-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
‘মুহ্ইস সুন্নাহ’ লক্বব মুবারক প্রসঙ্গেঃ
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর জিন্দাকৃত বা পুনঃ প্রচলন করা কতিপয় সুন্নতের বিবরণঃ
(৪) ক্বমীছ বা জামা
قميص (ক্বমীছ) অর্থ জামা, কোর্তা। কোর্তা পরিধান করা খাছ সুন্নত। আল্লাহ পাক এর- হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারক পরিধান করেছেন। খাছ সুন্নত বলতে সাধারণতঃ আল্লাহ পাক-এর হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা করেছেন তাকেই বুঝানো হয়। কোর্তা পরিধান করা দায়িমী সুন্নতের অন্তর্র্ভুক্ত। কিন্তু সেই কোর্তা মুবারক কেমন ছিল? তার রং কিরূপ ছিল? তার আকার-আকৃতি কিরূপ সে সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। কারণ ইহুদী-নাছারা, মজুসী-মুশরিকদের সাথে সাদৃশ্য রাখে এরূপ কোর্তা পরিধান করা জায়িয নেই। তাছাড়া আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কোর্তা মুবারকের সাথে সাদৃশ্যহীন কোর্তা পরিধান করাতে কোন ফায়দা নেই। নৈকট্য নেই, সন্তুষ্টি নেই।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ্, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ্ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কোর্তা মুবারক পরিধান করতেন তা ছিল লম্বা, নিছফুস্সাক, সূতী, সাদা এবং গোল তথা কোনা বন্ধ। তা কখনো কোনা ফাঁড়া ছিলনা। যার মধ্যে কাপড় বা সূতার তৈরী গুটলী ছিল। মিশরীয় সূতী কাপড় ছিল উনার সবচেয়ে বেশী প্রিয়। অবশ্য সাদা ছাড়া রঙ্গিন কাপড়ের জামা মুবারকও তিনি পরিধান করেছেন। তবে তা কম। সাদা রংয়ের কোর্তা মুবারকই বেশি পরিধান করেছেন।”
হযরত আবূযর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর বর্ণিত হাদিছ শরীফ খানা সেদিকে দালালত (নির্দেশ) করে তিনি বলেন-
اتيت النبى صلى الله عليه وسلم وعليه ثوب ابيض.
অর্থঃ- “একদিন আমি আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে গেলাম তখন তিনি সাদা কাপড় পরিহিত ছিলেন।” (বুখারী শরীফ-২/৮৬৭)
উল্লেখ্য যে, হক্কানী রব্বানী আলিমগণ হচ্ছেন নবী-রসূল আলাইহিস্ সালামগণের ওয়ারিশ। তাঁদের দ্বারা ইসলাম জারী থাকে, ইসলাম জিন্দা হয়। কিন্তু তাঁদের ছদ্মাবরণে উলামায়ে ‘ছূ’ দুনিয়াদার মাওলানারা দ্বীনের জন্য হুমকী স্বরূপ। তাদের দ্বারা দ্বীন ধ্বংস বা বিলীন হয়। বিদয়াত জারী হয়। উলামায়ে ‘ছূ’দের সেই হিংস্র থাবা মুসলমানদের লিবাস-পোষাকের উপরও পড়েছে। তারা খাছ সুন্নতী পোষাক ছেড়ে দিয়ে নিজেদের খেয়াল-খুশীমত পোষাক-পরিচ্ছদ পরিধান করা জারী করে এবং এ ব্যাপারে জোর তৎপরতা চালায়। কেউ কেউ তাদের খেয়াল-খুশীর পোষাককেই খাছ সুন্নতী পোষাক বলে মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালায়।
উলামায়ে ‘ছূ’রা খাছ সুন্নতী কোর্তাকে “মেয়েদের পোষাক” বলে প্রচার করে ঈমান হারাচ্ছে। সাথে সাথে সাধারণ মানুষদের ঈমান হরণ করার জন্য নিত্য নতুন কথা সংযোগ করছে। তারা সাধারণ মানুষদের মাঝে এমন কুফরী মূলক বক্তব্য ছড়িয়ে দিচ্ছে যে, “আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যুগের চাহিদা অনুযায়ী, মৌসুমের চাহিদা মুতাবিক যখন যে পোষাক পেতেন তাই পরিধান করতেন।” (নাউযুবিল্লাহ্) “সবধরনের পোষাক পরিধান করা সুন্নত। ইসলামে পোষাকের নির্দিষ্ট কোন বর্ণনা নেই।” অথচ তাদের এ বক্তব্য সরাসরি আল্লাহ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরাসলীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি মিথ্যারোপের শামিল। সাথে সাথে “দ্বীন ইসলামকে নাক্বিছ বা অপূর্ণাঙ্গ সাব্যস্ত করার নামান্তর। যা শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে কাট্টা কুফরী।” (চলবে)