-মুহম্মদ সাদী
পূর্ব প্রকাশিতের পর
রাতের গভীরে অদৃশ্য স্থান থেকে গায়েবী
আওয়াজে দুআ’ কবুলের স্বীকৃতি
অবাক বিস্ময়ে মুরীদের প্রশ্ন: “হুযূর! আপনার কথা দুর্বোধ্য। জগৎ-সংসার, কুল কায়িনাত এবং সমুদয় আলম প্রতিপালন ও পরিচালনার দায়িত্বতো বান্দার নয়। এসব কাজ আল্লাহ পাক-এর। দয়া করে যদি একটু বুঝিয়ে বলেন।” শায়খ বললেন: “তুমি নির্বোধ। বিষয়টি উপলব্ধির জন্য যে নিগূঢ় সমঝ্ দরকার, তা তোমার নেই। তুমি বুঝবে কি করে?” শায়খ বলতে থাকেনঃ “আমি আমার সকল ইচ্ছা, আগ্রহ, উদ্দেশ্য এবং মত ও পথ আল্লাহ পাক-এর ইচ্ছা, আগ্রহ, উদ্দেশ্য এবং মত-এর সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছি। আল্লাহ পাক-এর ইচ্ছা ও মত-এর বিপরীতে আমার কোন ইচ্ছা ও মত নেই। কাজেই. আল্লাহ পাক যা’ চান, আমিও তাই চাই এবং যা’ চাই তাই হয়। মূলতঃ আল্লাহ পাক-এর উদ্দেশ্য ও ইচ্ছাই বাস্তবায়িত হয়।”
শায়খের তাত্ত্বিক জাওয়াব প্রশ্নকারী মুরীদ কতোটুকু বুঝেছেন অথবা আদৌ বুঝেছেন কিনা, তা জানা যায় না। তবে শায়খ যা বলেেেছন তাই সঠিক ও সত্য। আল্লাহ পাক এবং তাঁর প্রিয়তম হাবীব, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, ছাহিবু লাওলাক, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সদয় ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু চাওয়া ওলীআল্লাহগণের মুবারক বৈশিষ্ট্য, মান, শান, ইয্যত ও ঐতিহ্যের খিলাফ। আল্লাহ পাক-এর ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণে ওলীত্ব অটুট থাকা দূরের কথা, একজন সাধারণ মু’মিনের ঈমানইতো সমূলে বিনাশ হয়!
আলোচিত ঘটনায় জানা গেলো, মনোনীত ওলীআল্লাহগণের কোন চাওয়াই আল্লাহ পাক অপূর্ণ রাখেন না। খালিছ নায়িবে রসূলগণের মাধ্যমে আল্লাহ পাক-এর উদ্দিষ্ট ব্যবস্থাদি বাস্তবায়িত হয়ে থাকে। প্রেক্ষিত কারণে ওলীয়ে মাদারজাদ, মুস্তাজাবুদ্ দাওয়াত, আফ্যালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখ্রুল আওলিয়া, ছূফিয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, কুতুবুয্যামান, আওলাদে রসুল, শাহ্ ছূফী, আলহাজ্জ, সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সব দুআ’ যে অনুক্ষণ আল্লাহ পাক কবুল করেন, এটাইতো সংগত ও স্বাভাবিক। তাঁর দুআ’ কবুলের স্বীকৃত ঘটনা অগণিত। সে সবের মধ্যে কারামত-সমৃদ্ধ নিম্নের ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ।
আমার (লেখক) বেশ ক’জন আত্মীয় ইউরোপে থাকেন। তাদের দু’জন পৃথকভাবে সেখানে গিয়ে বসবাসের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় দীর্ঘকাল অতিবাহিত করেন। দীর্ঘ অপেক্ষায় অনেক চেষ্টার পরও বাঞ্ছিত অনুমতি পাওয়া যাচ্ছিলো না। তাদেরকে অনুমতি দেয়া হবে না মর্মে ঐ দেশের সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছিলো। অবশেষে অবস্থা এতোই প্রকট হলো যে, বাধ্য হয়ে সহসাই শূন্যহাতে তাদের দেশে ফিরে আসতে হবে। জীবনে সচ্ছল হওয়ার স্বপ্নীল আশায় বিপুল টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে বিফল হয়ে ফিরে আসার যাতনা তাদের জন্য ছিলো দুর্বিষহ। বিষয়টি তারা আমাকে জানালে আমি বেদনাহত হই। ভাবতে থাকি কী করা যায়। কিন্তু এরূপক্ষেত্রে আমার কিছুইতো করার নেই। একসময় আমার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ্ শরীয়ত ওয়াত্ তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, ছাহিবু সুলত্বানিন্ নাছীর, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আওলাদে রসূল মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মুবারক ওসীলায় বদ্ধমূল ধারণা হলো, এ বিষয়ে মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এবং তাঁর বুযুর্গ পিতা, আমার দাদা হুযূর ক্বিবলা, ওলীয়ে মাদারজাদ, মুস্তাজাবুদ্ দাওয়াত, ফখ্রুল আওলিয়া, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, আফ্যালুল ইবাদ, ছাহিবে ইসমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, ছূফিয়ে বাতিন, গরীবে নেওয়াজ, কুতুবুয্যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি দুআ’ করলে সমস্যার সমাধান হবে। দুআ’র জন্য তাঁদের কাছে বিনীত আরজু জানাতে আমি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। এতে নিমিষে আমার উৎকণ্ঠা দূর হয়ে অন্তরে অনাবিল প্রশান্তি নেমে এলো। (চলবে)