ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-৮

সংখ্যা: ২২১তম সংখ্যা | বিভাগ:

(বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)

ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শিক্ষা ও পাঠদান পদ্ধতি:

হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ছাত্রদেরকে বর্তমান যুগের ন্যায় গতানুগতিক সবক পড়াতেন না, বরং ইলমী আলোচনা অনুশীলনের ন্যায় পাঠদান করতেন। যে মাসয়ালাটি আলোচনাধীন হতো, তা তিনি ছাত্রদের সামনে তুলে ধরতেন এবং এ বিষয়ে শরয়ী নির্দেশ সম্পর্কে আলোচনা-পর্যালোচনা করতেন। ব্যাপক পর্যালোচনা হতো। প্রত্যেক ছাত্রই নিজ নিজ মত উপস্থাপন করতেন। ক্বিয়াসের বিষয়ে ছাত্রগণ উনাদের পূর্ণ অধিকার পেতেন। সুতরাং ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত যে, এ সব ছাত্র ইজতিহাদে উনার বিপরীত মতও দিতেন। এমনকি দীর্ঘ সময় আলোচনা-পর্যালোচনা ও তর্ক-বিতর্কে মজলিসে শোরগোল লেগে যেত।

সার্বিক দিকের উপর গভীর চিন্তা ও পরযবেক্ষণের পর ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিজের মতামত পেশ করতেন। যা সে ইলমী পর্যালোচনা ও অনুশীলনের ফলাফল এবং খুবই বিশ্লেষণমূলক ও সন্তোষজনক হতো। আর উনার মতামত এত সুন্দর হতো যে, সবাই তা গ্রহণে বাধ্য হতেন এবং সকলের মনোঃপুত হতো। এ ধরনের আলোচনা ও পর্যালোচনা ছাত্র ও শিক্ষক উভয়ের জন্যই অত্যন্ত ফলদায়ক প্রশিক্ষণ। এতে ছাত্র-শিক্ষক উভয়ই সমপরিমাণ উপকৃত হতেন। এ পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের কারণে তিনি জীবন সায়াহ্ন পর্যন্ত শিক্ষার্থীই থেকে যান এবং তার ইলিম ও হিকমত এবং চিন্তাধারা উপর্যুপরি উন্নতির সিঁড়ি পার হয়ে যেতে থাকে।

যখন কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সামনে আসত, তখনই যে সব আহকামের সাথে তা সম্পর্কিত হতো, তার ইল্লাত এবং বিভিন্ন দিকের উপর চিন্তা করা হতো এবং তার উপর আলোচনা ও পর্যালোচনা শুরু হয়ে যেত। যে সব মাসয়ালা ইল্লাতে মূলের সাথে সম্পর্কিত বা সাদৃশ্যপূর্ণ হতো, তাকে মূলের উপর শাখা-প্রশাখা হিসেবে সাব্যস্ত করা হতো। আর ইহা ছিল ফিক্বহ।

ইলিম অন্বেষণকারী উনাদের সাথে সৌহার্দ্যমূলক আচরণ :

তদানিন্তন সময়ের সকল ইমাম-মুজতাহিদ ও আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইলিম ও হিকমত হাছিলের জন্য হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুবারক ছোহবতে আসতেন। গোঁড়াপন্থী ও অন্ধ অনুকরণপ্রিয় হওয়া থেকে বিরত রাখতেন। উনাদেরকে স্বাধীন মন-মানসিকতাসম্পন্ন পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াসের পূর্ণ অনুসরণে সহযোগিতাকারী দেখতে চাইতেন। তিনি তিনটি বিষয়ের প্রতি তীক্ষ্ম দৃষ্টি রাখতেন।

১. ইলিম অন্বেষণকারীদেরকে তিনি আর্থিক সাহায্য দান করতেন। প্রয়োজনীয় সময়ে তাদের পাশে দাঁড়াতেন, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতেন। যার বিবাহের প্রয়োজন ছিল, কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য ছিলনা, তার বিয়ের ব্যবস্থা করে দিতেন এবং প্রত্যেক ইলম অন্বেষণকারী উনার সকল প্রকার প্রয়োজন মেটাতেন। এমন একজন শিক্ষার্থী বলেন-

كان يعنى من عمله وينفق عليه وعلى عياله فاذا تعلم قال لقد وصلت الى الغنى الاكبر بمعرفة الحلال والحرام.

অর্থ: তিনি উনার ছোহবত ইখতিয়ারকারী উনাদেরকে চাহিদা থেকে মুখাপেক্ষহীন করে দিতেন এবং তার ও তার পরিবার-পরিজনের জন্য সম্পদ ব্যয় করতেন। যখন শিক্ষার্থী জ্ঞান অন্বেষণ শেষ করতো, তখন বলতেন: হালাল ও হারাম সম্পর্কে জানার কারণে তুমি সম্পদশালী হয়ে গেলে।

২. তিনি উনার অনুসারীদের প্রতি কড়া দৃষ্টি রাখতেন। যদি কারো মাঝে ইলিম অর্জনের অনুভূতির সাথে অহঙ্কারের নমুনা দেখতে পেতেন, তবে তা বিভিন্ন হিকমত বা কৌশলের মাধ্যমে দূরীভূত করতেন। তাকে বিশ্বাস করাতেন যে, অর্জন করতে হলে তোমাকে অপরের মুখাপেক্ষী হতেই হবে।

বর্ণিত আছে যে, উনার ¯েœহভাজন অনুসারী কাযী আবূ ইউসূফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মনে মনে অনুভব করলেন যে, এখন উনাকে পৃথকভাবে নিজের ‘হালকায়ে দরস’ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একজন সাথীকে বললেন যে, হযরত আবূ ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মজলিসে গিয়ে জিজ্ঞেস কর যে, এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি?

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১১৯

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১২০

ক্বায়িম মাক্বামে আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাখ্দূমুল কায়িনাত, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-২৩৫

উম্মু মুর্শিদিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- মহাসম্মানিত হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম মুবারক সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত-৮৫

হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি