ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-১১ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)

সংখ্যা: ২২৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

তাক্বওয়া বা পরহেযগারিতা

তাক্বওয়া বা মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতি হচ্ছে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মূল। যিনি যতবেশি তাক্বওয়া উনার অধিকারী তিনি তত বড় আলিম। মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রিয় বা নৈকট্যপ্রাপ্ত। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

ان اكرمكم عند الله اتقاكم

অর্থ : “তোমাদের মধ্যে যিনি সর্বাধিক তাক্বওয়া উনার অধিকারী তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সর্বাপেক্ষা সম্মানিত।” (পবিত্র সূরা হুজুরাত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকীমুল হাদীছ, সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন সে যুগের সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ তাক্বওয়া উনার অধিকারী। এমনকি মুত্তাক্বীনগণ উনাদের ইমাম তথা ইমামুল মুত্তাক্বীন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এক ব্যক্তি ইমামুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছ থেকে কিছু টাকা কর্জ নিয়েছিল। লোকটি যে গ্রামের অধিবাসী ছিল ঘটনাক্রমে সে গ্রামে ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একজন মুরীদ বা ছাত্র ইন্তিকাল করেন। সাইয়্যিদুনা ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তার জানাযার নামায আদায়ের জন্য সেখানে তাশরীফ নিলেন। দ্বিপ্রহরের প্রচ- রোদের তাপে সকলের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছিল। সেখানে সেই কর্জ গ্রহণকারী ব্যক্তির দালানের ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়ার ব্যবস্থা ছিলনা। যার কারণে উপস্থিত মুরীদ-মু’তাকিদ মুহিব্বীনগণ উনাকে সেই ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহণের জন্য অনুরোধ করলেন। তিনি বললেন, এ দালানের মালিক আমার নিকট থেকে টাকা কর্জ ধার নিয়েছে। কাজেই তার দালানের ছায়া দ্বারা ফায়দা হাছিল করা ঠিক হবেনা। যেহেতু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “কাউকে কিছু ধার দিয়ে তার থেকে কোন উপকার গ্রহণ কর না।” অতএব, আমি তা করলে আমার জন্য তা সুদ গ্রহণের অনুরূপ হবে। (তাযকিরাতুল আউলিয়া-১/২১২)

বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও ইমাম হযরত ইয়াজিদ ইবনে হারুন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “আমি এক হাজার শায়েখ বা উস্তাদ থেকে ইলম হাছিল করেছি ও লিখেছি; মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! উনাদের মাঝে হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে অধিক মুত্তাক্বী বা পরহেযগার এবং স্বীয় যবান মুবারক উনার হিফাযতকারী আমি কাউকে দেখিনি।” (মানাকিবে মাওফাক-২/১৯৫, ইমামুল মুহাদ্দিছীন-৭৮)

হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র বাইতুল্লাহ শরীফ উনার হজ্জ শেষে যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শহরে পৌঁছলেন, তখন সেখানেও উনার অনুসারীগণ উনাদের এক জামায়াত উনার দরসে একত্রিত হয়েছিলেন। সেখানে ঊনিশ দিন অতিবাহিত হয়। হঠাৎ একদিন তিনি শিশুদের মতো কাঁদতে শুরু করে দিলেন যে, আমি আর এখানে থাকতে পারছি না, আমি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার যমীন থেকে বাইরে চলে যেতে চাই। উনার অনুসারী ও মুহব্বতকারীগণ চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলেন এবং আরজু করলেন-

اتبكى انت يا سيدنا بقيام الـمدينة

অর্থ: “হে আমাদের শায়েখ! আমাদের উস্তাদ! কোন বিষয় আপনাকে কাঁদাচ্ছে? পবিত্র মদীনা শরীফ-এ থাকা কি আপনার জন্য কষ্টকর হচ্ছে? যখন কিনা আপনিই এই তা’লীম দিয়েছেন যে, পবিত্র মদীনা শরীফ-এ যতদিন থাকবে, গণীমত মনে করবে, সৌভাগ্যের কারণ মনে করবে।”

তিনি বললেন, ব্যাপারটা এরকম নয়; বরং এটা গোপন বিষয় ছিল, যা তোমাদের কাছে আমি এতদিন গোপন রেখেছিলাম। আর যখন তোমরা জিজ্ঞাসাই করেছ, তাহলে শোনো। এ পবিত্র যমীন, যা হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের গর্ব এবং পবিত্র গুণের আত্মা মুবারক উনাদের আবাসস্থল, এই স্থান লৌহ, কলম, আরশ, কুরসী থেকেও উত্তম, উন্নত ও মর্যাদাসম্পন্ন; আমি এ পবিত্র যমীনে, জরুরত সারিনি, ইস্তিঞ্জা করিনি। আরো শুকরিয়া যে, আমি পুরা ঊনিশ দিন ওযুর সাথে রয়েছি, এক পলকের জন্যও শুইনি, পুরা চব্বিশ ঘণ্টার মাঝে একটি অথবা দুটি খেজুর খেয়েছি এবং সামান্য পবিত্র যমযম উনার পানি পান করেছি, একমাত্র এই ছিল আমার খাদ্য। এ পর্যন্ত আমি নিজেকে আয়ত্তে রেখেছি এখন আমার পক্ষে এখানে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছে না। আমাকে তাড়াতাড়ি করে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার হেরেম শরীফ থেকে বাইরে নিয়ে চলো।

আল্লাহু আকবার! কী পরিমাণ তাক্বওয়া-পরহেযগারিতার অধিকারী ছিলেন তিনি। কিরূপ কষ্টকর রিয়াযত-মাশাক্কাত ও পূর্ণাঙ্গ মুজাহাদা করেছিলেন তিনি। তাক্বওয়া ও পবিত্রতা, ভীতি ও সচেতনতা, আদব ও সাধনার কি এর চেয়ে উত্তম কোন মিছাল বা দৃষ্টান্ত হতে পারে? (ইমামুল মুহাদ্দিছীন-১০০)

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইসমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদুর রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে- একজন কুতুবুজ্জামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- ৬৪

 ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলার্দু রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুজ্জামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- ৬৪

ক্বায়িম মাক্বামে আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাখ্দূমুল কায়িনাত, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-৪০

উম্মু মুর্শিদিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- মহাসম্মানিত হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম মুবারক সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত-৯০

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-৮৬ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)