তাফসীরুল কুরআন: সুমহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

সংখ্যা: ২৬৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

 

يَاَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِّمَا فِىْ الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ. قُلْ بِفَضْلِ اللّـهِ وَبِرَحْمَتِه فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّـمَّا يَجْمَعُوْنَ

তরজমা: “হে মানুষেরা! তোমাদের রব তায়ালা উনার তরফ থেকে তোমাদের নিকট এসেছেন মহান নছীহতকারী, অন্তরের মহান আরোগ্য দানকারী, মহান হিদায়েত দানকারী এবং মু’মিনদের জন্য মহান রহমত দানকারী। (অতএব, আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ফদ্বল ও সম্মানিত রহমতস্বরূপ আপনাকে যে তারা পেয়েছে, সেজন্য তাদের প্রতি কর্তব্য তথা ফরয হচ্ছে খুশি প্রকাশ করা। এই খুশি প্রকাশের ইবাদত মুবারক হবে তাদের সমস্ত ইবাদত বা আমল অপেক্ষা উত্তম বা শ্রেষ্ঠ।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭, ৫৮)

তাফসীর: উক্ত পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ উনার ৫৭ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে-

موعظة – شفاء – هدى – رحمة

প্রত্যেক শব্দ মুবারকই হচ্ছে ইসমে মাছদার বা ক্রিয়ামূল। আর ইসমে মাছদার সাধারণত ইসমে ফায়িল (কর্তৃবাচ্য) ও ইসমে মাফউল (কর্মবাচ্য) উভয় অর্থের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে আলোচ্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উক্ত প্রত্যেক শব্দ মুবারক ইসমে ফায়িল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং প্রত্যেক শব্দ মুবারক দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।

শুধু তাই নয়, পরবর্তী ৫৮ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে-

بفضل الله وبرحمته

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ফদ্বল ও সম্মানিত রহমত দ্বারাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই বুঝানো হয়েছে। বিশেষ করে

فضل الله (ফাদ্বলুল্লাহ)

কালাম মুবারক দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে। তা তাফসীরে রূহুল মায়ানী, তাফসীরে মুহাররারুল ওয়াজীয, তাফসীরে মানার, তাফসীরে বয়ানুল  মায়ানী, তাফসীরে কবীর, তাফসীরে যাদুল মাসীর ইত্যাদি কিতাবসমূহে বর্ণিত রয়েছে। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে কায়িনাতবাসীর প্রতি রহমত স্বরূপ প্রেরিত হয়েছেন, তা তো সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যেই ইরশাদ মুবারক হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَمَا اَرْسَلْنَاكَ اِلَّا رَحْمَةً لِلْعَالَمِيْنَ

অর্থ: আমি আপনাকে সমস্ত আলমের (জাতের) জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি। (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৭)

কাজেই, যারা উক্ত শব্দ মুবারকসমূহ দ্বারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, ঈমান, ইসলাম, হিদায়েত, ইলিম, তাওফীক্ব ইত্যাদি তাফসীর বা ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছেন ও করে থাকেন। উনারা প্রত্যেকেই স্বীয় বুঝ অনুযায়ী করেছেন ও করে থাকেন; তবে উনাদের ব্যাখ্যাই যে চূড়ান্ত তা কিন্তু নয় আর পবিত্র কুরআন শরীফ উনার তাফসীর বা ব্যাখ্যা করা শেষও হয়নি। বরং পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ব্যাখ্যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত হতেই থাকবে। তন্মধ্যে যার ব্যাখ্যা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অধিক মুয়াফিক হবে উনার ব্যাখ্যাই বেশি নির্ভরযোগ্য হিসেবে গণ্য ও গ্রহণযোগ্য হবে।

অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, উক্ত শব্দ মুবারকসমূহ দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই বুঝানো পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের সবচেয়ে বেশি মুয়াফিক।

কেননা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, সম্মানিত ঈমান, সম্মানিত ইসলাম, হিদায়েত, সম্মানিত ইলিম, সম্মানিত তাওফীক্ব ইত্যাদি প্রতিটি বিষয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত। উনাকে ব্যতীত উক্ত বিষয়সমূহ অস্তিত্বহীন এবং তা জিন-ইনসানের জন্য নাজাত ও কামিয়াবীর উসীলাও হবে না। তার উদাহরণ আবু জাহিল, আবু লাহাব, উতবা, শায়বা প্রমুখ কুরাইশ কাফির এবং ৭২টি বাতিল ফিরক্বা ও গিরিশ চন্দ্র সেন।

উল্লেখ্য, অনেকজন ও ছূরতান নামকরা মুফাসসির উনাদের ব্যাখ্যাই যে নির্ভরযোগ্য হবে, তা কিন্তু না। উনাদের কোনো কোনো ব্যাখ্যা নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে। আর আরবী ভাষায় ব্যাখ্যা করা হলে তা যে নির্ভরযোগ্য হবে আর অন্য ভাষায় ব্যাখ্যা করা হলে তা নির্ভরযোগ্য হবে না; এ ধারণাও শুদ্ধ নয়। বরং তাফসীরকারক বা  ব্যাখ্যাকারীর ব্যাখ্যা নির্ভরযোগ্য হওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার কতখানি নিসবত-তায়াল্লুক ছিল বা রয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে যার নিসবত যতবেশি হবে উনার ব্যাখ্যাও ততবেশি বিশুদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য হবে।

 তাফসীরুল কুরআন ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের বুযুর্গী

 তাফসীরুল কুরআন: হিদায়েত আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী

তাফসীরুল কুরআন: হিদায়েত আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী

 তাফসীরুল কুরআন: হিদায়তে আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী

তাফসীরুল কুরআন