ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-২৬ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)

সংখ্যা: ২৩৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

সমঝ ও বিচক্ষণতা-৩

 

পূর্ব প্রকাশিতের পর

আযহার ইবনে কাইসান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, একবার আমি স্বপ্নে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত মুবারক লাভ করলাম। দেখলাম উনার পিছনে আরো দুজন মহান ব্যক্তিত্ব। আমাকে বলা হলো যিনি সামনে তাশরীফ রেখেছেন তিনি হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর উনার পিছনের দুজন হচ্ছেন- হযরত ছিদ্দীকে আকবার আলাইহিস সালাম, দ্বিতীয় জন হচ্ছেন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম। আমি উনাদের দুজনের নিকট আরয করলাম যে, “আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে কিছু জিজ্ঞেস করতে চাই।” উনারা বললেন, অবশ্যই জিজ্ঞেস করুন, তবে আওয়াজ যেন উঁচু না হয়। তখন আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইলিম সম্মন্ধে জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এমন ইলিম আছে, যা হযরত খিযির আলাইহিস সালাম উনার থেকে সংগৃহীত।

উল্লেখ্য যে, মহান আল্লাহ পাক হযরত খিযির আলাইহিস সালাম উনাকে “ইলমে লাদুন্নী” দিয়েছেন। ইলমে লাদুন্নী হচ্ছে এমন ইলিম যা কোন মাধ্যম ছাড়াই সরাসরি মহান আল্লাহ পাক তিনি দান করে থাকেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-

وعلمناه من لدنا علما

অর্থ: “আমার পক্ষ থেকে আমি উনাকে (হযরত খিযির আলাইহিস সালাম) বিশেষ ইলিম দান করেছি।” (পবিত্র সূরা কাহাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৫)

 জনৈক ব্যক্তি হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিদমতে উপস্থিত হয়ে বলল, আমি একটা সমস্যায় পড়েছি। আপনার সমাধান ছাড়া বাঁচার কোন পথ দেখছি না। আমি কসম খেয়েছি, “যদি আমি ফরয গোসল করি তাহলে আমার আহলিয়ার উপর তিন তালাক পড়বে।” এখন গোসল করলে আহলিয়ার উপর তালাক পড়ে যায়, আবার নাপাক অবস্থায় থাকলে মহান আল্লাহ পাক তিনি অসন্তুষ্ট হন। এমতাবস্থায় আমি কি করতে পারি?

হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি কোন উত্তর না দিয়ে উক্ত ব্যক্তির সাথে কথা বলতে বলতে রাস্তায় চলতে লাগলেন। চলতে চলতে এক সময় একটা নদীর পাশে এসে দাঁড়ালেন এবং  কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দিলেন। সে ব্যক্তি হাবুডুবু খেতে লাগলো। অতঃপর তাকে পানি থেকে টেনে তুললেন এবং বললেন যাও, তোমার গোসলও হয়ে গেছে আবার তোমার আহলিয়ার উপর তালাকও পড়েনি।

 ইমাম আওযায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সিরিয়ার বিখ্যাত ইমাম ছিলেন। পবিত্র মক্কা শরীফে উনার সাথে একদিন ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মোলাকাত (সাক্ষাত) হয়। ইমাম আওযায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার উদ্দেশ্যে বললেন, ইরাকের মানুষরা আশ্চর্য ধরণের। উনারা রুকুতে যাওয়ার সময় এবং রুকু হতে মাথা উঠাবার সময় রফয়ে ইয়াদাইন করে না তথা দু হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠায় না। অথচ আমি ইমাম যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছ থেকে শুনেছি, তিনি হযরত ইমাম সালিম ইবনে আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছ থেকে তিনি উনার পিতা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছ থেকে শুনেছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ সকল কাজে কাঁধ পর্যন্ত হাত মুবারক উঠাতেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ কথার প্রতি উত্তরে বললেন, হযরত হাম্মাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইবরাহীম নখয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আলকামা রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের মাধ্যমে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত আছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ সকল কাজে দু’ হাত মুবারক উঠাতেন না । রফয়ে ইয়াদাইন করতেন না।

ইমাম আওযায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আমি আপনাকে ইমাম যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত সালিম ইবনে আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের দ্বারা বর্ণিত হাদীছ শরীফ বর্ণনা করলাম। আর আপনি তার বিপরীত হযরত হাম্মাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইবরাহীম নখয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আলকামা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের নাম মুবারক উচ্চারণ করলেন?

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, আমার উল্লেখিত রাবীগণ আপনার উল্লেখিত রাবী অপেক্ষা অনেক বেশী ইলিম ও হিকমত মুবারক উনার অধিকারী ও মাশহূর। আর ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মযাদা-মর্তবা সম্পর্কে তো সবাই অবগত আছেন। যে কারণে উনার রেওয়ায়েত (বর্ণনা) বেশী গ্রহণযোগ্য মনে করা হয়। এ কথা শুনে ইমাম আওয়াযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লা-জাওয়াব হয়ে গেলেন। (সীরাতে নু’মান-৫৬)

সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-১৭৩ -মুহম্মদ সাদী

পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদুর রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মহা সম্মানিতা আম্মা আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম (২২) উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-১৯ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)

সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদ যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-৩ (বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-১৭৪