-মুহম্মদ সাদী
পূর্ব প্রকাশিতের পর
পরিচয়-সূত্র, বিশেষত: ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দা’ওয়াত, আফদ্বালুল আওলিয়া, ছাহিবুল ইলহাম, ছাহিবে ইসমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, ছাহিবে ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, আওলাদুর রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশ প্রতিপালনে আমি নিয়মিত রোগীর খোঁজ-খবর রাখি। ক্লিনিকে তাকে দেখতে যাই। হাল-কুশল জিজ্ঞেস করি। আমি শান্তনা দিলেও রোগীর আতঙ্ক দূর হয় না। কিছু জানতে চাইলে শঙ্কা ও ভয় মিশ্রিত করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ছাড়া তিনি কথা বলেন না। বলতে পারেনও না। দিন-দিন, সময়ে-সময়ে, মুহূর্তে-মুহূর্তে তার শরীর ও অবয়ব-এর পরিবর্তন আমাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে। একান্ত কাছে গিয়ে সহমর্মীতা জানালে তিনি কোন কথা না বলে আকার ইঙ্গিতে যা প্রকাশ করেন, তার অর্থ হয়: তিনি ঈমানের সঙ্গে ইন্তিকাল চান। পাপ মোচন চান। মহান আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব নূরে মুজাসসাম, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি চান। এমন অন্তিম অবস্থায় সকল মুসলমানেরই এসব কাম্য হয়ে থাকে।
ক্রমান্বয়ে রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তার সকল আশাই দুরাশায় পরিণত হয়। চিকিৎসকদেরও অভিমত, তার সময় ফুরিয়ে এসেছে। আত্মীয়-পরিজন সবাই এখন শেষ সময়ের অপেক্ষায়। আমি গভীরভাবে ভাবনামগ্ন হই। আল্লাহ পাক উনার মতে এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পথে পরিচালিত না হলে নশ্বর জীবনের কৃত অপরাধ, অন্যায়, অবিচার ও পাপ-পঙ্কিলতাসহ যাবতীয় ঋণের বোঝা নিয়ে মানুষকে কবরে যেতে হয়। স্বেচ্ছাচার মানুষ দুনিয়ায় কী যে চায়, তা’ সে নিজেই জানে না। মিথ্যে কুহক ও অন্তহীন আশায় ঘেরা মানুষের জীবন একসময় নিঃেশেষ হয়ে যায়। অনিবার্যভাবে মানুষ মৃত্যুর কবলে পড়ে। তখন কৃত অপরাধ, অবাধ্যতা ও পাপের হুবহু চিত্র প্রকটভাবে তার চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয়ে পড়ে। আমার এসব ভাবনার ছেদ পড়ে তখন, যখন শুনতে পাই রোগীর ইন্তিকাল হয়েছে।
সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক নির্দেশনা মতে আমি রোগীর ইন্তিকাল অবধি তার শারীরিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থাসহ দৃষ্টিগ্রাহ্য যাবতীয় বিষয়ের অনুপুঙ্খ পর্যবেক্ষণ করি। রোগীর শরীর ও চেহারার ভয়াবহ পরিবর্তন আমি লক্ষ্য করি। সে পরিবর্তনের সবিস্তার বর্ণনা না করাই এখানে সঙ্গত। নাফরমান ও আক্বীদা- বিনষ্ট বান্দাদের পাপের চিহ্ন মরণের পূর্বেই তাদের অবয়বে প্রকটভাবে প্রতিবিম্বিত হয়। কোন কোন মানুষকে কবরে সাপে দংশন করবে। এমর্মে হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন: সাপ কবরে নেই, কবরে থাকেও না। সর্প দংশনের উপযোগী ব্যক্তি দুনিয়া থেকেই ঐ সাপ তার শরীরে বহন করে কবরে নিয়ে যায়। জীবনব্যাপী তার পাপাচার কবরে সাপের আকৃতি ধারণ করে এবং তাকে অবিরাম দংশন করে। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্ট সকলকে দংশনকারী সাপের আকৃতি, দংশনের প্রক্রিয়া ও পরিধি এবং অসহনীয় যন্ত্রণার মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন। কারণ, সকল পাপীর পাপের প্রকৃতি, পরিধি ও মাত্রা একীভূত নয়।
আয়াসসাধ্য যোগ্যতায় আমি ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতজাবুদ দাওয়াত, আফদ্বালুল আউলিয়া, ফখরুল আউলিয়া, ছাহিবুল ইলহাম, ছাহিবে ইসমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, ছূফীয়ে বাতিন, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, ছাহিবে ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামাত, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে গভীরভাবে ভাবতে থাকি। রোগী সম্পর্কে তিনি যা বলেছেন, রোগীর ইন্তিকাল অবধি হুবহু তাই আমি প্রত্যক্ষ করেছি। জাহির ও বাতিন অনুধাবন ও সুষ্পষ্টরূপে প্রত্যক্ষকরণে এটি উনার বেমেছাল সূক্ষ্মদর্শিতা। অন্য কথায় এটি উনার অনন্য কারামত। যদিও উনার সীমাহীন বুযুর্গী, শীর্ষ সোপানের মাক্বাম, তাৎপর্যপূর্ণ অগণিত কারামত এবং পর্দার আবরণ ব্যতীত যাবতীয় বিষয় দর্শনে উনার অনুপম যোগ্যতার তুলনায় আলোচ্য বিষয় অতি নগন্য। (অসমাপ্ত)