কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম-নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৩৪

সংখ্যা: ২০১তম সংখ্যা |

[সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন-উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার প্রতি। আল্লাহ পাক-উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-এর অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) পেশ করার পর ১৬৮তম সংখ্যা থেকে-

২৮তম ফতওয়া হিসেবে

“কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ পাক-উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা, করানো ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”-এ এমন সব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।
বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো ‘ওহাবী সম্প্রদায়’। ইহুদীদের এজেন্ট ওহাবী মতাবলম্বী উলামায়ে ‘ছূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, হালালকে হারাম, জায়িযকে নাজায়িয, নাজায়িযকে জায়িয বলে প্রচার করছে। (নাঊযুবিল্লাহ)
স্মরণীয় যে, ইহুদীদের এজেন্ট, ওহাবী মতাবলম্বী দাজ্জালে কায্যাব তথা উলামায়ে ‘ছূ’রা প্রচার করছে “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা নেই”। (নাউযুবিল্লাহ) সম্প্রতি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, “নির্বাচন কমিশনার বলেছে, ছবি তোলার বিরুদ্ধে বললে জেল-জরিমানা হবে, নির্বাচন কমিশনার ভোটার আই.ডি কার্ডের জন্য ছবিকে বাধ্যতামূলক করেছে এবং ছবির পক্ষে মসজিদে, মসজিদে প্রচারণা চালাবে বলেও মন্তব্য করেছে। আর উলামায়ে ‘ছূ’রা তার এ বক্তব্যকে সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছে যে, “রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে পুরুষ-মহিলা সকলের জন্যেই ছবি তোলা জায়িয।” (নাঊযুবিল্লাহ) শুধু তাই নয়, তারা নিজেরাও অহরহ ছবি তুলে বা তোলায়।
অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এ বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়িয” তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে,

استحلال المعصية كفر

অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী।)
অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “ছূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমানদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।
অনুরূপ “ছবি তোলার ব্যাপারে ধর্মীয় কোন নিষেধ নেই বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে সকলের জন্যে ছবি তোলা জায়িয” উলামায়ে “ছূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে ছবি তুলবে (যদিও হারাম জেনেই তুলুক না কেন) তারা আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হবে যা শক্ত আযাব বা কঠিন গুনাহের কারণ। কেননা হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

قال حدثنا الاعمش عن مسلم قال كنا مع مسروق فى دار يسار بن نمير فراى فى صفته تماثيل فقال سمعت عبد الله قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول ان اشد الناس عذابا عند الله المصورون

অর্থঃ হযরত আ’মাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, আমি হযরত মাসরূক রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইর-উনার ঘরে ছিলাম, তিনি উনার ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার নিকট শুনেছি, তিনি বলেন, আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “নিশ্চয়ই মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০)
উক্ত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় “উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারীতে” উল্লেখ আছে,

وفى التوضيح قال اصحابنا وغيرهم صورة الحيوان حرام اشد االتحريم وهم من الكبائر

অর্থঃ ‘তাওদ্বীহ’ নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, হযরত উলামায়ে কিরামগণ প্রত্যেকেই বলেন, জীব জন্তুর ছবি বা প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা হারাম বরং শক্ত হারাম এবং এটা কবীরা গুাহর অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, উলামায়ে “ছূ”দের উক্ত বক্তব্য ও বদ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ছবি তুলে প্রকাশ্য হারাম কাজে মশগুল হয়ে কঠিন আযাবের সম্মুখীন হবে যা আমলের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে ক্ষতিকর।
কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ মূর্তি বা ছবিসহ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়াটি” পুনরায় প্রকাশ করা হলো।

প্রাণীর মূর্তি, ভাস্কর্য তৈরি করা-করানো, ছবি তোলা-তোলানো, আঁকা-আঁকানো, রাখা-রাখানো হারাম ও নাজায়িয হওয়ার অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীল প্রমাণ

স্মর্তব্য যে, নির্ভরযোগ্য ও সর্বজনমান্য প্রায় হাদীছ শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ও ফিক্বাহ-ফতওয়ার কিতাবেই “প্রাণীর মূর্তি, ভাস্কর্য তৈরি করা-করানো, ছবি তোলা-তোলানো, আঁকা-আঁকানো, রাখা-রাখানো হারাম ও নাজায়িয” বলে উল্লেখ আছে। নিম্নে সেসকল কিতাবসমূহ থেকে ধারাবাহিকভাবে এ সম্পর্কিত দলীল প্রমাণ তুলে ধরা হলো-

ইরশাদুস সারী লিশরহি ছহীহিল বুখারী

এ কিতাবখানা লিখেছেন হযরত আল্লামা ইমাম আবুল আব্বাস শিহাবুদ্দীন আহমদ বিন ক্বাসত্বলানী শাফিয়ী আশয়ারী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ওফাত মুবারক : ৯২৩ হিজরী।
অত্র কিতাবে প্রাণীর ছবি বা মূর্তি ভাস্কর্য সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-
(৫৫৩)

(ولا تصاوير) مما يشبه الحيوان ما لم تقطع راسه او يمتهن او عام فى كل الصور سبب الامتناع كونها معصية فاحشة اذ فيها مضاهاة لخلق الله. (ارشاد السارى لشرح صحيح البخارى كتاب اللباس باب التصاوير الجلد ۸ الصفحة ۴۸۰ دار الفكر)

অর্থ: (ছবি মূর্তি বিশিষ্ট ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না) যা প্রাণীর ছবি যার মাথা কাটা হয়নি যা লাঞ্ছনার জন্য তৈরি করা হয়নি। প্রাণীর ছবি নিষেধের কারণ হলো- এটা নাফরমানী ও অশ্লীলতা বিস্তারক। আর এতে আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্য দাবি করা হয়। (ইরশাদুস সারি লিশরহি ছহীহিল বুখারী অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি-মূর্তির হুকুম ৮ম খ- ৪৮০ পৃষ্ঠা প্রকাশনা: দারুল ফিকর)
(৫৫৪)

(باب عذاب المصورين) الذين يصنعون الصور (يوم القيامة) (كتاب اللباس باب عذاب المصورين يوم القيامة الجلد ۸ الصفحة ۴۸۱(

অর্থ: (এ পরিচ্ছেদে ক্বিয়ামতের দিন মুছাব্বিরীনের উপর আযাব প্রসঙ্গে) মুছাব্বিরীন তারাই যারা প্রাণীর ছবি মূর্তি ভাস্কর্য তৈরি করে। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি মূর্তি ভাস্কর্য তৈরিকারীদের উপর শাস্তি প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮১ পৃষ্ঠা)
(৫৫৫)

وهو الصورة والمراد بها صورة الحيوان (كتاب اللباس باب عذاب المصورين يوم القيامة الجلد ۸ الصفحة ۴۸۱)

অর্থ: হারাম ছবি-মূর্তি দ্বারা উদ্দেশ্য হলো প্রাণীর ছবি মূর্তি। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি মূর্তি তৈরিকারীদের উপর শাস্তি প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮১ পৃষ্ঠা)
(৫৫৬)

(يقول ان اشد الناس عذابا عند الله) اى فى حكم الله تعالى (يوم القيامة المصورون) الذى يصورون اشكال الحيوانات (كتاب اللباس باب عذاب المصورين يوم القيامة الجلد ۸ الصفحة ۴۸۱)

অর্থ: (তিনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার নিকট ওই সমস্ত লোকদের কঠিন শাস্তি হবে) অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার হুকুমে (যারা প্রাণীর ছবি তোলে আঁকে) যারা প্রাণবিশিষ্ট প্রাণীর ছবি বা মূর্তি তৈরি করে। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি-মূর্তি তৈরিকারীদের উপর শাস্তি প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮১ পৃষ্ঠা)
(৫৫৭)

وقال النووى رحمة الله عليه قال العلماء تصوير الحيوان حرام شديد التحريم وهو من الكبائر، لانه متوعد عليه بهذا الوعيد الشديد وسواء صنعه لما يمتهن ام لغيره وسواء كان فى ثوب او بساط اودرهم او دينار او فلس او اناء او حائط او غيرها وأما تصوير ماليس فيه صورة حيوان فليس بحرام. (كتاب اللباس باب عذاب المصورين يوم القيامة الجلد ۸ الخفحة ۴۸۱)

অর্থ: হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সমস্ত উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন, প্রাণীর ছবি-মূর্তি তৈরি করা শক্ত হারাম। এবং তা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। কেননা এ ব্যাপারে হাদীছ শরীফ-এ কঠিন শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তা তিরস্কারের জন্য তৈরি করুক অথবা তিরস্কারের জন্য না করুক একই হুকুম। প্রাণীর ছবি-মূর্তি কাপড়ে, বিছানায়, স্বর্ণমুদ্রায়, রৌপ্য মুদ্রায়, টাকা-পয়সায়, পাত্রে, দেয়ালে অথবা যেকোন বস্তুতেই তৈরি করুক না কেন সর্বাবস্থায় তা হারাম হবে। কিন্তু যদি ছবি প্রাণীর না হয় তাহলে হারাম হবে না। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি-মূর্তি তৈরিকারীদের উপর শাস্তি প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮১ পৃষ্ঠা)
(৫৫৮)

(قال ان الذين يصنعون هذه الصور) الحيوانية قاصدين مضاهاة خلق الله (يعذبون يوم القيامة يقال لهم احيوا) اى تعذيبهم ان يقال لهم احيوا (ما خلقتم) امر تعجيز اى انفخوا الروح فى الصورة التى صورتموها وهم لا يقدرون على ذلك فيستمر تعذيبهم (كتاب اللباس باب عذاب المصورين يوم القيامة الجلدة ۸ الصفحة ۴۸۱)

অর্থ: (যারা এই ছবি-মূর্তি তৈরি করে) প্রাণীর ছবি বা মূর্তি। যার উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির সাদৃশ্যতা দাবি করা (তাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে আর বলা হবে এতে প্রাণ দাও) অর্থাৎ শাস্তি দেয়া হবে এবং বলা হবে এতে প্রাণ দাও তোমরা যা তৈরি করেছ) অর্থাৎ উক্ত ছবি বা মূর্তির মধ্যে প্রাণ দিতে তাকিদ করা হবে কিন্তু তারা প্রাণ দিতে পারবে না। অতএব তাদেরকে অনবরত শাস্তি দেয়াই হবে। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি-মূর্তি তৈরিকারীদের উপর শাস্তি প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮১ পৃষ্ঠা)
(৫৫৯)

قال النووى تصوير صورة الحيوان حرام شديد التحريم واما اتخاذه فان كان معلقا على حائط سواء كان له ظل ام لا اوثوبا ملبوسا او عمامة او نحو ذلك فهو حرام (كتاب اللباس باب ما وطئ من التصاوير الجلد ۸ الصفحة ۴۸۲)

অর্থ: হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, প্রাণীর ছবি মূর্তি তৈরি করা শক্ত হারাম। উহা যদি দেয়ালে লটকানো হয় তাও হারাম। তা দেহধারী হোক অথবা দেহধারী নাই হোক, কাপড়ে পোশাকে পাগড়ীতে অথবা যেকোন বস্তুতে হোক না কেন উক্ত হুকুম সমানভাবে হারাম হবে। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি বা মূর্তিকে লাঞ্ছিতকরণ ৮ম খ- ৪৮২ পৃষ্ঠা)
(৫৬০)

ان المنع عام فى كل صورة وانهم يمتنعون من الجميع لاطلاق الاحاديث (كتاب اللباس باب ما وطئ من التصاوير الجلد ۸ الصفحة ۴۸۳(

অর্থ: প্রাণীর ছবি-মূর্তির নিষেধাজ্ঞা আমভাবে সকল প্রাণীর ছবি বা মূর্তির ব্যাপারে। উলামায়ে কিরাম উনারা আমভাবে হাদীছ শরীফসমূহের থেকে এভাবেই নিষেধাজ্ঞা তথা হারামের কথা বলেছেন। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি বা মূর্তিকে লাঞ্ছিতকরণ ৮ম খ- ৪৮৩ পৃষ্ঠা)
(৫৬১)

)الارقما) اى نقشا (فى ثوب) زاد فى رواية عمروبن الحرث قلت لا قال بلى قال النووى يجمع بين الاحاديث بان المراد استثناء الرقم فى الثوب ما كانت الصورة فيه من غير ذوات الارواح كصورة الشجر ونحوها ( كتاب اللباس باب من كره القعود على الصور الجلد ۸ الصفحة ۴۸۳)

অর্থ: (রক্বম ব্যতীত) অর্থাৎ প্রাণহীন বস্তুর নকশা (কাপড়ে থাকলে অসুবিধা নেই) হযরত আমর বিন হারছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হাদীছ শরীফসমূহের সমন্বয় সাধন করে এটাই হুকুম ছাবিত হয় যে, কাপড়ে প্রাণহীন বস্তুর ছবি নকশা করতে কোন অসুবিধা নেই তথা জায়িয রয়েছে। যেমন, গাছ-পালা ও অনুরূপ অন্যান্য জিনিস। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি বা মূতি বিশিষ্ট স্থানে বসা মকরূহ তাহরীমী প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮৩ পৃষ্ঠা)
(৫৬২)

وقال ابن العربى حاصل ما فى اتخاذ الصورة انها ان كانت ذات اجسام حرم بالاجماع وان كانت رقما فاربعة اقوال الجواز مطلقا لظاهر حديث الباب. (كتاب اللباس باب من كره القعود على الصور الجلد ۸ الصفحة ۴۸۳)

অর্থ: হযরত ইবনুল আরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ছূরাত-এর ব্যাপারে মূল ফায়ছালা হলো: ছবি বা মূর্তি যদি প্রাণীর হয় তাহলে তা ইজমা মতে হারাম। আর প্রাণহীন বস্তুর নকশা সম্পর্কে চারটি মত রয়েছে। তন্মধ্যে ১ম মত হলো- হাদীছ শরীফ-এর স্পষ্ট বর্ণনা মুতাবিক প্রাণহীন বস্তুর নকশা বা ছবি জায়িয। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি বা মূর্তি বিশিষ্ট স্থানে বসা মাকরূহ তাহরীমী প্রসঙ্গে ৮ম খ- ৪৮৩ পৃষ্ঠা)
(৫৬৩)

هذا (باب) بالتنوين (لا تدخل الملائكه) المرسلون بالرحمة المستغفرون للمؤمنين (بيتا فيه صورة) كصورة الحيوان من ادمى وغيره مالم تقطع رأسه او يمتهن والمعنى فيه ان متخذها قد تشبه بالكفار لانهم يتخذون الصور فى بيوتهم يعظمونها فكرهت الملائكة ذلك فلم تدخل بيته هجرا له لذلك قاله القرطبى (كتاب اللباس باب لا تدخل الملائكة بيتا فيه صورة الجلد ۸ الصفحة ۴۸۴)

অর্থ: এই (পরিচ্ছেদ) বাবুন শব্দটি তানবীনসহ পড়তে হবে। (ফেরেশতা উনারা প্রবেশ করেন না) রহমতের জন্য প্রেরিত ফেরেশতা যাঁরা মু’মিনদের জন্য ইস্তিগফার করেন (ওই ঘরে যে ঘরে ছবি থাকে) অর্থাৎ প্রাণীর ছবি যেমন মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর ছবি, যার মাথা হয়নি। এখানে উদ্দেশ্য হলো: প্রাণীর ছবির চর্চা কাফিরদের সাথে তাশাব্বুহের শামিল। কেননা তারা তাদের ঘর-বাড়িতে সম্মানের সাথে প্রাণীর ছবি বা মূর্তি রাখে। আর ফেরেশতা উনারা তা অপছন্দ করেন, সেজন্য এমন ঘরে প্রবেশ করেন না। হযরত ইমাম কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইহা বলেছেন। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: ওই সমস্ত ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না যেখানে প্রাণীর ছবি-মূর্তি থাকে ৮ম খ- ৪৮৪ পৃষ্ঠা)
(৫৬৪)

(فقال له) جبريل (انا) يعنى الملائكة (لا تدخل بيتا فيه صورة ولا كلب) قال النووى الاظهر انه عام فى كل صورة وكلب وانهم يمتنعون من الجميع لاطلاق الاحاديث. (كتاب اللباس باب لا تدخل الملائكة بيتا فيه صورة الجلد ۸ الصفحة ۴۸۴)

অর্থ: (উনাকে তিনি বললেন) হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম (নিশ্চয়ই আমরা) ফেরেশতাগণ (ওই সমস্ত ঘরে প্রবেশ করি না যে ঘরে প্রাণীর ছবি ও কুকুর থাকে) হযরত ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এটাই ফতওয়াগ্রাহ্য ফায়সালা যে, প্রাণীর ছবি-মূর্তির নিষেধাজ্ঞা আমভাবে সকল প্রাণীর ছবি বা মূর্তির ব্যাপারে। উলামাগণ আমভাবে হাদীছ শরীফসমূহ থেকে এভাবে নিষেধাজ্ঞা তথা হারামের কথা বলেছেন। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: ওই সমস্ত ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না যেখানে প্রাণীর ছবি-মূর্তি থাকে ৮ম খ- ৪৮৪ পৃষ্ঠা)
(৫৬৫)

وفى دخول البيت الذى فيه الصورة وجهان الاكثرون على الكراهة وقال ابو محمد بالتحريم (كتاب اللباس باب لا تدخل الملائكة بيتا فيه صورة الجلد ۸ الصفحة ۴۸۵)

অর্থ: প্রাণীর ছবি বা মূর্তিবিশিষ্ট ঘরে প্রবেশ সম্পর্কে দু’প্রকার হুকুম পাওয়া যায়। ১. অধিকাংশ উলামায়ে কিরামগণ উনাদের মতে এমন ঘরে প্রবেশ করা মাকরূহ তাহরীমী। এটা হচ্ছে আম বা সাধারণ ফতওয়া ২. হযরত আবূ মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এমন ঘরে প্রবেশ করা হারাম। এটা হচ্ছে খাছ ফতওয়া। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: কারো প্রাণীর ছবি বা মূর্তিবিশিষ্ট ঘরে প্রবেশ না করা ৮ম খ- ৪৮৫ পৃষ্ঠা)
(৫৬৬)

والحاصل مما سبق كراهة صورة حيوان منقوشة على سقف او جدار او وسادة منصوبة او ستر معلق او ثوب ملبوس. (كتاب اللباس باب لا تدخل الملائكة بيتا فيه صورة الجلد ۸ الصفحة ۴۸۵)

অর্থ: মূল সমাধান হলো: প্রাণীর ছবি ছাদে, দেয়ালে, বালিশে, লটকানো পর্দায় অথবা পরিহিত কাপড়ে আঁকা বা ব্যবহার করা মাকরূহ তাহরীমী। যেমনি পূর্বে অনেক স্থানে আলোচিত হয়েছে। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: কারো প্রাণীর ছবি-মূর্তি বিশিষ্ট ঘরে প্রবেশ না করা ৮ম খ- ৪৮৫ পৃষ্ঠা)
(৫৬৭)

وانه يحرم تصوير حيوان على الحيطان السقوف والارض ونسج الثياب (كتاب اللباس باب من لم يدخل بيتا فيه كلب صورة الجلد ۸ الصفحة ۴۸۵(

অর্থ: প্রাণীর ছবি বা মূর্তি দেয়ালে, ছাদে, মাটিতে এবং কাপড়ে আঁকা বা তৈরি করা হারাম। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: কারো প্রাণীর ছবি-মূর্তি বিশিষ্ট ঘরে, প্রবেশ না করা ৮ম খ- ৪৮৫ পৃষ্ঠা)
(৫৬৮)

(ولعن) صلى الله عليه وسلم (اكل الربا وموكله والواشمة والمستوشمة والمصور) للحيوان. (كتاب اللباس باب من لعن المصور الجلد ۸ الصفحة ۴۸٦)

অর্থ: (লা’নত বা অভিসম্পাত বর্ষণ করেছেন) সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সুদ ভক্ষণকারীর উপর, সুদ প্রদানকারীর উপর, অঙ্গে উল্কি অঙ্কনকারী, উল্কি ধারণকারী এবং ছবি তৈরিকারীর উপর) অর্থাৎ প্রাণীর ছবি বা মূর্তি তৈরিকারীর উপর লা’নত। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি অঙ্কণকারীর উপর লা’নত প্রসঙ্গে ৮ম খন্ড ৪৮৬ পৃষ্ঠা)
(৫৬৯)

(فقال) ابن عباس رضى الله تعالى عنهما (سمعت محمدا صلى الله عليه وسلم يقول من صور صورة) ذات ارواح (فى الدنيا كلف يوم القيامة ان ينفخ فيها الروح وليس بنافخ) ابدا فهو معذب دائما (كتاب اللباس باب من صور صورة كلف يوم القيامة ان ينفخ فيها الروح وليس بنافخ الجلد ۸ الصفحة ۴۸٦ )

অর্থ: (বলেছেন) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা (আমি সাইয়্যিদুনা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শ্রবণ করেছি। তিনি ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে ছবি আঁকবে) প্রাণীর ছবি (ক্বিয়ামতের দিন তাকে তাতে প্রাণ দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হবে কিন্তু সে তাতে প্রাণ দিতে পারবে না) এজন্য তাকে সার্বক্ষণিক শাস্তি দেয়া হবে। (অধ্যায়: পোশাক পরিচ্ছেদ: যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি অঙ্কন করবে ক্বিয়ামতের দিন তাতে প্রাণ দেয়ার জন্য তাকে চাপ দেয়া হবে, কিন্তু সে প্রাণ দিতে পারবে না ৮ম খ- ৪৮৬ পৃষ্ঠা)

আল বুখারী বিশরহিল কিরমানী

এ কিতাবখানা লিখেছেন হযরত আল্লামা ইমাম কিরমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
অত্র কিতাবে প্রাণীর ছবি বা মূর্তি ভাস্কর্য সম্পর্কে যা উল্লেখ আছে তা হলো-
(৫৭০)

واما عدم دخولهم بيتا فيه صورة فلكونها معصية فاحشة فيها مضاهاة لخلق الله تعالى (البخارى بشرح الكرمانى كتاب اللباس باب التصاوير الجلد ۲۱ الصفحة ۱۳۳ دار احياء التراث العربى بيروت لبنان)

অর্থ: প্রাণীর ছবিবিশিষ্ট ঘরে ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রবেশ করেন না। কেননা এটা গুনাহ ও অশ্লীলতামূলক কাজ। আর এতে আল্লাহ তায়ালা উনার সৃষ্টির সাদৃশ্যতা হয়ে থাকে। (আল বুখারী বিশরহিল কিরমানী অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি-মূর্তির বিধান ২১তম খ- ১৩৩ পৃষ্ঠা, প্রকাশনা: দারু ইহইয়ায়িত তুরাছিল আরাবী বৈরুত লেবানন)
(৫৭১)

(والتماثيل) جمع تمثال هو الصورة والمراد بها ههنا صورة الحيوان. فان قلت لم كانوا اشد الناس عذابا قلت لانهم يصورون الاصنام للعبادة لها فهم كفرة والكفرة اشدهم عذابا. (كتاب اللباس باب عذاب المصورين يوم القيامة الجلد ۲۱ الصفحة ۱۳۴)

অর্থ: (আত তামাছীল- ছবি) শব্দটি তিমছাল শব্দের বহুবচন। তিমছালকে ছূরাতও বলা হয়। এখানে তামাছীল দ্বারা প্রাণীর ছবি বা মূর্তিকে বুঝানো হয়েছে। তুমি যদি বলো প্রাণীর ছবি তৈরিকারীর কঠিন শাস্তি হবে কেন? উত্তরে আমি বলবো যেহেতু তারা উপাসনার উদ্দেশ্যেই মূর্তি বা প্রাণীর ছবি তৈরি করে। আর এ আমল কুফরীর শামিল। তাই কুফরীর জন্য কঠিন শাস্তি হওয়াই প্রয়োজন। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: ক্বিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি তৈরিকারীদের শাস্তি হবে ২১তম খ- ১৩৪ পৃষ্ঠা)

(৫৭২)

الخطابى: المصور هو الذى يصور اشكال الحيوان والنقاش هو الذى ينقش اشكال الشجر ونحوها. (كتاب اللباس باب من كره القعود على الصورة الجلد ۲۱ الصفحة ۱۳۷)

অর্থ: ইমাম খত্তাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন: মুছাব্বির ওই ব্যক্তিকে বলা হয় যে প্রাণীর ছবি বা মূর্তি তৈরি করে। আর নক্কাশ ওই ব্যক্তিকে বলা হয় যে গাছ-গাছালি ও অনুরূপ উদ্ভিদ বা জড়বস্তুর ছবি আঁকে। অর্থাৎ মুছাব্বির শাস্তির উপযুক্ত, কিন্তু নক্কাশ শাস্তির উপযুক্ত নয়। (অধ্যায়: পোশাক, পরিচ্ছেদ: প্রাণীর ছবি-মূর্তি বিশিষ্ট স্থানে বসা মাকরূহ তাহরীমী ২১তম খ- ১৩৭ পৃষ্ঠা)

(অসমাপ্ত)