ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাত্বিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত
-মুহম্মদ সাদী
পূর্ব প্রকাশিতের পর
সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ছিল উঁচু স্তরের ইলমে লাদুন্নী।
তিনি বদ আক্বীদা পোষণকারী এবং বদ আমলকারী মানুষদের চিনতেন এবং তাদের পরিণামফল জানতেন।
উনার মুবারক ক্বওল শরীফ অনুযায়ী তাদের হয়েছে চরম ক্ষতিসাধন
হযরত ফুযাইল বিন আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা উনার এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নৈকট্যধন্য সূক্ষ্মদর্শী মাহবুব ওলীআল্লাহ ছিলেন। স্বপ্নে দেখা ওই জাহান্নামী ব্যক্তির আনুপূর্বিক অবস্থা তিনি জানতেন। জানা সত্ত্বেও মানুষের, বিশেষ করে একজন হক্কানী শায়েখ উনার মুরীদদের ইবরত-নছীহত হাছিলের জন্য উনার জানতে চাওয়ার প্রেক্ষিতে জাহান্নামী ব্যক্তি তার দুরবস্থা জানায়।
সে বলে: “হে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের লক্ষ্যস্থল মাহবূব ওলী! পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে ইরশাদকৃত সত্য আজ প্রকটভাবে আমার সম্মুখে উদ্ভাসিত হয়েছে। আমি বর্ণনাতীত নিদারুণ আযাব-গযবের মধ্যে নিপতিত হয়েছি। হে শায়েখ আমার! মূলত আমি ছিলাম একজন কাট্টা মুানাফিক। আপনার সম্মুখে আপনাকে শুনিয়ে শুনিয়ে আমি আপনার ছানা-ছিফত করতাম। কিন্তু মনে মনে আমি আপনার বিরোধিতা করতাম। দূরে গিয়ে আমি আপনার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করতাম। আমার আক্বীদাতো খারাপ ছিলোই, আপনার সম্পর্কে মানুষের আক্বীদাও আমি বিনষ্ট করতাম। আপনার সম্পর্কে আমার অন্তর ছিলো গালীযে পরিপূর্ণ।” নাউযুবিল্লাহ!
সে বলতে থাকে: “হে শায়েখ আমার! বদ আক্বীদায় আপনার বিরোধিতা, আপনার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা এবং আমার মুনাফিকির পরিণাম যে এতো প্রকট, তা’ জীবদ্দশায় আমার ধারণায় ছিলো না। আমি মনে করেছিলাম, আপনার সম্পর্কিত বিনষ্ট আক্বীদা ও মুনাফিকি খাছলত সত্ত্বেও আমি পার পেয়ে যাবো। বিষয়টিকে আমি স্বাভাবিক মনে করেছিলাম। এখন কবরে এসে আমি বুঝতে পারছি, বদ আক্বীদা এবং মুনাফিকী খাছলতে হক্কানী শায়েখ উনার বিরুদ্ধাচরণের পরিণতি কতো ভয়াবহ! হে শায়েখ আমার! আমি বুঝে গেছি, আপনার সম্পর্কে আমার বদ আক্বীদা পোষণ এবং আপনার প্রতি আমার বিরোধিতা ও মুনাফিকির কারণে জাহান্নামের আযাব থেকে আমি আর পরিত্রাণ পাবো না।” নাউযূবিল্লাহ!
রসম-রেওয়াজ, বদ খাছলত ও মুনাফিক্বী স্বভাবসহ যাবতীয় মন্দ স্বভাব পরিহার করে বিশুদ্ধ ঈমান, আক্বীদা ও আনুগত্যে আপন শায়েখ উনার মুবারক নির্দেশনায় নিবেদিত থেকে ফায়িয-তাওয়াজ্জুহলাভের মাধ্যমে রিযামন্দি-সন্তুষ্টি, তায়াল্লুক-নিসবত, মুহব্বত-মা’রিফাত হাছিল করাই একজন মুরীদের অভীষ্ট লক্ষ্য। মুরীদের এ মুবারক লক্ষ্য যখন বিনষ্ট হয়, তখন সে লা’নতগ্রস্ত হয়ে জাহান্নামের বাসিন্দা হওয়ার উপযোগী হয়। নাউযুবিল্লাহ! এ মর্মে সকল সালিক-মুরীদের হিদায়েত ও নছীহতলাভের অনিবার্য প্রয়োজনে আলোচ্য হযরত ফুযাইল বিন আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ নামধারী মুনাফিক ব্যক্তির মর্মান্তিক ঘটনা বিশেষভাবে কিতাবে স্থানলাভ করেছে। (চলবে)
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি