সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের মাঝে কথোপকথন (৩)
ইমাম করদরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, এক সময় সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে সাইয়্যিদুনা ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত মুবারকে হাযির হলেন। তিনি উনাকে দেখে বললেন, হে ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি! আমি আপনাকে দেখেছি যে, আপনি আমার সম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলুপ্ত সুন্নতকে যিন্দা করবেন। আপনি প্রত্যেক দুঃখি ও সাহায্য প্রার্থীকে সদা সাহায্য করবেন। প্রত্যেক বিপদগ্রস্থ ব্যক্তির ডাকে সাড়া দিবেন। মুছীবতগ্রস্থ ব্যক্তিরা যখন নিরূপায় হয়ে আপনার স্মরণাপন্ন হবে, আপনি হবেন তাদের আশ্রয়স্থল। আপনি পথহারা ব্যক্তিদেরকে পথের সন্ধান দিবেন। আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে গইবী মদদ তথা বিশেষ সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন। আপনি সত্যের উপর সদাসর্বদা প্রতিষ্ঠিত থাকবেন। আল্লাহওয়ালাগণ উনাদের সাথে থাকবেন। অর্থাৎ আপনার অনুসারীগণ সবাই হবেন আল্লাহওয়ালা। সুবহানাল্লাহ! (মানাকিবুল ইমামিল আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি-১/৩১, ইমাম আবূ হানিফা হাদীছ শাস্ত্রের প্রধান ইমাম-৩০৬)
ইমামুল আদিলীন, ইমামুম মিন আইম্মাতিল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যায়িদ আলাইহিস সালাম উনার মহাপবিত্র
ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার
ইমামুল আদিলীন, কুদওয়াতুল আরিফীন, ইমামুল মুহাককীন, শাইখুল মিল্লাত, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যায়িদ ইবনে হযরত আলী যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনারও মহাপবিত্রতম বরকতপূর্ণ ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেন ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি।
ইমামুল আদিলীন, ইমামুল মুহাক্কিকীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যায়িদ আলাইহিস সালাম তিনি ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ভাই এবং ইমামুল মুত্তাক্বীন, ইমামুল মুজতাহিদীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত দ্বিতীয় আওলাদ (ছেলে)।
ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি আহলি বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অত্যন্ত মুহব্বত করতেন, তা’যীম-তাকরীম করতেন। জান-মাল, সময়-শ্রম, সব দিয়েই মহাসম্মানিত মুতাহহার, মুতাহহির হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দিতেন।
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি তিনি সবসময় সুন্দর ধারণা পোষণ করতেন। কখনো হুসনে যনের খিলাফ কোন বিষয় উনার থেকে প্রকাশিত হয়নি। সুবহানাল্লাহ! কখনো কোন ব্যাপারে উনাদের কারো সাথে দ্বিমত পোষণ করতেন না। লক্ষ-লক্ষ, কোটি কোটি টাকা উনাদের খিদমত মুবারকে ব্যায় করতেন। সর্বোপরি উনাদের প্রতি তিনি যে আদব প্রদর্শন করেছেন তা ইতিহাসে বিরল। উনাদের প্রতি আদব-ইহতিরামের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে কোন নিন্দুকের নিন্দা ও তিরস্কারকারীর তিরস্কারকে পরোয়া করেননি।
মুতাহহার, মুতাহহির মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ছোহবত মুবারক উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য তথা হাক্বীক্বত গভীরভাবে উপলব্ধি করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে তিনি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সকলেরই পবিত্রতম ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেছেন।
ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
شَاهَدْتُّ حَضْرَتْ زَيْدَ بْنَ حَضْرَتْ عَلِىٍّ زَيْنِ الْعَابِدِيْنَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَمَا شَاهَدْتُّ اَهْلَه فَمَا رَأْيْتُ فِـىْ زَمَانِهٖ اَفْقَهُ مِنْهُ وَلَا اَعْلَمُ وَلَا اَسْرَعُ جَوَابًا وَلَا اَبْيَنُ قَوْلًا
অর্থ: আমি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যায়িদ ইবনে ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম ছোহবত মুবারক ইখতিয়া করেছি। যেমনভাবে উনার মহাসম্মানিত পরিবার-পরিজন উনাদের পবিত্রতম ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেছি। আমি উনার যুগে উনার চেয়ে বড় ফক্বীহ, উনার চেয়ে বড় আলিম, উত্তর দানে উনার চেয়ে বেশি দ্রƒততম এবং সুস্পষ্টভাষি আর কাউকে দেখিনি। সুবহানাল্লাহ! (ইমাম আবূ হানীফা হাদীছ শাস্ত্রের প্রধান ইমাম-৩১০)
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি