وَاِذَا قِيْلَ لَـهُمُ اتَّبِعُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللهُ قَالُوْا بَلْ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلْفَيْنَا عَلَيْهِ اٰبَآءَنَا اَوَلَوْ كَانَ اٰبَآؤُهُمْ لَا يَعْقِلُوْنَ شَيْئًا وَّلَا يَهْتَدُوْنَ
তরজমাঃ যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ পাক যা নাযিল করেছেন তা তোমরা অনুসরণ কর। তখন তারা বলে, কখনই নয়, বরং আমরা আমাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি তার অনুসরণ করবো। যদিও তাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিল না এবং তারা সৎ পথে পরিচালিত ছিল না। (সূরা বাক্বারা-১৭০)
তাফসীর: বান্দাদের জন্য যেমনিভাবে তাদের যিনি খালিক, মালিক, রব আল্লাহ পাক-এর হুকুম, আদেশ-নিষেধ মান্য করা ফরয ঠিক তেমনি উম্মতের জন্য তাদের যিনি নবী-রসূল অর্থাৎ যিনি আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুম, আদেশ-নিষেধ মেনে চলাও ফরযের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-
اَطِيْعُوا اللّٰهَ وَرَسُوْلَه اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
অর্থঃ যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক তাহলে আল্লাহ পাক এবং তাঁর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইতায়াত বা অনুসরণ কর। (সূরা আনফাল-১)
অর্থাৎ প্রত্যেক মু’মিন বান্দা ও উম্মতের জন্য আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মত ও পথে চলা তথা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর আদেশ-নিষেধ অনুযায়ী চলা অপরিহার্য। এই আদেশ-নিষেধ মুতাবিক যখন কোন মুসলমান চলবে কেবল তখনই সে রহমত ও নাজাত লাভ করবে। ইরশাদ হয়েছে-
اَطِيْعُوا اللّٰهَ وَالرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ
অর্থঃ আল্লাহ পাক ও রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইতায়াত কর অর্থাৎ আদেশ-নিষেধ মুতাবিক চল; অবশ্যই তোমরা রহমত লাভ করবে।
আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইতায়াত বা অনুসরণ বান্দা ও উম্মত কিভাবে করবে আল্লাহ পাক সেটাও তাঁর পাক কালামে জানিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-
اَطِيْعُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَاُولِى الْاَمْرِ مِنْكُمْ
অর্থঃ আল্লাহ পাক-এর ইতায়াত কর এবং রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইতায়াত কর এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর তাঁদের ইতায়াত কর।
এখানে ইতায়াত বা অনুসরণের পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাককে দেখে, উনার থেকে জেনে, শুনে, বুঝে আমল করেছেন। আর আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখে, উনার থেকে জেনে, শুনে, বুঝে আমল করেছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ। কিন্তু পরবর্তী উম্মত যাকে দেখে এবং যার থেকে জেনে শুনে বুঝে আমল করবে তাঁরা হচ্ছেন যামানার মুজাদ্দিদ ও ইমাম।
আয়াতে কারীমার মধ্যে উলিল আমর বলতে মূলতঃ খাছভাবে যারা যামানার মুজাদ্দিদ ও ইমাম তাঁদেরকেই বুঝানো হয়েছে। এজন্য হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
مَنْ لَّمْ يَعْرِفْ اِمَامَ زَمَانِه فَقَدْ مَاتَ مَيْتَةَ الْجَاهِلِيَّةِ .
অর্থঃ যে ব্যক্তি তার যামানার ইমাম বা মুজাদ্দিদকে চিনলো না সে জাহিলী যুগের মৃত্যুর ন্যায় মৃত্যু বরণ করবে। (মুসলিম শরীফ)
হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ কিতাব আবূ দাঊদ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক প্রতি হিজরী শতাব্দীর শুরুভাগে একজন মুজাদ্দিদ প্রেরণ করেন।
হাদীছ শরীফ-এর নির্দেশ অনুযায়ী হিজরী প্রথম শতাব্দী অর্থাৎ ছাহাবীগণের যুগ বাদ দিয়ে পরবর্তী হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে শুরু করে প্রত্যেক শতাব্দীতে আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ক্বায়িম-মাকাম হিসেবে একজন মুজাদ্দিদ প্রেরণ করে আসছেন। এবং সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান হিজরী পঞ্চদশ বা পনের শতকের যিনি মুজাদ্দিদ তিনি হলেন মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী।
অতএব, বতর্মান সময়ে কেউ যদি সত্যিই আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পরিপূর্ণ ইতায়াত বা অনুসরণ করতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে যামানার মহান মুজাদ্দিদ ও ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ছোহবতে আসতে হবে। এবং তাঁকে অনুসরণ করার মধ্য দিয়ে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইতায়াত বা অনুসরণ করার কোশেশ করতে হবে এবং তখনই তার পক্ষে প্রকৃত মু’মিন-মুসলমান হওয়া সহজ ও সম্ভব হবে। এবং তখনই সে রহমত ও নাজাত লাভে সক্ষম হবে।
তাফসীরুল কুরআন: যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৬
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৭
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৮
তাফসীরুল কুরআন: যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ১০
তাফসীরুল কুরআন: যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ১১