-হযরত মাওলানা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন-
دخلت على النبى صلى الله عليه وسلم وتحت رأسه وسادة من ادم حشوها ليف
অর্থ : “আমি একদিন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাজির হলাম। সে সময় উনার মাথা মুবারক-এর নিচে ছিলো খেজুর গাছের পাতা ও ছোবড়া বা ছাল ভর্তি একটি চামড়ার বালিশ মুবারক।” (আখলাকুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ২৩৫) বালিশ মুবারক উনার দৈর্ঘ্য ২৪ ইঞ্চি আর প্রস্থ ছিল ১৮ ইঞ্চি।
মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চট মুবারক-এর উপরও ঘুমিয়েছেন বা বিশ্রাম নিয়েছেন।
উম্মুল মু’মিনীন হযরত হাফছা আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছানা মুবারক সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয়ে বলেছিলেন-
مسحا نثنيه ثنتين فينام عليه
অর্থ : “একটি মুবারক চট ছিলো। আমি সেটি দুভাঁজ করে বিছিয়ে দিতাম। আর তিনি সেখানে ঘুমাতেন।” (শামায়িলুত তিরমিজী শরীফ ৩৩৭)
যিনি যাকে মুহব্বত করেন তিনি তার কথা বেশি স্মরণ করেন। আর যার কথা বেশি স্মরণ করা হয় তার পরিচিতি ও মুহব্বত তত বেশি বৃদ্ধি পায়। খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহি সালাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক-এর বাস্তবতা দেখতে পাই। সুদীর্ঘ ১৪০০ বছর পর তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ণ অনুসরণে পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার আদলে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পবিত্র রাজারবাগ শরীফ উনার মধ্যে তৈরী করেন সুন্নতী জামে মসজিদ। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, মসজিদ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান হচ্ছে মসজিদ আর সর্বনিকৃষ্ট স্থান হচ্ছে বাজার। সেই মসজিদ যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক তত্ত্বাবধানে ও সার্বিক দিকনির্দেশনায় নির্মিত হয় উনার মর্যাদা-মর্তবা কিরূপ হবে তা সহজেই অনুমেয়। সেই পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ যা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজেই নির্মাণ করেছেন; সেখানে এক রাকাআত নামায আদায় করলে পঞ্চাশ হাজার রাকাআত নামাযের ফযীলত পাওয়া যায়। সেখানে ৮ দিন তথা চল্লিশ ওয়াক্ত নামায আদায় করলে অন্য জামে মসজিদে দুইশত ওয়াক্ত নামায আদায়ের সমকক্ষ হয়।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ ও সার্বিক দিক নির্দেশনায় এই পবিত্র সুন্নতী মসজিদ শরীফ নির্মাণ করেন। শুধু তাই নয়, বরং সেই মসজিদ কোথায় হবে, কিভাবে হবে, কি কি উপকরণ দিয়ে তৈরী করতে হবে এবং সেই উপকরণ কোথায় পাওয়া যাবে ইত্যাদি সকল তথ্যাদি তিনি উনাকে দিয়ে দেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজে এসে মসজিদ নির্মাণের স্থান, কোন দিকে ছুফফাখানা, কোন দিকে হুজরা শরীফ, কোন দিকে কূপ তা এক এক করে স্পষ্টভাবে দেখিয়ে ও বুঝিয়ে দেন। সেই দিন উনার সাথে এসেছিলেন উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম এবং আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, এখানে আপনার আওলাদ তিনি সুন্নত মুবারক কায়িম বা যিন্দা করবেন। সুবহানাল্লাহ!