وَاِذَا قِيْلَ لَـهُمُ اتَّبِعُوْا مَاۤ اَنْزَلَ اللهُ قَالُوْا بَلْ نَتَّبِعُ مَاۤ اَلْفَيْنَا عَلَيْهِ اٰبَآءَنَا اَوَلَوْ كَانَ اٰبَآؤُهُمْ لَا يَعْقِلُوْنَ شَيْئًا وَّلَا يَهْتَدُوْنَ
তরজমাঃ যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ পাক যা নাযিল করেছেন তা তোমরা অনুসরণ কর। তখন তারা বলে, কখনই নয়, বরং আমরা আমাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি তার অনুসরণ করবো। যদিও তাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিল না এবং তারা সৎ পথে পরিচালিত ছিল না। (সূরা বাক্বারা-১৭০)
তাফসীরঃ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-
تركت فيكم امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وسنة رسوله.
“আমি তোমাদের নিকট দু’টি জিনিষ রেখে যাচ্ছি সে দু’টিকে আকড়ে ধরে থাকলে তোমরা কখনই গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হলো আল্লাহ পাক-এর কিতাব- কুরআন শরীফ। আর দ্বিতীয়টি হলো আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নত বা হাদীছ শরীফ। (মুয়াত্তা শরীফ, মিশকাত শরীফ, মাছাবীহুস্ সুন্নাহ)
আল্লাহ পাক-এর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এত স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়ার পর উম্মতে ইজাবত অর্থাৎ যারা আল্লাহ পাক-এর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ঈমান এনেছে, উনার আনিত বিষয়কে স্বীকার করে নিয়েছে, উনাকে নবী, রসূল, হাবীবুল্লাহ হিসেবে মেনে নিয়েছে তারপর আবার কি করে কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর আদেশ-নিষেধ না মেনে, গ্রহণ না করে বেদ্বীন-বিজাতীয়, কাফির-মুশরিকদের নিয়ম-নীতি তর্জ-তরীকা গ্রহণ করতে পারে। তারা কি সেই হাদীছ শরীফ সম্পর্কে জানে না যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
لو تركتم سنة نبيكم لضللتم
“যদি তোমরা তোমাদের নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নতকে তথা আদেশ-নিষেধকে ত্যাগ বা তরক কর তাহলে অবশ্যই তোমরা গোমরাহ হয়ে যাবে।” (নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)
এবং সেই হাদীছ শরীফও কি তারা জানে না যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
لو تركتم سنة نبيكم لكفرتم
“যদি তোমরা তোমাদের নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নতকে ত্যাগ বা তরক কর তাহলে অবশ্যই তোমরা কাফির হয়ে যাবে।” (আবূ দাউদ শরীফ)
আফসুস! নামধারী মুসলমানদের জন্য। আজ দেশ তথা সারা বিশ্বে সাধারণ মুসলমান থেকে শুরু করে যারা খাছ দাবি করছে সেই মাওলানা, মুফতী, মুহাদ্দিছ, মুফাস্সির, শায়খুল হাদীছ, শায়খুত তাফসীর, ইমাম, খতীব, ছূফী-দরবেশ, পীর-মাশায়িখ, আমীর, মুরুব্বী সকলেই আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশ-নিষেধের খিলাফ গোমরাহী ও কুফরী কাজে মশগুল হয়ে পড়েছে। নাঊযুবিল্লাহ।
তারা ইহুদী-নাছারাদের প্রবর্তিত গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন করছে। নাঊযুবিল্লাহ। কট্টর হিন্দু মহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর প্রবর্তিত হরতাল করছে। নাঊযুবিল্লাহ। নাস্তিক মাওসেতুংয়ের প্রবর্তিত ব্লাসফেমী আইন তলব করছে। নাঊযুবিল্লাহ। এমনিভাবে তারা কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা, বেদ্বীন-বিজাতীয়দের অনুসরণে কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর আদেশ লঙ্ঘন বা অমান্য করে ছবি তুলছে। নাঊযুবিল্লাহ। টিভি দেখছে ও টিভিতে প্রোগ্রাম করছে। নাঊযুবিল্লাহ। বেপর্দা হচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ। খেলাধুলা করছে ও দেখছে। নাঊযুবিল্লাহ। গান-বাজনা শুনছে ও দেখছে। নাঊযুবিল্লাহ।
অথচ আল্লাহ পাক এসব বিদ্য়াত-বেশরা’ হারাম ও কুফরী বিষয় গ্রহণ করার পরিণতি সম্পর্কে কালাম পাক-এ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে-
من يبتغ غير الاسلام دينا فلن يقبل منه وهو فى الاخرة من الخاسرين.
“যে ব্যক্তি ইসলাম তথা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম তথা ইহুদী-নাছারা, কাফির-মুশরিকদের ধর্ম ও মতবাদের নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা তালাশ করবে বা পালন করবে তার থেকে সেটা কখনোই কবুল করা হবে না। এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থাৎ জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সূরা আলে ইমরান-৮৫)
কাজেই, মুসলমান হয়ে আজকে যারা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ কাজে মশগুল হয়ে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির দিকে ধাবিত হচ্ছেন তাদের সবাইকে যামানার মহান মুজাদ্দিদ ও ইমাম, আওলাদে রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী খালিছ তওবা-ইস্তিগ্ফার করে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
তাফসীরুল কুরআন: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল
তাফসীরুল কুরআন: মুসলমানের জন্য ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম ও মতবাদের নিয়ম-নীতি গ্রহণ করা কুফরী