তাফসীরুল কুরআন

সংখ্যা: ২৪৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

তাফসীরুল কুরআন


 

সুমহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

يايها الناس قد جاءتكم موعظة من ربكم وشفاء لـما فى الصدور وهدى ورحمة للمؤمنين. قل بفضل الله وبرحمته فبذلك فليفرحوا هو خير مـما يجمعون.

তরজমা: হে মানুষেরা! তোমাদের রব তায়ালা উনার তরফ থেকে তোমাদের নিকট এসেছেন নছীহতকারী, অন্তরের আরোগ্য দানকারী, হিদায়েত দানকারী এবং মু’মিনদের জন্য রহমত দানকারী। (অতএব হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফদ্বল ও রহমত স্বরূপ আপনাকে যে তারা পেয়েছে, সেজন্য তাদের উচিত খুশি প্রকাশ করা। এই খুশি প্রকাশের আমলটি হবে তাদের সমস্ত নেক আমল অপেক্ষা উত্তম বা শ্রেষ্ঠ। (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)

ধারাবাহিক

তাফসীর: মানুষ যে সমস্ত আমল বা ইবাদত করে তা একদিন না একদিন বন্ধ হয়ে যাবে অর্থাৎ মানুষ বেঁচে থাকা পর্যন্ত তার ইবাদত জারী থাকবে অন্যথায় তার ইবাদত জারী থাকবে না। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে যেই ইবাদত মুবারকের সম্পর্ক তা কখনোই বন্ধ হবে না। আর উক্ত ইবাদত মুবারকই হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে ছলাত শরীফ পাঠ করা অর্থাৎ উনার ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করা। সুবহানাল্লাহ!

মোটকথা, মহান আল্লাহ পাক তিনি একদিকে উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে নিজেই দায়িমীভাবে ছানা-ছিফত মুবারক করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকালব্যাপী ছানা-ছিফত মুবারক করে যাবেন। আরেকদিকে তিনি কায়িনাতবাসী সকলকে উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক দায়িমীভাবে করার জন্য আদেশ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

تعزروه وتوقروه وتسبحوه بكرة واصيلا

অর্থ: নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তোমরা খিদমত মুবারক করো, উনাকে সম্মান মুবারক করো এবং সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ সবসময়ের জন্য তথা দায়িমীভাবে উনার ছানা-ছিফত মুবারক করো। (পবিত্র সূরা ফাতাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারণে উম্মতের জন্য বেমেছালভাবে, সীমাহীনভাবে, সবচাইতে বেশি আনন্দিত হওয়া উচিত, খুশি প্রকাশ করা উচিত, ঈদ পালন করা উচিত তথা ফরয।

কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্যেই উম্মতের সৃষ্টি হয়েছে। উনার ওসীলায় উম্মতের পক্ষে যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে চেনা ও জানা সম্ভব হয়েছে সর্বোপরি উনার কারণে উম্মত ঈমান পেয়েছে, হিদায়েত পেয়েছে। ফলে উম্মত জাহান্নামের কঠিন শাস্তি, লা’নত ও অসন্তুষ্টি থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পাশাপাশি জান্নাতের নাজ-নিয়ামত ও সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করে যাচ্ছে। সুবহানাল্লাহ!

উক্ত খুশি মুবারক প্রকাশের সুমহান আমল বা ইবাদত মুবারককে যামানার লক্ষস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষস্থল আওলাদে রসূল, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, হুজ্জাতুল ইসলাম, ক্বইয়ূমুয যামান, সুলত্বানুন নাছীর, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়ুল আউওয়াল, মুজাদ্দিদ আ’যম, ইমামুল উমাম, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ হিসেবে তাজদীদ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!

প্রসঙ্গত উল্লেখপূর্বক তিনি বলেন, “কোনো লোকের সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সে খুশি হয়, বিবাহ-শাদীতে খুশি হয়, চাকরি পেলে খুশি হয়, ব্যবসায় লাভ হলে খুশি হয়, বিপদ থেকে বেঁচে গেলে খুশি হয়, সুন্দর করে ঘর-বাড়ি করতে পারলে খুশি হয়, জায়গা-জমি কিনতে পারলে খুশি হয়, কোনো মর্যাদা কিংবা পদ লাভ করলে খুশি হয়, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ বা বের হলে খুশি হয়, বিশেষ করে মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার যেদিন ফল প্রকাশ হয় সেদিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রী ও তার অভিভাবক, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন খুশি হয়ে মিষ্টি কিনে বিতরণ করে থাকে ও খেয়ে থাকে। তারা এতো খুশি প্রকাশ করে যে, সেদিন মিষ্টির দোকানের সমস্ত মিষ্টি শেষ হয়ে যায়। দুনিয়াবী ক্ষণস্থায়ী সামান্য নিয়ামত লাভে খুশি প্রকাশের দৃষ্টান্ত যদি এই হয়, তাহলে যিনি আগমন না করলে কুল-কায়িনাতের কিছুই সৃষ্টি হতো না, সৃষ্টি হতো না কোন পিতা-মাতার, না কোন সন্তানের সেক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ওজূদ মুবারক প্রকাশের দিন উপলক্ষে কতো বেশি খুশি প্রকাশ করতে হবে, মিষ্টি দিয়ে, মাল দিয়ে, না জান দিয়ে তা ফিকির করতে হবে।”

তাফসীরুল কুরআন: কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-৮

তাফসীরুল কুরআন : কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-৯

তাফসীরুল কুরআন: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

তাফসীরুল কুরআন: কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-১০

তাফসীরুল কুরআন:  কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-১১