মুনাযারা বা বাহাস-৩
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এটাই করলেন যে, তোমার মতো বয়সধারী অহঙ্কারী ও পবিত্র তাওরাত শরীফ ও পবিত্র ইঞ্জিল শরীফ-এর, অভিজ্ঞ এবং ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসীকে মিম্বর থেকে নীচে নামিয়েছেন। আর আমার মত অল্প বয়সী, একত্ববাদে বিশ্বাসী মুসলমানকে মহান আল্লাহ পাক উনার অনুগত ত্বলিবে ইলিম (ছাত্র) শিশু সন্তানকে মিম্বরের উপর বসিয়ে দিলেন। তোমাদের দিলেন জিল্লত (অপমান) এবং আমাকে দিলেন ইজ্জত (সম্মান)। সুবহানাল্লাহ!
পরে রোমীয় পাদ্রী স্বীয় ওয়াদা ও শর্ত অনুযায়ী পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করলো-
لا اله الا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত আর কোন মা’বুদ নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রসূল।” (ইমামুল মুহাদ্দিসীন-১০৫)
রফয়ে ইয়াদাইন সম্পর্কে ইমাম আওযাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে মুনাযারা বা বাহাস
হযরত ইমাম আওযাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি শাম বা সিরিয়ার একজন বিখ্যাত ইমাম ছিলেন। পবিত্র হজ্জের সময় পবিত্র মক্কা শরীফে ইমামুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে উনার সাক্ষাত হয়। রফয়ে ইয়াদাইন (নামাযে হাত উঠানো) সম্পর্কে আলোচনা হয়। হযরত সুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, হযরত ইমাম আওযাঈ রহমতুল্লাহ আলাইহি তিনি ইমামুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন-
مالكم لا ترفعون ايديكم عند رفع الرأس من الركوع وعند الركوع
অর্থ: “আপনাদের কি হলো যে, আপনারা রুক থেকে মাথা উঠানোর সময় এবং রুকুতে যাওয়ার সময় হাত উঠান না অর্থাৎ রফয়ে ইয়াদাইন করেন না।?”
ইমামুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ইহা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বিশুদ্ধভাবে ছাবিত (প্রমাণিত) হয়নি।
হযরত ইমাম আওযাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, ইমাম যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে উনি ইমাম ছালিম রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে তিনি উনার পিতা হযরত আব্দুল্লাহ উবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেছেন যে-
ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يرفع يديه عند الافتتاح وعند الركوع وعند رفع الرأس من الركوع.
অর্থ: “স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নামায শুরু করার সময়, রুকুতে যাওয়ার সময়, রুকু হতে মাথা মুবারক উঠানোর সময় হাত মুবারক উঠাতেন।”
ইমামুল মুসলিমীন মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উত্তরে বলেন-
فقال اخبرنى حضرت حماد رحمة الله عليه عن حضرت ابراهيم عن حضرت علقمة و حضرت الاسود عن حضرت عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يرفع يديه الا افتتاح الصلاة ثم كان لا يعود بشىء من ذلك.
অর্থ: “আমাকে হযরত হাম্মাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন। তিনি হযরত ইবরাহীম নখঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বর্ণনা করেছেন হযরত আলক্বামা রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত আসওয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের থেকে। তিনি বর্ণনা করেছেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ হাত মুবারকদ্বয় একমাত্র নামায শুরু করার সময়ই উঠাতেন। তারপর এ কাজ আর পুনরায় করতেন না।”
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি