সুন্নতবিরোধী ও বিদয়াত প্রচলনকারীদের বক্তব্য খণ্ডন (৬)
মিথ্যাবাদী দাজ্জাল, সুন্নত বিরোধী ও বিদয়াত প্রচলনকারী ড. জাহাঙ্গীর ও তার সমমনাদের বক্তব্য, সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি দস্তরখানার ফযীলত সম্পর্কে আনীসুল আরওয়াহ কিতাবে যা উল্লেখ করেছেন তা আজগুবি, উদ্ভট ও বানোয়াট কাহিনী। নাউযুবিল্লাহ!
কিতাবে আছে-
اَلْـمَرءُ يَقِسُ على نَفْسِهٖ
“প্রত্যেক ব্যক্তি অপরকে নিজের মত মনে করে।” ড. জাহাঙ্গীর ও তার সমগোত্রীয়দের অবস্থা সেরূপই। কেননা সর্বজন মান্য, যুগশ্রেষ্ঠ ওলীআল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ প্রতিনিধি (খলীফা বা নায়িব) সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনাকে যারা লাগমহীনভাবে কথা বলতে পারে তারা কত নিকৃষ্ট বা মিথ্যাবাদী তা সহজেই অনুমেয়। সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান, সাইয়্যিদুনা খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ রাবী উনাদের সকল গুণে গুণান্বিত ছিলেন। এমনকি উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার কারণে মানুষ ছিক্বাহ রাবী বলে স্বীকৃতি পেয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার উসীলায় মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রায় এক কোটি বিধর্মী কাফিরকে ঈমান দিয়েছেন। হিদায়েত দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উপমহাদেশে উনার প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অনুমোদন ব্যতীত কেউ বিলায়েত (অলিত্ব) লাভ করতে পারেন না, ওলীআল্লাহরূপে গৃহীত হন না। তা গালিয হৃদয়ের অধিকারী জাহাঙ্গীর ও তার সমগোত্রীয়রা কিভাবে অনুধাবন করতে পারবে? সুলত্বানুল হিন্দ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণিত সকল বর্ণনায়ই মু’তাবার বা নির্ভরযোগ্য, আমলযোগ্য অনুসরণীয়-অনুকরণীয় তা মুসলমান মাত্রই অবগত। সুবহানাল্লাহ! এমনকি তিনি ঐ সকল মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের মধ্যমণি যাঁদের বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ সনদ ছাড়াই গ্রহনীয়। সুবহানাল্লাহ!
ইলিমের জগতে উজ্জল নক্ষত্র, মুফতিউল আ’যম হযরতুল আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ আমীমুল ইহসান আল মুজাদ্দিদী আল বারাকাতী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্ববিখ্যাত, সমাদৃত কিতাব ‘মীযানুল আখবার” এ উল্লেখ করেছেন-
فَاِذَا اسْتَدَلَّ الْـمُجْتَهِدُ بِـحَدِيْثٍ كَانَ تَصْحِيْحًا لَّهٗ وَكَذَا الْـحَدِيْثُ الْـمُتَلَقّٰى بِالْـقَبُوْلِ مَحْكُوْمٌ بِالصِّحَّةِ وَاِنْ لَّـمْ يَكُنْ لَّـهٗ اِسْنَادٌ صَحِيْحٌ
অর্থ: “যখন কোন মুজতাহিদ কোন হাদীছ শরীফ দ্বারা দলীল পেশ করেন, তখন তা উনার নিকট ছহীহ হাদীছ শরীফ হিসেবে গণ্য। অনুরূপভাবে মুজতাহিদগণ উনাদের বিশেষভাবে গৃহিত হাদীছ শরীফও ছহীহ হাদীছ শরীফ হিসেবে ধর্তব্য হবে, যদিও উক্ত হাদীছ শরীফ উনার ছহীহ সনদ পাওয়া না যায়।”
উল্লেখ্য যে, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ব্যাখ্যা হচ্ছেন পবিত্র হাদীছ শরীফ। আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ হচ্ছেন পবিত্র ইজমা, ক্বিয়াস তথা ইমাম, মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ক্বওল শরীফসমূহ। কেননা উনারা ইলহাম-ইলক্বা মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। উনাদের ক্বওল শরীফ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ সবকিছু বান্দা উম্মতগণের হিদায়েতের কারণ। নাজাত বা মুক্তির কারণ। সুবহানাল্লাহ! যা বাতিল ৭২ ফিরক্বা, বদ আক্বীদা, বদ মাযহাবী লোকেরা ছাড়া সবাই জানেন, বুঝেন ও মানেন। কেননা পবিত্র হাদীছে শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لَا يَزَالُ عَبْدِي يَتَقَرَّبُ إلَيَّ بِالنَّوَافِلِ حَتّٰى أُحِبَّهٗ، فَإِذَا أَحْبَبْتُه كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِىْ يَسْمَعُ بِهٖ، وَبَصَرَهُ الَّذِىْ يُبْصِرُ بِهٖ، وَيَدَهُ الَّتِي يَبْطِشُ بِهَا، وَرِجْلَهُ الَّتِي يَـمْشِى بِهَا، وَلَئِنْ سَأَلَنِىْ لَأُعْطِيَنَّهٗ،
অর্থ: সুন্নতে যায়িদা (নফল) আমল করতে করতে আমার বান্দা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেন যে, আমি উনাকে গভীরভাবে মুহব্বত করি। আর আমি উনাকে যখন মুহব্বত করি তখন আমি উনার কান হই, তিনি আমার সেই কুদরতী কান মুবারকে শুনেন। আমি উনার চোখ হই, তিনি আমার সেই কুদরতী চোখ মুবারকে দেখেন। আমি উনার হাত হই, তিনি আমার সেই কুদরতী হাত মুবারক দ্বারা ধরেন। আমি উনার পা হই, তিনি আমার সেই কুদরতী পা মুবারক দ্বারা চলেন। এমতাবস্থায় তিনি, আমার কাছে যা প্রার্থনা করেন তা অবশ্যই উনাকে দিয়ে থাকি। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)