-মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, æ১০ই মুর্হরম কারবালার প্রান্তরে সাইয়্যিদুশ্ শুহাদা সাইয়্যিদুশ্ শাবাবী আহলিল জান্নাহ হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর মুবারক শাহাদাতকে কেন্দ্র করে বিশিষ্ট ছাহাবী কাতিবে ওহী হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে দোষারোপ করাটা সম্পূর্ণরূপে কুফরীর শামিল।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামকে যেমন কোন ব্যাপারে দোষারোপ করা জায়িয নেই তদ্রুপ কোন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমকেও কোন ব্যাপারে দোষারোপ করা জায়িয নেই।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, এ বিষয়ে আল্লাহ পাক-উনার কালাম পাকে ইরশাদ করেন, æএকজনের পাপের বোঝা অপরজন বহন করবে না।” (সূরা আনয়াম-১৬৪)
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম এ আয়াত শরীফ-এর তাফসীর উল্লেখ করে বলেন, সন্তানের অপরাধের জন্য পিতাকে এবং পিতার অপরাধের জন্য সন্তানকে দায়ী করা বৈধ নয়। যেমন, কাবিলের অপরাধের জন্য হযরত আদম আলাইহিস্ সালামকে, কেনানের অপরাধের জন্য হযরত নূহ্ আলাইহিস্ সালামকে দায়ী করা বৈধ নয়। তেমনি ইয়াযীদের অপরাধের জন্য হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে দায়ী করাও বৈধ নয়। বরং তা সম্পূর্ণ নাজায়িয, হারাম ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, আল্লাহ পাক-উনার কালামে পাকে ইরশাদ করেন, æকাফিররাই তাঁদের (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের) প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে।”(সূরা ফাত্হ-২৯)
হাদীছ শরীফ-এর উদ্ধৃতি উল্লেখ করে মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, æযে ব্যক্তি হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, সে কাফির।” (নাসীমুর রিয়াদ্ব)
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, এখানে একটা বিষয় মনে রাখা দরকার যে, আল্লাহ পাক-উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার আদরের দৌহিত্র হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার মর্মান্তিক শাহাদাতে মুসলিম উম্মাহ্র অন্তর ব্যথাতুর হবে তা চরম সত্য কথা এবং এটি ঈমান মজবুতীর আলামতও বটে। কিন্তু এজন্য কাতিবে ওহী হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যিনি আল্লাহ পাক-উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার জলীলুল ক্বদর ছাহাবী উনাকে দোষারোপ করা কস্মিনকালেও শরীয়তসম্মত হতে পারে না। বরং শরীয়তে তা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে গালি দেয়, দোষারোপ করে তাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা, ফেরেশ্তা, মানুষ ও সকল মাখলুকাতের লা’নত এবং তাদের কোন ফরয ও নফল ইবাদত আল্লাহ পাক কবুল করবেন না।’ (মুযাহিরে হক্ব)
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম ‘ছহীহ বুখারী শরীফ’-এর হাদীছ শরীফ উদ্ধৃতি দিয়ে আরো বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে গালি দিওনা বা দোষারোপ করোনা। যদি তোমাদের কেউ উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহ পাক-উনার রাস্তায় দান কর, তবুও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের এক মুদ্ (১৪ ছটাক) বা অর্ধ মুদ্ (৭ ছটাক) গম দান করার ফযীলতের সমপরিমাণ ফযীলত অর্জন করতে পারবে না।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম ‘মিশকাত শরীফের’ হাদীছ শরীফ উল্লেখ করে বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ তারকা সাদৃশ্য, তাঁদের যে কাউকে তোমরা অনুসরণ করবে, তোমরা হিদায়েতপ্রাপ্ত হবে। অর্থাৎ উনাদের যে কাউকে, যে কোন ব্যক্তি, যে কোন বিষয়ে অনুসরণ করবে, সে ব্যক্তি সে বিষয়েই হিদায়েতের উপর থাকবে।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত ছাহাবায়ে আজমাঈন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের কাউকে কোন বিষয়ে দোষারোপ করা, সমালোচনা করা, তোহমত দেয়া, বিরোধিতা ও বিদ্বেষ পোষণ করা সবই কুফরী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম এ প্রসঙ্গে বিশ্বখ্যাত ‘আল ইসাবা’ কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিছ হাফিয আবূ যারআ রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার ক্বওল শরীফ উল্লেখ করে বলেন, ‘যখন কাউকে দেখবে যে, সে কোন একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার মানহানী করছে, তখন তুমি জানবে, সে ব্যক্তি নির্ঘাত যিন্দিক তথা কাফির।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, যারা ছাহিবে ছির, কাতিবে ওহী হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে দোষারোপ করে তারা মূলতঃ উনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে নেহায়েতই জাহিল বা অজ্ঞ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ছাহাবীগণের মধ্যে একজন বিশেষ শ্রেণীর ছাহাবী যাকে উলুল আযম বা জলীলুল ক্বদর ছাহাবী বলা হয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন- আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, কাতিবীনে ওহীর সদস্য, হাদীছ শরীফ-এর রাবী, ফক্বীহ ইত্যাদি মর্যাদার অধিকারী। উনার ইল্মের পূর্ণতা, হিদায়েতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকা-উনার দ্বারা লোকদের হিদায়েত লাভ, কিতাব শিক্ষাদান এবং জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক-উনার নিকট দু’য়া করেছেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার মুবারক সান্নিধ্যে থেকে তা’লীম ও তরবিয়ত হাছিল করেছেন এবং অর্জন করেছেন শরীয়তের অগাধ ইল্ম। যার কারণে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে ‘ফক্বীহুল উম্মত’ মনে করতেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, একবার হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে বলেন, হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যা বলেছেন তা ঠিকই বলেছেন। কেননা তিনি নিজে একজন ফক্বীহ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম ‘ছহীহ বুখারী শরীফ-এর’ হাদীছ শরীফ উদ্ধৃতি দিয়ে আরো বলেন, ‘হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনাকে নিজ অবস্থায় ছেড়ে দাও। কারণ তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার খাছ ছোহবতে ছিলেন।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম ‘তাহযীবুল আসমা লিন্ নববী” কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ছোহবতে থেকে যেমনিভাবে খাছ ফয়েজ ও তাওয়াজ্জুহ হাছিল করেন, তেমনিভাবে হাদীছ শরীফ-এর ভা-ার হতে সংরক্ষণ করেন অসংখ্য মূল্যবান হাদীছ শরীফ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইসলাম গ্রহণ করার পর আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথে হুনাইনের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম ‘মুসলিম শরীফ-এর’ হাদীছ শরীফ উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার বুযূর্গ পিতা হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার দরবার শরীফ-এ এসে আরজ করলেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে আপনি কাতিবে ওহী নিযুক্ত করলে ভাল হতো। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কাতিবে ওহী নিযুক্ত করলেন।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শুধু যে কাতিবে ওহীর খিদমতেই নিয়োজিত ছিলেন তা নয়; বরং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার বিশিষ্ট খাদিম হওয়ার সৌভাগ্যও লাভ করেন। এ প্রসঙ্গে ‘মুসলিম শরীফ-এর’ হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, ‘হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমাকে বলেন যে, আপনার জানা আছে কি, আমি হজ্জের সময় মারওয়াহ নামক স্থানে কেচি দ্বারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার চুল মুবারক কেটে দিয়েছিলাম?’
‘তিরমিযী শরীফ-এর’ হাদীছ শরীফ উদ্ধৃতি দিয়ে মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাছ দু’য়া করেছেন এভাবে, ‘আয় আল্লাহ পাক! হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে হাদী ও হিদায়েতপ্রাপ্ত করুন এবং উনার দ্বারা লোকদের হিদায়েত দান করুন।’
‘আল ইছাবাহ, মাজমাউয্ যাওয়ারিদ’ কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার জন্য আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’য়া করেছেন এভাবে, ‘আয় আল্লাহ পাক! হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে হিসাব-কিতাব শিক্ষা দিন এবং উনাকে জাহান্নাম থেকে নাযাত দিন।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম ‘মাজমাউয্ যাওয়ায়িদ’ কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে আরো বলেন, প্রসিদ্ধ ছাহাবী হযরত আমর ইবনুল আ’ছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ‘আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার জন্য এ দু’য়া করতে শুনেছি যে, আয় আল্লাহ পাক! হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে কিতাব শিক্ষা দিন এবং শহরেই উনার স্থান নির্ধারণ করুন ও উনাকে জাহান্নাম থেকে নিষ্কৃতি দিন।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার সাওয়ারীর উপর বসা-উনার পিছনে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বসালেন। কিছুক্ষণ পর আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনার শরীরের কোন অংশ আমার শরীর মুবারক স্পর্শ করে আছে কি? হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার বুক ও পেট আপনার শরীর মুবারক-এর সাথে লেগে আছে।’ এটা শুনে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দু’য়া করেন যে, আয় আল্লাহ পাক! হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ইল্ম দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, আখিরী রসূল্ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার দু’য়া নির্ঘাত কবুলযোগ্য। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার প্রতি কি করে বিদ্বেষ পোষণ করা-উনার সমালোচনা করা সম্ভব? মূলতঃ কাফির তথা গুমরাহ লোক ব্যতীত কারো পক্ষেই তাঁর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা সম্ভব নয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিরমিযী শরীফের হাদীছ শরীফ উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হযরত আবু ইদরীস খাওলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যখন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হামছ হতে হযরত উমাইর ইবনে সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে সরিয়ে সে স্থানে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে গভর্নর নিযুক্ত করলেন, (তখন লোকজন এটার সমালোচনা করতে লাগলো)। তখন হযরত উমাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে ভালো ব্যতীত খারাপ বলো না। কারণ, আমি স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার জন্যে এ দু’য়া করতে শুনেছি যে, æআয় আল্লাহ পাক! হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার দ্বারা লোকদেরকে হিদায়েত দান করুন।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার মর্যাদা-মর্তবার মধ্যে অন্যতম মর্যাদা হলো, তিনি ছিলেন একজন আদিল বা ইনসাফগার খলীফা। অর্থাৎ খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন। উনার ন্যায় বিচার ও ইনসাফ সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়, জান্নাতের সু-সংবাদপ্রাপ্ত ছাহাবী হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে হযরত উছমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, এরপর হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার চেয়ে অধিক ন্যায় বিচারক কেউ নেই।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, এক ব্যক্তি হযরত মুয়াফা ইবনে ইমরান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললো, ন্যায় বিচারের দিক দিয়ে হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ? একথা শুনে তিনি রাগান্বিত হয়ে বললেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি কোন প্রকার ক্বিয়াস করা যাবে না। হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তো হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার ছাহাবী, বৈবাহিক সূত্রে আত্মীয়, কাতিবে ওহী, আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার আমীন (আমানতদার)।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, ‘হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার ফযীলত সম্পর্কে আমীরুল মু’মিনীন ফিল হাদীছ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শ্রেষ্ঠ, না হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি শ্রেষ্ঠ? হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আল্লাহ পাক-উনার কসম! হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথে ঘোড়ায় চড়ে জিহাদে যেতেন তখন ঘোড়ার নাকে যে ধুলাবালিগুলো প্রবেশ করতো সে ধুলাবালিগুলোও হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি অপেক্ষা বহুগুণে শ্রেষ্ঠ।’
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার অসংখ্য ফযীলতের মধ্যে আরো একটি ফযীলত হলো, তিনি যমীনে থাকতেই জান্নাতের সু-সংবাদ পেয়েছেন। যদিও তিনি আশারায়ে মুবাশ্শারার অন্তর্ভুক্ত নন। এ প্রসঙ্গে ‘বুখারী শরীফ-এর’ হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, ‘আখিরী রসূল’ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের প্রথম যে দল সমুদ্রের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে, উনাদের জন্যে জান্নাত ওয়াজিব।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত ইমাম তাবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আটাশ হিজরীতে সর্বপ্রথম সমুদ্র যুদ্ধের মাধ্যমে কাবরাসের উপর আক্রমণ করেন এবং কারবাস তিনিই বিজয় করেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, এত সকল মর্যাদা-মর্তবার পরও যারা হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, উনাকে নাক্বিছ বলে, দোষারোপ করে-উনার সমালোচনা করে তাদের জন্যে হযরত ইমাম শিহাবুদ্দীন খাফফাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথাই অধিক প্রযোজ্য। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, গালি দেয়, নাক্বিছ বলে, সমালোচনা করে, সে হাবিয়া দোযখের কুকুরসমূহের মধ্যে হতে একটি কুকুর।
মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম বলেন, হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শুধু ছাহাবীই নন, বরং মর্যাদাপূর্ণ, জলীলুল ক্বদর কাতিবে ওহী ও গুপ্তভেদ জাননেওয়ালা ছাহাবী এবং ন্যায় পরায়ন খলীফাও ছিলেন। সুতরাং উনার সম্পর্কে সাবধানে কথা বলতে হবে।