে সুন্নত প্রচার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতঃ সারা কায়িনাতে প্রচার প্রসারের ব্যবস্থা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে পেয়ালা মুবারকে পানি, দুধ, ছাতু, মধু, খেজুরের নবীয ও আঙ্গুরের নাবীয মুবারক পান করেছেন তা ছিল কাঠৈর তৈরী। তার পাশ বা কিনারা দিয়ে পাত লাগানো ছিল। পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে হযরত সাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন-
اَخْرَجَ اِلَيْنَا حَضْرَتْ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِى اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَدْحَ خَشَبٍ غَلِيْطًا مُضَبَّبًا بِـحَدِيدٍ فَقَال ثَابِتٌ هَذَا قَدْحُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আমাদেরকে একটি লোহার পাতযুক্ত মোটা কাঠের তৈরী পেয়ালা বের করে দেখালেন। আর বললেন, সাবিত! এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যবহৃত পেয়ালা মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (শামায়িলে তিরমিযী শরীফ-২০১)