বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার অনেক ফাযায়িল-ফযীলত রয়েছে। তন্মধ্যে বিশেষ একটি দিক হচ্ছে বিবাহিত ব্যক্তি গায়েবী মদদ (সাহায্য) প্রাপ্ত হন।
যে ব্যক্তি স্বীয় চরিত্রকে পুত-পবিত্র রাখার নিমিত্তে বিবাহ করবেন তাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই গইবী মদদ করবেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ الله تَعَالٰـى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ ثَلاَثَةٌ حَقٌّ عَلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ عَوْنُـهُمُ الْمُكَاتَبُ الَّذِيْ يُرِيْدُ الْأَدَاءَ وَالنَّاكِحُ الَّذِيْ يُرِيْدُ الْعَفَافَ وَالْمُجَاهِدُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তিন ব্যক্তিকে গইবী মদদ (সাহায্য) করাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় হক্ব বা আবশ্যক মনে করেন। মুকাতাব গোলাম: যে গোলাম তার মুক্তিপণ আদায় করতে চায়। পরহেযগার বিবাহকারী: যে আপন চরিত্রকে পুত-পবিত্র রাখতে চায়। মুজাহিদ ব্যক্তি: যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় জিহাদ করেন। সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, ইবনে মাযাহ শরীফ)
বিবাহের দ্বারা রিযিক বৃদ্ধি পায়
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি রিযামন্দী হাছিল তথা স্বীয় চরিত্রকে পুত-পবিত্র রাখার নিমিত্তে যারা বিবাহ করেন, সেই বিবাহের দ্বারা তাদের রিযিক বৃদ্ধি পায়। সুবহানাল্লাহ!
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা তিনি বর্ণনা করেন-
جَاءَ رَجُلٌ اِلَـى النَّبِـيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَشْكُوْ اِلَيْهِ الْفَاقَةَ، فَأَمَرَهٗ اَنْ يَّتَزَوَّجَ
অর্থ: একদা এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাযির হলেন। বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার দারিদ্রতা দূরীভুত হচ্ছে না। তিনি উনাকে বললেন, আপনি বিবাহ করুন। তাহলে দারিদ্রতা দুরীভুত হবে। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে তাবারী-৯/৩১১, দুররে মানছুর-৬/১৭৩, মুছান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, তারিখে বাগদাদণ্ড১/৩৬৫, কাশফুল খাফা-১/২০২)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِلْتَمِسُوا الرِّزْقَ بِالنِّكَاحِ
অর্থ: তোমরা বিবাহের দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট রিযিক তালাশ করো। (দাইলামী শরীফ-১৭/২৭৫)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
تَزَوَّجُوْا فُقَرَاءَ يُغْنِكُمُ اللهُ
অর্থ: তোমরা দারিদ্রতাবস্থায় বিবাহ করো। মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে সম্পদশালী করবেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
تَزَوَّجُوْا النِّسَاءَ فَاِنَّـهُنَّ يَاْتِيَنَّكُمْ بِالْـمَالِ
অর্থ: তোমরা মেয়েদেরকে বিবাহ করো। কেননা, তারা তোমাদের নিকট মাল-সম্পদ নিয়ে আসে। সুবহানাল্লাহ! (আল মাকাসিদুল হাসানা-১০৮, কাশফুল খাফা-১/২০৩)
রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন-
رَغَّبَهُمُ اللهُ فِـى التَّزْوِيْجِ وَاَمَرَ بِهِ الْاَحْرَارَ وَالْعَبِيْدَ وَوَعَدَهُمْ عَلَيْهِ الْغَنِـىَّ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে (বান্দা) বিবাহ করার ব্যাপারে তারগীব বা উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি স্বাধীন ও গোলামগণকে বিবাহ করার আদেশ দিয়েছেন। আর তিনি তাদেরকে মাল-সম্পদ দানের ওয়াদা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে তাবারী-১৭/২২৫)