সম্মানিত ইলমে তাছাওউফ অর্থাৎ আত্মশুদ্ধির মৌলিক ভিত্তি
সম্মানিত ইলমে তাছাওউফ বা আত্মশুদ্ধির মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে:
১। অধিক পরিমাণে ইবাদত-বন্দেগী ও যিকির-ফিকির।
২। তাক্বওয়া বা মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতি।
৩। দুনিয়া বিমুখতা।
৪। ওলীআল্লাহগণ উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার বা সংস্পর্শ।
ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র জীবনী মুবারকে সবগুলিই পূর্ণমাত্রায় বিরাজমান। তিনি আগত অনাগত সকলেরই আদর্শ ছিলেন।
উনার দুইজন সম্মানিত শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা ছিলেন। উনি উনাদের পবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতেন। আর তাক্বওয়া বা মহান আল্লাহ ভীতি, তার কোন তুলনাই ছিল না। একদিনের একটি ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি প্রতিদিনই তা’লীম দিতেন। একদিন একটি আশ্চর্য ঘটনা সংঘটিত হলো। তিনি যখন তা’লীম দিচ্ছিলেন। এমন সময় একটি সাপ উনার মজলিসে প্রবেশ করলো। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একেবারে নিকটবর্তী হলো। মজলিসের কেউই কোন বিচলিত হলো না। সাপটি উনাকে একে একে ছয় বার ছোবল মারলো। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাঝে কোন প্রতিক্রিয়া হলো না। শেষবার সাপটি গোসসা করে খুব জোড়ে ছোবল মরলো। সাপটিই মরে গেল। তা’লীম শেষ হলো। পরে একজন কুরবতপ্রাপ্ত ছাত্র জিজ্ঞাসা করলেন। বেয়াদবী ক্ষমা চাই, আজ একটি ব্যতিক্রম ঘটনা সংঘটিত হলো। আরা সাধারণত দেখি সাপে কামড় দিলে মানুষ মারা যায়। কিন্তু আজ দেখলাম সাপই মারা গেল। তার কি কারণ? তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, সাপটি তার বিষ আমার শরীর মুবারকে প্রবেশ করার জন্য পরপর ছয়বার কামড় দিল। কিন্তু তার বিষ আমার শরীর মুবারকে প্রবেশ করাতে পারলো না। পরে গোসসা করে খুব জোড়ে ছোবল দিল। তখন আমার ভিতরে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের যে মুহব্বত মুবারক, মা’রিফত মুবারক উনার ফয়েজ ও রোব মুবারক রয়েছে তা সাপের ভিতর প্রবেশ করলো। সাপটি তা সহ্য করতে পারলো না। ফলে, সাপটি মারা গেল। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বতে গরক ছিলেন। কত মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতি ও তাক্বওয়ার অধিকারী ছিলেন তা সহজেই অনুমেয়।
১। অধিক পরিমানে ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির করার হুকুম স্বয়ং খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনিই দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
إِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِـحَاتِ سَيَجْعَلُ لَـهُمُ الرَّحْمٰنُ وُدًّا
অর্থ: নিশ্চয়ই যারা সম্মানিত ঈমান এনে আমলে ছালিহ (সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা-অনুসরণ- অনুকরণ) করবে অতিশীঘ্রই পরম করুণাময় মহান আল্লাহ পাক তাদের মুহব্বত মুবারক দান করবেন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৯৬)
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি