-পীরে কামিল, হাফিয, ক্বারী, মুফতী,আলহাজ্জ হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা
ساصرف عن ايتى الذين يتكبرون فى الارض بغير الحق وان يروا كل اية لايؤمنوا بها وان يروا سبيل الرشد لايتخذوه سبيلا وان يروا سبيل الغى يتخذوه سبيلا ذلك بانهم كذبوا بايتنا وكانوا عنها غفلين والذين كذبوا بايتنا ولقاء الاخرة حبطت اعمالهم هل يجزون الا ما كانوا يعملون.
তরজমাঃ পৃথিবীতে যারা অন্যায়ভাবে গর্ব-অহংকার করে বেড়ায়, তাদের দৃষ্টি আমার নিদর্শনাবলী হতে শিঘ্রই ফিরিয়ে দিব, ফলে তারা আমার প্রত্যেকটি নিদর্শন দেখলেও ওতে বিশ্বাস করবেনা। তারা সৎ পথ দেখলেও ওকে পথ বলে গ্রহণ করবে না। কিন্তু তারা ভ্রান্ত পথ দেখলে সেই পথ ধরবে। এটা এ কারণে যে, তারা আমার নিদর্শনসমূহকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং সে সম্বন্ধে তারা উদাসীন ছিল। যারা আমার নিদর্শনসমূহ ও পরকালের সাক্ষাতকে মিথ্যা বলে, তাদের কার্য নিষ্ফল হয়েছে। তারা যা করছে তদানুযায়ী তাদের প্রতিফল দেয়া হবে। (সূরা আ’রাফ/১৪৬, ১৪৭) তাশরীহঃ পূর্ববর্তী আয়াত শরীফে অত্যাধিক উপকারী নিয়ামত ‘আসমানী কিতাব’ প্রদানের আলোচনা রয়েছে। এখন ঐ ধ্বংসাত্মক রোগ ব্যধির বিষয় বর্ণনা করা হচ্ছে যার কারণে ঐ নিয়ামত থেকে উপকার অর্জন করা সম্ভব নয়। আর ঐ রোগটি হলো তাকাব্বুর, গুরুর বা গর্ব-অহংকার। কারণ, কুদরতী নিয়ম হলো, আসমানী নিয়ামত দ্বারা উপকার হাছিল করতে হলে যে যোগ্যতা প্রয়োজন, তা হলো আযীযী, ইনকিসারী, তাওয়াদ্বুু’ বা বিনয়-নম্রতা। কিন্তু অহংকার নামক ধ্বংসাত্মক বিষ ‘নম্রতা’ কে অংকুরেই বিনষ্ট করে দেয়। ফলে আসমানী নিয়ামতের ধারক ও বাহক নবী ও রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ ধারণ করতে অক্ষম হয়েই ঐ মহান নিয়ামত-এর হাক্বীক্বী স্বাদ উপলব্ধি করা থেকে বঞ্চিত হয়ে যায়। অথচ, ওহীর মমার্থ ও রহস্যের সন্ধান আহলুল্লাহগণের অন্তর দৃষ্টির ছত্রছায়ায় অবগাহন ব্যতীত কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। উদ্ধৃত অংশে মূলতঃ হতভাগ্য অহংকারীদের বিপজ্জনক পরিণতির কথাই উল্লেখ করা হয়েছে এভাবে যে, যারা পৃথিবীতে নাহক্ব বা অন্যায়ভাবে দম্ভ-অহংকার করে বেড়ায়, অর্থাৎ ক্ষুদ্র হওয়া সত্বেও নিজেকে বড়ত্ব হিসাবে যাহির করে আল্লাহ পাক তাদেরকে হক্ব বা সত্য থেকে চিরবঞ্চিত করে রাখবেন। যেহেতু, তারা না হক্বকেই হক্ব মনে করে নিয়েছে। হাদীছে কুদসী শরীফে আল্লাহ পাক বলেন, “আমি আমার বান্দার ধারণার অনুরূপ। ফলে, আল্লাহ পাক বলেন,
فلما زاغوا ازاغ الله قلوبهم.
অর্থাঃ- “যখন তারা বক্র হলো, আল্লাহ পাকও বক্র করে দিলেন তাদের অন্তরগুলোকে। অর্থাৎ তারা বক্র হওয়ার কারণেই তাদের অন্তগুলো বক্র হয়ে গেল।” (সূরা ছফ/৫) বলাবাহুল্য যে, তাকাব্বুর বা অহংকার তিন প্রকার হতে পারে। যথা- (১) আল্লাহ পাক ও রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধে তাকাব্বুর যা সারাসার কুফরী, (২) মুসলমানদের বিরুদ্ধে তাকাব্বুর যা হারাম এবং (৩) কাফিরদের বিরুদ্ধে তাকাব্বুর যা বিশেষতঃ জিহাদের ক্ষেত্রে ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। প্রথম দু’প্রকার তাকাব্বুর নাহক্ব বা অন্যায়। আর তৃতীয় প্রকার তাকাব্বুর হক্ব বা সঠিক/সত্য। এ জন্যেই আলোচ্য আয়াত শরীফে بغير الحق ইরশাদ হয়েছে। অতএব, প্রত্যেক মু’মিন ব্যক্তির আল্লাহ পাক-এর বেনিয়াযীকে (বেপরওয়া শানকে) ভয় করা উচিত। কারণ, ফিরআউন তার ঘরেই হযরত মুসা আলাইহিস্ সালামকে রেখেছিল, কিন্তু তার ঈমান নছীব হয়নি। অথচ ঐ ঘরে হযরত আছিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাও ছিলেন, তিনি হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম-এর বরকতে ঈমান ও ঈমানিয়্যাত দ্বারা সম্মানিতা হয়ে গেলেন। এমনিভাবে হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম-এর লাঠি, ইয়াদে বায়দ্বা, রক্ত, ব্যাঙ, তুফান, ছারপোকা ইত্যাদি এতোগুলো মু’জিযা দেখা সত্বেও ফিরআউন ঈমান আনতে পারেনি। পক্ষান্তরে তার যাদুকররা কিছু সময় হযরত মুসা আলাইহিস্ সালাম-এর ছোহবতে হাযির ছিল আর মাত্র একটা মু’জিযা দেখেই মু’মিন, আরিফ সব কিছুই হয়ে গেল। হ্যাঁ, এটাই আল্লাহ পাক-এর বেনিয়াযীর প্রত্যক্ষ শান যা উর্দু কবির ভাষায় ব্যক্ত হয়েছে এভাবে-
উদূ লেখা ঢুকবে………………….
অর্থাৎ- “কাছে থেকেও দূরে (যেমন আবূ জাহিল) পক্ষান্তরে দূরে থেকেও কাছে (যথা ওয়াইস ক্বরনী রহমতুল্লাহি আলাইহি)।” (অসমাপ্ত)
তাফসীরুল কুরআন ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের বুযুর্গী
তাফসীরুল কুরআন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল
তাফসীরুল কুরআন ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের বুযুর্গী
তাফসীরুল কুরআন: হিদায়েত আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী
তাফসীরুল কুরআন: হিদায়তে আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী