ইমামুল মুহাদ্দিছীন, ইমামুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথা, কাজ এবং মৌন সম্মতিও হাদীছ শরীফ
ইমামুল মুসলিমীন, ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সম্মানিত তাবিয়েনে কিরাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার সৌভাগ্য তিনি হাছিল করেছেন। এমনকি তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের থেকে পবিত্র হাদীছ শরীফও বর্ণনা করেছেন। যা আমরা ইতঃপূর্বে উল্লেখ করেছি। সামনে আরো বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করবো ইনশাআল্লাহ!
সর্বজনমান্য, স্বীকৃত, গ্রহণযোগ্য ও বিখ্যাত ইমাম, মুজতাহিদ এবং আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের স্ব স্ব কিতাবে তা উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ্য যে, চার মাযহাবের ইমামগণের মধ্যে তিনিই শুধু তাবিয়ী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছেন। বাকী তিনজন ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা কেউই তাবিয়ী ছিলেন না। আর উসূলে হাদীছ শরীফ উনার কিতাবগুলোতে উল্লেখ আছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ক্বওল শরীফ, পবিত্র ফেল শরীফ এবং তাকরীর শরীফ বা মৌন সম্মতি মুবারকে যেমন হাদীছ শরীফ বলা হয়। তেমনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কথা মুবারক, কাজ মুবারক এবং মৌন সম্মতি মুবারককেও হাদীছ শরীফ বলা হয়। (মুকাদ্দিমাতুল মিশকাত শরীফ- শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী, নুখবাতুল ফিকির)
কাজেই ইমামুল মুসলিমীন, ইমামু মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যা করতে বলেছেন, করেছেন এবং মৌন সম্মতি মুবারক জ্ঞাপন করেছেন তা সবই সকল উম্মতের জন্য অনুসরণীয়-অনুকরণীয়। এতেই উম্মতের হিদায়েত নিহীত। আর তার বিপরীত মতে পথে রয়েছে গুমরাহী তথা পথভ্রষ্টতা। ইমামুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার জগতে কত যে বিস্ময়কর অবস্থানে ছিলেন তা আলোচ্য ঘটনা থেকে সহজেই অনুধাবন করা যায়। সর্বজন মান্য এবং বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত এবং সমাদৃত কিতাব “মানাকিবুল ইমামিল আ’যম” উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে, একদিন ইমামুল মুহাদ্দিছীন, ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উভয়ে একটি মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। জনৈক ব্যক্তি একটি মাসয়ালা জিজ্ঞাসা করলেন। ইমামুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তার জাওয়াব দিলেন। জাওয়াব শুনে হযরত ইমাম আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আপনি এই মাসয়ালা কোথায় পেয়েছেন?
ইমামুল মুহাদ্দিছীন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তৎক্ষণাত বললেন-
انت حدثتنا عن حضرت ابى صالح عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم کذا. وانت حدثتنا عن حضرت ابى اياس عن حضرت ابن مسعود الانصارى رضى الله تعالى عنه، وانت حدثتنا عن حضرت ابى وائل عن حضرت عبد الله رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم کذا. وانت حدثتنا عن مجلز عن حذيفة بن اليمان رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم كذا وانت حدثتنا عن ابى الزبير عن حضرت جابر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلی الله عليه وسلم کذا
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা শুনে বিস্মিত হয়ে হযরত ইমাম আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন-
حسبك ما حدثتك به فى مائة يوم حدثتنى به فى ساعة واحدة.
অর্থাৎ যথেষ্ট হয়েছে। আমি আপনাকে একশত দিনে যা বর্ণনা করেছি, আপনি আমাকে তা একটি মুহূর্তে শুনিয়ে দিলেন। অতঃপর বললেন-
يا معشر الفقهاء انتم الاطباء ونحن الصيادلة وانت ايها الرجل اخذت بكلا الطرفين
অর্থাৎ- “হে ফুক্বাহায়ে কিরামের দল! আপনারা হলেন চিকিৎসক। আমরা হলাম ঔষধ বিক্রেতা দোকানদার। আর আপনি (ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি) উভয় দিকেরই ইলিম আহরণ করেছেন।
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি