-হযরত মাওলানা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীছ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার জিন্দাকৃত বা পূণঃ প্রচলন করা কতিপয় সুন্নতের বিবরণ:
কাঠের পেয়ালার (বাটি) সুন্নত জিন্দা
বা পুনঃপ্রচলন
পূর্ব প্রকাশিতের পর
তিনি নিজেই মিস্ত্রিকে যাবতীয় দিক-নির্দেশনা দিয়ে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ণ অনুসরণে হুবহু সেরূপ পাত লাগানো কাঠের বাটি তৈরি করান এবং তাতে যাবতীয় পানীয় পান করেন। মুরীদ-মুতাকিদ, মুহিব্বীনদেরকে তা ব্যবহার করার তারগীব বা উৎসাহ দেন। এমনকি মুসলিম উম্মাহর সকলের ব্যবহারের সুবিধার্থে তার হুবহু নকশা ও বর্ণনা মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ-এ উল্লেখ করেন। বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে আলোচনা করেন। ফলে সবাই তা ব্যবহার করা শুরু করে দেন। সর্বস্তরে তা জারি হয়ে যায়। উম্মাহ ফিরে পান তাদের হারানো কল্যাণ, বরকত এবং অফুরন্ত ফযীলত।
রূপার মতো সাদা কাচের বাটিতে
পান করা সুন্নত
রূপার মতো সাদা কাচের বাটিতে পান করাও সুন্নত। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোন সময় এরূপ বাটিতে পান করেছেন। হযরত উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন,
ان صاحب اسكندرية بعث الى رسول الله صلى الله عليه و سلم بقدح قوارير وكان يشرب منه
অর্থ : “আলেকজান্দ্রিয়ার শাসক মুকাওকিস তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য একটি কাচের পাত্র হাদিয়া পাঠিয়েছিলেন। আর তিনি তাতে পান করেছেন।” (আখলাকুন নবী- ৩০৪)
উল্লেখ যে, قوارير শব্দটি বহুবচন। একবচনে قارورة যার অর্থ হলো- রূপার মতো সাদা, স্বচ্ছ কাচ। আর زجاج বলা হয় সাধারণ কাচ; যা বাহির থেকে ভিতরের অংশ বা জিনিস দেখা যায়। এরূপ زجاج বা কাচের পাত্রে পানাহার করা সুন্নত নয়।
পানি পানের সুন্নত জিন্দা বা পূণ: প্রচলন
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি পানি পানের ক্ষেত্রেও আখিরী রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ ইতোয়াত (অনুসরণ-অনুকরণ) করে থাকেন। তিনি বসে পানি পান করেন। ওযুর অবশিষ্ট পানি ও জমজম কুপের পানি দাঁড়িয়ে পান করেন। তিনি ডান হাত দ্বারা পান করেন। আহার বা খাদ্য খাওয়ার সময় খানার ফাঁকে ফাঁকে পানি পান করেন। সে সময় বাম হাত মুবারক দ্বারা পানির বাটি ধরেন আর আর ডান হাত মুবারকের পেটের উপরের অংশ পানির বাটির নিচে লাগিয়ে দেন। পানি পানকালে তিনবার শ্বাস মুবারক গ্রহণ করেন। অর্থাৎ একবার পানি পান করে পানির বাটি বা পেয়ালা মুবারক মুখ থেকে সরিয়ে শ্বাস গ্রহন করেন। তারপর আবার পান করেন। এভাবে তিনবার পান করেন। আর তিনি পানি পানাকলে পান পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলেন না। কারণ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এভাবে পান করতে এবং দাঁড়িয়ে পানাহার করতে নিষেধ করেছেন। হযরত কাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-
اذا شرب احدكم فلا تنفس فى الاناء
অর্থ: পানি পানের সময় তোমাদের কেউ যেন পান পাত্রে নিঃশ্বাস না ফেলে। (বুখারী শরীফ, আখলাকুন নবী-৩০৭)