(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
فَأُجِيْبَ إِلَى مَا سَأَلَ ، قَالَ : فَضَحِكَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ، أَوْ قَالَ تَـبَسَّمَ، فَـقَالَ لَهٗ حَضْرَتْ أَبُـوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِأَبِيْ أَنْتَ وَأُمِّيْ إِنَّ هٰذِهٖ لَسَاعَةٌ مَا كُنْتَ تَضْحَكُ فِيْـهَا، فَمَا الَّذِيْ أَضْحَكَكَ؟ أَضْحَكَ اللهُ سِنَّكَ قَالَ: إِنَّ عَدُوَّ اللهِ إِبْلِيْسَ، لَمَّا عَلِمَ أَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ، قَدِ اسْتَجَابَ دُعَائِيْ، وَغَفَرَ لأُمَّتِيْ أَخَذَ التُّـرَابَ، فَجَعَلَ يَحْثُـوْهُ عَلَى رَأْسِهِ، وَيَدْعُوْ بِالْوَيْلِ وَالثُّـبُـوْرِ، فَأَضْحَكَنِيْ مَا رَأَيْتُ مِنْ جَزَعِهِ
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা চাইলেন মহান আল্লাহ পাক তিনি সেটাই দিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সম্পূর্ণ দোয়াটাই মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল হিসাবে ঘোষণা দিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
قَالَ : فَضَحِكَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ ، أَوْ قَالَ تَـبَسَّمَ ، فَـقَالَ لَهٗ حَضْرَتْ أَبُـوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِأَبِيْ أَنْتَ وَأُمِّيْ
হযরত আব্বাস ইবনে মিক্বদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাসলেন। তাবাস্সুম অর্থাৎ মুচকি হাসি মুবারক তিনি দিলেন। একটু বড় করে হাসলেন অথবা মুচকি হাসি মুবারক দিলেন। এটা দেখে আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনারা বললেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, আমার পিতা-মাতা, আমাদের পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান।
إِنَّ هٰذِهٖ لَسَاعَةٌ مَا كُنْتَ تَضْحَكُ فِيْـهَا
ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটা কঠিন একটা সময় এখন। সকলে ইস্তেগফার- তওবায় মশগুল। সবাই নিজের ব্যাপারে চিন্তিত। এ একটা কঠিন সময় ইয়া রসূলাল্লাহ ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ সময়তো আপনার স্বাভাবিকভাবে হাসি মুবারক, যেভাবে হাসি মুবারক দিয়েছেন সেভাবে হাসি মুবারক দেয়ার কথা ছিলো না।
فَمَا الَّذِيْ أَضْحَكَكَ؟ أَضْحَكَ اللهُ سِنَّكَ
উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কোন জিনিস আপনাকে এভাবে, অর্থাৎ কোন, কি কারণে আপনি এভাবে হাসি মুবারক দিয়েছেন? যে মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সবসময়ই হাস্যোজ্জ্বল চেহারা মুবারকে রাখুন, এটা উনারা বললেন। এটা শুনে,
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ: إِنَّ عَدُوَّ اللهِ إِبْلِيْسَ، لَمَّا عَلِمَ أَنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ، قَدِ اسْتَجَابَ دُعَائِيْ، وَغَفَرَ لأُمَّتِيْ
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু ইবলিস সে যখন জানতে পারলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার দোয়া কবুল করেছেন, আমার উম্মতদেরকে ক্ষমা করেছেন তখন সে কি করলো?
أَخَذَ التُّـرَابَ، فَجَعَلَ يَحْثُـوْهُ عَلَى رَأْسِهِ، وَيَدْعُوْ بِالْوَيْلِ وَالثُّـبُـوْرِ
ইবলিস যখন সেটা জানতে পারলো যে দোয়া কবুলের ঘোষণা দেয়া হয়েছে এবং উম্মতদেরকে ক্ষমা করা হয়েছে তখন সে কি করলো? কিছু মাটি নিয়ে, কিছু মাটি নিয়ে সে তার মাথায় নিক্ষেপ করতে থাকলো এবং সে তার জন্য হালাকী, ধ্বংস, লা’নত সেটা সে বলতেছিল এবং তার মাথায় মাটি নিক্ষেপ করতেছিল। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
فَأَضْحَكَنِيْ مَا رَأَيْتُ مِنْ جَزَعِهِ
ইবলিসের এই অস্থিরতা, এই লাঞ্ছনা- গঞ্ছনা, তার এ অপমান, সে যে লা’নতগ্রস্ত সে বিষয়টাই আমাকে হাসিয়ে তুলেছে। সুবহানাল্লাহ! সে যে অস্থির হয়ে, লাঞ্ছিত হয়ে, অপমানিত হয়ে মাটি নিক্ষেপ করতেছিল তার মাথার মধ্যে। সে তাকে লা’নত দিচ্ছে, সে যে বদ বখত্, বদ নছীব সে যে প্রকাশ করতেছে, তার জন্য জাহান্নাম সে বলতেছে তার এই অবস্থাটা আমাকে হাসিয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
এখানে যে বিষয়টা সেটা হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন দোয়া মুবারক করলেন যে, আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনি আমার উম্মতকে ক্ষমা করে দিন। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন যে হঁ্যা, ক্ষমা করে দিলাম তবে হক্কুল ইবাদ ব্যতীত। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, ঠিক আছে আমার যেটা হক্ব রয়েছে আমি সেটা ক্ষমা করে দিবো। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু হক্কুল ইবাদ যেটা রয়েছে যারা জালিম, যারা জুলুম করেছে সেটাতো আমি মজলুমের পক্ষ থেকে তাকে পাকড়াও করবো। এটা যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন-
أَيْ رَبِّ إِنْ شِئْتَ أَعْطَيْتَ الْمَظْلُوْمَ مِنَ الْجَنَّةِ
আয় মহান আল্লাহ পাক! এখন যদি এমনই হয়ে থাকে অনেক বান্দা ইন্তেকাল করেছে, বান্দি ইন্তেকাল করেছে হয়ত তারা জুলুম করেছিল তাহলে তাদের কি ফায়সালা হবে? অথবা কেউ জুলুম করলো সে ক্ষমা চাইতে পারলো না, সে ইস্তেগফার-তওবা করলো। অথবা কেউ কারো ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়ী, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছিলো সে তখন বুঝতে পেরেছিল, সে ইস্তেগফার-তওবা করেছিল কিন্তু সে ফিরিয়ে দিতে পারেনি। হয়ত সে খরচ করে ফেলেছে তার সামর্থ ছিলো না তাহলে তার কি ফায়সালা হবে? এখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, উনার যে হক্কুল্লাহ নামায-কালাম, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি হক্কুল্লাহ যেটা রয়েছে সেটা হয়ত ত্রুটি করলে সে যদি খালেছ ইস্তেগফার- তওবা করে। তার অনেক বছরের নামায যদি বাকি থাকে, বিশ ত্রিশ চল্লিশ বছরের সে সেটা আদায় করতে থাকলো। দুই বছর আদায় করে সে যদি ইন্তেকাল করে, অথবা অনেক বছরের যাকাত তার বাকি হয়ে গেছে সে আদায় করতে পারেনি। সে আদায় করা শুরু করলো, খালেছ তওবা করলো হয়ত পুরাটা পারলো না, তার ইন্তেকাল হয়ে গেল। অথবা তার হজ্জ ফরয হয়েছিল সে হজ্জ আদায় করেনি। পরে তওবা-ইস্তেগফার করেছে কিন্তু তার সামর্থ হয়নি, টাকা-পয়সা হয়নি, বা ব্যবস্থা হয়নি সে হজ্জ করতে পারেনি। অথবা অনেক রমাদ্বান শরীফের রোযা তার বাকি রয়েছে সে সেটা কাজা করেছিল, আদায় করতে পারেনি। কিছু আদায় করেছিল এ অবস্থায় তার ইন্তেকাল হলো, সে খালেছ তওবা-ইস্তেগফার করেছে সমস্ত আমলের ব্যাপারেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হক্কুল্লাহ যেটা রয়েছে ঠিক আছে, সে যদি খালেছ ইস্তেগফার- তওবা করে তাহলে আমার সমস্ত হক্কুল্লাহ যেটা রয়েছে আমি সেটা ক্ষমা করে দিলাম। সুবহানাল্লাহ! একমাত্র নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে। সুবহানাল্লাহ! (অসমাপ্ত)