মুহম্মদ সাদী
আজমীর শরীফে চীশ্তিয়া তরীক্বার ইমাম, কুতুবুল আক্তাব, সুল্তানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ, হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশ্তি রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপন/অনুপম কারামত-এর বহিঃপ্রকাশ
পূর্ব প্রকাশিতের পর
ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, মুজাদ্দিদে আ’যম, মুর্শিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীও তাঁর মাক্বামের কথা কখনো বলেন না। কারণ, তাঁর মাক্বামের প্রকৃতি, পরিধি ও পরিণত স্তর মানুষের অবোধ্য ও অগম্য। তাঁর অতুলনীয় কামিয়াবীর অত্যুচ্চ সোপান মানুষ অনুমান করে থাকে মাত্র। তুলনামূলকভাবে যারা সমঝ্দার এবং অনুসন্ধিৎসায় তৎপর, কেবল তারাই জগৎব্যাপী তাঁর অপ্রতিরোধ্য তাজদীদের ব্যাপ্তি এবং বিশাল কর্মকুশলতা থেকে আপন বিবেচনায় তাঁর অবস্থানের আভাস পেয়ে থাকেন বলে মনে করেন। উলামায়ে ‘ছূ”সহ সকল দুনিয়ালোভীরা তাঁর বিরোধিতায় নিরন্তর নিয়োজিত এবং নির্বোধরা এ বিষয়ে বেখবর। তাঁর ক্রমবর্ধিষ্ণু ধাবমানতা কেবলই ঊর্ধ্বপানে, অর্থাৎ আল্লাহ পাক এবং তাঁর প্রিয়তম হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দিকে। অনুক্ষণ তিনি আল্লাহ পাক এবং তাঁর মাশুক, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কুদরতী যিম্মায় রয়েছেন। যেমন মধ্যাকর্ষণ শক্তির উপরের অবস্থান থেকে একান্ত ইচ্ছায় না হলে নীচে নামার আর কোন সুযোগই থাকে না।
এ বিষয়ে সাইয়্যিদুত্ ত্বইফা, হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আল্লাহ পাক এবং তাঁর প্রিয়তম হাবীব, রহমতে আলম, রউফুর রহীম, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মা’রিফাত ও মুহব্বত সম্পর্কে আফদ্বালুন নাছ, বা’দাল আম্বিয়া, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ছিদ্দীক্বে আকবর, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যা বলেছেন, তাই যথার্থ। তিনি বলেছেন:
سبحان من لم يجعل لخلقه سبيلا بالعجز عن معرفته
অর্থঃ “পবিত্র সেই মহান আল্লাহ পাক, যিনি তাঁর মা’রিফাত হাছিলের রাস্তা কেবল তাঁকেই দেখিয়েছেন, যে তাঁর তত্ত্ব ও রহস্য উদ্ঘাটনের কোশেশে ব্রতী হয়ে অক্ষম হয়ে পড়েছে।” এখানে অক্ষমতার নিগূঢ় অর্থ বান্দার আপেক্ষিক সক্ষমতা ও কামিয়াবী। আফদ্বালুন নাস, বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর এ অমিয় বাণী পুরোপুরি মুজাদ্দিদে আ’যম মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
আল্লাহ পাক এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক প্রদত্ত যাবতীয় নিয়ামত সম্ভারে সমৃদ্ধ মুজাদ্দিদে আ’যম মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মান, শান, মর্যাদা, মর্তবা, ইয্যত ও ঐতিহ্যের গৌরবগাঁথায় তাঁর বুযুর্গ পিতা ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ও কারামত, ফখ্রুল আওলিয়া, ছূফিয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, কুতুবুয্যামান, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর মুবারক জীবনব্যাপী কোশেশ ও কামিয়াবীতে নিজেকে স্বার্থক মনে করেন। কারণ, তিনি জানেন, আজমীর শরীফ থেকে বহন করে আনা মুবারক পাগড়ী মুজাদ্দিদ আ’যম পুত্রের অতুলনীয় কামিয়াবী বহিঃপ্রকাশের একটি বিশেষ অনুষঙ্গ মাত্র।
এ মুবারক হাদিয়া তাঁর মাক্বামতের পরিবৃদ্ধি ঘটায়নি। যে নিয়ামত লাভে তিনি ক্বায়িম মক্বামে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর মাশুকে পরিণত হয়েছেন, সে নিয়ামততো হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্বেই তাঁর মুবারক আওলাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মুদ্দা জিল্লুহুল আলীকে দান করেছেন।(সুবহানাল্লাহ্) হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি বিষয়টি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট থেকেই যথাসময়ে জেনেছেন। পরবর্তীতে একই বিষয় ইমামুশ্্ শরীয়ত ওয়াত্ তরীক্বত, সুল্ত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, নায়িবে রসূল ফিল হিন্দ, আতায়ে রসূল, সুল্ত্বানুল আরিফীন, মঈনুল মিল্লাত, মাখ্যানুল মা’রিফাত, মাহবুবে সুবহানী, ছাহিবুল আসরার, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে ছাহিবে লাওলাক, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁকে (ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি) নতুন করে জানিয়েছেন মাত্র। এর মুবারক নিদর্শন স্বরূপ মুজাদ্দিদে আ’যম মুদ্দা জিল্লুহুল আলীকে তিনি পাগড়ী মুবারক হাদিয়া দিয়েছেন। (চলবে)
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি