আল্লামা মুফতী মুহম্মদ কাওছার আহমদ
সুন্নতবিরোধী ও বিদয়াত
প্রচলনকারীদের বক্তব্য খণ্ডন (৩)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চুপ করে রইলেন, কোনো কথা বললেন না। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি তা পড়া শুরু করলেন। আর এদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারকে অসন্তুষ্টির ভাব ফুটে উঠলো। ইহা দেখে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আপনার সর্বনাশ! আপনি কি দেখছেন না যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র চেহারা মুবারক উনার মধ্যে অসন্তুষ্টির ভাব ফুটে উঠেছে?
তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারক উনার দিকে তাকালেন। অসন্তুষ্টির ভাব দেখে বললেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অসন্তুষ্টি থেকে পানাহ চাই। আমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মহান রব হিসেবে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহান রসূল হিসেবে পেয়ে এবং সম্মানিত ইসলাম উনাকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে খুশি হয়েছি।
তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
والَّذِىْ نَفْس مـُحَمَّد صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم بِيَدِه لَوْ بَدَا لَكُمْ حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَام فَاتَّبَعْتُمُوْهُ وَتَرَكْتُمُوْنِىْ لَضَلَلْتُمْ عَنْ سَوَاءِ السَّبِيْلِ وَلَوْ كَانَ حَيًّا وَاَدْرَكَ نُبُوَّتِىْ لَاتَّبَعَنِىْ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! উনার কদুরতী হাত মুবারকে আমার জীবন মুবারক রয়েছেন। এখন যদি আপনাদের কাছে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার প্রকাশ ঘটতো, আর আপনারা আমাকে ছেড়ে উনার অনুসরণ করতেন, তাহলে অবশ্যই আপনারা সরল-সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে গোমরাহীতে নিমজ্জিত হতেন। এমনকি তিনিও যদি দুনিয়াতে থাকতেন এবং আমার সম্মানিত নুবুওওয়াত উনার যামানা পেতেন, তাহলে উনাকেও আমার ইতায়াত (অনুসরণ-অনুকরণ) করা আবশ্যক হতো। অর্থাৎ ফরয হতো।” সুবহানাল্লাহ! (দারিমী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দস্তরখানা ব্যতীত খাবার খেয়েছেন এমন কোনো প্রমাণ বিদয়াতীরা পেশ করতে পারবে কি? ক্বিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করলেও পারবেনা। তাহলে যারা নিজেরা দস্তরখানা ব্যতীত খাদ্য খায় এবং অন্যদেরকে খাদ্য খেতে উদ্বুদ্ধ করে তারা কত নিকৃষ্ট তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মূলত এরাই হচ্ছে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাব তথা মিথ্যাবাদী দাজ্জাল। আখিরী যামানায় এদেরই আবির্ভাব ঘটেছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم يكون فى اخر الزمان دجالون كذابون يأتونكم من الاحاديث بما لـم تسمعوا وانتم ولا اباوكم فاياكم و اياهم لا يضلونكم ولا يفتنونكم.
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী বা শেষ যামানায় অনেক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল থাকবে। তারা তোমাদের কাছে এমনসব (মিথ্যা ও মনগড়া) কথা-বার্তা বলবে যা ইতোপূর্বে তোমরা কখনো শুননি, এমনকি তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। তোমরা অবশ্যই তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তাদেরকেও তোমাদের থেকে দূরে রাখবে। তাহলে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ করতে পারবে না। ফিতনা-ফ্যাসাদে ফেলতে পারবে না। অর্থাৎ তাদের ছোহবত, মুহব্বত, খিদমত করা থেকে বিরত থাকলে তোমরা নিরাপত্তা লাভ করতে পারবে। (মুসলিম শরীফ)