আল্লামা মুফতী মুহম্মদ কাওছার আহমদ
সন্তানের নাম আহমদ অথবা মুহম্মদ রাখা হলে সে মুবারক নামের তা’ছীর সন্তানের উপর প্রভাব বিস্তার করে। ফলে সে সন্তানের পক্ষে মানবীয় সকল গুণে গুণান্বিত হওয়া সহজ হয়। সন্তান সম্মানিত, মর্যাদা সম্পন্ন হয়। কাজেই, যারা স্বীয় সন্তানের নাম ইহুদী, নাছারা, মজুসী-মুশরিক কিংবা অন্য কোন ফাসিক-ফুজ্জারের সাথে মিলিয়ে রাখে আর সে সন্তানের উপর যদি খারাপ তা’ছীর পরে ফলে পিতার-মাতার অবাধ্য হয়, তাহলে সেক্ষেত্রে সন্তানের পিতা-মাতাই সর্বাংশে দায়ী।
সর্বোপরি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت جعفر بن محمد رحمه الله تعالى ينادى يوم القيامة يا محمد فيرفع رأسه فى الـموقف من اسمه محمد فيقول الله جل جلاله اشهدكم انى قد غفرت لكل من اسمه على اسم محمد نبى.
অর্থ: “হযরত ইমাম জাফর সাদিক ইবনে মুহম্মদ বাকির আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে, “ক্বিয়ামতের দিন ‘ইয়া মুহম্মদ’ বলে অর্থাৎ বরকতময় ‘মুহম্মদ’ নাম ধরে ডাকা হবে। যে সকল ব্যক্তির নাম ‘মুহম্মদ’ রাখা হয়েছিলো উনারা সকলেই উনাদের মাথা উত্তোলন করবেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি বলবেন, তোমরা সাক্ষী থাকো, যারা আমার নবী হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে নাম রেখেছেন তাদের প্রত্যেককে আমি ক্ষমা করলাম।” সুবহানাল্লাহ!
বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যিইন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يوقف عبدان بين يدى الله عز وجل يوم القيامة فيامر بهما الى الجنة فيقولان يا ربنا بما استأهلنا منك الجنة ولـم نعمل عملا يجازينا الجنة فيقول الله عز وجل لهما عبدان ادخلا الجنة فانى اليت على نفسى ان لايدخل النار من اسمه احمد و محمد صلى لله عليه وسلم .
অর্থ: “ক্বিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ পাক উনার সামনে দু’বান্দাকে দাঁড় করানো হবে। (যাদের একজনের নাম সম্মানিত ‘মুহম্মদ’ এবং অপরজনের নাম সম্মানিত ‘আহমদ’) মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদেশ মুবারক করবেন। উনারা উভযে বলবেন, আয় আল্লাহ পাক! আমরা কি কারণে জান্নাত লাভ করলাম। আমরা তো জান্নাত লাভের উপযুক্ত কোনো আমলই করিনি। মহান আল্লাহ পাক বান্দাদ্বয়কে বললেন, হে আমার বান্দা! তোমরা দু’জনেই জান্নাতে প্রবেশ করো। কারণ, নিশ্চয়ই আমি আমার জাত-পাক উনার কসম করে বলছি, যে ব্যক্তির নাম ‘মুহম্মদ’ ও ‘আহমদ’ রাখা হবে সে কখনো দোযখে প্রবেশ করবে না।” সুবহানাল্লাহ! (আল ফিরদাউস লিদ দায়লামী শরীফ-৫/৪৮৫)
আমরা গত সংখ্যায় উল্লেখ করেছি যে, মু’মিন মুসলমানগণের মূল নাম হচ্ছে মুহম্মদ, আহমদ। আর তার সাথে সংযোজিত অংশটুকু পরিচিতি জ্ঞাপক। পরিচিতি জ্ঞাপক অংশটুকুর মধ্যেও উত্তমতা রয়েছে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে তোমাদের নামসমূহের মধ্যে সর্বাধিক প্রিয় নাম হলো আব্দুল্লাহ এবং আব্দুর রহমান। সুবহানাল্লাহ!” (মুসলিম শরীফ)
عبد الله (আব্দুল্লাহ) অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা। عبد الرحمن (আব্দুর রহমান) অর্থ: পরম করুনাময় মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা। এছাড়া আরো অনেক নাম রয়েছে যা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নিকট প্রিয়। যেমন- امة الله (আমাতুল্লাহ) অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দী। امة الرحمن (আমাতুর রহমান) অর্থ: পরম করুনাময় মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দী।